• ৬ আষাঢ় ১৪৩২, রবিবার ২২ জুন ২০২৫ ই-পোর্টাল

Janatar Katha

Banner Add
  • কলকাতা
  • রাজ্য
  • দেশ
  • বিদেশ
  • রাজনীতি
  • খেলার দুনিয়া
  • বিনোদুনিয়া
  • সম্পাদকীয়
  • নিবন্ধ
  • ভ্রমণ
  • রাশিফল
  • টুকিটাকি
  • চিত্রহার
  • বিবিধ
  • ভিডিও
  • এছাড়াও
    • উৎসব
    • ব্যবসা
    • স্বাস্থ্য
    • শিক্ষা
    • প্রযুক্তি
    • হেঁসেল

Feature

বিনোদুনিয়া

পরিচালক হিসাবে অভিনেতা কিংশুক গাঙ্গুলির প্রথম ছবি একাধিক পুরস্কারে ভূষিত

বেশ কয়েকবছর ধরে সফলভাবে অভিনয় করার পর এবার প্রথম ছবি নির্মাণ করলেন কিংশুক গাঙ্গুলি। ছবির নাম দ্য হিউম্যানিটি। বর্তমানে পৃথিবীতে মনুষ্যত্ব ও ভালোবাসার বড় অভাব। সেই নিয়েই এই স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবিটি। এই ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন নবাগতা লিটসি দাস ও দেবজিৎ মুখার্জি। কিংশুক গাঙ্গুলির প্রথম ছবিই দেশ ও বিদেশে ১৯টি পুরস্কারে ভূষিত। খুব শীঘ্রই কোনো ন্যাশনাল ওটিটি প্ল্যাটফর্মে ছবিটি দেখতে পারবেন দর্শকরা। পরিচালক জনতার কথা কে জানালেন, আগামী দিনে শুধু অভিনেতা হিসাবেই নয়, পরিচালক হিসাবেও ভালো কাজ করতে চাই। বিগত ২৫ বছর ধরে অভিনয় করতে করতে মনে হয় নিজে কিছু একটা করি। নিজের চিন্তা ও ভাবনা দিয়ে একটা গল্প প্রতিস্থাপন করি। সেই ভাবনা থেকেই এই কাজ। এক্সপিরিয়েন্স যথেষ্ট ভালো। তবে অনেক চড়াই উৎরাই রয়েছে। গোটা ইউনিটকে চিয়ার আপ করা, একজন অভিভাবক হিসাবে সবার সঙ্গে কথা বলা, মেজাজ রাখা সেটা অনেক বড় এক্সপিরিয়েন্স দিয়েছে। অনেক কিছু শিখিয়েছে।

মে ২৭, ২০২২
বিনোদুনিয়া

প্রচণ্ড দাবদাহ উপেক্ষা করে 'মিশন ওটিপি'-র একটানা শুটিংয়ের অবসান

একটানা শিডিউলে রোদ ঝড় বৃষ্টি গরম উপেক্ষা করে শেষ হল সৌমাল্য দত্ত পরিচালিত নতুন ছবি মিশন ওটিপি এর শুটিং। নাম শুনেই হয়ত কিছুটা আন্দাজ করা যাচ্ছে এই ছবির বিষয় বস্তু। একবিংশ শতাব্দীর অগ্রগতির মূল হাতিয়ার ডিজিটালাইজেসন। সেই ডিজিটালাইজেসন এ অদৃশ্য ঘাতকের হানায় দিশেহারা অধ্যাপক থেকে জনমজুর। শতশত মানুষ এর ফাঁদে পরে নিঃস্ব হচ্ছেন।মিশন ওটিপি সেই সাইবার ক্রাইমের-ই গল্প বলবে। পরিচালক সৌমাল্য দত্ত জনতার কথা কে জানালেন, এই ছবির কাহিনী মূলত গড়ে উঠেছে শহরে ক্রমাগত ঘটে চলা বিভিন্ন সাইবার ক্রাইম, ওটিপি স্ক্যাম কে কেন্দ্র করে। শহরে একের পর এক সাইবার ক্রাইমের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। অবশেষে মঞ্চে অবতীর্ণ হয় লালবাজার গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার ডিপার্টমেন্ট অফিসার সৌম্যজোতী বসু ও তার সহকারী সূর্য সেন। তদন্তের সুবিধার্থে তারা সাহায্য নেয় সাইবার বিশেষজ্ঞ অভিজিৎ চ্যাটার্জি যার বাবা অরুন চ্যাটার্জি ও একদা সাইবার প্রতারনার শিকার। ওদিকে জানা যায় যে এই সাইবার ক্রাইম চক্রের পেছনে আছে রেশমির সিংহ রায় নামের এক ধুরন্ধর মহিলা। শেষমেষ অভিজিৎ এর সাহায্য নিয়ে কি সৌম্যজ্যোতি ও সূর্য এই সাইবার ক্রাইমের চক্র কে ধরতে পারবে? এই নিয়েই টানটান কাহিনী জমে উঠবে।তিনি আরও জানান, মিশন ওটিপি-তে ইন্সপেক্টর সৌম্যজোতি বসুর ভূমিকায় অভিনয় করতে দেখা যাবে বাংলা তথা হিন্দি সিনেমার পরিচিত মুখ অনিন্দ্য পুলক ব্যানার্জী কে, এবং সূর্য সেনের চরিত্রে দেখা যাবে বাংলা সিনেমা ও ওয়েবের পরিচিত মুখ জ্যামী ব্যানার্জী কে। পরিচালক সৌমাল্য দত্ত নিজেও আছেন সাইবার বিশেষজ্ঞ অভিজিৎ চ্যাটার্জির ভূমিকায়, এবং তার বাবা অরুন চ্যাটার্জির ভূমিকায় থাকছেন বাংলা ছবির বর্ষীয়ান অভিনেতা শ্রী রজত গাঙ্গুলি। এছাড়াও অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন স্বাধীন পান্ডে, আশীষ পাঠক, বিশ্ববিজয় দত্ত চৌধুরী, সৌমিত্র চক্রবর্তী,সুমনা দাসের মতো পরিচিত অভিনেতা রা, সাথে আছে বনশ্রী রায়,সুলগ্না চক্রবর্তী, দীপাঞ্জলী মুখার্জি, বৈশালী চৌধুরী, যুবরাজ বাল্মীকির মতো নবাগতরা। সাথে একটি দূর্দান্ত মজাদার চরিত্রে দেখা যাবে সৌরভ সাহা ও বিখ্যাত ইউটিউবার প্রবীর কুন্ডূ কে।ছবির চিত্রনাট্য ও সংলাপ পরিচালক সৌমাল্য দত্ত নিজেই লিখেছেন, ছবিটির কাহিনী প্রসেনজিৎ পালের। সুভাশিষ গোয়েল ছবির চিত্রগ্রহণ করেছেন। এবং ছবিটি বিগ বূল মোশান পিকচার্স এর ব্যানারে প্রসেনজিৎ পালের প্রযোজনায় নির্মিত হচ্ছে। পরিচালক সৌমাল্য দত্ত-র কথায়, এই ছবির মাধ্যমে জনগণের উদ্দেশ্যে তিনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেছেন, যার ফলে অনেকেই সাইবার প্রতারনার শিকার হতে নিজেকে বাঁচাতে পারবেন। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী আগষ্ট মাসের মধ্যেই মিশন ওটিপি বড়ো পর্দায় আসতে চলেছে।

মে ২২, ২০২২
নিবন্ধ

প্রিয় সখী

আকাশটা যেন আজ আরো দুরে মনে হচ্ছে, ফাঁকা ছাদে এসে আকাশের দিকে তাকিয়ে এমনটাই মনে হলো রুচিরার।মনটা আজ বড়ো একলা।আজ যে তার প্রিয় সখী অনেক দুরে পাড়ি দিল। বাড়িটাও আজ বড্ড নিস্তব্ধ।এমন সময় কাঁধে আলতো ছোঁওয়া লাগল। সুদীপ্ত পাশে এসে দাঁড়িয়েছে--- কি গো মন খারাপ করছে। বোন এতক্ষণ আকাশে উড়ছে।রুচিরা আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলো না। সুদীপ্তর বুকে মুখ গুঁজে কেঁদে ফেলল।সুদীপ্তও পরম যত্নে জড়িয়ে ধরল বুঝিয়ে দিল চিন্তা কি আমি তো আছি।সুদীপ্ত আর রুচিরার রসায়ন টা এরকম ছিলোনা বিয়ের পরে। সবই বিপাশার কৃতিত্ব। বিপাশা হলো রুচিরার একমাত্র ননদ এবং প্রিয় সখি।রুচিরার বিয়ে হয়েছে বছর পাঁচ ছয় হলো, এই কয় বছর রুচিরাকে সব দিক থেকে সাপোর্ট করেছে ননদ বিপাশা।এক আত্মীয় এই বিয়ের যোগযোগ টা করে। ওরা যখন দেখতে আসে সেদিন বিপাশাকে মনে হয়েছিল মেয়েটা অহংকারী। রুচিরা তখন গ্রাজুয়েশন ফাইনাল ইয়ারের ছাত্রী আর বিপাশা তখন ইঞ্জিনিয়ারিং এর ফাইনাল ইয়ারের ।দুজন সমবয়সী হলেও কথাবার্তা সেদিন খুব একটা হয়নি।এরপর ওদের পছন্দ হয়ে যাওয়ায় বিয়েটা তাড়াতাড়ি হয়ে যায়।কিন্তু রুচিরা খেয়াল করে বিয়ের পর কোনো এক অজানা কারণে সুদীপ্ত ওকে এড়িয়ে চলে। সে কথা ও কাউকে বলতে পারে না। শুধু চেষ্টা করে ওকে খুশি করতে।ওরকম একদিন সুদীপ্ত অফিস যাওয়ার আগে সব গুছিয়ে দিতে দোতালায় যাচ্ছিল ঘরের সামনে গিয়ে শুনতে পেল দুই ভাইবোন কথা বলছে, রুচিরার পা থেমে গেল।তুই অন্য কারো জন্য এই নিষ্পাপ মেয়েটাকে কেনো শাস্তি দিবি দাদাভাই? তুই দেখেছিস ওর মুখের দিকে তাকিয়ে। কি ভীষণ আনন্দ আর কতো স্বপ্ন নিয়ে মেয়েটা এবাড়িতে এসেছিল। আর এই একমাসে ওর মুখের হাসিটাই নিভে গেছে; তবু আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে তোকে খুশি করার। একবার ওকে কাছে টেনে নে, আপন করে নে দেখবি সব কষ্ট ভুলে যাবি।হিয়া তোর সঙ্গে যে প্রতারণা করেছে তার জন্য তো রুচি দায়ী নয়।তবে ও কেনো কষ্ট পাবে? তোর কষ্টটাও আমি বুঝি তাই বলছি রুচি কে কাছে টেনে নে। দেখবি ও খুব ভালো।বিপাশার কথা গুলো শুনে রুচিরা আর ওখানে দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনি। ও সব বুঝল এতদিনে। কিন্তু কি করবে ও এখন? ভাবল যে ননদ কে অহঙ্কারী ভেবে এড়িয়েই চলত সেই আজ না বলতেও ওর কষ্টটা বুঝে নিজের দাদাকে কি সুন্দর বোঝাচ্ছে।রুচিরার দুচোখে জলের ধারা নেমেছে। এমন সময় বিপাশা রান্না ঘরে ঢুকে ওকে ওই ভাবে দেখে বোঝে যে রুচিরা শুনেছে ওদের কথা । দু হাত দিয়ে ওর চোখের জল মুছিযে দিয়ে বলে No Tension ভাবীজী ম্যায় হু না বলে দুজনেই হেসে ফেলে।সেদিন রাত থেকেই রুচিরার জীবনটা পাল্টাতে থাকে। সুদীপ্ত নিজের ব্যবহারের জন্য ক্ষমা চায়। কাছে টেনে নেয় রুচিরাকে।এরপর থেকে রুচিরার জীবনের সব সমস্যার সমাধানের একটাই জায়গা সে হলো বিপাশা। দুজন দুজনকে আদর করে সখী বলে।শাশুড়ী মায়ের আপত্তি কে যুক্তি দিয়ে ভেঙে বিপাশা রুচিরার এম এ পড়ার পথ করে দেয়। তারপর বি এড করে এখন ও স্কুল টিচার তাও সেই বিপাশার জন্য। দুজনের সখ্যতা ঈর্ষণীয়।আজ রুচিরা এবাড়ির মধ্যমণি। কিন্তু সহজে তো হয়নি। অনেক প্রতিকূলতা কাটিয়ে আজ এই এতসব। সবসময় পাশে থেকেছে বিপাশা।আজ তাই বড্ড একা লাগছে। আজ সখী লন্ডন গেল কর্মসূত্রে।যাওয়ার আগে তাই বলে গেছে নিজের ছোটোখাটো সমস্যার সমাধান এবার থেকে নিজে করবে। সব দায়িত্ব এবার থেকে তোমার। তাই be strong.সখির জন্য আজ তার সব পাওয়া। রুচিরা মনে মনে বলে আমি ঠিক পারব রে সখী। তুই চিন্তা করিসনা। তুইও ভালো থাক।

মে ২২, ২০২২
বিনোদুনিয়া

সৌমিত্র-স্বাতীহীন 'বেলাশুরু'-র প্রিমিয়ার

গতকাল ছিল পরিচালক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিন। আর এই বিশেষ দিনেই মুক্তি পেল শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও নন্দিতা রায়ের ছবি বেলাশুরু। কলকাতার প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী সিনেমাহল বিজলি তে এই ছবির প্রিমিয়ার হয়ে গেল। প্রিমিয়ারে উপস্থিত ছিলেন ছবির কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য বিশিষ্ট অতিথিরা। প্রিমিয়ারে পরিচালক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় জানালেন, প্রথমবার উইন্ডোজের কোনো ছবির প্রিমিয়ার মিনার, বিজলি, ছবিঘর-এর বিজলি তে হল। নিজেদের কাছে এটা খুব বড় একটা জায়গা। এখানে অসংখ্য বাংলা সিনেমার প্রিমিয়ার হয়েছে। সেই ঐতিহ্যমণ্ডিত প্রেক্ষাগৃহের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলতে পারাটা আমাদের কাছে পরম প্রাপ্তি। পরিচালক আরও জানান, এই প্রেক্ষাগৃহে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের অসংখ্য ছবির প্রিমিয়ার হয়েছে। আজ উনার এবং স্বাতী দির অভিনীত শেষ ছবির প্রিমিয়ার এখানে হল। অভিনেতা সুজয় প্রসাদ মুখোপাধ্যায় জানালেন, বেলাশেষের থেকেও বেলাশুরু আমার কাছে অনেক বেশি ইন্টারেস্টিং। বেলাশেষে যেখানে একটা পরিবারের কথা বলে, বেলাশুরু সেখানে একজন প্রবীণ দম্পতির গল্প বলে। প্রেমের ভিত্তিপ্রস্তর যদি বন্ধুত্ব হয়, সেই বন্ধুত্বের আস্বাদন কিভাবে একটা সম্পর্কে আসে এবং সেই সম্পর্কটা সম্পৃক্ত ও সমৃদ্ধ হয় সেটার একটা অপূর্ব চিত্রণ বেলাশুরু তে রয়েছে। অভিনেত্রী মনামী ঘোষ জানালেন, অনেক এক্সপেক্টেশন রয়েছে। আশা করছি দর্শকদের ভালো লাগবে।

মে ২১, ২০২২
বিনোদুনিয়া

কালিম্পং এ জমজমাট "বিদেহী"-র শুটিং

রুদ্র ফিল্ম প্রযোজিত সাহিন আকতার পরিচালিত বিদেহী নামক পূর্ণদৈর্ঘ্যের ছবির শুটিং হয়ে গেল কালিম্পং - এর বিভিন্ন জায়গায়। ছবির চিত্রনাট্য লিখেছেন সুচন্দন বৈদ্য ও সাহিন আকতার। প্রযোজনা করেছেন অবন্তিকা ঘোষ।এই ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন সায়ন ঘোষ, শ্রেয়া ভট্টাচার্য শুভাশিষ সিকদার এবং গোপাল সরকার। অন্যান্য চরিত্রে দেখা যাবে সোমনাথ মন্ডল, উমা ব্যানার্জি, পাপিয়া পাল, জিৎ সুন্দর, মধ্যমা হালদার ও তৃষাণ ঘোষকে।বিদেহী হল মাতৃত্বের গল্প। দুজন মায়ের মাতৃত্ব নিয়ে গল্পের প্রেক্ষাপট তৈরি করেছেন পরিচালক। কালিম্পং- এ এক দম্পতি সপ্তর্ষি ও মেঘলা সম্পর্কের টানাপোড়ন থেকে নিজের জীবনকে অন্য এক দিশা দিতে ঘুরতে আসে। অনেকদিন থেকে চেষ্টা করেও মেঘলার মা না হতে পারা তাদের জীবনের সবথেকে বড় সমস্যার কারণ। করোনা পরবর্তী সময়ে হোটেল পেতে সমস্যা হয়। একটা হোমস্টের সন্ধান পায় তারা। হোমস্টে মেরামতের জন্য এখন বন্ধ। শুধু দেখাশোনার জন্য এক দম্পতি কানহাইয়া ও মাধুরী থাকে। মাধুরী প্রেগন্যান্ট। সপ্তর্ষি ও মেঘলা সেই হোমস্টেতে এসে থাকতে শুরু করে। তারপর সেখানে যে মাতৃত্ব ও রহস্যের জাল বুনেছেন পরিচালক তা গল্পের আসল বিষয়। পরিচালক সাহিন আকতার তার প্রথম সিনেমা নিয়ে খুব আশাবাদী। তিনি বলেন, কিছু গল্প না বলে দেখে তার স্বাদ অনুভব করতে হয়। আশা করি দর্শকদের খুব ভালো লাগবে।

মে ১৯, ২০২২
বিনোদুনিয়া

"অপরাজিতা" আরও একবার দর্শকদের কাছে

অপরাজিতা - একটি আনস্পোকেন রিলেশনশিপ। পরিচালক রোহন সেনের দ্বিতীয় পূর্ণদৈর্ঘ্যের এই ছবিটি ১১ মার্চ মুক্তি পেয়েছিল। ছবিটি বেশ কিছুদিন হলে চলার পর আরও একবার মুক্তি পাচ্ছে। এই উপলক্ষে দক্ষিণ কলকাতার একটি হলে ছবিটি দেখানো হয়। ছবিটি লিখেছেন ও পরিচালনা করেছেন রোহান সেন, প্রযোজনা করেছেন অমৃতা দে ও কিছুক্ষণ এন্টারটেইনমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড। বাবা এবং মেয়ের মধ্যে একটি জটিল সম্পর্কের চারপাশে আবর্তিত হয়েছে ছবিটি। তুহিনা দাস, শান্তিলাল মুখার্জি, দেবতনু, অমৃতা দে প্রমুখ এই ছবিতে অভিনয় করেছেন। ছবিটি আবার রিলিজ করার কারণ হিসাবে জনতার কথা কে পরিচালক রোহন সেন জানালেন, যারা কলকাতার বাইরে থাকে তারা অনেকে আমাকে পার্সোনালি মেসেজ করে লিখেছিল আমরা ছবিটা কিভাবে দেখবো। কলকাতার বাইরের দর্শকদের কাছেও তো ছবিটা পৌঁছানোর দরকার আছে। রোহন আরও জানিয়েছেন, কলকাতার যে যে হলে ছবিটা এখনও রিলিজ করেনি সেই সেই হলে রিলিজ করারও প্ল্যান করছি।

মে ১৮, ২০২২
বিনোদুনিয়া

এবার সার্কাস গ্রীষ্মকালে, সৌজন্যে "সার্কাসের ঘোড়া"

