• ১৩ কার্তিক ১৪৩২, সোমবার ০৩ নভেম্বর ২০২৫ ই-পোর্টাল

Janatar Katha

Banner Add
  • কলকাতা
  • রাজ্য
  • দেশ
  • বিদেশ
  • রাজনীতি
  • খেলার দুনিয়া
  • বিনোদুনিয়া
  • সম্পাদকীয়
  • নিবন্ধ
  • ভ্রমণ
  • রাশিফল
  • টুকিটাকি
  • চিত্রহার
  • বিবিধ
  • ভিডিও
  • এছাড়াও
    • উৎসব
    • ব্যবসা
    • স্বাস্থ্য
    • শিক্ষা
    • প্রযুক্তি
    • হেঁসেল

Feature

নিবন্ধ

জীবন-বোধ (কবিতা)

জীবন যুদ্ধে হেরে গিয়ে যদি, নিজেকে হারিয়ে ফেল,হারিয়েছো কি তুমি? পেয়েছো বেশি, মনকে এটাই বলো, কখনও কি তুমি দেখেছো ভেবে! যা কিছু তোমার গেছে, তার থেকে তুমি পেয়েছো বেশি,এই পৃথিবীর কাছে, কি নিয়ে এসেছো?কি তোমার গেছে, এটাই যদি ভাবো! উঠবে কি করে, বাড়বে কি করে? জীবন যুদ্ধে ভাগো, সব ভুলে গিয়ে,আবার তুমি নতুন করে ভাবো, নুতন পৃথিবী ডাকছে তোমায়। এবার তুমি জাগো, ভয়টা কিসের?কিসের দুঃখ, কিসের শোক? দুই দিনের তুমি পৃথিবীর মাঝে, ভুলে যাও সব দুর্ভোগ।এসেছো যখন ধরনীর মাঝে, রেখে যাও কিছু দাগ।পৃথিবী তোমায় করবে মনে, এমন কিছু কর্ম থাক।।কবি প্রদীপ্ত সরকার

