ডার্বির রং লাল হলুদ! দিমির জোড়া গোলে মোহনবাগানকে উড়িয়ে ডুরান্ড সেমি'তে ইস্টবেঙ্গল
যুবভারতীর রং হয়ে উঠল লাল হলুদ। নৌকাডুবি ঘটিয়ে ডুরান্ড কাপের সেমিফাইনালে পৌঁছে গেল ইমামি ইস্টবেঙ্গল। আজ হাইভোল্টেজ কোয়ার্টার ফাইনালে ২-১ গোলে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টকে পরাস্ত করল অস্কার ব্রুজোর দল। জোড়া গোল সুপার সাব দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকসের।ম্যাচের শুরু থেকেই পজিটিভ ফুটবল খেলতে থাকে ইস্টবেঙ্গল। ১৬ মিনিট নাগাদ গোলের মধ্যে থাকা মরক্কোর ফরওয়ার্ড হামিদ আহদাদ চোট নিয়ে মাঠ ছাড়লে কিছুটা সমস্যায় পড়ে লাল হলুদ শিবির। হামিদ আহদাদর পরিবর্ত হিসেবে নামেন দিয়ামান্তাকস। ৩৬ মিনিটে টেকচ্যাম অভিষেক সিংয়ের ট্যাকলে পড়ে গিয়ে এডমুন্ড লালরিনডিকা অফসাইডের আবেদন নাকচ করে দেন রেফারি। যদিও তার মিনিটখানেক পরেই পেনাল্টি পায় ইস্টবেঙ্গল। বিপিন সিংকে অবৈধভাবে বাধা দেন আশিস রাই। মোহনবাগান এসজি গোলকিপার বিশাল কাইথের নাগাল এড়িয়ে পেনাল্টি থেকে গোল করে ইস্টবেঙ্গলকে এগিয়ে দেন দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকস।লিস্টন কোলাসো, জেমি ম্যাকলারেন, আপুইয়া, পাসাং দোর্জি তামাংরা থাকলেও প্রথমার্ধে লাল হলুদ গোলরক্ষক প্রভসুখন গিলকে সেভাবে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়নি। তিনকাঠি লক্ষ করে একটিও শট রাখতে পারেনি হোসে মোলিনার দল, যা তাদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের তুলনায় যথেষ্ট বেমানান। শুধু হাফ টাইমের আগে আপুইয়ার দূরপাল্লার একটি শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। বিরতির পর অবশ্য মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট খেলায় ফিরে আসে। জেসন কামিংসকে দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই নামান মোলিনা। গোল শোধের মরিয়া প্রয়াস লক্ষ করা যায় হয়। তবে গোলমুখ খুলছিল না। দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরুর মিনিট সাতেক পরেই লাল হলুদ দ্বিতীয় গোলটি পেয়ে যায়। নওরেম মহেশের থেকে বল পেয়ে বাগান রক্ষণকে বোকা বানিয়ে দুরন্ত শটে গোল করেন দিয়ামান্তাকস।ম্যাচের ৬৬ মিনিট অতিক্রান্ত হওয়ার পর মরণকামড় দিতে শুরু করে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। লিস্টন কোলাসোর ফ্রি কিক থেকে প্রয়াস প্রতিহত হতে না হতেই মিনিটখানেক পর, ম্যাচের ৬৮ মিনিটে অনিরুদ্ধ থাপার গোলে ভর করে ব্যবধান কমায় মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। তার আগে সাহাল আবদুল সামাদ সপ্রতিভ ছিলেন। যদিও তাঁর দুটি ভালো প্রয়াস কেভিন সিবিয়ে, আনোয়ার আলি বিপন্মুক্ত করেন। অনিরুদ্ধ গোল করার পরেই সমতা ফেরানোর লক্ষ্যে লাল হলুদ রক্ষণে একের পর এক আক্রমণ ঢেউয়ের মত আছড়ে পড়তে থাকে। কাঙ্ক্ষিত গোলটি হতেই মোলিনা দিমিত্রিয়স পেত্রাতস, দীপেন্দু বিশ্বাস ও দীপক টাংরিকে নামান। যেভাবে সবুজ মেরুন ইস্টবেঙ্গলের উপর চাপ তৈরি করছিল তাতে এক গোলের অগ্রগমন কতক্ষণ ধরে রাখা যাবে তাই নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত হয়ে পড়েছিল লাল-হলুদ শিবির।মোহনবাগানের আক্রমণের চাপ কাটাতে পাল্টা তিন পরিবর্ত ফুটবলার নামান ব্রুজো। সৌভিক চক্রবর্তী, পিভি বিষ্ণু ও ডেভিডকে নামিয়ে। আক্রমণ-প্রতি আক্রমণের ম্যাচে ইস্টবেঙ্গল লিড বাড়ানোর সুযোগ তৈরি করলেও আর গোল পায়নি। দিমিও হ্যাটট্রিক করার কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন। মিগেল ফেরেরা, কেভিনদের লড়াইও প্রশংসা আদায় করে নিয়েছে। দ্বিতীয়ার্ধে ৬ মিনিটের ইনজুরি টাইম পেলেও সমতা ফেরাতে পারেনি বাগান শিবির। শেষ বাঁশি বাজতেই চলতি মরশুমে দ্বিতীয় ডার্বি জয় নিশ্চিত করল ইস্টবেঙ্গল। পৌঁছে গেল সেমিফাইনালে। বাবার মৃত্যুর কারণে দেশে ফেরায় রশিদকে আজ পায়নি ইস্টবেঙ্গল। এদিনের জয় রশিদের জার্সি নিয়ে তাঁকে উৎসর্গ করলেন লাল হলুদের সতীর্থরা।অন্যদিকে, মোহনবাগান এসজির কাছে লজ্জার হারের সম্মুখীন হওয়া অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডায়মন্ড হারবার এফসিও পৌঁছে গিয়েছে সেমিফাইনালে। এদিন জামশেদপুরে জামশেদপুর এফসিকে ২-০ গোলে পরাস্ত করে।