পরিচালক রাজেশ দত্ত এবং ইপ্সিতা রায়ের পরিচালনায় মুক্তি পেতে চলেছে সার্কাসের ঘোড়া। শীতকালের সার্কাস অনেকেই দেখেছেন কিন্তু গরমকালে বোধহয় সার্কাস দেখার সুযোগ হয়নি। তাই আসতে চলেছে গরমকালে সিনেমা হলে সার্কাসের ঘোড়া।ছবির মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করছেন পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, দীপঙ্কর দে, লিলি চক্রবর্তী, ইন্দ্রাণী হালদার, সাহেব চট্টোপাধ্যায়, দেবলীনা কুমার, গৌরব চট্টোপাধ্যায়, দেবাশিস ঘোষ, সুমিত সমাদ্দার দেবপ্রসাদ হালদার, অনন্যা সেনগুপ্ত সহ অন্যান্যরা।এই সিনেমার প্রথম লুক প্রকাশিত হতে চলেছে এবার। ছবিতে দেখা যাবে এক্স আর্মি অফিসার মানিকবাবু তার স্ত্রী, তার ছেলে এবং মানিকবাবু নাতিক। মানিকবাবু চরিত্রে অভিনয় করছেন পরান বন্দ্যোপাধ্যায় নানান ধাঁচের এই লুক দেখে দর্শকরা সত্যিই অবাক হবেন। সিনেমাটি বাস্তবের ওপর ঘিরেই তৈরি করা হয়েছে যদি বলি বাস্তবের সার্কাস তবে কি খুব ভুল হবে? বুঝতে গেলে সিনেমাটি কে দেখতে হবে। সিনেমাটি প্রযোজনা করেছে শ্রায়ামিত ফিলমস প্রাইভেট লিমিটেডের কর্ণধার দেবাশিস ঘোষ।

মে ১৫, ২০২২
নিবন্ধ

নারী দিবস (ছোট গল্প)

আরে ছাড় ছাড়, করছিস কী? চোখ বন্ধ করে কোথায় নিয়ে যাবি?তুমি চলই না মা আমার সঙ্গে।মধুমিতার মেয়ে অর্না মায়ের চোখ দুহাতে চেপে ধরে রান্না ঘর থেকে মায়ের শোবার ঘরে নিয়ে আসে।চোখ খুলে বিছানার উপরে হারমোনিয়াম দেখে চোখ জলে ভরে আসে মধুমিতার।এটা কে আনলো? অনুসারে তুই এনেছিস? তুই জানিস না কিছু!?নিয়ে যা এখান থেকে ; বলতে বলতে ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য ঘুরতে গিয়ে ধাক্কা খায় মধুমিতা; পিছনে তার শ্বশুর মশায় আর শাশুড়ি মা দাঁড়িয়ে।দেখুন মা আপনার নাতনীর কান্ড। আমি নাকি বুড়ো বয়সে গান গাইব। মধুমিতা ওর শাশুড়ি কে উদ্দেশ্য করে বলে।কেন বৌমা, দিদি ভাই অন্যায় তো কিছু করে নি। বরং ও যেটা করতে পেরেছে আমরা বলতে আমাদের ছেলে কেন করতে পারে নি সেটাই ভাবছি।যে গান শুনে মুগ্ধ হয়ে আমি তোমাকে আমার বৌমা করে এনেছিলাম সেই গানকে আমি রক্ষা করতে পারিনি ঠুনকো আভিজাত্যের মিথ্যা অহংকারের হাত থেকে।বৌমা তুমি আমাকে ক্ষমা করো বলে মধুমিতার দুই হাত ধরে মধুমিতার শ্বশুর মশায়। বলেন তুমি আজ থেকেই শুরু করো।বাবা আপনি বলছেন একথা! অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করে মধুমিতা।বড্ড ভুল করে ফেলেছি তোমাকে তোমার ভালোলাগা, ভালোবাসার জায়গা থেকে দূরে রেখে।এইসময় অর্না বলে ওঠে ঠাম্মা আজ তোমার জন্যও উপহার আছে----- এই দ্যাখো ; বলে একটা মাউথ অর্গান দেয় ঠাম্মার হাতে।ঠাম্মা তরুবালা দেবী অবাক হয়ে বলে তুই কী করে জানলি? এতো তোর বাবাও জানে না।বুড়ি তুমি আমাকে যতই অবজ্ঞা করো না কেন নাতনী বলে; আমি তোমার সব খবর রাখি।নাতনীকে জড়িয়ে ধরে ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠেন----- বলেন না দিদিভাই তুই আমার সাত রাজার ধন।আজ তোর জন্যই আমরাও সংসারে নিজের আনন্দে বাঁচতে পারবে।আজ আমার নারী দিবস সার্থক। যেদিন থেকে তোমাদের এই ভালোলাগা, ভালোবাসার কথা জানতে পেরেছি সেই দিন থেকে শুধু ভেবেছি কবে তোমাদের আবার সেই খুশি ফিরিয়ে দেব।সকল নারীর কাছে সেদিন নারী দিবস সার্থক হবে যেদিন নিজের আনন্দকে বুকে লুকিয়ে না আনন্দকে সঙ্গে নিয়ে বাঁচবে। --- বলতে বলতে অর্না মা আর ঠাম্মাকে জড়িয়ে ধরে।দূরে কোথাও বেজে ওঠে নহি দেবী, নহি সামান্য নারী,পূজা করি মোরে রাখিবে উর্দ্ধেসে নহি নহি,হেলা করি মোরে রাখিবে পিছেসে নহি নহিযদি পার্শ্বে রাখ মোরেসংকটে সম্পদেসম্মতি দাও যদি কঠিন ব্রতেসহায় হতেপাবে তবে তুমি চিনিতে মোরে।

মে ১৫, ২০২২
বিনোদুনিয়া

সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের 'শেরদিল' ছবির মুক্তির দিন ঘোষিত

ট্রেড অ্যানালিস্ট তরণ আদর্শ তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ায় সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের আগামী ছবি শেরদিল-এর মুক্তির দিন পোস্ট করলেন। ছবির বেশ কয়েকটি স্টিল পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, আগামী ২৪ জুন মুক্তি পাবে শেরদিল। সত্য ঘটনা অবলম্বনে তৈরি এই ছবি পরিচালনা করছেন জাতীয় পুরস্কারজয়ী সৃজিত মুখোপাধ্যায়। এই ছবিতে দেখা যাবে পঙ্কজ ত্রিপাঠি, সায়নী গুপ্তা, নীরজ কবির মতো বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতাদের। ছবিটি প্রযোজনা করছেন ভূষণ কুমার এবং রিলায়েন্স এন্টারটেনমেন্ট।SHERDIL ON 24 JUNE 2022... #Sherdil: #ThePilibhitSaga - inspired by true events - to release on 24 June 2022... Directed by #NationalAward winner #SrijitMukherji, it stars #PankajTripathi, #NeerajKabi and #SayaniGupta... Produced by #BhushanKumar and #RelianceEntertainment. pic.twitter.com/42FpxhXC7l taran adarsh (@taran_adarsh) May 11, 2022টলিউডের সফল পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় এখন বলিউডে বেশ কিছু কাজ করছেন। যার মধ্যে শেরদিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এই ছবির হাত ধরে প্রথমবার হিন্দি ছবিতে অভিনয় করছেন কলকাতা অভিনেতা সোহম গুহ পট্টদার। এই ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পেয়ে সৃজিত মুখোপাধ্যায়কে ধন্যবাদও জানিয়েছেন তিনি।

মে ১২, ২০২২
বিনোদুনিয়া

জোরকদমে চলছে "সৎ ভূত অদ্ভূত" এর শুটিং

প্রযোজক ববি চৌধুরীর উদ্যোগে পরিচালক প্রীতম সরকারের প্রযোজনায় প্রোডাকশন হাউস অ্যাকন প্রীতি ক্রিয়েশন এলএলপি এর নিবেদিত সৎ ভূত অদ্ভূত সিনেমা আসতে চলেছে। সিনেমায় অভিনয় করছেন পরান বন্দ্যোপাধ্যায়, খরাজ মুখার্জী, পার্থ চক্রবর্তী, প্রসূন গাইন, রাজু মজুমদার, পূজা সরকার, ইভলিনা চক্রবর্তী সহ আরো অনেক পরিচিত মুখ।এই ছবির শুটিং কভারেজ হয়ে গেল টেকনিশিয়ান স্টুডিওতে। উপস্থিত ছিলেন পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রসূন গাইন, পূজা সরকার, ইভলিনা চক্রবর্তী প্রমুখ।সৎ ভূত অদ্ভূত নিয়ে পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, কাজটা করে ভালো লাগছে। একটা অন্য ধরণের ছবি। এর মধ্যে একটা ব্যঞ্জনা আছে। পদ্ধতিটা অন্য ধরণের। একটা মেসেজ রয়েছে। বিনোদনও রয়েছে। তাছাড়া মানুষ দৈনিক জীবনেরও খোঁজ পাবে।

মে ১১, ২০২২
নিবন্ধ

সেরা উপহার (ছোট গল্প)

ডঃ মির্জা, ১২৩ নং কেবিনের পেশেন্ট মিঃ মিত্রের আজ তো ডিসচার্জ? ওনার বাড়ির লোক কেউ এখনো আসেনি কী করবো? বলে নার্স যিনি ছিলেন ডাক্তারের দিকে তাকিয়ে রইলেন---আচ্ছা আমি দেখছি আপনি একটা কাজ করুন বিলিং সেকশনে গিয়ে বলুন ওনার বিল রেডি করে আমার সঙ্গে দেখা করতে। আমি ততক্ষণ পেশেন্টের সাথে কথা বলে আসি।এই বলে ডাক্তার এগিয়ে গেলেন কেবিনের দিকে।কেমন আছেন স্যার?অনেক ভালো আছি আজ। সিস্টার বলছিলেন আজ আমার ছুটি হয়ে যাবে? আমার সব রিপোর্ট ঠিক আছে তো?হ্যাঁ স্যার আপনার সব রিপোর্ট ওকে। এবার আপনি আমার সঙ্গে যাবেন।আপনার সঙ্গে যাব! বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে রইলেন ডাক্তারের দিকে।হ্যাঁ আপনার জন্য আমার বাড়িতে অনেকে অপেক্ষা করে আছে ; আপনাকে আমার সঙ্গে আজ আমার বাড়িতে যেতে হবে।আমার জন্য আপনার বাড়িতে অপেক্ষা করে আছে? কে? কে অপেক্ষা করে আছে?আছে আছে আপনার খুব কাছের মানুষজন তারা। আর হ্যাঁ আপনাকে বলা হয়নি আপনার স্ত্রী ও আমার বাড়িতেই আছেন।স্যার বিলিং সেকশন থেকে জ্যোতির্ময় দা একটু পরেই আপনার সঙ্গে দেখা করবেন। পেশেন্টের সব বিল রেডি। সিস্টার এর মধ্যে এসে ডাক্তার কে বললেন।ওকে সিস্টার, আপনাকে আর একটা রিকোয়েস্ট করব? হ্যাঁ স্যার বলুন না কি করতে হবে?আপনি পেশেন্টের সব জিনিস একটু গুছিয়ে ওনাকে একটু রেডি করে দেবেন প্লিজ?হ্যাঁ, স্যার অবশ্যই।হয়ে গেলে আমাকে খবর দেবেন।ঠিক আছে স্যার।আমি তাহলে আর দুজনকে দেখে নিয়ে চেম্বারে বসছি। আর একটা কথা আজ আমি বিকেলে আসবো না। প্রয়োজন হলে অবশ্যই কল করবেন। এই বলে ডাক্তারবাবু বেরিয়ে গেলেন।সিস্টার এবার পেশেন্টের কাছে মানে মিঃ মিত্রের কাছে গিয়ে বলেন ---- কাকাবাবু, এবার তো রেডি হতে হবে আপনাকে। বাড়ি যেতে হবে তো? হ্যাঁ মা বাড়ি তো যাব। কিন্তু ডাক্তার বাবুযে বলে গেলেন ওনার বাড়ি নিয়ে যাবেন।হ্যাঁ, হ্যাঁ ওটাও তো বাড়ি নাকি?জানেন এই ডাক্তার বাবুর মতন মানুষ হয় না। উনি ভগবানের দূত।আপনাকে যেদিন এখানে নিয়ে আসে আপনার গ্রামের ছেলেরা সেদিন ওনার তাড়াতাড়ি বাড়ি যাবার কথা ছিল, ওনার মেয়ের সেদিন জন্মদিন ছিল।উনি বেরিয়ে যাবেন এমন সময় একটা কল এলো। মনে হয় আপনার ওখান থেকেই।আমার ওখান থেকে?হ্যাঁ মনে হয়। মনে হয় কেন তাই কারণ আপনার আসার পর স্যার যে ভাবে সব সামলে নিলেন সেটাই।আর উনি তো আপনার গ্রামের ছেলে। এখন এখানে থাকেন ফ্যামিলি নিয়ে।আপনি যে অবস্থায় এসেছিলেন উনি ছাড়া এ শহরের কেউ আপনাকে বাঁচাতে পারত না। আর এই পরিস্থিতিতে আপনার ভর্তি এখানে তো উনি ই করালেন।উনি শুধু আপনার চিকিৎসাই আপনাকে রক্ত দিয়েও বাঁচিয়েছেন।কোথাও রক্ত পাওয়া যাচ্ছে নাতখন উনি নিজের রক্ত দিলেন। যাতে ওনার রক্ত ই দেওয়া হয় সব ব্যবস্থা করেন।আপনার স্ত্রী ও তো মনে হলো ওনাকে খুব ভালো চেনেন। ওনাকে তো ডাক্তার বাবুর স্ত্রী এসে ওনার বাড়ি নিয়ে গেলেন।স্যার তো বললেন আপনি ওনার বাবার বন্ধু।এতক্ষণ বিনায়ক বাবু নার্সের কথা হাঁ করে শুনছিলেন। এবার বললেন এই পোষাকের আড়ালে মুখ গুলো তোমাদের বোঝা যায় না। তাই হয়তো বুঝতে পারিনি।কিন্তু তোমাদের ডাক্তার বাবু কেন পরিচয় দিলেন না।তাতো বলতে পারবো না। তবে উনি সবাই কে বলেছিলেন আপনার স্পেশাল কেয়ার নিতে। আপনি ওনার বাবার মতো। উনি নিজেও আপনার কেমন কেয়ার নিলেন দেখুন।বিনায়ক বাবু নিজের মনে বলে উঠলেন নিজের ছেলে খবরই নেয় না, তাকে মানুষ করতে পারলাম না। আর ছাত্র যাকে কবে পড়িয়েছি নিজেরইমনে নেই সে আমাকে সারিয়ে তুললো।আচ্ছা সিস্টার কি নাম ডাক্তার বাবুর?ডঃ ইমরান আলী মির্জা; আমরা ডঃ মির্জা বা ডঃ ইমরান বলি।আমাদের ওদিকে বাড়ি বললে তাই না?হ্যাঁ উনি তো তাই বললেন। আর তাছাড়া আপনার গ্রাম থেকে যারা এসেছিল তারা তো পরিচিত মনে হলো। স্যার কে তো অনেকে নাম ধরে ডাক ছিল।অন্যমনস্ক ভাবে বিনায়ক বাবু বললেন ওঃনিন আপনার ব্রেকফাস্ট এসে গেছে আপনি খেয়ে নিন। হাত স্যানিটাইজ করে নিন।বিনায়ক বাবু কি বললেন বুঝতে না পেরে সিস্টার সামনে খাবার এগিয়ে দিয়ে বললেন খেয়ে নিয়ে চেঞ্জ করবেন। আপনার সব গুছিয়ে দিয়েছি।আপনি খান আমি স্যার কে বলে আসি।একঘন্টা পরে হুইল চেয়ারে করে বিনায়ক বাবু কে নিচে নিয়ে এলো দুজন। ডাক্তার নিচে গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। বিনায়ক বাবুকে যত্ন করে গাড়ির সামনের সিটে বসিয়ে সিট বেল্ট বেঁধে দিয়ে নিজে স্টিয়ারিং এ বসলেন।পিপিই পোষাক এর বাইরে ডাক্তারকে দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছেন বিনায়ক বাবু।মনে মনে ভাবেন যাকে একদিন অপমান করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন, অপমান করে ছিলেন নিজের ছোটো বেলার বন্ধু ইদ্রিস কে। আজ সেই ছেলে আমার প্রান বাঁচাতে বদ্ধপরিকর শুধু নয়, আমাকে বাবার আসনে বসিয়েছে। চোখে জল এসে গেল তার।এসব ভাবতে ভাবতে গাড়ি এসে দাঁড়াল একটা সুন্দর ছোট্ট বাগান ঘেরা বাড়ির সামনে।ইমরান নিজে গাড়ি থেকে নেমে আস্তে করে সিট বেল্ট খুলে বিনায়ক বাবুকে বললেন বাবা বাড়ির ভিতরে চলুন।ইতিমধ্যে বাড়ির ভিতরের থেকে বেরিয়ে এসেছেন সবাই। সামনে ইমরানের বাবা, পিছনে তার দুই নাতি নাতনী কে নিয়ে তার মেয়ে।বিনায়ক বাবুর পা যেন চলছে না; বুকের ভেতর টা কেমন মোচড় দিয়ে উঠেছে।নাতনী এসে হাত ধরে বললো দাদু ভেতরে চলো আজ আমাদের বাড়িতে তোমার জন্য মা অক্ষয় তৃতীয়ার পূজোর আয়োজন করেছে। তুমি সুস্থ হয়ে গেছো তাই।তারপর আজ ঈদ , সবাই মিলে হিহি করে খুশির ঈদ পালন করবো। আজ সত্যিই আমাদের খুশির দিন।এমন সময় বিনায়ক বাবুর স্ত্রী বিমলা বেরিয়ে এসে বললেন আজ ইদ্রিস ভাই আর আমার ইমু না থাকলে কী যে হতো সে একমাত্র ঈশ্বর জানেন।আর বন্ধু ও মেয়ের জন্য বুকে এত ব্যথা পুষে রেখেছো অথচ মুখে ভাব দেখাও যেন কিছুই যায় আসে না।মেয়ে এতক্ষণ দূরে দাঁড়িয়ে ছিল। এবার বাবা কে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়ল। বাবা মেয়ে দুজনের মুখে কোনো কথা নেই শুধু চোখে জল।এমন সময় পরিবেশ হালকা করতে এগিয়ে এলেন বন্ধু ইদ্রিস---- কি বেয়াই ঘরের ভিতরে চলো। সব কথা কি এখানেই হবে। আমি যে দাবার ছকের পেতে বসে আছি। কুড়ি বছরের খেলা বাকি আছে। সব খেলতে হবে। তাড়াতাড়ি সম্পুর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠো।নাতি এসে দাদুর হাত ধরে ভিতরে নিয়ে চললো।ইন্দ্রাণী ইমরানের কাছে এসে বললো----ঈদের সেরা উপহার আজ তুমি আমাকে দিলে। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি তোমাকেই যেন স্বামী হিসেবে জন্ম জন্ম পাই।ইমরান বললো এবার ভিতরে চলো এই আনন্দ যেন অক্ষয় হয় তার পূজো করবে চলো।সবাই আনন্দের সঙ্গে অক্ষয় তৃতীয়ার পূজো ও ঈদ পালন করলেন বহু দিন পর একসাথে।