মার্চ ০২, ২০২৫
নিবন্ধ

মহাষষ্ঠীর ভোর। এবার মাতৃপূজার নির্ঘণ্ট প্রতিদিনই ঊষালগ্ন ছোঁয়া

ঝিরঝিরে হাওয়া বইছে বিশাল অশ্বত্থগাছের পাতায় পাতায় শিরশিরানি জাগিয়ে। শতাব্দী প্রাচীন গাছটার আনাচকানাচ থেকে উপচে পড়ছে কত না পাখির কলকাকলি পায়রাদের বকবকম.. ঘুঘুদের কুড়কুড়.. টিয়ার ঝাঁকের তীক্ষ্ণস্বন.. কাক-এর কর্কশ আওয়াজ .. চড়ুই-শালিকদের সমবেত কিচিরমিচির .. টুনটুনি-বুলবুলিদের সুরেলা শিস .. .. নারায়ণপুরের আকাশে ভোর জাগছে মৃদু মোলায়েম আমেজ নিয়ে।মহাষষ্ঠীর ভোর। এবার মাতৃপূজার নির্ঘণ্ট প্রতিদিনই ঊষালগ্ন ছোঁয়া। আজ সকাল সাড়ে ছয়টায় দেবীআরাধনার সূত্রপাত। পূজামণ্ডপ ধুয়ে, বেদীতে আল্পনা দিয়ে, ফুল-বেলপাতা গুছিয়ে, প্রসাদের থালা সাজিয়ে, আয়োজন চলছে তারই। আশ্বিনের এই শারদপ্রভাতে পুজোআর্চা সেরে, সন্ধ্যায় দেবীর বোধন দিয়ে শুরু হয়ে যাবে জগজ্জননীর আরাধনা।কাল সন্ধ্যায় এসেছি গ্রামের বাড়িতে। যাবতীয় পেশাগত দায়দায়িত্ব সেরে, বাড়িঘরের দেখাশোনার ভার উপযুক্ত হাতে ন্যস্ত করে, শেষ মুহূর্তের হাজারো ব্যস্ততা সরিয়ে, পিতৃপুরুষের ভিটেয় এসে পৌঁছতে সন্ধ্যা গড়িয়েছে। বর্ধমান থেকে পঁচিশ কি.মি. উজিয়ে এসে, বাসরাস্তা ছেড়ে বটগাছের ঝুরি-দোলানো গ্রামের পথে গাড়ি ঢুকে পড়েছে হেলেদুলে। ভরাশরতের টইটম্বুর পুকুরের পাশ কাটিয়ে, জোনাক-জ্বলা বাঁশঝাড়ের অন্ধকার আর্চ ফুঁড়ে, এঁকেবেঁকে আধ কি.মি. পেরিয়ে, এসে গেছি নারায়ণপুর এই সাতান্ন বছরের জীবনে পুজোর কদিন যা আমার একমাত্র ঠিকানা।এই পুজোবাড়ি, লোকমুখে যার চলতি নাম চাতোর (চত্বর-এর অপভ্রংশ ), আমাদের ছোটবেলায় ছিল এক লম্বা মাটির চারচালা। সামনে ত্রিপল-এ ছাওয়া লম্বা বাঁশের কাঠামো পুজোর কদিন ধারণ করতো উৎসাহী মানুষজনকে টলমলে কুচোকাঁচা থেকে শুরু করে ন্যুব্জ বৃদ্ধবৃদ্ধারা সকালসন্ধ্যা ঢাকঢোলকাঁসরঘণ্টার ঐকতান .. ধূপধুনোগুগগুল-এর ধূম্রজাল .. মন্ত্রমুখর পূজার্চনার শরিক হতেন এখানেই সমবেত হয়ে। সেই মাটির গাঁথনির জায়গা নিয়েছে শানবাঁধানো পাকা মণ্ডপ, শক্তপোক্ত টিনের ছাউনি, আর মর্মরমণ্ডিত পুজাবেদী সেও হয়ে গেল বেশ কয়েক দশক।ছোটোবেলায় পঞ্চমী-ষষ্ঠীর দিন যখন এসে পড়তাম, বাড়ির কর্মসহায়করা ব্যস্ত থাকতো খড় পেঁচিয়ে দীর্ঘ রজ্জু-রচনায়, যার ফাঁকে ফাঁকে গুঁজে দেওয়া হতো ছোটো ছোটো আমশাখা, প্রতিটি শাখায় চারপাঁচটি করে পাতা সেই মালায় সেজে উঠতো মন্ডপের চারপাশ আর প্রতিটি বাড়ির প্রবেশদ্বার। আজ সেই মঙ্গলমালিকারও রূপবদল হয়েছে ছোটো ছোটো আমশাখার জায়গা নিয়েছে একটি একটি করে আমের পাতা। তাতে আর কিছু না হোক, অপচয় কমেছে সবুজপত্রের।আমাদের শৈশবে এই মণ্ডপে ঠাকুর গড়তে আসতেন বটুদা। পরে তাঁর স্থান নেন জয়দেবদা। ওঁর সৃষ্টিতে মায়ের মুখ হতো অপেক্ষাকৃত কোমল, কিছুটা প্রাচীনপন্থী। সেই মুখশ্রীই রয়ে গেছে আজও, এই থীমময় পৃথিবীতে দুর্গাপ্রতিমার ছিরিছাঁদ আর মূর্তিশৈলী নিয়ে যতই পরীক্ষানিরীক্ষা-পরিবর্তনের ঢেউ উঠুক না কেন !জয়দেবদা আজ বৃদ্ধ, চোখে কম দেখেন ; চলনবলনে গ্রাস করেছে স্থবিরত্ব। তবু আজও রথযাত্রা থেকে শুরু করে তিনদফায় এসে, কদিন থেকে, তিনি গড়ে দিয়ে যান আমাদের মা হরগৌরীর মৃৎপ্রতিমা থেমে থেমে .. ঘোলাটে চোখে .. কতক আন্দাজে .. কতক কম্পিত আঙুলের অভ্যস্ততায় ড. সুজন সরকার : বর্ধমান।

অক্টোবর ০৯, ২০২৪
নিবন্ধ

এ’ কোন সকাল - রাতের চেয়েও অন্ধকার!

