অনেক অপমান সহ্য করেছেন এসসি ইস্টবেঙ্গলে, বাতিল চিমাই ফুল ফোটাচ্ছেন
তাঁকে মাঠে দেখলেই লালহলুদ সমর্থকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়তেন। আবার ড্যানিয়েল চিমা চুকুয়ামা কেন। ওন্য কোনও ফুটবলার ছিল না। লালহলুদ জার্সি গায়ে চূড়ান্ত ব্যর্থ। গোলের সামনে বল পেলেও তিন কাঠিতে পাঠাতে পারতেন না। অনেকেই বলাবলি করতেন চিমা নামের কলঙ্ক। এসসি ইস্টবেঙ্গলের সেই বাতিল চিমাই ফুল ফোটাচ্ছেন জামশেদপুর এফসির জার্সি গায়ে।উইলিস প্লাজাকে মনে আছে? লালহলুদ জার্সি গায়ে আই লিগে মাঠে নেমে প্রথম ম্যাচেই চমকে দিয়েছিলেন। তাঁর টাচ সকলের মন কেড়েছিল। দুএকটা ম্যাচ যেতে না যেতেই প্লাজাকে নিয়ে মোহভঙ্গ হয়েছিল। পরের মরশুমে প্লাজাকে দলে রাখেননি লালহলুদ কর্তারা। অথচ সেই প্লাজাই আই লিগে চার্চিল ব্রাদার্সের হয়ে পরে ফুট ফুটিয়েছিলেন। সেই অবস্থা ড্যানিয়েল চিমা চুকুয়ামারও।লালহলুদ জার্সি গায়ে এই মরশুমে একের পর এক ম্যাচে ব্যর্থতার পর কর্তারা চিমাকে রিলিজ দেন। হতাশায় ভারত ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন চিমা। দেশে রওনা আগের মুহূর্তে জামশেদপুর এফসিতে খেলার প্রস্তাব পান। জামশেদপুর এফসির প্রস্তাব পাওয়ার পর দ্বিতীয়বার ভাবেননি চিমা। দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত বদলে জামশেদপুরে সই করেন। চিমার জামশেদপুরের জার্সি বেছে নেওয়ার পেছনে লালহলুদে ব্যর্থতা। চিমা চেয়েছিলেন, নিজেকে প্রমাণ করতে। তাই ভারতেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁর সেই সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল না, প্রমাণ করে দিয়েছেন। তিনি যে খারাপ ফুটবলার নন, এটাই প্রমাণ করার সবচেয়ে বেশি তাগিদ ছিল। নরওয়ের প্রথম ডিভিশন ক্লাব মোল্ড এফ কেতে চুটিয়ে খেলেছেন চিমা। ক্লাবকে চ্যাম্পিয়নও করেছিলেন। ২০১১ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত মোল্ডের কোচ ছিলেন ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের বর্তমান কোচ গানার সোলসজায়ের। তাঁর কোচিংয়ে খেলেছেন চিমা। ২০১৩ সালে মোল্ডের জার্সি গায়ে প্রথম ডিভিশনে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন চিমা। করেছিলেন ১৩ গোল। কেন লালহলুদ জার্সি গায়ে সাফল্য পাননি? তার ব্যাখাও দিয়েছেন চিমা। তিনি বলেন, যখন আমি ভারতে আসি, কোনও সমস্যা ছিল না। সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল। ক্লাবের খারাপ পারফরমেন্স আমার ওপর প্রভাব ফেলতে শুরু করে। নানারকম নেগেটিভ কথা বলা হত, আমাকে নিয়ে ট্রোল করা হত, এমনকি অপমানও সহ্য করতে হয়েছে। খারাপ সময়ে পরিবারকে পাশে পেয়েছিলেন চিমা। তিনি বলেন, দুঃসময়ে পরিবার আমার পাশে দাঁড়িয়েছিল। মানসিকভাবে আমাকে উজ্জীবিত করেছিল। না হলে এভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারতাম না। জামশেদপুর এফসি যে তাঁকে দলে নেবে, ভাবতেই পারেননি চিমা। তাঁর কথায়, জামশেদপুর এফসির মতো লিগ টেবলের ওপরের দিকে থাকা দল আমাকে নেবে, ভাবতেই পারিনি। ওদের প্রস্তাব পেয়ে আমি দারুণ খুশি হয়েছিলাম। আমার মধ্যে নিশ্চয় ওরা কিছু দেখেছিল, না হলে প্রস্তাব দিত না। এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে মাঠে নেমেই দলকে জিতিয়েছিলেন।