মে ০৮, ২০২২
বিনোদুনিয়া

প্রকাশ্যে "পরিচয় গুপ্ত"-র প্রথম লুক, ভিন্ন চরিত্রে ঋত্বিক চক্রবর্তী

পরিচয় গুপ্ত সিনেমার চরিত্রদের ফার্স্ট লুক প্রকাশ্যে এল। প্রধান চরিত্রে অভিনয় করছেন অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী, ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত, অয়ন্তিকা ব্যানার্জী, জয় সেনগুপ্ত। ছবির পরিচালনার দ্বায়িত্বে রয়েছেন পরিচালক রন রাজ। ছবিতে দেখা যাবে ১৯৫০ সালের ঘটনায় এক জমিদার ও তার প্রিয় বন্ধু আর্কেলজিস্ট এর গল্প।পরিচালক রন রাজ জানান পরিচয় গুপ্ত এই নাম টা থেকে বোঝা যাচ্ছে কোনো কিছুর সিক্রেট আইডেন্টিটি। সমাজের প্রতিটি মানুষের মধ্যে এই সিক্রেট আইডেনটিটি থেকে থাকে। কিন্তু হয়তো পরিবারের চাপে, সমাজের চাপে সেই প্রতিভাকে নিজেরা আটকে রাখে।পরিচয় গুপ্ত ছবিতে দেখা যাবে থ্রিলার এর ছোঁয়া। যার প্রতিটি বাকে রয়েছে টুইস্ট। ছবিতে সঙ্গীতের দায়িত্বে রয়েছেন সঙ্গীত পরিচালক সুভেন্দু অধিকারী। ছবিটি মুক্তি পাবে পূর্ণাঞ্জলী মিডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড এর ব্যানারে।তবে ছবির আরো একটু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হল ছবিতে গান গাইছেন অরিজিৎ সিং। ইতিমধ্যে অরিজিৎ সিং এর সঙ্গে কথা বলা হয়ে গিয়েছেন পরিচালক ও মিউজিক ডিরেক্টর এর। ইতিমধ্যে ছবির অনেকটা পার্ট শ্যুটিং শেষ হয়ে গিয়েছে আউটডোরে।

মে ০৬, ২০২২
নিবন্ধ

শেষ দেখা (শেষ পর্ব) -ছোট গল্প

সুমেধা নাতির সাথে কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলার পর ওকে ভিতরে যেতে বলে কাজের লোকের সাথে ভেতরে পাঠিয়ে দেন।অর্ক তনির এগজ্যাক্টলি কি হয়েছে আমাকে বল। আকুল হয়ে মাতৃ হৃদয় জানতে চায়। ডাক্তার সুমেধা নামা সুমেধা জানতে চায়।ওর বাবা তো আমাকে বরাবর বলে মেয়েটা কেন যে ওদেশে থেকে গেল আজও বুঝলাম না। আমাদেরও এত বছরের মধ্যে একবার ওখানে যেতে বলেনি। আমরা নিজেরা একবার যখন গেলাম ও এসেছিল আমাদের সাথে দেখা করতে কিন্তু ও কোথায় , কার সাথে থাকে কিছুই জানায়নি। আজ বুঝতে পারছি কেন আমাদের সাথে দূরত্ব তৈরি করেছিল। এসব কথা তন্দ্রার মা বলতে থাকেন।অর্ক,আমিই দায়ী তোমাদের জীবন নষ্ট করার জন্য। আমি তখন ডাক্তার হিসেবে না মা হিসেবে ওদের দু বোনকে বুঝতে হতো। চন্দ্রা কে বাঁচাতে আমি তন্দ্রার স্বপ্ন, আনন্দ সব বলি দিয়ে ফেললাম। আমি বুঝতেই পারিনি তোমাদের সম্পর্কটা এত গভীর ছিল। আমাকে ক্ষমা কর অর্ক।এখানে কারো কিছু করার ছিল না। যা ভবিতব্য ছিল হয়েছে।তবে ঈশ্বর মনে হয় আমাদের একটা সূযোগ দিয়েছেন।কি রকম?আজ আমার অনেক কিছু বলার আছে তোমার আর কাকুর কাছে। চন্দ্রার সাথে বিয়েটা আমি বাধ্য হয়েই করছিলাম। তোমার মুখের উপর না বলতে পারিনি যেমন, তেমন তন্দ্রার উপর অভিমানেও। আমাকে ভূল বুঝে কিছু না জানিয়ে না বলে, বলার সুযোগ না দিয়ে চলে গেল আর সমস্ত যোগাযোগ বন্ধ করে দিল। জানতে দিল না কি বুঝলো আর কেন? আমাকে কিছু বলার সুযোগ ও দিল না। খুব রাগ হয়েছিল। তাই চন্দ্রা কে ভালো না বা হলেও বিয়েটা করলাম। ভাবলাম চন্দ্রা তো আমাকে ভালোবাসে ও খুশি থাক। ওর মানসিক অবস্থা দেখে তখন আমি আর কিছুই ভাবিনি। কিন্তু সব ভুল ছিল। চন্দ্রা যখন বলল শুধুমাত্র তন্দ্রার কাছ থেকে আমাকে দুরে সরাবে বলে ও এই, নাটকটা করেছে তখন আমার পায়ের তলার মাটি সরে গেছিল। আমি যে কত বড় ভুল করেছি বুঝতে পারি আর আমার সেদিন থেকে শুরু হয় নতুন একটা লড়াই। কাকীমা হয়ত কিছুটা হলেও আন্দাজ করতে পেরেছিলে। আজ তাই তন্দ্রা যখন ফিরে এসেছে আমি চাই ওর এই বিপদের সময় আমি ওর সাথে থাকি। আর বাকি জীবনটা আমি ওকেই দিতে চাই। হয়তো ভাবছো চন্দ্রা কি করবে?চন্দ্রা নিজেই আমাকে বলেছে ও এন জি ও র কাজ নিয়ে উত্তর ভারতে চলে যাবে। আর ও তো কোনো দিন এই সম্পর্কটাকে গুরুত্ব দেয়নি। আজ যখন আমি একটা প্রায়শ্চিত্ত করার সুযোগ পেয়েছি সেটা করতে চাই।অর্কর কাছ থেকে এত কথা শোনার পর তন্দ্রার বাবা তন্ময় বাবু বলেন এতদিনে আমার কাছে পুরো চিত্রটা পরিস্কার হলো। মেয়েটা আমার কোনো দিন মুখে কিছু বলেনি, যত কষ্ট সবসময় আমাদের থেকে আড়াল করে গেছে। চুনি (চন্দ্রার ডাক নাম) ছোটবেলা থেকেই ওকে হিংসা করত। অনেক বুঝিয়েছি কিন্তু ওর কোনো পরিবর্তন হয়নি। তাবলে ও যে এরকম করতে পারে আমি তো ভাবতে পারছি না। আমি তো ভেবেছিলাম ও আর অর্ক পরস্পরকে পছন্দ করে। কিন্তু কোথাও যে একটা ছন্দের অমিল রয়েছে সেটা বারবার মনে হয়েছে কিন কি সেটা বুঝতে পারিনি। আজ বুঝতে পারলাম। আমি বলছি অর্ক তুই যা তনিকে সময় দে। ও একটু শান্তি পাক। অনেক কষ্ট পেয়েছে আমার এই মেয়েটা।আচ্ছা আচ্ছা সব অর্ক যা ভালো মনে করবে হবে কিন্তু তনির ট্রিটমেন্ট কোথায় হবে? ওদেশে যদি হয় তবে তো ও একা। আমরা নাহয় মাঝে মাঝে গেলাম। কিন্তু এখানে আমরা সবাই আছি এখানে তো হতেই পারে। তুই আছিস আমি আছি আমাদের পরিচিত ডাক্তারেরা আছে, বলেন তন্দ্রার মা।দেখা যাক তন্দ্রার সাথে কথা না বলে তো কিছু করা যাবে না। ওর মতামত জানতে হবে।ওখানে কি সব ব্যবস্থা করা আছে? মানে অপারেশনের ডেট নেওয়া আছে? তন্দ্রার মা তন্দ্রার কে জিজ্ঞাসা করেন।মোটামুটি সব ঠিক করা আছে। কিছু মেডিসিন চলছে আমি স্পেশাল পারমিশন নিয়ে এসেছি। ওখানে গিয়ে দেখাবার পর ডেট ফিক্সড হবে।এখানেও তো চিকিৎসা এখন ভালো হয়,আমরা আছি, এখানে একবার কথা বললে হয় না? অর্ক তো এখন ভারতের একজন নামকরা ডাক্তার; ওর চেনা পরিচিত কতজন আছে। তুই একবার ভেবে দেখ মা।মায়ের কথা চুপ করে শোনে তন্দ্রা। কিছু বলতে পারে না গলা বন্ধ হয়ে আসে। ভাবে মা ,এইরকম ভাবে কেন এতদিন ডাকো নি। আমি চাইলেও কি এখন থাকতে পারব? আমারও যে ইচ্ছা করছে না যেতে। কতদিন পর সবাই একসাথে হয়েছি। এসব ভাবতে ভাবতে ওর চোখ ভিজে আসে। মাকে বলে তোমার কোলে মাথা দিয়ে একটু শোবো? তুমি আজ আমার কাছে থাকো।মা আদর করে কোলে টেনে নেয়। মায়ের চোখেও আজ জল।মা মেয়ের এই দৃশ্য বাইরে থেকে দেখে চন্দ্রিল। ওর খুব ভালো লাগে মায়ের এই আনন্দ দেখে। ছোটবেলা থেকেই মাকে একা সব করতে দেখছে। আনন্দ করতে মা কে দেখেনি। ওর খুব ভালো লাগছে দেখে।এখানে একা দাঁড়িয়ে কেন? কিছু লাগবে? জিজ্ঞাসা করে চন্দ্রা। না না কিছু না। আমি এমনিই দাঁড়িয়ে আছি।আমাকে বলতে পারো কোনো অসুবিধা হলে। আমি তো তোমার মাসি, মায়ের দিদি। আমাকে মামনি ও বলতে পারো।আচ্ছা ঠিক আছে। বলে ওর ঘরে চলে যায়। ওর ও আজ চোখে জল বাধা মানছে না। এত আপনজনের মাঝে ওর খুব ভালো লাগে।ও ভাবে মা যদি এখানে থেকে যায় তাহলে হয়তো মা সুস্থ হয়ে যাবে। মাকে একবার বলে দেখবে। এটাও ঠিক এতদিন গ্র্যানি আমাদের দেখে রেখেছে তাকে কিছু না জানিয়ে হঠাৎ করে মা হয়তো এরকম ডিসিশন নেবে না। তবুও একবার বলতে হবে।এইসব, ভাবছে এমন সময় দরজায় ঠকঠক আওয়াজ।বাইরে দাঁড়িয়ে অর্ক, দেখে চন্দ্রিল। প্লিজ ভেতরে আসুন।তোমার সাথে কিছু কথা ছিল।বলুন, আগে বসুন।হুমম, বলে চেয়ারটি টেনে নিয়ে বসে।তুমি বড়ো হয়েছো তোমার মতামতের একটা মূল্য আম কাছে আছে। তার আগে বলো তুমি সব জানো তো? আমি কে? তোমার আমার সম্পর্ক কী?অর্কর দিকে তাকিয়ে চন্দ্রিল বোঝার চেষ্টা করে ঠিক কি বলতে চাইছেন ওকে এই মানুষ টা। মুখে বলে হুমম্ জানি।বেশ তাহলে তো ভালোই হলো। এখন তোমাকে আমি যেটা বলব ভালো করে শুনবে। তারপর ভেবে চিন্তে উত্তর দেবে।বলুনতোমার মায়ের ডিজিজের ব্যাপারে তুমি কতটা জানো?মা আমাকে যেটুকু বলেছেন। মায়ের ব্রেইনে একটা টিউমার হয়েছে যেটা অপারেশন করা কঠিন, কিন্তু না করলে যে প্রবলেম গুলো হবে সেটা আরও ডেঞ্জারাস। অপারেশন যদি সাকসেসফুল হয় তাহলে সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকবে কিছুদিন। আমি জানি মা বেশি দিন থাকবে না। তাই তো আমাকে নিয়ে এসেছে। অসহায় ভাবে কথাগুলো বললো চন্দ্রিল।ওর কাছে এইভাবে কথা গুলো শুনে অর্কর চোখ ভরে এলো; নিজের অজান্তেই কখন যেন ছেলেকে নিজের বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরলো।এভাবে জড়িয়ে ধরাতে চন্দ্রিল হতবাক হয়ে যায়। ও তো ভাবতেই পারেনি এরকম কিছু হবে।অর্ক বলে আমি আছি তো, কোনো চিন্তা করোনা। এখন আমাদের স্টেডি হয়ে মায়ের পাশে থাকতে হবে। তুমি তো যথেষ্ট ব্রেভ বয়।এখন চলো মায়ের সাথে কিছু কথা বলি। এই বলে ছেলেকে নিয়ে তন্দ্রার ঘরে গেল।তন্দ্রা তখনও মায়ের কোলে শুয়ে আছে।চন্দ্রিল ঢুকে বলে ওয়াও মা তুমি এখনও মায়ের আদর খাচ্ছো? দারুন ব্যাপার, আমার খুব খুশি লাগছে।ওর এই কথা শুনে সবাই হেসে ওঠে।ও একটু বিস্মিত হয় এই ভেবে যে হাসির কি হলো!তখন তন্দ্রার মা বলেন দাদু ভাই ওটা হবে আমি খুব খুশি হয়েছি।ও আচ্ছা।এরপর ওরা সবাই তন্দ্রার চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা করতে থাকে। এর মধ্যে শুচি আসে। ও যোগ দেয় ঐ আলোচনায়।ঈশ্বর মনে হয় বসেই থাকে আমরা যা ভাবব তার উল্টো করার জন্য। আমাদের চিন্তা ভাবনা অনুযায়ী সব ঘটনা ঘটলে মনে হয় ঈশ্বরের আসন টলে যেতে পারে স্বয়ং ঈশ্বর তাই সব ঘটনা গুলো উল্টে পাল্টে দেয়। তাই মনে হয় জীবনের সব চাওয়া গুলো আর পাওয়া হয়ে ওঠে না;অর্ক ভাবতে থাকে।খুব কি বেশি চেয়ে ফেলেছিলাম? এত বছর পরে ,এত কিছু ঘটে যাওয়ার পরে একটু সাথে থাকতে চেয়েছি মাত্র। না আর যেন কিছু ভাবতে পারছে না অর্ক।অপারেশন টা সবার কথা মতো এখানেই হয়। তন্দ্রার শুধু একবার ওদেশে একবার যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল, ওখানে যে ও আরেক মা কে রেখে এসেছে। ফোনে তার সাথে কথা বলে সব জানায়। অর্ক তাকে বলে যদি উনি আসতে চান তাহলে ও সব ব্যবস্থা করে দেবে। সব কিছু ঠিক করে অর্ক ওর বন্ধু স্থানীয় বিখ্যাত ডাক্তারকে দিয়ে অপারেশন করায়, নিজে সঙ্গে থাকে। নিজে করেনি কারণ আপনজনের অপারেশন নিজে করা যায় না। সব ঠিক ছিল। দুদিন পর হঠাৎ জটিলতা দেখা দেয়। কিছুক্ষনের জন্য জ্ঞান আসে আর তখন ও সবাই কে একসাথে দেখতে চায়। আর তার সাথে মিসেস টেলর কে দেখতে চায়। এর পরেই জ্ঞান হারায়।ওর ইচ্ছা কে সম্মান জানিয়ে অর্ক লন্ডনে ফোন করে মিসেস টেলরকে আসতে বলে। উনি ও খুব উতলা হয়ে ওঠেন। ওনার কথা শুনে মনে হয় যেন নিজের সন্তান অসুস্থ হয়ে পরেছে। অর্ক অবাক হয়ে যায় ওনার এই রকম উৎকন্ঠা দেখে। ও সঙ্গে সঙ্গে সব ব্যবস্থা করে দেয় ওনার আসার;সাত দিনের মধ্যে যাতে উনি আসতে পারেন। এদিকে চলে তন্দ্রাকে নিয় যমে মানুষে টানাটানি। কেউ আর নিজের কাজে ফিরে যেতে পারে না। সবার মন পড়ে থাকে তন্দ্রার কাছে। সবাই মনে একটাই কথা ভাবে কেন এমন হলো? কি হবে শেষ পর্যন্ত?এরমধ্যে সবাই কে অবাক করে দিয়ে চন্দ্রা চন্দ্রিলকে নিজের কাছে টেনে নেয়। ওর দেখাশোনা, ওর ভালো থাকা সব দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নেয়।তন্দ্রার মা, বাবা বয়স হলেও সারাদিন প্রায় থেকে যান হাসপাতালে। চন্দ্রা মা বাবাকেও সামলায়।অর্ক বেশি সময়টাই বসে থাকে তন্দ্রার কাছে। মনে হয় একবার যখন ফিরে পেয়েছি আর হারাতে দেব না এরকম ব্যাপার।কিন্তু বিধির বিধান মনে হয় তা যেন ছিল না। সাত দিনের মাথায় মিসেস টেলর হাসপাতালে পা দিতে জ্ঞান আসে আবার তন্দ্রার। ওনার হাত ধরে তন্দ্রা শুধু বলে চাঁদ রইলো; অর্ককে দেখিয়ে বলে ওর বাবা।অর্ক বুঝতে পারে আর সময় নেই তন্দ্রার দুই হাত চেপে ধরে যেনো যেতে দেবে না কিছুতেই। কিন্তু সেতো আর হয়না। যখন, যার, যেখানে যাবার সময় আসবে তখন, তাকে, সেখান থেকেই চলে যেতে হবে। তন্দ্রাও অর্কর হাতে হাত রেখেই পাড়ি দেয় ওপারে। যেখানে সব কষ্ট দুঃখ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়, সেই রাজ্যে।যাবার আগে শেষ বারের মতো সবাই কে দেখতে পায়। সবাই কে মিলিয়ে দিয়ে যায়। দিদিকে দিয়ে যায় সন্তান সহ সংসার, যা ও পেতে পারত। মা বাবা কে সান্ত্বনা হিসেবে দেখিয়ে দেয় মিসেস টেলর কে, যে নিজের সন্তানকে হারিয়ে একা বাঁচত, আবার অজানা একজনকে নিজের সন্তানের মতো আগলে রেখে শেষ পর্যন্ত তাকেও হারালেন। অর্ককে দিয়ে গেল আত্মগ্লানি থেকে মুক্তি।নিজের জীবন থেকে নিজে মুক্তি পেলো সবার সঙ্গে শেষ বারের মত দেখা করে, যত ভুল বোঝা ছিল সব মিটিয়ে। ছেলেকে বাবার কাছে দিয়ে তন্দ্রা পাড়ি দিল আনন্দের রাজ্যে।শ্রীমতি রাখি রায়বর্ধমান-সমাপ্ত-

মে ০১, ২০২২
বিনোদুনিয়া

মুক্তি পেল 'রাবণ' দর্শকমহলে উন্মাদনা

২০২২ এর ২৯ এপ্রিল তারিখটি বাংলা চলচ্চিত্রের একটা বিশেষ দিন। একই দিনে মুক্তি পেয়েছে টলিউডের দুই সুপারস্টার দেবের কিশমিশ ও জিতের রাবণ। স্বাভাবিকভাবেই দর্শকদের মধ্যে আলাদা উন্মাদনা রয়েছে। তবে শুধু ২৯ এপ্রিল নয়, মে মাসের শুরুতেও মুক্তি পাচ্ছে বাংলা ছবি। যা বাংলা ছবির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দক্ষিণ কলকাতার সাউথ সিটি মলে হয়ে গেল রাবণ এর প্রিমিয়ার। প্রিমিয়ারে সুপারস্টার জিতকে দেখা এবং তার সঙ্গে ছবিতে ভিড় জমায় অগুণিত ভক্তরা। উপস্থিত ছিলেন মদন মিত্র, বাবুল সুপ্রিয়, কৌশানী, স্যাভি সহ অন্যান্য তারকারা।রাবণ ছবিটি দুজনের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এই ছবির হাত ধরে প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্যের ছবি নির্মাণ করলেন পরিচালক এম এন রাজ। পাশাপাশি অভিনেত্রী হিসাবে এই ছবিতে অভিষেক হল লহমা ভট্টাচার্যর। জিতের নায়িকা হিসাবে লহমা দর্শকদের মন কাড়লেন।অভিনেত্রী লহমা ভট্টাচার্য জানালেন, দারুণ, অসাধারণ, অনবদ্য। আমি প্রথমদিন দেখলাম ফিল্মটা। আমার খুব ভালো লেগেছে। আশা করি দর্শকদেরও খুব ভালো লাগবে।জিতদার সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা অকল্পনীয়। জিতদার পাশে দাঁড়িয়ে এই কাজটা করার ক্ষেত্রে আমার ঘাড়ে বিশাল একটা রেসপনসিবিলিটি ছিল। জিতদার এত অসাধারণ লুক আর পারফরম্যান্স আমি দেখে মুগ্ধ হয়ে গেছি।