সেই এলোমেলো দিকহারানো সন্ধ্যা-বায়ের লুটোপুটি খাওয়া ঘর-বার-উঠোন-বাজারে, কাজলকালো রাত পেরিয়ে, আধফোটা কুসুমের মতো ফুটে ওঠা আগমনী আলো আজ আবার ছড়িয়ে দিল মাতৃপূজার সুসমাচার। বেজে উঠলো আলোর বেণু; আজ প্রভাতে সে সুর শুনে খুলে দিলাম হৃদয়ের রুদ্ধ দুয়ার। কিন্তু সবার অন্তরের পুঞ্জীভূত আঁধার কাটলো কি? মাতলো কি ভুবন? যে নিবিড় বেদনা আচ্ছন্ন করে রেখেছে বুকের মাটি, মনের আকাশ কালো করে জমে থাকা সেই মেঘ যেন রাতের চেয়েও অন্ধকার করে রেখেছে শরতের আকাশবীণায় গানের মালা বিলানো আজকের এই মহালয়ার সকালকে।অথচ, বর্ষণক্ষান্ত আশ্বিনের নীল আকাশে সাদা মেঘের বহরে অমলধবলপালে আজ লেগেছে মন্দমধুর হাওয়া; দুধসাদা কাশের গুচ্ছ বেঁধে, ঝরা শেফালীর মালা গেঁথে, নবীন ধানের অঞ্জলি দিয়ে ডালা সাজিয়ে শারদলক্ষ্মী এসে গেছেন শুভ্র মেঘের রথে সমাসীন হয়ে। ধৌতশ্যামল আলোঝলমল বনগিরিপর্বতে ছড়িয়ে পড়েছে তাঁর শ্বেতশতদলশোভিত করুণানয়নের আশীর্বাণী। শিউলীতলার পাশে পাশে.. ঝরা ফুলের রাশে রাশে.. শিশিরভেজা ঘাসে ঘাসে অরুণরাঙা চরণ ফেলে.. জলতরঙ্গে ঝিলমিল ঝিলমিল ঢেউ তুলে ছড়িয়ে পড়ছেন তিনি। আলোছায়ার আঁচলখানি লুটিয়ে পড়ছে বনে বনে; ফুলগুলি ঐ মুখে চেয়ে কী কথা গুনগুনোচ্ছে মনে মনে, কে খবর রাখে তার! তবু ঐটুকু ঐ মেঘাবরণ দু হাত দিয়ে সরিয়ে, মুখের ঢাকা হরণ করে, শারদলক্ষ্মীকে বরণ করে নিতে যেন কারো মন নেই আজ। এমন নিরানন্দ দেবীপক্ষের সূচনা খুব বেশী দেখা গেছে কি?একদিকে বানভাসি নদী-মাঠ-ঘর-গেরস্থালির অপার দুর্ভোগ, অন্যদিকে অগ্নিমূল্য হাটবাজার; আর সব ছাপিয়ে এক নির্যাতিতা প্রতিবাদিনীর সর্বপরিব্যপ্ত বেদনার্ত ছায়া এবারের মাতৃপক্ষকে যেন ঢেকে রেখেছে এক তিমিরঅবগুণ্ঠনে। উৎসবে মেতে ওঠার মেজাজটাই পাড়ি দিয়েছে দিকশূণ্যপুরের দিশায়।তবু এরই মধ্যে পথে-পার্কে-পল্লীপ্রান্তে শালবল্লা-বাঁশ-ত্রিপল-প্লাইউডের কাঠামো-রা সেজে উঠছে দ্রুত। দোকান-পসার-মল-মার্কেটে ভীড়ও খানিক খানিক জমে উঠছে। মহালয়ার রাতভোর অসংস্কৃত বাজী-র উদযাপন এবার কিছু কম (আজকাল পাড়ার যে যে বাড়িতে বয়স্ক বা অসুস্থ মানুষ আছেন বলে খবর, তাঁদের জানালার কাছাকাছিই সাধারণতঃ বাজী ফাটানো হয় বেশী)। ইতস্ততঃ কিছু ক্লাবের মাইকে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র-ও সাড়া দিলেন বহু যুগের ওপার থেকে আজ ভোরবেলায়, যদিও কিছু স্তিমিতস্বনে। তবে পিতৃতর্পণাভিলাষীরা ছাড়া নদীর তীরে কাশের বনে মানুষের ঢল নামলো কই!মন ভালো নেই; আমাদের অনেকেরই মন ভালো নেই। আজ অখিলবিমানে দিকে দিকে সর্বস্যার্তিহরা দেবীমায়ের জয়গান। সিংহস্থা শশীশেখরা মরকতপ্রেক্ষা জগজ্জননী দূর করুন এই দুঃসহ আঁধার। ভয়ের আবহ শেষ হোক সবার ঘরের প্রতিটি দুর্গা হেসে উঠুক সুখে-সাহসে-সাফল্যে প্রতিটি অভয়া বিচার পাক!ওগো আমার আগমনী আলো, জ্বালো প্রদীপ জ্বালো, জ্বালো গো- ড. সুজন সরকার, বর্ধমান। ।