এপ্রিল ৩০, ২০২২
নিবন্ধ

শেষ দেখা (দ্বিতীয় পর্ব) -ছোট গল্প

বেলা তখন এগারো টা হবে কলিং বেল বেজে উঠল। বিতান দরজা খুলতে গেলে তন্দ্রা ওর বিছানায় উঠে বসে; মনের কোনে আজও একটা অস্থিরতা সৃষ্টি হতে দেখে ও নিজেই খুব অবাক হয়। আজও কি তাহলে অন্তরের গভীরে রয়ে গেছে অর্কর প্রতি ভালোবাসা!ধীর পায়ে বেরিয়ে আসে ড্রয়িং রুমে। ওর পিছনে ছায়ার মত আসে চাঁদ; একটু যেন চমকে গেল অর্ক। এটা কে? নিজের মনে নিজেকে প্রশ্ন করে। এ যে আমার ছোট বেলা ভাবে অর্ক। এসব ভাবতে গিয়ে খেয়াল করে নি সামনে যে দাঁড়িয়ে আছে তন্দ্রা।কেমন আছো? জিজ্ঞাসা করে তন্দ্রা।ওর ডাকে সম্বিত ফিরে আসে অর্কর। হ্যাঁ, ভালো আছি। বলে তাকায় তন্দ্রার দিকে। তন্দ্রার শরীরের কথা শুনেছে বিতানের কাছে। তবুও চোখের সামনে দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে যায়। ভাবে সেই সুন্দর তন্বী মেয়েটা রোগের কারণে কি হয়েছে।তন্দ্রা ব্যাপারটা স্বাভাবিক করার জন্য বলে ওঠে তুমি যে সময় বের করে আসতে পেরেছ সে জন্য ধন্যবাদ।এতক্ষণে নিজের মধ্যে ফিরে আসে অর্ক, বলে আসতে তো আমাকে হতোই। আমার যে অনেক কিছু বলার ছিল যা বলার সুযোগ পাইনি।ওদের এই কথোপকথনের মধ্যে শুচি উঠে রান্না ঘরের দিকে যায় এবং বিতানকে ইশারায় ডেকে নিয়ে যায়।অর্ক বুঝতে পারে না কিভাবে শুরু করবে। তন্দ্রার কাছে এগিয়ে গিয়ে ওর হাতটা ধরে বলে আমাকে ক্ষমা করে দে।আমার প্রতি তোর অনেক অভিযোগ আছে আমি জানি। আমি যে এতগুলো বছর মনে কি গ্লানি বয়ে বেরাচ্ছি সে আমিই জানি। তুই এখন আর বিশ্বাস করবি না আমি জানি,তবু বলছি। আমি বাধ্য হয়েছিলাম সেদিন।অর্ক বলতে থাকে, তন্দ্রা আমি নিজের ইচ্ছায় বিয়েটা করিনি। আমি চাইই নি বিয়েটা করতে। আমি তো তোকে ভালোবেসেছি। আমি শুরু থেকেই তোকে ভালোবাসি, তোর সাথেই জীবন কাটাতে চেয়েছি। কিন্তু উভয়ের পড়া আর কেরিয়ারের কথা ভেবে বলা হয়ে ওঠেনি। তাই সেবার দিল্লিতে সেমিনারে্ গিয়ে যখন শুনলাম তুই বাইরে হায়ার ডিগ্রীর জন্য যাওয়ার চেষ্টা করছিস তখন তোকে আমার মনের কথা জানানোর সিদ্ধান্ত নিলাম।আর বলেও দিলাম কোনো কিছু না ভেবে। আমি কিন্তু জানতাম না ঠিক কি হবে তোর উত্তর। তবে আমার উপর তোর ভরসা আর বিশ্বাস দেখে মনের কোনে একটা আশা ছিল আবার ভয়ও ছিল যদি আমার জন্য তোর মনে সেরকম কিছু না থাকে তাহলে নিজের কাছে ছোটো হয়ে যাব। তুই যদি অন্য কাউকে পছন্দ করিস। এসব সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে বলেও দিলাম। তোর কাছে যখন সাড়া পেলাম তখন আমার কি অবস্থা হয়ে ছিল সেটা তো তুই সবথেকে ভালো জানিস।তার ফল যে তুই পেয়েছিস সে তো দেখলাম তোর সাথে রয়েছে।ওই রকম আনন্দ আমার আগে হয় নি; কলকাতা ফেরার পর সেদিন প্রথম বাড়ি ফিরে চন্দ্রিমাকে ফোন করে ডাকি। ওই আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু আর তোর দিদি তাই ওকে ই খবরটা প্রথম দেব ঠিক করি আর ওর মাধ্যমে আমাদের বাড়িতে জানাব এটাও ভাবি। কিন্তু ও জানার পর যেটা ঘটল সেটা আমি স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারিনি। আমি তো ভাবতাম ও কাউকে পছন্দ করে, ওর কাছে সেরকমই শুনেছিলাম। যদিও খোলাখুলি কিছু বলেনি কোনো দিন। আমি তো খুব ভালো বন্ধু ছাড়া ওকে কখনো কিছু ভাবিনি। অতি উৎসাহিত হয়ে ওকে সেদিন কথাটা বলতে যাওয়া আমার জীবনের সবচেয়ে বড়ো ভুল। আমি ভাবিনি নিজের দিদি হয়ে এইভাবে হিংসা করতে পারে। আমার সম্বন্ধে এরকম ভাবতে পারে সেটাও বুঝিনি। ওর সাথে যখন এই নিয়ে কথা, তর্ক বিতর্ক চলছে তখন তুই এসেছিলি, আমি মায়ের কাছে পরে শুনলাম। আমি যে ভয়টা পেয়েছিলাম সেটাই ঘটল।তুই অভিমান করে চলে গেলি, কোনো রকম কোনো যোগাযোগ করলি না, করার পথ ও বন্ধ করে দিলি। আমি তখন তোর দিদির অভিনয়ের কাছে অসহায়। সবাই তখন আমাকে বিয়ে করার জন্য চাপ দিতে লাগল। আমার মা,বাবা, তোর মা সবাই। ডাক্তার বললেন ওকে কোনো রকম মানসিক চাপ দেওয়া চলবে না। তখন বাধ্য হয়ে আমি বিয়েতে রাজি হই। ও আমাকে ভালোবেসে বিয়ে করেনি। শুধু তোর প্রতি হিংসা করে, তোর কাছ থেকে আমাকে দুরে সরিয়ে নিতে এই বিয়ে। প্রথম প্রথম তোর কথা উঠলেই সিনক্রিয়েট করত। তারপর থেকে আমি চুপচাপ থাকি। ও ওর কাজে সফল হয়েছে। ও আমাকে তোর কাছ থেকে কেড়ে নিতে চেয়েছিল সেটা পেরেছে।অর্ক ঝড়ের মতো কথাগুলো বলে গেল। এমন সময় শুচি খাবারের প্লেট হাতে নিয়ে ঢুকল।কিছু মনে করোনা তোমার শেষের কথাগুলো কিছুটা শুনেছি, তুমি আমাদের জানাতে পারতে। তুমি কিছু ই বলোনি, শুধু বারবার তন্দ্রার খোঁজ করতে।ওটা আমার খুব ভুল হয়েছে, সেসময় তোদের সব জানালে ভালো করতাম। আজ তোদের আর আমার কথা বিশ্বাস হবে না। বিশ্বাস করা না করা তোদের ব্যাপার। আমার বূকের উপর একটা পাথর চাপানো ছিল এতদিন আজ তন্দ্রাকে সব বলে কিছু টা হালকা লাগছে। হ্যাঁ, আর একটা কথা যেটা না বললে সম্পুর্ণ হবে কথা। আমাদের শুধু বিয়েটাই হয়েছে। ও চেয়েছিল তন্দ্রাকে সবার থেকে দূরে সরিয়ে দিতে, আমাকে ওর কাছ থেকে কেড়ে নিতে ও সেটা এক সপ্তাহের মধ্যেই নিজের মুখে আমাকে বলেছে। সেদিন থেকে ও আমার কাছে পৃথিবীর জঘন্যতম মানুষ। আমি চেষ্টা করি সবসময় ওর সামনে না পড়তে। আমাদের দেখা হয়না বললেই চলে। ও থাকে ওর জীবন নিয়ে। ওর কলেজ, আউটিং, পার্টি এসব নিয়ে।তবে ইদানিং যেন একটু পরিবর্তন লক্ষ্য করছি। জানিনা তার মধ্যে আবার কিছু আছে কিনা!তন্দ্রা এই কথাগুলো শোনার পরে অর্কর দিকে এমন দৃষ্টিতে তাকালো যার মধ্যে কোনো ক্ষোভ, দুঃখ, রাগ কিছু তো ছিলই না বরং একটা কষ্ট, সহানুভূতি দেখতে পেল শুচি।অর্ক এবার তন্দ্রাকে বলল আমার উপর রাগ, অভিমান, ঘৃণা এসব বুকে নিয়ে চলে গেছিলি তো আমি বুঝেছিলাম তখনই যখন মা আমাকে বলেছিলেন তুই এসেছিল। কিন্তু এতবড় একটা খবর তুই আমার থেকে আড়ালে রাখলি!! এতটা অবিশ্বাস!!না না, তা নয় বলে ওঠে তন্দ্রা।তবে আজ যখন তুই এই অবস্থায়, ছেলে এতবড় হয়ে গেছে তখন তুই আসলি, কেন আগে আমাকে বলিসনি?আমি চলে গেছিলাম ঠিক। রাগ হয়েছিল নিজের উপরে। যে আবেগ আমি ধরে রেখেছিলাম এতদিন কেন সেটা ভাবলাম সেই ভেবে খুব রাগ হয়েছিল নিজের উপর। তাই ঠিক করছিলাম তোমাদের জীবন থেকে নিজেকে অনেক দুরে সরিয়ে নিয়ে যাব। তাই পরেরদিন বাড়ি থেকে দিল্লি চলে গেলাম, সাতদিনের মধ্যে লন্ডন।কিন্তু ভাগ্য আমাকে সাথ দিল না। আমি তোমাকে ভুলব ভাবলে কি হবে, ভোলার পথ তো ঈশ্বর বন্ধ করে দিয়েছে সেদিন রাতে।যেদিন বুঝতে পারলাম সেকথা প্রথমে তোমাকেই জানাবো বলে ফোন করেছিলাম। কিন্তু ফোন ধরলো তোমার স্ত্রী। সেকথা শুনে আমার কি হয়েছিল জানিনা। তবে জ্ঞান ছিল না। যখন জ্ঞান ফিরল নিজেকে হসপিটালের বেডে দেখলাম।তারপর সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফোন করে জানতে পারলাম দিদির সাথে তোমার বিয়ের কথা। মা তখন বলেছিল তোকে জানাই নি, তুই কষ্ট পাবি। আর তুই তো এখানে নেই। দু বোনের এই নিয়ে বিবাদ হোক আমি চাই নি। আমি মাকে আর কিছুই জিজ্ঞাসা করিনি। আর কিই বা জিজ্ঞাসা করতাম?আমার তখন বলার কিছু ছিলনা। আমি শুধু বলেছিলাম, তাহলে আমি দুরেই থাকি, দেশে আর ফিরে যাব না।তাই আর দেশে সেভাবে আসা হয়নি। আর তোমার জীবনে আমার জন্য যাতে কোনো অশান্তি না হয় তাই বলিনি কিছু।জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করলাম নিজের মত করে।আমার এই লড়াইয়ে আমাকে সাথ দিয়েছে আমার রুমমেট আফরিন আর ছিলেন, না ছিলেন কেন আজও আছেন আমার বাড়িওয়ালা মিসেস টেলর। আমরা ভারতীয়রা ভাবি না যে ইউরোপীয় মহিলাদের মধ্যে মাতৃত্ব বোধ নেই! একদম ভুল ভাবনা। আজ পর্যন্ত উনি আমাকে এবং আমার ছেলেকে যেভাবে আগলে রেখেছেন কোনো ভারতীয় মহিলা পারবে না। আমার প্রতি ওনার স্নেহের কারণ ওনার মৃতা মেয়ে। সে নাকি আমার মতো ছিল অবশ্যই ইউরোপীয় ভার্সন বলে একটু হাসার চেষ্টা করে তন্দ্রা।আজও আমি ওনার কাছেই থাকি। মায়ার বাঁধনে বাঁধা পড়েছি আমিও।যাক সেসব কথা। আমি তোমার সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে চাই নি কারণ আমি ভেবেছিলাম আমি তোমার আর দিদির মাঝে অযাচিতভাবে অনুপ্রবেশ করে ফেলেছি। সেদিন যা ঘটে ছিল সেটা সাময়িক আবেগ। আমি ভেবেছিলাম তুমি দিদিকে ই ভালোবাসো। আমি ভাবিনি দিদি আমার সাথে এরকম করতে পারে। আমার রাগ হয়েছিল মায়ের উপরে , পরে ভাবলাম মা হয়ত দিদির আর তোমার ব্যাপারটা জানত। এটা ভাবলাম কারণ আমি যখন বলেছিলাম তখন মা এমনভাবে অবাক হয়েছিল যেন আমার কথাটা অসম্ভব। তাই আমি আর কোনো কথা কাউকে জানাইনি। শুধু শুচি জানত পরে বিতান জেনেছে। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। বলে অসহায় ভাবে তাকালো তন্দ্রা। সেই আসতে হলো আর তোমার সামনাসামনি হতেও হলো এই ছেলের জন্য। এত কথা একসঙ্গে বলে তন্দ্রা হাঁফাতে লাগলো। শরীর খুব দুর্বল।অর্ক শুচিকে বললো ওকে ঘরে নিয়ে যা, রেস্ট নিক। অনেকক্ষন বসে আছে। আর ওর ছেলেকে পাঠিয়ে দে আমি একটু কথা বলি।শ্রীমতি রাখি রায়বর্ধমানক্রমশঃ ...

এপ্রিল ২৪, ২০২২
বিনোদুনিয়া

"ভূতে বিশ্বাস করেন?" কেন বললেন পরিচালক অজিতাভ বরাট?

একটি নতুন ভূতের ছবি নিয়ে আসছেন পরিচালক অজিতাভ বরাট। এই ছবির নাম ভূতে বিশ্বাস করেন? ছবির গল্প লিখেছেন অজিতাভ বরাট এবং প্রিয়া ঘোষ।গল্পটা এরকম। রাতে একটা গ্রামের ফাঁকা রাস্তা। রাস্তার চারপাশ ফাঁকা, মাঝে মাঝে কিছু গাছ। রাস্তার মাঝখান দিয়ে ছুটে চলেছে একটা গাড়ি। গাড়িটা কিছুটা যেতে দাড়িয়ে পরে, নেমে আসে একজন মহিলা। মহিলা এদিক ওদিক দেখে, দেখে চারপাশ অন্ধকার, কোনো বাড়িঘর নেই। অগত্যা গাড়ির দিকে ফিরে গাড়িতে উঠতে যাবে, ঠিক এমন সময় চোখে পরে অনেক দূরে একটা আলো। একটা মাটির বাড়ি। পুরো জায়গাটায় ওই একটাই বাড়ি, আশে পাশে আর কোথাও কিছু নেই। গাড়ি থেকে একটা টর্চ বের করে মহিলা এগিয়ে যায় সেই বাড়িটার দিকে। বাড়িটার দিকে এগিয়ে বাড়িটায় নক করতেই বেড়িয়ে আসেন একজন ভদ্রলোক, উস্কো খুস্কো চুল, চোখে চশমা। শ্রীলেখা ও শিলাজিতপেশায় তিনি পরিচালক, ভদ্রলোক ওনাকে ভেতরে আসতে বলেন, এবং আশ্বস্ত করেন যে উনি এখানে সেফ। এরপর থেকেই শুরু হয় গল্পের কাহিনী। এই গল্পে প্রবাল ব্যানার্জির চরিত্রে অভিনয় করছেন অভিনেতা শিলাজিৎ মজুমদার, ও রুশার চরিত্রে অভিনয় করছেন অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র।চিত্রগ্রহণতিনটি ভূতের গল্পের প্রথমটিতে প্রধান চরিত্র একজন পারিবারিক চিকিৎসকের ভূমিকায় দেখা যাবে অভিনেতা বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী কে। পরের গল্পে রয়েছেন অভিনেতা কুশল চক্রবর্তী একজন মনচিকিৎসকের ভূমিকায় এছাড়াও মূখ্য চরিত্রে অভিনয় করছেন অনিন্দ্য পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবির শুটিংয়ের কাজ হয়েছে ৮ই এপ্রিল থেকে এবং তা চলবে ২২ শে মে পর্যন্ত। ছবির শুটিং হবে কলকাতা, বোলপুর ও উত্তরবঙ্গে জুড়ে।