অক্টোবর ০২, ২০২৪
নিবন্ধ

ঝাপসা পলাশ

সেই কাকভোর থেকে অগোছালো শরীরটাকে টেনে হিচড়ে, ইচ্ছে -অনিচ্ছের রাস্তা মাড়িয়ে বয়ে নিয়ে যাওয়া এখন করুণ অভ্যেস।রাতের বিছানায় নেতিয়ে না পড়া পর্যন্ত শান্তি নেই, সংসার বড় বালাই। তাই চা, বিড়ি, ফর্দ, সমালোচনা, গালাগালি, হিসেবনিকেশ।অসুখটা ঠিক শরীরে নয়। চাওয়া পাওয়ার ঘাটতি গুলো মনের ভিতর জমে বাষ্প হয়ে মেঘ হয়, কিন্তু বৃষ্টি হয়না।জীবাণুদের কোলাহল বাড়তে থাকে, বিপ্লবের টের পাই সেই অদ্ভুত নীরব অনুভূতির সাম্রাজ্যে - যেটা আজও বেশ অচেনা।কল্পনার বেনো জলে ভেসে আসে উদগ্র বাসনা - ব্যার্থ চাহিদাগুলো সার দিয়ে দাঁড়ায়, সস্তা লালসার দংশনে মন জেরবার।রাত বাড়ে, পাল্লা দিয়ে চলে গাঢ় নীলচে অন্ধকারে অগাধ সাঁতার, অন্তহীন আকাশের মতো, যেখানে শব্দ নেই আছে বিস্তার।হারতে হারতেও লড়াইটা টিকিয়ে রাখার ক্ষীণ প্রয়াস, বারোমাস। কুয়াশা মাখা ভোরের পর একঘেয়ে সকাল, ঘর্মস্রাবি দিনের শেষে চোখের কোনে জমে ঝুল।সাতচল্লিশটা বসন্ত পার করার পর পলাশ, কৃষ্ণচূড়ারা আজও শুধুই লালচে ফুল।দীপক কুমার মণ্ডলবর্ধমান

এপ্রিল ১৯, ২০২৪
নিবন্ধ

'রূপং দেহি জয়ং দেহি..' এই মহালয়ার ভোরে আজও যেন আমাদের কী হয়ে যায়!

নীলঅঞ্জনঘনপুঞ্জছায়ায় সম্বৃত অম্বর আর নেহাতই বদখত আমার খাঁদা নাক-এর নিরন্তর জলপ্রপাত স্তিমিত হয়েছে দিন কয় হলো। আশ্বিন যাই যাই করছে; সাদা মেঘের অগুন্তি ভেলা ভাসানো সুনীল আকাশেও যেন হেমন্তের মনকেমনিয়া মেজাজ আজ! পথে বেরিয়ে ঘাড়ে-মাথায়-কাঁধে লেপটে থাকা দুপুরের রোদ ততটা নিষ্করুণ লাগছে না আর, একটু বেলাশেষের আমেজ আছে তাতে!পুজোর বাজার তেতে উঠেছে অবশ্য! পুরো স্লগ ওভার-এর ব্যাটিং করে নিচ্ছে পিতৃপক্ষের অন্তিম লগ্নে ফানটুস ছোকরা-ফিসফিসে কিশোরী-টগবগে তরুণ-তরতরে তরুণী-গুছোনো গিন্নী-গেরেম্ভারী গেরস্ত সব্বাই! বেশ একটা হৈহৈ রইরই ব্যাপার!!শালবল্লা-বাঁশ-প্লাইউডের কাঠামো-রা তো এখানে সেখানে মাথা তুলছে বেশ কসপ্তাহ হয়ে গেল। ধুলিধূসর ইঁট-কাঠ-পাথরের জঙ্গলে হঠাৎ হঠাৎই জেগে উঠছে থাই প্যাগোডা-ভুটিয়া গোমফা-রাজস্থানী ঝরোখা-ফরাসী অপেরা! ভাঙা রাস্তায় শেষ মুহূর্তে বিটুমেন-এর পুল্টিশ দুপাশারি আটপৌরে বাড়িঘরের মুখ ঢাকছে কাতারে কাতারে কাপড়ের হোর্ডিং দীপিকা-আলিয়া-কিয়ারা-সন্দীপ্তা-মৌনীরা রহস্যময়ী হাসির ঝিলিক দিচ্ছে বস্ত্রাবরণ - স্বর্ণাভরণ - প্রসাধন - প্রলোভনসম্ভার নিয়ে.আজ রাত পেরোলেই দেবীপক্ষ শুরু। অখিল বিমানে বেজে উঠবে তাঁর জয়গান আলোর বেণু মাতিয়ে তুলবে ভুবন অন্তরে যে আবেশ লুকিয়ে লুকিয়ে ছেয়ে গেছে এ কয়দিন মুখরিত বর্ষণগীতের মেঘমন্দ্রিত ছন্দ বিদায় নেওয়ার পর অরুণবীনায় যে সুর বেজে উঠেছে অমোঘ উচ্চারণে সেই আনন্দযজ্ঞে মধুর আমন্ত্রণ কাল ভোরে মায়ের সকল সন্তানের: যে যেথায় আছো সিলেট থেকে সিয়াটল কাঠমান্ডু থেকে কেপটাউন!এই কেজো প্রাত্যহিকতার একঘেয়েমি, স্বার্থক্লিন্ন দরকষাকষির কুশ্রীতা, বড় বেরঙীন পেশাগত যাপনের মধ্যেও প্রতিবারের মতোই আগমনী আলো এসে প্রদীপ জ্বালিয়ে দিয়েছে মনের গোপন ঘরে। শহরের উপকণ্ঠে-সড়কপ্রান্তে-শস্যময়ী শ্যামল প্রান্তরের আনাচে কানাচে উপচে পড়া দুধসাদা কাশবন লহমায় মনকে উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে টাইমমেশিনে চড়িয়ে, চার দশকের ওপারে..এমনই সর্বব্যাপী শুভ্র কাশের সমুদ্র ছেয়ে থাকতো তিস্তার চরে, সেই সব মহালয়ার ভোরে আকাশবানী-র মহিষাসুরমর্দিনী সম্প্রচার শেষ হওয়ার পরই যখন গোটা জলপাইগুড়ি শহরের মানুষজন পায়ে পায়ে চলে আসতেন করলা নদীর বাঁধ বেয়ে জুবিলীপার্ক-এর দিকে, নেমে আসতেন আদিগন্ত কাশসঙ্কুল সেই বালিভূমিতে। সুনীল আকাশ.. ভোরের মায়াময় আলো.. কুলুকুলু করলা বাজির আওয়াজ যৌবনের হিল্লোলমনে পড়ে যায় শ্লথপদ সেই নেপালী বৃদ্ধের কথা উষষী ঊষার আবছায়া পথে যেতে যেতে যিনি থেমে গিয়েছিলেন আমার বন্ধুর বাড়ির পাশে; নীরবে দাঁড়িয়েছিলেন কিছুক্ষণ আধখোলা জানালার ঠিক সামনেই। বন্ধুদের শোয়ার ঘরের রেডিও-তে তখন রূপং দেহি জয়ং দেহি..-র অন্তহীন সুরসঞ্চার। খানিক দূরে দাঁড়িয়ে দেখেছিলাম লোলচর্ম মানুষটিকে জানালার কপাটে ভক্তিভরে মাথা ঠেকিয়ে প্রণতি জানাতে!এত বছরের গার্হস্থ্য মালিন্য - দুনিয়াদারির চাপ - জীবনযাত্রার পৌনঃপুনিকতাও পারে নি মহালয়ার ভোরে নিহিত রোমাঞ্চ এ মন থেকে মুছে ফেলতে। সিংহস্থা শশীশেখরা মরকতপ্রেক্ষা সেই দনুজদলনী, গুণাশ্রয়ে গুণময়ী নারায়ণী মা-টি হয়ে বছরভর যিনি আগলে রাখেন আমাদের, সহসাই যেন তিনি বড় কাছে এসে যান এই শরতের ঝঞ্ঝাবাতের নিশার শেষে রোদেলা সকালে ক্ষান্তবর্ষণ শরতের আকাশবীনা গানের মালা বিলায় চরাচর জুড়ে ভোরের পাখি মায়াবী আলোছায়ায় গেয়ে ওঠে তাঁর জয়গানসত্যি, এই মহালয়ার ভোরে আজও যেন আমাদের কী হয়ে যায়!!ড. সুজন সরকার, বর্ধমান।