এপ্রিল ১৮, ২০২২
নিবন্ধ

শেষ দেখা (প্রথম পর্ব ) -ছোট গল্প

মানুষের জীবনে কিছু ঘটনা এমনভাবে ঘটে সেই মূহুর্তে তার ব্যাখ্যা পাওয়া না গেলে জীবনের হিসেবটাই পাল্টে যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেই ঘটনার কেন্দ্রবিন্দু যে বা যারা তারা সেই সময় ঘটনার স্রোতে ভেসে যায়। এরফলে বেশির ভাগ মানুষ পরস্পরের থেকে দূরে সরে যায়। আবার জীবন সায়াহ্নে এসে মনে যদি হয় পিছনে ফেলে আসা দিনে ফিরে যাই সেটা কি সম্ভব?এসব ভাবতে ভাবতে কলকাতায় পৌঁছে গেল তন্দ্রাদের প্লেন;তন্দ্রা আর ওর ছেলে চন্দ্রিল। আজ নতুন বছরের প্রথম দিন ; বহুবছর পর দেশের মাটিতে পা দিল তন্দ্রা।ওদের এয়ারপোর্টে রিসিভ করতে এসেছে তন্দ্রার ছোটোবেলার বন্ধু বিতান আর শূচি।। ওরা এখন স্বামী স্ত্রী। এতদিন দেশের বাইরে থেকেও ওদের মাধ্যমেই দেশের সব কথা জানতে পারে তন্দ্রা। সত্যি বন্ধুত্ব কাকে বলে ওদের দেখলে বোঝা যায়।সেই ছোটো থেকে ওরা তিনজন একসাথে আছে। সমাজের যে তলাতেই ওদের অবস্থান হোক না কেন। ওদের বন্ধুত্বের মাঝে কোন কিছু আসেনি কখনো।বেরিয়ে এসে আবেগে আপ্লুত হয়ে পরস্পর কে জড়িয়ে ধরে ওরা। যেন ছোটো বেলায় ফিরে গেছে।তিনজনের অনেক পরিবর্তন হয়েছে,চেহারার।চোখের নিচে বলিরেখা, মাথার চুল রূপোলী হয়েছে, তবুও মন যেন আজ আবার ছেলে বেলায় ফিরে গেছে।চন্দ্রিল মায়ের এই আনন্দ দেখে অবাক হলেও আশ্চর্য হয়নি। কারণ মায়ের কাছে এই দুই বন্ধুর কথা অনেক শুনেছে ও, আর এটা লক্ষ্য করেছে মায়ের চোখ মুখে একটা আনন্দ ঝরে পড়তে ছোটো বেলার বন্ধুদের কথা বলতে গেলে। আজ তো তাদের এতদিন পর সামনে পেল। এই দেখা আর এই স্পর্শের অনুভূতি ব্যক্ত করা যায় না।ওরা সবাই হৈচৈ করে গাড়িতে উঠল। কথা যেন আর শেষ হয়না। চন্দ্রিল একটা ব্যাপার খেয়াল করলে পুরানো কথা যত ই হোক গভীরে কিন্তু ঢুকছে না কেউ।যাই হোক ওরা বিতান শূচীর নতুন ফ্ল্যাটে এলো। যদিও তন্দ্রা বলেছিলো হোটেলে উঠবে। কিন্তু ওরা তা হতে দেয়নি। চন্দ্রিলের এই প্রথম ভারতে আসা। মায়ের মুখে এতদিন গল্প শুনেছে। খুব ভালো লাগছে মা কে এত খুশি দেখে।ওরা ফ্রেশ হয়ে হালকা কিছু খেলো। তারপর চন্দ্রিল ওদের জন্য বরাদ্দ ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়ল।ও ভাবে এতটা জার্নির ক্লান্তির পর মা কি করে এখনও গল্প করছে এই অসুস্থ শরীরে!! যাক অনেক দিন পরে দেশে ফিরে মা যে সব ভুলে আছে ভালো লাগছে এটা দেখে। এইসব ভাবতে ভাবতে চোখ জড়িয়ে গেল চন্দ্রিলের।তখনো বিতান, শূচি আর তন্দ্রা ডুব দিয়েছে ওদের অতীতে।তিনজনে এক পাড়াতেই থাকত। এক স্কুলে একই ক্লাসে পড়ত। তন্দ্রার বাবা ইন্জিনিয়ার আর মা ডাক্তার ছিলেন; বিতানের বাবা ছিলেন সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা মা গৃহবধূ আর শূচির বাবার একটা ছোটখাটো স্টেশনারী দোকান ছিল আর মা ছিলেন প্রাইমারী টিচার।তিনজনের ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান কিন্তু ওদের বন্ধুত্ব সবার কাছে উদাহরণ হয়ে আছে আজও।তন্দ্রা আর বিতান খুব ভালো স্টুডেন্ট ছিল আর শূচি ছিল মধ্য মানের। ওদের মধ্যে কখনও প্রতিযোগিতা ছিল না বরং বলা ভালো পরস্পরের সহযোগিতায় ওরা ভালো রেজাল্ট করত। এইভাবে স্কুল শেষ করে তন্দ্রা গেল মেডিকেল কলেজে, বিতান ইন্জিনিয়ারিং আর শূচি ভূগোল নিয়ে ভর্তি হলো।তন্দ্রার এক দিদি ছিল ওর থেকে বছর তিনের বড়ো। সে কিন্তু পড়াশোনায় অত ভালো ছিল না। কিন্তু অসম্ভব সুন্দর ছিল। তাই একটু অহংকার ছিল। তন্দ্রা যেমন সবার সঙ্গে মিশে যেতে পারত ওর দিদি চন্দ্রা কিন্তু পারত না। বোনের এই সহজ সরল স্বভাবের জন্য বোনের সঙ্গেও খুব একটা ঘনিষ্ঠভাবে মিশত না।তন্দ্রা তুই কিন্তু সেই আগের মতোই আছিস, বলে শূচি।কেন তোরা ভেবেছিলি কি আমি পাল্টে যাবে! তন্দ্রা বলে উঠলো।তুই যখন লন্ডনে পড়তে চলে গেলি ভেবেছিলাম আর বোধহয় তুই যোগাযোগ রাখবি না। কিন্তু আমরা ভূল ছিলাম তুই সেটা প্রমাণ করে দিলি কিছু দিনের মধ্যে, বিতানের এই কথা শুনে তন্দ্রা বলল তোরাও তো আমার সঙ্গে একই রকম ভাবে আছিস আজ পর্যন্ত।আজ আমি যখন দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিলাম তখন তোরা তো আমাকে সাদরে আহ্বান করলি।চল এবার একটু বিশ্রাম করি আর শরীর দিচ্ছে না। বলে তন্দ্রা উঠে চন্দ্রিল যে ঘরে শুয়ে সেই ঘরের দিকে যাচ্ছিল। ওর হাতটা ধরে শূচি বলল আজ থেকে তুই আর আমি একঘরে শোব। কত গল্প জমে আছে বলত।তন্দ্রা একটু ইতস্তত করলেও তা টিকলো না শূচির কাছে অগত্যা ওকে শূচির সাথে ওর ঘরে যেতে হোলো। শূচি ওকে ঠিক করে শোওয়ার ব্যবস্থা করে বাইরে এল। বিতান তখন ব্যালকনিতে গিয়ে বসেছে।তন্দ্রাকে দেখে খুব কষ্ট হচ্ছে জানো; ওর মতো একটা এত ভালো মেয়ে কেন যে এত কষ্ট পাচ্ছে কী জানি! ইশ্বরের বিচার নেই।স্কুলের সেই উজ্জ্বল মেয়েটা আজ শরীরের আর মনের কষ্টে একদম ভেঙে পড়েছে কিন্তু বাইরে দেখো এতটুকু প্রকাশ নেই। কথা গুলো বলে শূচি।বিতান বলে আমি সেটাই ভাবছি এতক্ষণ বসে।শোনো ও আমাদের কাছে যতদিন থাকবে ওকে কোনো রকম কষ্ট পেতে দেব না।আর একটা কথা চন্দ্রিল কতটা কী জানে আমর জানিনা তাই সাবধান। তন্দ্রা শুধু বলেছে ও চন্দ্রিলকে সব বলেছে। কিন্তু কতটা কি তো জানিনা তাই বললাম।ঠিক আছে এখন ওঠো একবার বাজার যেতে হবে।দুজনে উঠে পড়ল।~তন্দ্রার ঘুমন্ত মুখটা দেখে শূচির মনটা খুব খারাপ হয়ে যায়। ভাবে এতদিন পরে এল অথচ সময় খুব কম ওর হাতে। এই সময়টা ওর সঙ্গে কীভাবে কাটালে ওকে ভরিয়ে তোলা যাবে ভাবতে থাকে ও।শূচির মন চলে যায় সেই ছোটোবেলায়। শূচির মাকে তন্দ্রার মা খুব পছন্দ করতেন। ডাক্তার হলেও সংস্কৃতি জগতের সাথে যোগাযোগ ছিল আর শূচির মা খুব ভালো গান করতেন ও আবৃত্তি ও ভালো করতেন। একটা স্কুল ছিল ওনার যেখানে আশেপাশের ছেলেমেয়েরা গান ও আবৃত্তি শিখতে আসত। তন্দ্রা আর ওর দিদি চন্দ্রাকে ওদের মা সুমেধা আবৃত্তি আর গান শেখার জন্য ভর্তি করে দেয় শূচির মা সঞ্চারীর গানের স্কুলে। সেখানেই প্রথম বিতান আর শূচির সাথে পরিচয় তন্দ্রার। চন্দ্রা খুব ভালো গান গাইত আর তন্দ্রা আবৃত্তি করত। বিতান আর শূচিও গান গাইত। শূচির গলায় যেন মা সরস্বতী সুর ঢেলে দিয়েছেন। পড়াশোনার সাথে সাথে ওদের সংস্কৃতি চর্চাও চলত একসাথে। চন্দ্রা ওদের থেকে বড়ো ছিল ও তাই ওদের সাথে খুব একটা থাকত না।তন্দ্রার আবৃত্তি সবাইকে মুগ্ধ করত। পড়াশোনায় ভালো, দারুন আবৃত্তি করে। সঞ্চারী তন্দ্রাকে খুব ভালোবাসতেন ওর মিষ্টি স্বভাবের জন্য। ওরা একটু একটু করে বড়ো হতে লাগল। প্রাইমারী পেরিয়ে সবাই হাইস্কুলে ভর্তি হলো। ততদিনে তন্দ্রার দিদি ক্লাস এইট। ওরাও ভর্তি হলো এক স্কুলে। তন্দ্রা আর ওর দিদিকে চাইলেই কলকাতার নামকরা স্কুলে পড়াতে পারত ওদের মা বাবা, কিন্তু ওনারা সবসময় চেয়েছিলেন যে ওরা সাধারণভাবে মানুষ হোক।শূচির ভাবনাতে ছেদ পড়ল বিতানের ডাকে। রান্না বান্না হবে না নাকি?হ্যাঁ হ্যাঁ সব হবে। বলে শূচি। আজ বেশি কিছু করব না, ওরা কি খায় দেখি তারপর করছি। এই বলে ও ঘরের অন্যান্য কাজে লেগে গেল।বিতান ওর ল্যাপটপ নিয়ে বসল, চায়ের জন্য হাঁক দিয়ে।ছুটির দিনে খালি চা করে করে ক্লান্ত হয়ে পড়ি গজগজ করতে করতে চা দিয়ে গেল শূচি।তন্দ্রা উঠে পড়েছে দেখে শূচি ওর খাবার কথা জানতে চাইলে তন্দ্রা বলে দিল তেল মশলা কম দিয়ে যা করে দিবি তাতেই হবে।শূচি জানে তন্দ্রা কি খেতে ভালোবাসে। তন্দ্রা অনেকবার ওদের বাড়িতে খেয়েছে। হ্যাঁরে তোরা এখনও গান করিস? জিজ্ঞাসা করে তন্দ্রা।করি তো মাঝে মাঝে আমাদের যখন আড্ডা হয় তখন। আর তুই? কবিতা?না রে বহু দিন আগে ছেড়ে দিয়েছি।এর মধ্যেই চন্দ্রিল কখন উঠেছে ওরা খেয়াল করেনি-- মা আবৃত্তি করত? অবাক হয়ে প্রশ্ন করে।কেন রে তুই জানিস না! তোর মা অসাধারণ আবৃত্তি করত। শূচি বলে ওঠে।না গো মনি মা কোনো দিন বলেনি। হ্যাঁ, এই ডাকটা তন্দ্রাই শিখিয়েছে।আমি কবিতাই ছেড়ে দিয়েছিলাম তাই তোকে কিছু বলিনি বাবা। আর বলার মতো কোনো সিচুয়েশন তৈরি হয়নি। আজ কথা উঠল তাই জানলি।বেশ বেশ মা ছেলের মান অভিমান পরে হবে। এখন বস এখানে। বলে হাত ধরে বিতান চন্দ্রিলকে ওর পাশে বসায়।তোর মায়ের কথা আমরা বলব তোকে। ও চিরকাল ওরকম নিজের কথা কখনো বলে না। ওর সামনে কেউ ওর প্রশংসা করলে ও বিব্রত হয়, বিতান বলে।আচ্ছা মামু তোমাদের কাছে অনেক কিছু জানার আছে।ওদের নিয়ে বিতান আর শুচি মেতে ওঠে।~দুদিন টানা বিশ্রাম নিয়ে তন্দ্রাকে যেন একটু ফ্রেশ লাগছে বলল শুচি।হ্যাঁ অনেকটাই।তাহলে এবার ওর প্রোগ্রামটা জেনে নিতে হবে। সেই মতো তুমি ছুটি নিও।দেখা যাক,; তবে আমি সব জায়গায় তোমাদের সঙ্গ দিতে পারব বলে মনে হচ্ছে না। হালিশহরে তুমিই নিয়ে যেও।ওদের এই কথোপকথনের মাঝে তন্দ্রা এসে বলে শোনন আমি আগে চন্দ্রিলকে নিয়ে মেডিকেল কলেজ যাবো। বিতান একটু খোঁজ নিয়ে দেখিস কবে গেলে দেখা পাওয়া যাবে।ওর এই কথা শুনে বিতান আর শুচি পরস্পরের দিকে তাকায়।আমি এখনই জেনে নিচ্ছি কিন্তু তুই ওদের বাড়িতে যাবি না? জিজ্ঞাসা করে বিতান।বাড়িতে যাওয়াটা কি ঠিক হবে? তুই আগে ফোন টা কর তো। যেখানে যেতে বলবে সেখানে যাবো।ঠিক আছে তাই হবে বলে বিতান ফোন করে।হ্যালো অর্ক দা তুমি কি খুব ব্যস্ত? তোমাকে তো সব বলেছিলাম।হ্যাঁ দুদিন হলো এসেছে।ঠিক আছে তাহলে তুমি আগামী কাল এসো। বলে ফোন কেটে দিয়ে বলে তোকে কোথাও যেতে হবে না সে নিজেই আসবে।রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়লেও তন্দ্রা ছটফট করতে থাকে। কিছুতেই ঘুম আসে না। পুরোনো কথা সব উঁকি দেয় মনের জানালা দিয়ে।অর্ক দা ওদের স্কুলের সিনিয়র ওর দিদির বন্ধু। তাই ওদের বাড়িতে যাতায়াত ছিল। কিন্তু কোনো দিন তন্দ্রা সেভাবে দেখেনি। আর সব সিনিয়রদের যেমন দেখতে ওকেও সেইভাবেই দেখতে। প্রথম মনে দোলা লাগে ও তখন ক্লাস নাইন আর অর্ক দা টুয়েলভ। স্কুলের বার্ষিক অনুষ্ঠানে তন্দ্রা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আফ্রিকা কবিতা আবৃত্তি করে। অসাধারণ আবৃত্তি শুনে দর্শক আসন বাকরুদ্ধ হয়ে ছিল। সেই দিন যখন অর্ক দা এসে ওর আবৃত্তির প্রশংসা করে তখন তন্দ্রা অনুভব করে ওর মনের কোনে যেন একটা অন্যরকম ভালোলাগা সৃষ্টি হয়েছে।সেই ভালোলাগা ভালোবাসায় রূপান্তরিত হয় যখন তন্দ্রা ও মেডিকেল কলেজে পড়তে যায়। তিন বছর আগে দুর্দান্ত রেজাল্ট করে অর্ক ভর্তি হয়েছিলো ঐ কলেজে। তন্দ্রার দিদি তখন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। সপ্তাহান্তে তিনজন একসাথে বাড়ি ফিরত। কিন্তু তন্দ্রা ওর মনের কথা কখনো অর্ক কে জানাতে পারে নি।এইভাবে চলতে থাকে ওদের দিন।এম.এস. করে অর্ক কলকাতার হাসপাতালেই থেকে যায়। তন্দ্রা এম. ডি. চান্স পেয়ে দিল্লি যায় পড়তে।পড়া ছাড়া তন্দ্রা কিছুই জানতো না। মনে মনে অর্ককে ভালোবাসে কিন্তু প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। কথা হয় ঠিকই কিন্তু অপর জনের মনটা বুঝে উঠতে পারে না। দিদির হাবভাব দেখলে ওর মনে হয় যে অর্কদাকে বিশেষ চোখে দেখে তাই ওর বলা হয়না। আবার কখনো মনে হয় যে না অর্ক যেন তন্দ্রার প্রতি একটু দুর্বল। এই দোলাচলে কাটতে থাকে দিন~তন্দ্রার এম. ডি র পরীক্ষা হয়ে গেছে, কিছু কাজ থাকায় ও দিল্লি থেকে যায়। এবার ওর স্বপ্ন পূরণের শেষ ধাপ। ও বরাবর অঙ্কলজিস্ট হতে চেয়েছে। সেই কারণে এবার ওর বিদেশ যাত্রা। সব মোটামুটি হয়ে গেছে। রেজাল্ট টা বেরিয়ে গেলেই চলে যাবে। এমন সময় একটা সেমিনারে অর্ক র সাথে দেখা হয় ;তন্দ্রাও সেখানে ওর একজন প্রফেসরের সাথে গেছিল। ওই প্রফেসর তন্দ্রাকে খুব ভরসা করেন। অর্ক কে দেখে তন্দ্রা অবাক হয়। কিন্তু এটাও ভাবে ওকে তো এই আসার ব্যপারে কিছু জানায়নি। অর্ক ফোনে প্রায়ই কথা বলে যদিও বেশির ভাগ প্রফেশনাল কথা। তবুও একটু অবাক হয়। জানতে পারে হঠাৎই আসতে হয়েছে আর ওর এক পুরোনো বন্ধুর বাড়িতে উঠেছে।দুদিন সেমিনারে তন্দ্রা ওর সিনিয়র প্রফেসরের সাথে বেশিরভাগ সময় কাটায়, অর্কর সাথে খুব বেশি কথা হয়না। সেমিনার শেষে হঠাৎ তন্দ্রাকে ডেকে অর্ক বলেতুই রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নে আমি বন্ধুর গাড়ি নিয়ে আসছি একবার বেরোবো তোর সাথে কিছু কথা আছে। তন্দ্রা অবাকই হয় একথা শুনে, কিন্তু কিছু বলার আগেই অর্ক চলে যায়। এরপর যথারীতি ওরা বেরিয়ে পড়ে। অনেক দুর চলে যায় দুজনে । একটা রোড সাইড ধাবায় বসে খেতে আর এটা সেটা কথা বলতে বলতে রাত গড়িয়ে যায় খেয়াল করে না দুজনের কেউ। অথচ কি যে বলবে অর্ক সেটাও বোঝেনা তন্দ্রা। এরমধ্যে মেঘ জমে আকাশে। বৃষ্টি আর সঙ্গে ঝড় শুরু হয়। উপায় না পেয়ে ওই ধাবাতেই রাত কাটাবার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু সেখানেই শুরু হয় সমস্যা। ওই ধাবাতে সেই ভাবে থাকার কোনো ব্যবস্থা নেই ; একটা রেস্ট রুম আছে শুধু। অগত্যা উপায় না পেয়ে সেখানেই রাতটা কোনো রকমে কাটানোর কথা ভাবে। অনন্যোপায় হয়ে রাজী হতে হয় তন্দ্রাকে। আর সেখানেই ঘটে যায় সেই ঘটনা যা ওর জীবনের অনেক কিছু পাল্টে দিয়েছে। ওই ঝড়ের রাতে ওরা পরস্পরের মনের কথা বলে। পরস্পরের ভালোবাসা বিনিময়ের প্রমাণ নিজের অজান্তেই তন্দ্রাকে দিয়ে দেয় অর্ক। যদিও তন্দ্রাও সেদিন ভাবেনি কি ঘটে গেল।নিজেদের এতদিন ধরে রাখা আবেগের যেন বাঁধ ভেঙে গেছিল সেদিন। সম্বিত ফিরল পরদিন সকালে। তবুও তন্দ্রা বলতে পারেনি ওর বিদেশে পড়তে যাওয়ার কথা। যদিও অর্ক জানত কিছুটা। তবুও সঠিক ভাবে কিছু জানত না; তন্দ্রা যে সেই কারণে দিল্লিতে রয়েছে সেটা জানত না। অর্ক জানত যে তন্দ্রা বিদেশে যেতে চায় কিন্তু এটা জানত না যে এখনই যাবে।দিন পনের পর তন্দ্রা বাড়ি গেল সুখবর নিয়ে মা বাবার সঙ্গে দেখা করতে। এই খবরে ওর মা তো ভীষণ খুশি, বাবাও। খবরটা সামনসামনি দেবে বলে অর্কদের বাড়ি গেল, অর্ক সেদিন বাড়িতে এসেছিল। ওদের বাড়িতে আগেও অনেকবার গেছে। কিন্তু এবার একটা অন্য মন অন্য একটা ভাবনা নিয়ে গেল। অর্ক ঘরে ছিল বলে ওর মা ওকে ঘরেই যেতে বললেন এও বললেন যে যা তোর দিদি ও আছে।ঘরে ঢুকতে গিয়েও দাঁড়িয়ে পড়ল তন্দ্রা, একি দিদি অর্ককে জড়িয়ে ধরে আছে! অর্ক দিদির কথা শুনে কি বলছে! এসব কথা বলিস না! একথার মানে কী?অর্কর মনে কী আছে তাহলে? যেটা ঘটেছে সেটা কি নেহাত একরাতের দুর্ঘটনা? না আর কিছু ভাবতে পারে না তন্দ্রা। বেড়িয়ে চলে আসে ওখান থেকে একটা জরুরি কল এসেছে বলে অর্কর মাকে।তন্দ্রা ভাবে কি করবে ও? দিদি কে পথ ছেড়ে দিয়ে চলে যাবে? নাকি অর্কর সামনে জিজ্ঞাসা করবে ও কি চায়?না কিছুই জানার দরকার নেই, যেমন ছিলাম তেমনই ভালো থাকবে ভেবে তন্দ্রা অর্কর সাথে কোনো ভাবে দেখা না করে চলে যায়। অর্ক চেষ্টা করেও আর যোগাযোগ করতে পারেনি। তবে তন্দ্রা ওর মাকে ওর আর অর্কর ব্যাপারে একটু আভাস দিয়েছিল।তন্দ্রার মনে যে আশঙ্কা ছিল সেটা সত্যি হলো ও ওখানে যাওয়ার দুমাসের মধ্যেই টের পেল ও ওর ভালোবাসার উপহার নিয়ে এসেছে নিজের শরীরের মধ্যে। এর মধ্যে আরও অনেক খবর এলো।কেউ কিছু জানতে পারেনি তন্দ্রার কথা। একমাত্র শুচি আর বিতান জানত।এরপর ও পাঁচ বছর দেশে আসেনি। ততদিনে চন্দ্রিল বছর চারেকের হয়ে গেছে। একটা কাজে এসেছিল কলকাতা চন্দ্রিল কে ওর বাড়িওয়ালার কাছে রেখে। মা বাবার সাথে দেখা করেছিল। মা বিয়ের কথা বললে ওর বিয়ে না করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে ফিরে গেছিলো।যোগাযোগ নামমাত্র ছিল মা বাবার সাথে।আর শুচি ও বিতানের সাথে সব সময় যোগাযোগ ছিল।বেশ চলে যাচ্ছিল মা ছেলের জীবন। কিন্তু এই মারন রোগ আবার ফিরিয়ে নিয়ে এল ওকে অতীতের কাছে। একটা দ্বিধা থাকলেও ও চায় একবার চন্দ্রিলের কথাটা সামনাসামনি বলতে। আর ও চন্দ্রিল কেও কথা দিয়েছে একবার ওর বাবাকে দেখাবে।। তারপর চন্দ্রিল কে নিয়ে ফিরে যাবে ওদেশে। এইসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ল।শ্রীমতি রাখি রায়বর্ধমানক্রমশঃ ...

এপ্রিল ১৭, ২০২২
নিবন্ধ

স্নেহময়ীর সংসার (ছোট গল্প)

সীমা আজ তুই বুটিক যাবি না তো? কি যে বলো মা! কাল লক্ষ্মী পূজো আজ কয়েকজন বড় কাস্টমার আসবে; আমি না থাকলে চলে?তাহলে পূজোর বাজার কখন হবে? ঠাকুর আনতে হবে।সব হবে জননী, এই সীমা যতক্ষণ আছে তোমার সব হবে। নো চিন্তা। মোটামুটি দুপুর ১টার মধ্যে সব কাজ গুটিয়ে ফেলব। তুমি ততক্ষণ রীনাদিকে নিয়ে আর দুচার জন মেয়ে কে নিয়ে পূজোর জায়গাটা ঠিক করে নাও। সাজানোর জিনিসপত্র তো আমাদের ঘরেই আছে। আর যেসব লাগবে সেসব কেনা আছে।তুমি ঠাকুরমশায়ের কাছ থেকে যে ফর্দ করে ছিলে সেটা সঙ্গে নিতে ভুলো না যেনো।হ্যাঁ রে হ্যাঁ মনে করে নিয়ে নেব ঠিক।কিন্তু নাড়ু, মুড়কি এইসব আমি বাড়িতে বানাবো বলে রাখলাম। কিন্তু কখন করবো? ভাত খেয়ে তো ওসব করা যাবে না।কালকেই হবে ওসব। দুদিন উপোস করার তো কোন প্রয়োজন নেই। কাল সবাই মিলে করে নেবো। তুমি শুধু বলে দেবে কিভাবে কি করতে হয়।তাই হবে; তুমি যখন বলে দিয়েছ তার তো অন্যথা হবার জো নেই। বলে হাসেন স্নেহময়ী দেবী। সীমাকে বলেন যা রেডি হয়ে নে, রীনা কে বলি তোর জলখাবার দিতে।ওকে! বলে সীমা বাথরুমে ঢুকল আর স্নেহময়ী দেবী ঢুকলেন রান্না ঘরে।এই বাড়িতে সীমারা তিনজন থাকে, সীমা, স্নেহময়ী দেবী, আর রীনা। বছর পাঁচ আগে সীমা রীনা কে রাস্তা থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।ওরা তখন অন্য জায়গায় থাকতো। মা, মেয়ে মিলে হাতে তৈরি নানারকম ঘরসজ্জার জিনিস, শাড়ির কাজ, বিভিন্ন অলংকার বানিয়ে বিক্রি করত, সীমার কিছু চেনা মানুষ জনের মাধ্যমে। সেই সময় একদিন রাতে সীমা বাড়ি ফেরার পথে দেখে একজন মহিলা বসে কাঁদছে; রাস্তায় লোকজন খুব বেশি নেই, যারা আছে তারা না দেখে পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছে। সবাই ঝামেলার ভয় পায়। সীমার মনে হলো মহিলা এই এলাকার নয়, তাই এগিয়ে গিয়ে জানতে চাইল কি হয়েছে। মহিলা যা বলল তার অর্থ তার দাদা তাকে ওখানে বসিয়ে রেখে আসছি বলে চলে গেছে।সীমা আরও কিছু কথা বলে জানতে পারে কি ঘটেছে।মহিলা স্বামী পরিত্যক্তা,নিঃসন্তান দাদার সংসারে থাকে। সুন্দর বনের দিকে একটা গ্রামে বাড়ি। দাদা বোনকে ভালোবাসলেও বৌদি একদম সহ্য করতে পারে না। বৌদির ভয়ে কিছু বলতেও পারে না বোনের হয়ে। এই কদিনে অশান্তি আরও বেড়েছে; কারণ মহিলা খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে সংসারের কাজ কিছু করতে পারছিল না। আজ একটু সুস্থ হয়েছে তাই দাদা ডাক্তার দেখানোর কথা বলে শহরে নিয়ে এসেছে।এসব কথা শুনে সীমা পাশে চায়ের দোকানে জিজ্ঞাসা করে মহিলা কতক্ষণ ওখানে বসে আছে?দোকানদার বলে সেই বিকেল থেকে বসে আছে। সীমা তখন তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে। তখন থেকেই ওই মহিলা মানে রীনাদি ওদের সবসময়ের সঙ্গী।সীমার কাছে হাতের কাজ শিখে রীনা ও ওদের সাথে যোগ দিয়েছে। সীমাকে নিজের ছোট বোনের মত ভালোবাসে রীনা।সীমা বাথরুম থেকে বেরতেই রীনা বলল দিদি নাও তোমার খাবার রেডি তুমি খেয়ে নাও।হ্যাঁ খাচ্ছি বলে সীমা রেডি হতে ঘরে গেল।খেতে খেতে সীমা রীনাকে বলে দিল দুপুরে ও ফোন করলে রীনা যেন মা কে নিয়ে দোকানে চলে যায়।তুমি দুপুরে কিছু খাবে না? জিজ্ঞাসা করে রীনা।সে দেখা যাবে। তোমরা দুপুরে বারোটার মধ্যে খেয়ে নিও। একটু বিশ্রাম না নিলে মা বেড়োতে পারবে না।-----o-----ঠিক দুপুরে কাজের মাঝেই সীমা ফোন করে মনে করিয়ে দেয় একটার সময় আসতে হবে। সীমা কাজের মধ্যে ডুবে যায়। একবছর হলো এখানে বড়ো করে দোকানটা খুলেছে। এর আগে বাড়িতে বাড়িতে গিয়েই অর্ডার নিয়ে কাজ করতো। শহরের মহিলাদের মধ্যে যারা হাতে তৈরি জিনিস পছন্দ করে তাদের খুব পছন্দের এই স্নেহময়ীর সংসার। হ্যাঁ এটাই নাম দিয়েছে সীমা। হাতে তৈরি বিভিন্ন রকম গয়না, নানারকম কাজ করা পোষাক; ঘর সাজানোর বিভিন্ন রকম সামগ্রী এখানে পাওয়া যায়। এছাড়া বিভিন্ন রকম আচার, বড়ি, মা ঠাকুমার সময়কার নানাবিধ খাবারও এখানে পাওয়া যায়। লক্ষ্মী পূজো উপলক্ষে অনেক নাম করা বাড়ি থেকে নাড়ু, মোয়া মুড়ি ইত্যাদি ঘর সাজানোর জিনিসপত্র, শাড়ির অর্ডার এসেছে। সেই সব কারখানা থেকে দোকানে এনে আজ কাস্টমারদের দেবে বলে সীমার দোকানে আসা।সীমা একজনকে অর্ডারের মাল বুঝিয়ে দিচ্ছে এমন সময় একজন বয়স্ক মহিলা আর সঙ্গে একজন অল্পবয়সী বৌদ্ধ দোকানে এটা ওটা দেখতে থাকেন। দেখতে দেখতে মহিলা হঠাৎ সীমার কাছে এসে বলেন...আরে তুমি সীমা না? সান্যাল বাড়ির বৌ! তুমি বুঝি এখানে কাজ করো? শুনেছিলাম......বলে কিছু একটা বলতে যাবেন এমন সময় দোকানের অন্য একজন সীমাকে ডাকে দরকার আছে বলে।যাই, বলে চলে গিয়ে সীমা ওই মহিলার হাত থেকে রেহাই পায়।মহিলা তখন ঠোঁট উল্টে বলেন কি জানি বাবা? ঠিক চিনলাম তো!সীমার মনটা হঠাৎ বিষন্ন হয়ে গেল। ওর ও চেনা লাগে ভদ্রমহিলাকে কিন্তু ঠিক মনে করতে পারে না, এমন সময় ফোন বেজে ওঠে... মা, তুমি এসে গেছো? একটু ভিতরে এসে বসো আমি ১৫ মিনিটের মধ্যে বেরোচ্ছিকাজ সেরে বাজারে বেরোয় ওরা। যেখান থেকে ওদের বাড়ির ঠাকুর নিত সেখানে আসে। জায়গাটা দেখে মা কেমন বিহ্বল হয়ে পড়ে খেয়াল করে সীমা। মায়ের চোখ যেন ছলছল করে ওঠে। সেটা খেয়াল করে সীমা বলে ওঠে দেখো, কোন দোকান থেকে কি নেবে; নিজের মনের মতো করে বাজার করো।ঠাকুর কোথা থেকে নেবে? বলে সীমা স্নেহময়ী র দিকে তাকাতেই ওনার পিছনদিকে একটু দূরে যাকে দেখলো তাকে দেখবে এখানে আশা করেনি সীমা। এই ক বছরে অনেক পরিবর্তন হয়েছে তার চেহারায় তবুও চিনতে অসুবিধা হচ্ছে না। একটু যেন মনের কোথাও টনটন করে উঠল। সঙ্গে সঙ্গে ওখান থেকে সরে গেল মাকে নিয়ে।-----o-----রাত প্রায় বারোটা, সীমা ঘরের লাগোয়া বারান্দায় এসে দাঁড়ালো। আকাশে চতুর্দশীর চাঁদ, চারিদিক জ্যোৎস্নার আলোয় ভেসে যাচ্ছে । সীমার খুব পছন্দের এই সময় কিন্তু আজ পারছে না জ্যোৎস্নার স্রোতে গা ভাসাতে। এত আলোতেও ওর মনের আকাশ আজ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে রয়েছে। ও ভাবছে কেন মানুষের জীবনের এত পরিবর্তন হয়! যদি এমন কিছু থাকত যার সাহায্যে আবার ফিরে পাওয়া যেত ছোটোবেলার দিনগুলো।মা, বাবা আর দাদার আদরের দুলালী সীমানা সেনগুপ্ত আজ তাহলে এত কষ্ট পেত না। খুব আদরের ছিল ও। ওরা দুই ভাইবোন - সীমান্ত আর সীমানা। সীমান্ত অত্যন্ত মেধাবী ছিল আর সীমানা ছিল মধ্য মেধার মেয়ে। তবে সীমানা মানে সীমার বিশেষ গুন ছিল ও খুব ভালো আঁকতে পারত। ছোটবেলা থেকেই সখ ছিল ড্রেস আর জুয়েলারী ডিজাইন করবে।দাদার আদরের ছোটো বোন ছিল। কিন্তু সেই দাদাকে হঠাৎ একটি অ্যাক্সিডেন্টে হারিয়ে ফেলে। আর তারপর থেকেই বাবা অসুস্থ হয়ে পড়ে। সীমা তখন কলেজে পড়ে।এরপর থেকেই যেন জীবনের আনন্দের দিন গুলি শেষ হতে শুরু করে। জীবন উল্টো স্রোতে বইতে থাকে। যে বাবা মা চাইত সীমা নিজের পায়ে দাঁড়াবে তারাই বিয়ের জন্য উঠে পরে লাগলো। ওর তখন ফাইনাল ইয়ার এক আত্মীয়ের বাড়িতে বিয়ের নেমন্তন্নে গিয়েছিল, সেখানে ওকে দেখে পছন্দ হয় ওই এলাকার নামকরা ব্যবসায়ী অসীম রায়চৌধুরীর। তার একমাত্র ছেলের সঙ্গে বিয়ের প্রস্তাব আসে।সীমার বাবা মা প্রস্তাবটা আনন্দের সঙ্গে ও আগ্রহের সঙ্গে গ্রহন করেন। আর করবে নাই বা কেন; প্রত্যেক মা বাবা যেটা চায় মেয়ের জন্য ভালো ঘর ও সুদর্শন বর সেদিক থেকে এ যেন মেঘ না চাইতেই জল।বিশাল হার্ডওয়্যারের ও বিল্ডিং মেটেরিয়ালের ব্যবসা। দেখতেও সুন্দর অরিন। হ্যাঁ ওটাই পাত্রের নাম।যাইহোক সীমা সব স্বপ্ন বুকে চেপে এক গোধূলি লগ্নে অরিন রায়চৌধুরীর সাথে নিজের জীবন শুরু করেছিল। শ্বশুর বাড়িতে এসে প্রথমদিনেই বুঝতে পেরেছিল শাশুড়ি নামক মানুষটির কোনো গুরুত্ব নেই এই বাড়িতে। এ বাড়িতে সব চলে শ্বশুর মশায় ও তার বোন অনীতা অর্থাৎ পিসি শাশুড়ির কথায়। যদিও তিনি বিবাহিত তবুও দাদার উপর তার প্রভাব বড্ড বেশি। আর আছে সীমার ঠাকুমা শাশুড়ি, যে প্রায় অথর্ব কিছুই পারে না ছেলের বউ ছাড়া তবুও তাকে ভৎর্সনা করতেও ছাড়ে না। সীমার এসব খুব খারাপ লাগে কিন্তু কিছু বলত পারে না। যতই হোক নতুন বউ। আর ও সবকিছু না ঠিক মত জেনে বুঝে কিছু যে করতে নেই সেটা খুব ভালো করে জানে ও। তাই ও চুপচাপ থাকে। ওকে কেউ কিছু বলেনা। শুধু পিসি শাশুড়ি আসলে একটু সমস্যা হয় উনি সব বিষয়ে মতামত প্রকাশ না করে পারেন না। আর ঠেস দিয়ে কথা শোনানো যেন ওনার সহজাত। তবু ও কিছু বলেনা ওর রুচিতে বাধে।শ্বশুর বাড়িতে বেশ কয়েকমাস কেটে গেছে। সীমা এর মধ্যে একদিন অরিনকে ওর স্বপ্নের কথা বলে ছিল। অরিন শুনে হেসে বলেছিল ওসব ভুলে যাও। এখন তুমি আমাদের বাড়ির বৌ। আমাদের বাড়ির বৌ রা বাইরে গিয়ে কাজ করেনা। সীমা খুব অবাক হয়ে ছিল অরিনের মুখে এরকম কথা শুনে। এই যুগের ছেলে হয়েও কিভাবে এই ধরনের চিন্তা ভাবনা পোষণ করে!অরিন আরও বলে আমাকে যা বলেছ বলেছ আর যেন কাউকে কিছু বলতে যেওনা।না, সীমা আর কাউকে কখনো বলেনি। তবে আঁকা ও ছাড়তে পারেননি। আঁকতে ও শুধু ভালোই বাসে তা নয়, ওর আঁকা দিয়েই নিজের পরিচয় তৈরি করতে চায়। ওর বাবার কথা মত ও বিশ্বাস করে মনের ইচ্ছা প্রবল হলে সেটা পূরণ হয়।এইভাবে ওর জীবন বইতে থাকে শ্বশুর বাড়িতে। ও চেষ্টা চালায় সব রকম ভাবে মানিয়ে চলতে। রান্না ঘরে কাজ করতে গিয়ে শাশুড়ি মায়ের কাছে স্নেহের পরশ পায়। আর বোঝে কিভাবে মুখ বুজে সবার সুখ সুবিধার খেয়াল রাখেন মানুষটি। অথচ পরিবর্তে কারও কাছে প্রাপ্য সম্মান টুকুও পান না। পান থেকে চুন খসলেই শুধু গঞ্জনা জোটে। ধীরে ধীরে এর কারণ বুঝতে পারে। ওনার শ্বশুর মশায় গরীব বন্ধুর মেয়েকে পছন্দ করে এনেছিলেন ওনার গুণ দেখে। দেখতে অতি সাধারণ, লেখাপড়াও বেশী দুর করেননি। তাই ওনার তথাকথিত শিক্ষিত স্বামী কোনো দিন ওনাকে সঠিক মর্যাদা দিতে পারেন নি।সীমার শ্রদ্ধা হয় না দেখা দাদা শ্বশুরের প্রতি। উনি বুঝে ছিলেন কিভাবে সংসার ধরে রাখতে হয় সেটা মা পারবেন। তাই উনি বড়ছেলের বৌ করে এনেছিলেন শাশুড়ি মাকে।সীমার সঙ্গে শাশুড়ি মায়ের কথা খুব বেশি হয়না। তবুও বোঝে মানুষটা কতটা মমতাময়ী। একদিন দুপুরে সীমা নিজের ঘরে বসে একটা হারের ডিজাইন করছে, বাড়ি তখন মোটামুটি ফাঁকা। শাশুড়ি মা আসেন...সীমা কী করছো মা? বলেন দরজার বাইরে থেকে।সীমা তাড়াতাড়ি খাতা গুটিয়ে মা ভেতরে আসুন বলে বিছানা থেকে নামতে যাবে......না না তোমাকে নামতে হবে না। তুমি শুয়ে থাকো। সকাল বেলা বললে শরীরটা ভালো নেই তাই দেখতে এলাম।এখন ঠিক আছি। সকাল বেলা একটু গা ম্যাজম্যাজ করছিল। আপনি বসুন না।তুমি কি কিছু লিখছিলে? খাতার দিকে তাকিয়ে জানতে চান।না মানে লিখছিলাম না, আঁকছিলাম।তুমি আঁকতে জানো? কই দেখি যদি তোমার আপত্তি না থাকে কি আঁকছিলে দেখি।না না আপত্তি থাকবে কেন? এইতো দেখুন না বলে এগিয়ে দেয় খাতাটা।বাঃ... চমৎকার ডিজাইন করোতো তুমি। এমনিই আঁকলে? আচ্ছা তোমার বিয়ের গয়না গুলো কি তুমি নিজে ডিজাইন করেছ?মাথা নিচু করে থাকায় সত্যি টা বোঝেন উনি। বলেন এই গুণ কোনো কাজে লাগাতে পারবে না। বলে মুখটা কালো করেন।সীমা তখন বলে আসলে মা আমার দাদার মাধ্যমে এই ডিজাইনগুলো দু এক জন জুয়েলারের কাছে এগুলো পাঠাই।খুব সাবধান এসব যেন কেউ না জানে। এ বাড়িতে এসব জানতে পারলে কুরুক্ষেত্র বেধে যাবে। বলে উনি উদাস হয়ে যান। মনে হয় যেন কোনো কষ্ট চেপে রাখছেন।এইভাবে শাশুড়ি আর বৌমার মধ্যে সখ্যতা শুরু। দুপুর গুলো গল্প করে এঁকে কাটে। যদিও শাশুড়ি মা বেশীক্ষন বসতে পারেন না তার শাশুড়ির যন্ত্রনায়।এইভাবে দুবছর কেটে যায়। সীমার পিসি শাশুড়ি আর ঠাকুমা শাশুড়ি বাচ্চার জন্য পাগল করতে থাকে। কিন্তু শাশুড়ি মা কখনো কিছু বলেন না। এরমধ্যে সীমা আবিষ্কার করে ওর শাশুড়ি মায়ের গুনাবলী। খুব ভালো গান জানে, ভালো কবিতা লেখেন, আর দারুণ সেলাই জানেন।সীমার সঙ্গে বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয় ওর শাশুড়ি মায়ের। চলতে থাকে দিন।ঠিক বছর দশ আগে লক্ষ্মী পূজার দুবার দিন আগে দুপুর বেলা ওর শাশুড়ি মা কে বলে বেরোয় ওর দাদার বন্ধু অমিতের সাথে দেখা করতে ওদের বাড়িতে। অমিত আর সুনন্দা দুজনেই সীমাকে খুব ভালোবাসে। ওদের বাড়িতে সীমা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। বাড়িতে খবর দিতে পারে না।সন্ধ্যাবেলা দোকান থেকে বাড়ি ফিরে সীমার শ্বশুর আর অরিন যখন সীমার খোঁজ করে তখন সীমার শাশুড়ি মা বলেন ও বাপের বাড়ি গেছে ওর মায়ের শরীর খারাপ শুনে।অরিন ফোন করে সীমাকে কিন্তু পায় না। রাত বাড়তে থাকে তখন ওর বাপের বাড়িতে ফোন করে জানতে পারে সীমা যায়নি ওখানে। ঠিক সেই সময় অমিতের সঙ্গে সীমা বাড়িতে ঢোকে।ব্যস শুরু হয় শ্বশুর, স্বামী, ঠাকুমা শাশুড়ির অকথ্য ভাষা। যা ও কখনো ভাবতেও পারেনি। ওকে কিছু বলার সুযোগ দেয় না উপরন্তু অমিতকে অপমান করে ওর স্বামী। ওর শ্বশুর আর অরিন দুজনেই ওকে তো নানা কথা শোনায় ওর শাশুড়ির গায়ে হাত তোলেন। অরিন দাঁড়িয়ে দেখে অথচ কোনো প্রতিবাদ করে না। সীমা সেটা মেনে নিতে পারে না।না আর সহ্য করতে পারে নি সীমা। আত্মসম্মান বিসর্জন দিয়ে থাকতে পারেননি ওর শাশুড়িও...... সেদিন জীবনে প্রথম রুখে দাঁড়ানোর সাহস দেখিয়ে বেরিয়ে আসেন সীমার হাত ধরে।সেদিন থেকেই সীমার যুদ্ধ শুরু। ওর এই যুদ্ধে পাশে পেয়েছে ওর মা বাবাকে আর অমিতদা সুনন্দা বৌদিকে। আর সীমার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছেন সীমার শাশুড়ি মা স্নেহময়ী দেবী। অমিত তো সীমার ডিজাইন বিক্রির ব্যবস্থা করেছিল সেটা আরও বাড়িয়ে দেয়। তার সাথে ওরা নিজেরা নানারকম জুয়েলারী তৈরি করতে লাগল। সীমার বেশ কিছু টাকা আগে থেকেই জমেছিল অমিতের সাহায্যে ব্যাঙ্ক থেকে কিছু লোন নিয়ে ছোটো করে একটা বুটিক খুললো। সুনন্দা যে স্কুলে পড়ায় সেখানে ওদের কাজ নিয়ে গিয়ে দেখায়। দিদিমনিদের খুব পছন্দ হয়। এইভাবে একটু একটু করে পরিচিত হতে থাকে ওদের কাজ। এরপর ওরা নিজেরাই দুঃস্থ মেয়েদের শেখাতে শুরু করে, ওদের আশ্রয় দেয়। ওর বাপের বাড়িতে ই শুরু করেছিল। আজ সীমার বাবা মা কেউ নেই। ওই বাড়িতেই ও গড়ে তুলেছে ওর ওয়ার্কশপ আর মেয়েদের থাকার জায়গা। আজ সীমার নিজের পায়ে দাঁড়াবার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আজ এই স্নেহময়ীর সংসারে সদস্য সংখ্যা চল্লিশ। সব সামলায় সীমা। আর ওয়ার্কশপে কিভাবে কাজ হবে কি হবে তার তদারকি করেন স্নেহময়ী দেবী। সীমা আজ সফল মহিলা।কিন্তু মনের কোনে একটা ঘরের স্বপ্ন সবমেয়েরই থাকে। সেটা সীমারও ছিল। আর অরিনকে ভালোবেসে ফেলেছিল। তাই আজ হঠাৎ অরিনকে দেখে বুকের ভেতর গোপন ব্যথাটা জেগে ওঠে।মনে হয় মানুষটা যদি একটু স্বাবলম্বী হতো বাবার হাতের পুতুল না হয়ে তাহলে হয়তো স্নেহময়ীর আসল সংসারটা সুন্দর হতো আর এই পরিচয়টা ওখান থেকেই গড়ে উঠত।সীমার চোখের জল যেন আজ বাঁধ মানছে না। এরমধ্যে কখন স্নেহময়ী দেবী এসে দাঁড়িয়েছেন সীমা বুঝতে পারে নি।ওর মাথায় হাত রাখেন... আমার ছেলেটাও ওর বাবার মত ঠুনকো আভিজাত্যের অহংকার নিয়েই রইলো। তোকে চিনতে পারলোনা। আমিই মনে হয় তোদের জীবনটা সাজাতে দিলাম না।মা একদম এসব কথা বলবে না। তুমি কেন নিজেকে দায়ী করছো! তোমার ছেলের মেরুদণ্ডটাই তৈরি হয়নি।সব বুঝলাম, কিন্তু তোর চোখে জল কেন? আজ বাবুকে দেখে কষ্ট হচ্ছে? আজও ভুলতে পারিসনি ওকে?অবাক চোখে তাকায় সীমা ওনার দিকে। আজ আবার নতুন করে চিনলো মাকে।সীমা জড়িয়ে ধরে ওর মাকে। আজ ওরা আর শাশুড়ি বৌমা নয়। সত্যি মা মেয়ে।স্নেহময়ী দেবী বলেন, আজ আমার সত্যি করে সংসার গড়ে উঠেছে। আমি আজ কতজনের মা। সব তোর জন্য সম্ভব হয়েছে। আজ আমরা কোন দুঃখ করবো না। আজ আমার লক্ষ্মী পূজো সার্থক।শ্রীমতি রাখি রায়