অক্টোবর ১৪, ২০২৩
নিবন্ধ

হৃদয়ছোঁয়া প্রীতি বার্তার সুগন্ধী বাতাস

অনেক শহর গ্রাম ছাড়িয়ে অনেক দূর সে গ্রাম, কেউ জানো কি তার নাম? সে গ্রামের আজব খবর কানে আসে;সেখানে মানুষ নাকি মানুষ পেলেই ভালোবাসে এমন আজব এক গ্রামেই ঢুকে পড়েছিলাম বছর দশেক আগে; রবাহুত অনভ্যস্ত পায়ে থমকে, থেমে দ্বিধান্বিত চোখে এদিক ওদিক তাকাতে তাকাতে। সে এক ভুবনভরা গ্রাম বিশ্বজোড়া ফাঁদ পাতা তার কেমনে দিই ফাঁকি!সেই ফেসবুক-গ্রামে এলোমেলো ঘুরতে ঘুরতে খুঁজে পেলাম কত গ্রামছাড়া রাঙামাটির পথ পায়ে পায়ে সন্ধ্যার ক্লান্তি নিয়ে ঘরে ফিরে আসার কত শহুরে সড়ক কত স্থিতপ্রজ্ঞ জীবন রসিকের সুললিত কলম কত বরাননা-র মায়াবী মন-উদ্ভাস এত আলো এত আকাশ যা আগে বোধ হয় কখনও দেখি নি, চোখেও পড়ে নি! আমার ফেসবুকীয় বান্ধবসমাজ কখনো ট্রোলিং শব্দটি জানতে দেন নি আমায়, বরং ভালোবাসা-সমাদর-প্রেরণার জোয়ারে ভাসিয়ে দিয়েছেন বরাবর!সেই প্রীতি ও শুভেচ্ছার বাঁধভাঙা ঢেউ প্রতি বছর সুনামি হয়ে আছড়ে পড়ে আজ, এই আঠাশে আগস্টের ভাদ্রবাসরে। এডিলেড থেকে এডিনবরা, আটলান্টা থেকে আগরতলা ছুঁয়ে অনুরণিত হয় মনহারানো খুশির গুঞ্জন ভালো আছি , ভালো থেকো / আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো!প্রতিবার ভাবি, ব্যক্তিগতভাবে প্রত্যেককে ধন্যবাদ জানাবো এই আশীর্বাদ-শুভকামনার প্রাপ্তি স্বীকার করে। শুরুও করে দিই সকাল থেকেই; কিন্তু ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপ-মেসেঞ্জার মিলে হাজারখানেক বার্তার অমিত প্রাচুর্য রণে ভঙ্গ দিতে বাধ্য করে অচিরেই। বুক ভরে নিই হৃদয়ছোঁয়া প্রীতি বার্তার সুগন্ধী বাতাস; মনে ভাবি এই সর্বপ্লাবী ভালবাসাই আগলে রাখবে চিরকাল, সব দুর্দৈব-দুঃখ-দীনতা থেকে।জানি, এ ভুল! ফাগুনের ফুল ঝরে যাবে; একদিন পথের মতো হারিয়ে যাব আমিও, নদীর মতো আর আসবো না ফিরে। এ পায়ের চিহ্ন আর পড়বে না পৃথিবীর পথে। সেদিনও ফুল্লকুসুমিত হবে তরুশাখা দুঃসাহসের ডানা মেলে দূরে দূরে উড়ে যাবে চঞ্চল পাখিরা ভাদ্রের নীলাকাশে ভাসবে সাদা মেঘের ভেলা ধানের ক্ষেতে রৌদ্রছায়ায় লুকোচুরি খেলবে অনাগত দিনসেই আগামীর স্বপ্ন বুকে নিয়ে পেরিয়ে যাই আরো এক আঠাশে আগস্ট বন্ধুদের শুভেচ্ছা-ভালোবাসা শারদ শিশিরের মতো মৃদু মোলায়েম মায়ায় অভিসিঞ্চিত করে রাখে সেই উজ্জ্বল দিন!ভালো থেকো বন্ধুরা কাছে.. দূরে.. যে যেখানে আছো। আমার মনোজগৎ প্রসারিত করো আরো, তোমাদের স্মৃতি-সত্ত্বা-ভবিষ্যতের মায়াজাল বুনে। প্রৌঢ়ত্ব পীড়াদায়ক না হয় যেন, ক্ষুদ্রতা যেন স্পর্শ না করে হৃদয়-চেতন-মননকে!কাছে থাকো। ভয় করছে। মনে হচ্ছেএ মুহূর্ত বুঝি সত্য নয়। ছুঁয়ে থাকো।শ্মশানে যেমন থাকেন দেহ ছুঁয়ে একান্তস্বজন। এই হাত, এই নাও হাত।এই হাত ছুঁয়ে থাকো, যতক্ষণকাছাকাছি আছো, অস্পৃষ্ট রেখো না।ভয় করে, মনে হয়, এ মূহূর্ত বুঝি সত্য নয়।যেমন অসত্য ছিল দীর্ঘ গতকাল।যেমন অসত্য হবে অনন্ত আগামী।পাণিগ্রহণ (নবনীতা দেবসেন )।

সেপ্টেম্বর ০৪, ২০২৩
বিনোদুনিয়া

"কথামৃত" এর ঝুলিতে পরপর চারটি পুরস্কার

পরিচালক জিৎ চক্রবর্তী এর ছবি কথামৃত এর ঝুলিতে এবার পরপর চারটি পুরস্কার। গত ১৮ই নভেম্বর মুক্তি পেয়েছে ছবি কথামৃত। মুক্তির পরে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে এই ছবি। এবার নানা ফিল্ম ফেস্টিভালে পুরস্কার নিয়ে ঝুলি ভরছে এই ছবি। বেস্ট ফিল্ম, বেস্ট অভিনেতা কৌশিক গাঙ্গুলী, বেস্ট ডিরেক্টর জিৎ চক্রবর্তী, বেস্ট অরিজিনাল স্টোরি ক্যাটাগরিতে মনোনীত হয়েছে এই ছবি। ছবির মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেতা কৌশিক গাঙ্গুলী ও অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্য কে। একজন বোবা (কথা বলতে না পারা) মানুষের চরিত্রে অভিনয় করেছেন কৌশিক গাঙ্গুলী কে। আর তাই একটা ছোট্টো লাল ডাইরিতে লিখে রাখেন নিজের মনের সমস্ত কথা গুলো। সেই ডাইরির নাম কথামৃত। ছবিতে কৌশিক গাঙ্গুলীর স্ত্রীর চরিত্রে দেখা গিয়েছে অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্য কে।গল্পের প্রেক্ষাপট কিছুটা এমন, নিজেদের পাড়ার আদর্শ স্বামী-স্ত্রী সনাতন (কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়) ও সুলেখা (অপরাজিতা আঢ্য)। ছেলে ঋককে নিয়ে তাঁদের সুখের সংসার। তাঁদের এই ভালোবাসায় ভরা পরিবারকে পছন্দ করে এলাকার সমস্ত মানুষ। সনাতন কথা বলতে পারেন না। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে তাঁর পরিচিত ব্যক্তিরা তাঁর মনের ভাব বুঝতে পারেন। তবে, মনের কথা বলার জন্য় তিনি একটি পকেট ডায়রি সবসময় সঙ্গে রাখেন। সেই ডায়রিটিকেই তিনি কথামৃত নাম দিয়েছেন। ছবিতে আরো দুটি মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করছেন বিশ্বনাথ বসু ও অদিতি চ্যাটার্জি। ছবির পরিচালক জিত চক্রবর্ত্তী জানান এটি কৌশিক গাঙ্গুলী ও অপরাজিতা আড্য এর এক অনন্য জীবনের গল্প। মানুষের জীবনে কথা যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা নিয়ে এই ছবি। প্রতিটি সম্পর্কের বুননে কথার গুরুত্ব এই কথামৃত। ছবিটি মুক্তি পেয়েছে জালান প্রোডাকশন এর ব্যানারে প্রযোজক প্রীতম জালান এর প্রযোজনায়।

ডিসেম্বর ২১, ২০২২
নিবন্ধ

নতুন জীবন (ছোট গল্প)