এপ্রিল ০৩, ২০২২
নিবন্ধ

পয়লা এপ্রিল এক তুমুল প্র্যাকটিকাল জোক বর্ষণ, বা মুরগী করার দিন

ও মানা শিগগির আয় , তোর অমন সুন্দর ফুলটা দ্যাখ কে নিয়ে পালিয়েছে!-- আধো ঘুমে দিদিমার আর্তস্বর কানের ভিতর দিয়া মরমে পশিতে সময় লাগলো সেকেন্ড কয়েক, তার পরেই চিলচিৎকার করে খাট থেকে লাফিয়ে নেমে ছুটলো রূপা--- উঠোনের নতুন গোলাপগাছটায় প্রথম কুঁড়ি পাপড়ি মেলেছে আগের দিনই... ওটা রূপার একান্ত নিজস্ব সম্পত্তি ... কমাস ধরে জল দিয়ে গোড়া খুঁড়ে পোকা ছাড়িয়ে বড় করেছে গাছটাকে ... প্রথম ফুল ফোটার বিস্ময়ে - পুলকে-গর্বে কাল থেকে যেন মাটিতে পা-ই পড়ছিল না রূপার ... কি রং , কি সুন্দর , কি বড় গোলাপটা ... ঘুরতে ফিরতে, পড়ার ফাঁকে, কাজের মাঝে একবার করে এসে প্রাণভরে দেখে যাচ্ছিল ফুলটাকে । কে নিল সেই ফুল !রাগে দুঃখে মাথায় কিছু আসছিল না। দুটো করে সিঁড়ি লাফাতে লাফাতে একতলায় নেমে এসে উঠোনে ঝাঁপিয়ে পড়তেই চক্ষুস্থির --- ঐ তো সবুজ পাতার ফাঁকে নয়নভোলানো হাসি হাসছে টকটকে লাল গোলাপটা ! হতভম্ব রূপা ছোট্ট ফ্রকের পিছনের বোতামটা লাগাতে লাগাতে এদিক ওদিক তাকাতেই চোখে পড়লো দিদিমার একগাল হাসি --- এপ্রিল ফুল !রূপার মতো এমন পিলেচমকানো এপ্রিল ফুলের স্মৃতি আমার ছোটবেলায় অবশ্য নেই । ঠকে যাওয়া ছিল মূলতঃ স্কুলেই সীমাবদ্ধ --- অমুক ডাকছে শুনে তার কাছে গিয়ে বেকুব বনে যাওয়া ; তমুক চিঠি পাঠিয়েছে জেনে খাম খুলে সাদা কাগজ বা এপ্রিল ফুল বাণী পাওয়া ; লজেন্স উপহার পেয়ে চকমকে মোড়কে ঢিল প্রাপ্তি ; বড়জোর রাস্তায় সাইকেল চালানোর সময় হঠাৎ চেন পড়ে গেছে, চেন পড়ে গেছে শুনে থতমত খেয়ে নেমে পড়ে হো হো হাসি-সহ এপ্রিল ফুল শোনা ।এপ্রিল ফুলের মিঠে-কড়া কিস্সা আমাদের ছোটবেলায় বিলিতি গল্পবই আর পত্রপত্রিকাতেই সুলভ ছিল বেশী। পঞ্চম না ষষ্ঠশ্রেণীর পারিজাত রিডার-এও ছিল মজাদার এক ছোটগল্প --- কী ভাবে উপহার হিসেবে আসা রঙীন কাগজে মোড়া পিচবোর্ডের বাক্স তুমুল উৎসাহের সাথে খুলে পাওয়া গেল শুধু কপির পাতা ! তবে এমনতরো কড়া কৌতুক ই-কমার্স বা ক্যুরিয়ার কোম্পানীগুলি আজকাল হামেশাই করে থাকে আমাদের সাথে --- সেলফোন অর্ডার করে খালি প্লাস্টিকের খাপ মেলা , দামী সুগন্ধী বা প্রসাধনীর জায়গায় প্যাকেটবন্দী ইঁট বা পাথরের টুকরো আবিষ্কার --- এ জাতীয় তামাশার শিকার হয়েছেন অনেকেই , শুধু এপ্রিল ফুল -টা লেখা ছিল না, এই যা !আসলে তো পয়লা এপ্রিল এক তুমুল প্র্যাকটিকাল জোক বর্ষণ, বা মুরগী করার দিন, যার উপভোক্তা আমার মতো বোকারা। বারবার বেকুব বনে গিয়েও তাই মনে হরষ --- বছরে এই একটা দিন তো দাগানো আছে আমাদের মতো বাস্তববুদ্ধিহীণ বেহিসেবী আহাম্মকদের জন্যে ! এই আমরা, যারা বারবার ঠকেও এখনো বিশ্বাস রাখি মানুষের শুভবুদ্ধিতে, ছোটবড় নানা কর্তৃপক্ষের হরেক কিসিমের মিথ্যাচারে অনবরত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েও আবার এগিয়ে যাই কর্তব্যের টানে, আত্মীয়বন্ধুদের বিশ্বাসঘাতকতায় বুকের গভীরে গোপন রক্তক্ষরণ উপেক্ষা করে ফের বাড়িয়ে দিই সাহায্যের অনাবিল আশ্বাস --- আমাদের মতো বারোমেস্যে এপ্রিল ফুল আর কারা ? যুগে যুগে এই আমরাই সাগরসঙ্গমে নবকুমার হয়ে কাঠ আনতে নেমে গেছি শ্বাপদসঙ্কুল বেলাভূমির জঙ্গলে , আর প্রাজ্ঞ সহযাত্রীরা অদৃশ্য হয়ে গেছে এপ্রিল ফুল বলে।তাও আমাদের স্বভাব যায় না মলে! যতই হাসুক, যতই মুরগী করুক বুঝদার লোকেরা --- তবু আমি বোকাই হবো, এটাই আমার অ্যাম্বিশন ! ডঃ সুজন সরকার,বর্ধমান।

এপ্রিল ০২, ২০২২
নিবন্ধ

ভয়ংকর একাকিত্ব (ছোট গল্প)

মনের আনন্দে টৃঙ্কা আজ মায়ের জন্মদিনের কেক খাচ্ছে মায়ের কাছে বসে।সোফায় মা নিশ্চিন্তে ঘুমচ্ছে।মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে টৃঙ্কা আপন মনে বলে চলেছে ----আজ জেদ না করলে তুমি তো আসতেই না আর আমিও আবার আগের মতো তোমাকে পেতাম না;এবার তো শুধু তুমি আর আমি থাকব মা। আর আমাকে রেখে যেও না।সকালে ফোন করে নমিতা মাসি কে বলে দিয়েছি আমরা দুরে বেড়াতে যাচ্ছি এখন আসতে হবে না।মা আজ কতদিন পরে শুধু তুমি আর আমি বলো।সেই পুরনো ছোটো বাড়িটাতে কি মজা হত তুমি আর আমি যখন থাকতাম। বাবা তো সব সময় অফিসের কাজে বাইরে।কিন্তু এখানে এসে সব কেমন পাল্টে গেল। তুমিও অফিসে যেতে লাগলে, বাড়ি ফের দেরিতে আমি তখন ঘুমিয়ে পরি। ছুটির দিনে তোমার পার্টি বা অফিস ট্যুর।আমি খুব একা হয়ে গেছিলাম মা। আর তোমাকে বলা হয়নি ঐ তোমার অফিসার সৃজন আঙ্কেল কে আমার একদম ভালো লাগে না। তুমি যেন কেমন হয়ে যাও ও আসলে।স্কুলে রূপমকে সব বলি। ও আমাকে অন্য জগতে নিয়ে গেল কিন্তু সেখানে তো তুমি নেই। আমার যে তোমাকে চাই মা। তাই তো ল্যাব থেকে চুরি করে এনে রেখে দিয়েছিলাম। আজ তোমাকে তাই দিয়ে স্পেশাল কেক বানিয়ে খাওয়ালাম।তুমি তো কেক টা খেয়ে কেমন আরাম করে ঘুমোচ্ছ।আর আমাকে ছেড়ে কোথাও যাবে না তুমি।শ্রীমতি রাখি রায়

মার্চ ২৭, ২০২২
  • ‹
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • ›

ট্রেন্ডিং

রাজ্য

নৌকো ডুবিতে প্রাণ বাঁচল ১৩ জনের, নিখোঁজের তল্লাশিতে ডুবুরি

মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান ফেরিঘাটে মধ্যরাতে নৌকায় পারাপারে ঘটলো বড়সড় বিপত্তি। ১৩ জন প্রাণে বাঁচলেও নিখোঁজ এক শ্রমীক। স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ১২ জন শ্রমীক ধুলিয়ান কলাবাগান সংলগ্ন ফেরিঘাট আসে মালদা যাওয়ার জন্য। ঘাটের নৌক রাত ৯ টার পর বন্ধ থাকায় দুই জন মৎস্যজীবীকে বলে নদী পারাপার করারা জন্য।জানা গিয়েছে, দুই মৎস্যজীবী রাজি হয়ে যায় ৮০০ টাকার বিনিময়ে। কিন্তু তাঁদের নিজের নৌক না থাকায়, রঞ্জন মন্ডলকে না জানিয়ে তাঁর নৌকা নিয়ে তাঁদের পারাপার করতে যায়। প্রশাসনের নিয়মকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে নৌকা ঘাট বন্ধ থাকায় ছোট নৌকা করে প্রায় ১২ জন শ্রমীক নিয়ে ধুলিয়ান কলাবাগান সংলগ্ন ফেরিঘাট থেকে পারলালপুর ঘাটের উদ্দেশ্যে যাওয়ার সময় হঠাৎ নৌকা উল্টে যায়। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটি আসে সামশেরগঞ্জ থানার পুলিশ, বিএসএফ ও স্থানীয় মাঝিরা। রাতে জীবিত ১৩ জনকে উদ্ধার করা গেলেও নিখোঁজ হয়ে যায় এক ব্যাক্তি। নিখোঁজ ব্যক্তির পরিবার সুত্রে জানা যায়, নিখোঁজ ব্যক্তির নাম জাহাঙ্গীর শেখ। বয়স ৩৫ বছর। বাবার নাম লিয়াকত আলি। বাড়ি মালদা জেলার বৈষ্ণবনগর থানার বাখরাবাদ গ্রাম। সকাল থেকে নিখোঁজ শ্রমিকের পরিবার ও পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগ ডুবুরি টিম গঙ্গায় তল্লাশি চালাতে থাকে।পুলিশ সুত্রে জানা যায়, দুই জন মৎসজীবীকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল রাতে ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় সামশেরগঞ্জ থানার পুলিশ ও বৈষ্ণবনগর থানার পুলিশ। সকালে ডুবরির টিম তল্লাশি করছে। ইতিমধ্যে ডুবে যাওয়া নৌকা টিকে উদ্ধার করেছে সামশেরগঞ্জ থানার পুলিশ । পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।

জুন ২১, ২০২৫
রাজ্য

বারাসতে ভয়াবহ আগুন, মুহূর্মুহু বিস্ফোরণের শব্দ, ঘটনাস্থলে দমকলের ২০টি ইঞ্জিন

ভয়াবহ অগ্নিকান্ড বারাসাত। বিধ্বংসী আগুনে জ্বলছে বামনমুড়ায় প্যাম্পার্স ফ্যাক্টরি। আগুনের ফলে বন্ধ করা হয়েছে বারাসাত টাকি রোডের যান চলাচলও। প্রথমে স্থানীয় আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেও ব্যর্থ। দমকলের ২০টি ইঞ্জিন আগুন নেভানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।শনিবার সন্ধ্যায় হঠাৎই আগুনের লেলিহান শিখা দেখা যায় বারাসাতের বামুনমুড়া এলাকায়। অগুন নজরে আসতেই প্রথমে স্থানীয়রা আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। ২০টি দমকল ইঞ্জিন পৌঁছালেও এখনও পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। গলগল করে ধোঁয়া বের হতে থাকে। আগুন লাগার কারণ এখনও জানা যায়নি। ব্যাপক ক্ষয়খতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

জুন ২১, ২০২৫
রাজ্য

শৌচাগারের ট্যাঙ্কি বানাতে গিয়ে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা, মৃত দুই

নির্মীয়মান বাড়ির শৌচাগারের ট্যাঙ্কি ভেঙে মৃত্যু হল দুই ভাইয়ের। এই ঘটনায় জখম হয়েছে আরও একজন শ্রমিক । তাঁর চিকিৎসা চলছে মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। শনিবার সন্ধ্যা ছটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে ইংরেজবাজার শহরের সুকান্তপল্লি এলাকায়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত দুই ভাইয়ের নাম উজ্জল মন্ডল (২৮) এবং অসিত মন্ডল (২৫)। তাঁদের বাড়ি ইংরেজবাজার থানার বাগবাড়ি বাগরড এলাকায়। আহত হয়েছেন অমল মন্ডল(২৫)। তার বাড়ি রতুয়ার করমনি এলাকায়। এদিন তিনজন সুকান্তপল্লি এলাকার একটি নির্মীয়মান বাড়ির শৌচাগারের ট্যাঙ্কির ভেতরে সাটারিং খুলছিল। সেই সময় হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে সাটারিংয়ের কাঠ এবং কংক্রিটের চাঙর । এই দুর্ঘটনার সময় তিনজন জখম হলে তাদেরকে মালদা মেডিকেল কলেজে স্থানীয়রা উদ্ধার করে নিয়ে আসে। মেডিকেল কলেজের কর্তব্যরত চিকিৎসাকেরা দুইজন শ্রমিককে মৃত বলে জানিয়ে দেয়। পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, বাড়ির মালিকের নাম প্রসেনজিৎ বর্মন। পেশায় তিনি স্কুল শিক্ষক। সেখানেই তিনি একটি নতুন বাড়ি তৈরি করছিলেন। পুলিশ বাড়ির মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।শৌচাগারের ট্যাঙ্কি বানাতে গিয়ে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা, মৃত দুই

জুন ২১, ২০২৫
রাজ্য

জলমগ্ন একাধিক গ্রাম, জল ছাড়ছে ডিভিসি, দুর্গাপুর ব্য়ারেজ পরিদর্শন সেচমন্ত্রীর

দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে মঙ্গলবার থেকে ভারি বৃষ্টিপাত চলছে। পাঞ্চেত, মাইথন থেকে জল ছাড়ার পরে দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকেও যথারীতি জল ছাড়া শুরু হয়েছে। আজ, শুক্রবার ৪৬ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে বলে সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া জানিয়েছেন। সেচমন্ত্রী মানস ভুইয়া দুর্গাপুর ব্যারাজের সংস্কারের কাজের পর চালু ব্যারাজ রাস্তা পরিদর্শনে আসেন। সেচমন্ত্রী বলেন, ৪৫ দিনের মধ্যেই কাজ শেষ করা হয়েছে। বর্ষা এসে গিয়েছে। ফলে বাকি যেসব কাজ রয়েছে তা বর্ষার পরেই শুরু হবে।দুর্গাপুর ব্যারাজের পরিদর্শনের সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সেচমন্ত্রী বাংলার প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের ইচ্ছাকৃত বঞ্চনার কথা তুলে ধরেন। সেচমন্ত্রী বারবার বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের যে দায়িত্ব রয়েছে তা পালন করছে না এবং রাজ্যের হকের টাকা কেন্দ্র দিচ্ছে না। তাই ড্রেজিং করা সম্ভব হচ্ছে না। রাজ্য ও ডিভিসির মধ্যে বারবার জল ছাড়া নিয়ে যে বিতর্ক দেখা দেয় তা নিয়ে কোন মন্তব্য না করে সেচমন্ত্রী বলেন, এই মুহুর্তে এই বিতর্কে যাব না। ৪৫ দিনের মধ্যেই কাজ শেষ করা হয়েছে। মাঝে ছয় দিন প্রচন্ড বৃষ্টি হয়েছিল বলে কাজে কিছু অসুবিধা দেখা দিয়েছিল। তবু কাজ ৪৫ দিনের মধ্যেই শেষ করা গিয়েছে। হায়দ্রাবাদ থেকে রাবার সিল আসছে তা দিয়ে কাজ করা হবে।সেচমন্ত্রী বলেন, দেড় মাস দুর্গাপুর ব্যারাজে জল ধরে রাখা হয়। এরপরে দুর্গাপুর, মাইথন ও পাঞ্চেত নিয়ে একটি সেল গঠন করা হয়েছে এবং মনিটরিং করা হচ্ছে জল ছাড়া নিয়ে যেন মানুষের ক্ষতি না হয়। সেচমন্ত্রী বলেন, প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছে এবং বিভিন্ন জেলা এবং ঝাড়খণ্ডের জল নামছে ফলে সমস্ত বিষয়ের উপরে নজর রাখা হয়েছে।তেনুঘাট নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সেচমন্ত্রী বলেন, মুখ্যমন্ত্রী, সেচ দপ্তরের কর্তারা এবং আমি নিজে বারবার কথা বলেছি। তেনুঘাটকে নিয়ন্ত্রণে রেখে অপারেট করা যায়।সেচমন্ত্রী একাধিকবার বলেন, মুখ্যমন্ত্রী এবং সেচ দপ্তর মাইথন, পাঞ্চেত এবং দুর্গাপুর ব্যারাজের জল ছাড়া নিয়ে নজর রেখেছেন । আজ ৪১ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। বন্যার যন্ত্রণা যাতে পেতে না হয় তার প্রতি সজাগ রয়েছেন প্রশাসনিক কর্তারা এবং আজ বাঁকুড়ায় আসছেন পরিস্থিতি নিয়ে আলচনা করতে। রাস্তার বিষয় নিয়ে তিনি বলেন, পি ডাব্লু ডিকে নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বৃষ্টি কমলেই।সেচমন্ত্রী ব্যারাজগুলির গভীরতা কমে যাওয়ার জন্য কার্যত কেন্দ্রীয় সরকারের টাকা না দেওয়ার কথা তুলে ধরেন। সেচমন্ত্রী বলেন, ১২ বছর ধরে কেন্দ্রের জলসম্পদ দপ্তর, প্রধানমন্ত্রীকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার দেখছি দেখছি করে পার করে দিচ্ছে কিন্তু রাজ্যের হকের টাকা দিচ্ছে না। সেচমন্ত্রী বিজেপি সরকারের বাংলাকে বঞ্চনা করার কথা তুলে ধরেন। বন্যার প্রসঙ্গে সেচমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রার্থনা করছি যেন বন্যার মুখে পড়তে না হয় কিন্তু দেড় মাস জল ধরে রাখা হয় আর তারপরে রয়েছে প্রচন্ড বৃষ্টি, ফলে জলের চাপ বাড়ছে, সেদিকেই নজর রাখতে হচ্ছে।দুর্গাপুর ব্যারাজের এক নম্বর গেটে বেশ কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে । সাংবাদিকেরা এ নিয়ে সেচমন্ত্রীকে প্রশ্ন করলে সেচমন্ত্রী বলেন, সব দিক নজরে রাখা হয়েছে, সংস্কার হবে। তিনি এরপরে আবার বলেন, কেন্দ্রিয় সরকারের কাছ হতে এক কানা কড়ির সাহায্য পাইনি। মুখ্যমন্ত্রী নিজের রাজ্যের কোষাগার থেকেই খরচ করে কাজ করছেন। তিনি এরপরেই পরিসংখ্যান তুলে ধরেন কিভাবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সীমিত আর্থিক ক্ষমতায় এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার পরেও কাজ করে চলেছেন। সেচমন্ত্রী জোড়ের সাথে বলেন, একটা নয়া পয়সা কেন্দ্রের সরকার দেয় নি। তবু একের পর এক কাজ হচ্ছে এবং এটাও করা হবে।

জুন ২০, ২০২৫
রাজ্য

সাতসকালে ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনা পুরুলিয়ায়, মৃত্যু মিছিল

সাতসকালে ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল ৯ জনের ৷ পুরুলিয়ায় ১৮ নম্বর জাতীয় সড়কের নামশোল এলাকায় আজ, শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে ৷ পুলিশ সূত্রে খবর, ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি বোলেরোর সংঘর্ষে ঘটে। তার ফলেই জেরেই ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ৷ গাড়িতে থাকা ৯ জনেরই প্রাণ গিয়েছে ৷ এরা সকলেই ঝাড়খন্ডের বাসিন্দা। বিয়ে বাড়ি থেকে ফিরছিলেন বলে জানা গিয়েছে।জানা গিয়েছে, আজ শুক্রবার সকালে পুরুলিয়ার দিক থেকে চারচাকা বোলেরো গাড়িটি বলরামপুরের অভিমুখে যাচ্ছিল। সেই সময় গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টো দিক থেকে আসা একটি ট্রাককে সরাসরি ধাক্কা মারে। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বলরামপুর থানার পুলিশ। প্রথমে জখম সকলকে উদ্ধার করে স্থানীয় বাঁশগড় ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যায় পুলিশ। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা আহতদের সকলকেই ঘোষণা করেন।

জুন ২০, ২০২৫
রাজ্য

দামোদরে বালি তুলতে গিয়ে বিরাট বিপত্তি, জলে ভাসছে ১৫টি লরি

দামোদরে বালি তোলায় কোনও লাগাম নেই। ডিভিসি থেকে জল ছাড়ার খবর থাকা সত্বেও বালি তোলার কাজ চলছিল। লরি নেমেছিল একেবারে নদের ভিতরে। জল ভরে টুইটুম্বুর হওয়ায় ভেসে গেল ১৫টি বালি বোঝাই লরি। পূর্ব বর্ধমানের গলসির গোহগ্রামের এই ঘটনায় বেশ চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পরে। পরে লরিগুলিকে উদ্ধারের তৎপরতা শুরু হয়।দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে জল ছাড়ার কথা ডিভিসি ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগাম ঘোষণা করা হয়েছিল। মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে বুধবার জল ছাড়া হয় ৪০ হাজার কিউসেক। এরই মধ্যে নিম্ন দামোদর অববাহিকায় দুদিন ধরে টানা বৃষ্টি চলেছে। এই সব কারণে বৃহস্পতিবার সকালে হঠাৎ দামোদর নদে জলের পরিমাণ বেশ বেড়ে যায়। এতেই ঘটে যায় বিপত্তি।স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ১৫টি বালি বোঝাই লরি দামোদর নদের জলে ভাসতে থাকে। তার উপর বৃহস্পতিবার বেলা বাড়তে নদের জল আরও হু হু করে বাড়তে শুরু হয়। বিপদ বুঝে লরিগুলি নদী থেকে তোলার জন্য তৎপরতা শুরু করে চালকরা । ওই সময়েই সামনে থাকা দুটি লরি বিকল হয়ে যাওয়ায় লরি গুলি নদ থেকে পাড়ে তোলা আর সম্ভব হয়নি। জেসিবি মেশিন ব্যবহার করেও কাজ হয়নি। জল কমা পর্যন্ত লরিগুলো তুলতে অপেক্ষা করতে হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

জুন ১৯, ২০২৫
রাজ্য

"কেশরী: চ্যাপ্টার ২" তে ক্ষুদিরাম বসু সহ বাঙালি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অপমান, প্রতিবাদে গর্জে উঠল বাংলা পক্ষ

সম্প্রতি কেশরী: চ্যাপ্টার ২ নামের এক বলিউডি হিন্দি সিনেমায় ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের সশস্ত্র সংগ্রামের উজ্জ্বল ইতিহাস তথা বীর বাঙালি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের পরিচয় ও ভূমিকা বিকৃত করে এক মনগড়া মিথ্যা ইতিহাস তুলে ধরার অভিযোগ উঠেছে। সিনেমাটিতে দেখানো হয়েছে যে ক্ষুদিরাম সিং ও বারীন্দ্র কুমার নামক দুই বিপ্লবী বৃটিশ পুলিশকর্তা কিংসফোর্ডকে বোমা মেরে হত্যার চেষ্টা করে ও তাদের বোমা তৈরীর প্রশিক্ষণ দেয় কৃপাণ সিং! যার সাথে বাস্তবের কোন মিল নেই। প্রকৃত পক্ষে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে বাঙালি বিপ্লবীদের সশস্ত্র সংগ্রামের ইতিহাসের এক যুগান্তকারী ঘটনা কিংসফোর্ড হত্যার প্রচেষ্টা ও পরবর্তীতে মানিকতলা বোমা মামলার ঘটনার কথা সম্পূর্ণ বিকৃত ভাবে এই সিনেমাটিতে দেখানো হয়েছে।সশস্ত্র সংগ্রামের লক্ষ্যে কলকাতার মানিকতলার যুগান্তর গুপ্ত সমিতিতেই অরবিন্দ ঘোষের নেতৃত্বে বোমা তৈরীর কর্মশালা গড়ে ওঠে, ইউরোপ থেকে বোমা তৈরী শিখে এসে এখানে বোমা তৈরী করে বিপ্লবীদের সরবরাহ করতেন হেমচন্দ্র কানুনগো, যিনি বলিউডের দৌলতে হয়েছেন কৃপাণ সিং। এই গুপ্ত সমিতির পক্ষেই ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকী কিংসফোর্ডকে বোমা নিক্ষেপ করে হত্যার চেষ্টা করেন। মেদিনীপুরের বীর বাঙালি কিশোর ক্ষুদিরাম বসুর পদবী সিনেমায় হয়েছে সিং অন্যদিকে প্রফুল্ল চাকীর নামই মুছে গেছে, শোনা গেছে জনৈক বারিন্দর কুমারের নাম, যেকোন ইতিহাস সচেতন ব্যক্তিই বলতে পারবেন এই নাম আসলে মানিকতলা বোমা মামলার অন্যতম অভিযুক্ত ও পরবর্তীতে আন্দামানে দ্বীপান্তরিত বারীন্দ্র ঘোষের, যিনি সম্পর্কে অরবিন্দ ঘোষের ভাই। এই মানিকতলা বোমা মামলায় বিপ্লবীদের পক্ষে কোর্টে আইনি লড়াই করেন আরেক মহান বাঙালি স্বাধীনতা সংগ্রামী দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ। এই গৌরবজনক অধ্যায় সম্পূর্ণ ভাবে বিকৃত করা হয়েছে, যা বাঙালি জাতি তথা ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রতি চূড়ান্ত অবমাননা।এই বিকৃতির বিরুদ্ধে বাঙালির ক্ষোভের প্রকাশ দেখা যাচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী থেকে সংস্কৃতি জগতের নানান ব্যক্তিত্ব এই ইতিহাস তথা মহান স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নাম বিকৃতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। ভারতীয় বাঙলির জাতীয় সংগঠন বাংলা পক্ষও সরব হয়েছে, আজ তারা পথে নেমে প্রতিবাদ করল কলকাতার বাংলা একাডেমী সংলগ্ন রানুছায়া মঞ্চে। এই প্রতিবাদ সভায় বাংলা পক্ষর সাংগঠনিক সম্পাদক কৌশিক মাইতি বলেন, কেশরী ২ সিমেমার মূখ্য অভিনেতা অক্ষয় কুমার, তিনি কাদের স্বার্থে বিকৃত ইতিহাস প্রচার করে সিনেমা তৈরি করেন এটা আমাদের সকলের জানা৷ বিজেপি ও বলিউডের উদ্দেশ্য বাঙালির গৌরবজনক বীরত্বের ইতিহাস মুছে দেওয়া। সেই উদ্দেশ্যেই বারবার এই ধরনের ঘটনা দেখা যাচ্ছে। বলিউড এর আগেও অভয় ২ সিরিজে বীর শহীদ ক্ষুদিরাম বসুকে ক্রিমিনাল, জঙ্গি হিসাবে দেখিয়েছিল। বাংলা পক্ষ তখন Zee5 কে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছিল এবং সল্টলেকে Zee5 এর অফিসে বিক্ষোভ করেছিল। পরবর্তীতে Zee5 ক্ষমা চেয়ে সেই অংশ বাদ দিতে বাধ্য হয়। শীর্ষ পরিষদ সদস্য অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় বলেন যতক্ষণ না পর্যন্ত কেশরী ২ সিনেমার নির্মাতারা ক্ষমা না চায়, বাংলা পক্ষর লড়াই চলবে। ক্ষমা চেয়ে এই দৃশ্য বাদ দিতে হবে। বাঙালি বিদ্বেষীদের কিভাবে ক্ষমা চাওয়াতে হয় সেটা বাংলা পক্ষ ভালো ভাবে জানে।শীর্ষ পরিষদ সদস্য সৌম্যকান্তি ঘোড়ই বলেন, ক্ষুদিরাম বসুকে অপমান মানে বাঙালিকে অপমান। প্রফুল্ল চাকীকে অপমান মানে বাঙালিকে অপমান৷ বীর বিপ্লবী বারীন ঘোষদের অপমানের বিরুদ্ধে এই লড়াই চলবে। অক্ষয় কুমারকে ক্ষমা চাইতেই হবে।এছাড়াও আজকের প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন কলকাতা জেলার সম্পাদক সৌম্য বেরা, দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা সম্পাদক কুশনাভ মন্ডল, শিল্পী পক্ষর অধিকর্তা প্রবাল চক্রবর্তী প্রমুখ। এর আগে বিধাননগর দক্ষিণ থানায় এই সিনেমা নিয়ে একই ইস্যুতে এফআইআর হয়েছে। এমনকী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যন্ত ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন বাঙালি বীর বিপ্লবীদের ইতিহাস বিকৃতি করার জন্য।

জুন ১৯, ২০২৫
খেলার দুনিয়া

লর্ডসের ঐতিহাসিক শতরানের আলোতেও সমুজ্জ্বল বোলার সৌরভের পারফরম্যান্স

লর্ডসে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ও রাহুল দ্রাবিড়ের। দিনটা ছিল ১৯৯৬ র ২০ জুন। এই টেস্টের কথা উঠলেই মহারাজকীয় শতরানের কথাই সবার আগে মনে আসে। যা এসেছিল ২২ জুন।তবে ২০ জুন বল হাতে কামাল দেখিয়েছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ইংল্যান্ডের তৃতীয় ও চতুর্থ উইকেট পড়েছিল চার রানের ব্যবধানে। দলের ৯৮ রানের মাথায় সৌরভের প্রথম শিকার হন তিন নম্বরে নামা নাসের হুসেন। ১১০ বলে ৩৬ রান করে তিনি ফেরেন বিক্রম রাঠোরের হাতে ক্যাচ দিয়ে। ১০২ রানে ইংল্যান্ডের চতুর্থ উইকেট পড়ে। ৯ বলে ১ রান করে গ্রেম হিক সৌরভের বলেই জাভাগল শ্রীনাথের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। প্রথম ইনিংসে সৌরভের বোলিং ফিগার ছিল ১৫-২-৪৯-২। বেঙ্কটেশ প্রসাদ পাঁচটি, শ্রীনাথ তিনটি ও সৌরভ ২টি উইকেট পান। পরশ মামব্রে, অনিল কুম্বলে ও সচিন তেন্ডুলকর উইকেট পাননি। দ্বিতীয় ইনিংসে সৌরভ তুলে নিয়েছিলেন প্রথম ইনিংসে শতরানকারী জ্যাক রাসেলের উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে মহারাজ ৩ ওভারে মাত্র ৫ রানের বিনিময়ে একটি উইকেট পেয়েছিলেন। ফলে লর্ডসের ঐতিহাসিক শতরানের আলোতেও সমুজ্জ্বল বোলার সৌরভের পারফরম্যান্স।

জুন ১৯, ২০২৫

Ads

You May Like

Gallery

265-year-old "Mukhopadhyay House" in Bhavanandpur, Kalnar, played vermilion on Dasami during Durga Puja
BJP candidate Locket Chatterjee campaigned on the banks of the Ganges from Chandannagar Ranighat to Triveni Ghat wishing New Year.
A living depiction of history with a touch of color, everyone is enthralled by the initiative of the Eastern Railway
Sucharita Biswas actress and model on Durga Puja
Lord Kalabau came up in palanquin; Navapatrika walked towards the mandap - the puja started
On Sunday, the 'Hilsa festival' is celebrated in the city with great joy.
Check out who has joined Mamata's new cabinet
Take a look at the list of recipients at the Bangabibhushan award ceremony
If you are grassroots, you will get ration for free. Lakshmi Bhandar, Kanyashree, Swastha Sathi, Krishakbandhu, Oikyashree, Sabujsathi — you will get all.

Categories

  • কলকাতা
  • রাজ্য
  • দেশ
  • বিদেশ
  • রাজনীতি
  • খেলার দুনিয়া
  • বিনোদুনিয়া
  • সম্পাদকীয়
  • নিবন্ধ
  • ভ্রমণ
  • রাশিফল
  • টুকিটাকি
  • চিত্রহার
  • বিবিধ
  • ভিডিও

Company

  • About Us
  • Advertise
  • Privacy
  • Terms of Use
  • Contact Us
Copyright © 2025 Janatar Katha News Portal