সময় মানুষকে ভাবতে শেখায়, নতুন কিছু করতে শেখায়। জীবনের স্রোতে অনেক আপনজন দূরে সরে যায় আবার অনেক দূরের মানুষ কাছের হয়ে ওঠে। মানুষের মনে অনেক সময় দ্বন্দ্ব চলে আপনজনের দূরে চলে যাওয়ায় দুঃখ করবে না নতুন যাকে আপন করে পেল তাকে নিয়ে আনন্দ করবে।আমার গল্পের প্রধান চরিত্র অসীমা দেবীর মনেও এই মূহুর্তে সেরকমই চলছে।ফোনে কথা বলার পর চুপচাপ বসে আছেন চোখের কোলে জল অথচ মুখে যেন নিজের মত প্রকাশের আনন্দ। এমন সময় তিতাস এসে জিজ্ঞাসা করলো কে ফোন করেছিল মা? দাদা?আবার সেই বাড়ি বিক্রির কথা বলছিল? তুমি আজ বলে দিয়েছো তো? এক নিঃশ্বাসে কথা গুলো বলে মায়ের দিকে তাকিয়ে থাকে।তোর কি মনে হয়? আমি বলতে পারবোনা?আজ আমি স্পষ্ট বলে দিয়েছি আমাকে নিয়ে তোদের এত চিন্তা করতে হবে না। আমার জন্য টাকাও পাঠানোর দরকার নেই। আমি যেটুকু পেনশন পাই তাই দিয়ে আমার একার চলে যাবে। আর আমার বাড়ি আমি কি করব সেটা আমি বুঝে নেব। তোমাদের ও নিয়ে ভাবতে হবে না।ওরা আসবে দেশে সামনের সপ্তাহে; এবার এখানে থাকবে বলছিল, আমি বলেছি এখন তো ঘর নেই তোমাদের থাকার মত , তোমরা বরং হোটেলেই উঠো না হলে বৌমার বাপের বাড়িতে। আমার সব ঘরে এখন মেয়েরা থাকে। কথা শুনে মনে হল একটু রেগে গেল, তা যাক গে। আমার নামে যখন বাড়ি তখন আমি বুঝে নেব।এই মেয়ে গুলো না থাকলে দুবছর আগে কোরোনা কালে আমার কি হতো একবার ভাব। আর তোর বাবা যখন হঠাৎ রাত্রি বেলা অসুস্থ হয়ে পড়েছিল তখন তো এই মেয়েরাই অ্যাম্বুলেন্স ডেকে হসপিটাল নিয়ে যাওয়া চিকিৎসার ব্যবস্থা করা সব করে ছিল। তুই খবর পেয়ে তারপর তো এলি, আর তারা তো টাকা পাঠিয়ে দায়িত্ব মুক্ত। তোর বাবাকে বাঁচাতে পারিনি সেটা অন্য ব্যাপার কিন্তু এরা প্রতি মূহুর্তে আমাকে যেভাবে সাহায্য করছে আমি এদের কাছে ঋনী।তোর মনে আছে তোর দাদা বিদেশ চলে গেল তখনই কেমন ফাঁকা লাগত বাড়িটা? তুই তখন কলেজে পড়ছিলি। সারাদিন কলেজ তারপর পড়া নিয়েই ব্যস্ত থাকতিস। মাঝে মাঝে তোর বন্ধুরা আসলে আমার খুব ভালো লাগত। তারপর তুই পাশ করে চাকরি নিয়ে চলে গেলি। একে একে তোদের দাদু, ঠাম্মা ও চলে গেলেন তখন বাড়িটা গিলে খেতে আসত। যদিও তোদের বাবা ততদিন রিটায়ার্ড করে গেছে, তবুও দুই বুড়ো বুড়ি আর কতক্ষণ ভালো লাগে। ঠিক সেই সময় তোর বন্ধু বিতানের দিদির কথা তুই আমাকে ফোন করে জানালি। আমার তখন মনে হলো ঈশ্বর যেন ওকে পাঠিয়েছিলেন আমাদের একাকিত্ব কাটানোর জন্য। তখনই আমি আর তোর বাবা ঠিক করলাম আমরা উপরে থাকব আর নিচের ঘর গুলোতে মেয়েদের পেয়িং গেস্ট রাখবো,সেই শুরু। তারপর তোর বাবার অসুখের সময় মেয়ে গুলো ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। আমাকে একমূহূর্ত একা ছাড়েনি। তুই তো দেখেছিস। তোর দাদা তো উনি চলে যাওয়ার পরে এলো।অথচ মানুষ টা ছেলে ছেলে করেই গেল। আর সেই যে ছেলে গেল আর এমুখো হয়নি। আমার যখন গলব্লাডার অপারেশন হলো তখন তো তোরা কেউ ছিলি না। আমাকে তো এই মেয়েরাই পালা করে করেছে সব। মায়ের মুখে এই কথা শোনার পর তিতাসের মুখটা কালো হয়ে গেলো। মাকে জড়িয়ে ধরলো।অসীমা দেবী বলতে থাকেন, এই মেয়েরা না আসলে জীবনের মানেটাই বুঝতাম না। আমারও যে গুন আছে আমিও যে কিছু করতে পারি জানতাম না। তোর দাদু ঠাম্মা তো আমি যে কিছু করতে পারি বোঝেই নি বা বুঝলে ও স্বীকার করেননি। আর তোর বাবাও তাই। আমি সারাজীবন শুনে এলাম আমি নাকি অকম্মা।তোরা ছেলে মেয়েরাও কোনো দিন বলিসনি কিছু। অথচ কোরোনার সময় যখন আমি ওদের রান্না করে খাওয়াই তখন ওরা বলে আমি নাকি অসাধারণ রান্না করি। টিনা বলে যে মেয়েটিকে আমি এখানে থাকতে বলি। হঠাৎ লকডাউন হওয়ার ফলে বাড়ি যেতে পারে নি আবার যেখানে থাকত তারাও থাকতে দেয়নি। আমি তখন ওর বন্ধু দিয়াকে বলি আমার এখানে নিয়ে আসতে।ও এসে আমার রান্নার প্রশংসা শুনে বলে ইউটিউবে চ্যানেল খোলার কথা।সব ওই ব্যবস্থা করে দেয়। প্রতি সপ্তাহে একটা করে রান্না করতে থাকি। না বিশেষ কিছু নয়, আমার ঘরে যা আছে তাই দিয়ে চটজলদি অন্যরকম কিছু রান্না। ওরা সব রেডি করে। আমি শুধু রান্না করি। লকডাউনে অল্প সামগ্রী দিয়ে অনেক কিছু করতে শিখেছি্ আর সেগুলো ইউটিউবে ওরা দিয়েছে। আজ আমার সেই চ্যানেল কত মানুষ দেখে। কতজন কতকিছু শিখতে চায়। আমি নতুন করে বাঁচতে শিখেছি। আমি এসব ছেড়ে সব বিক্রি করে ওদের হাতের পুতুল হতে পারব না।আমি তাই ঠিক করছি নিজের জন্য দুটি ঘর রেখে পুরোটাই মেস করে দেব।আর যারা বাইরে থেকে পড়তে আসছে অথচ টাকার ও অভাব আছে তাদের জন্য আমার এখানে বিশেষ সুবিধা থাকবে।মায়ের এই কথা শুনে তিতাস ও খুব খুশি হয়। মাকে বলে তোমার এই উদ্যোগে আমি তোমার পাশে আছি। এমন সময় পাওলি আর মধুরা আসে। ওরা চাকরি করে। ওরা কিছু টা কথা শুনতে পেয়ে জিজ্ঞাসা করে কিসের উদ্যোগ নিচ্ছেন জেঠিমা?তিতাস ওদের সব খুলে বলে। ওরা তখন বলে আমরাও আছি আপনার সাথে সবসময়।অসীমা দেবীর মুখ আনন্দে ঝলমল করে ওঠে। ওদের সবাই কে জড়িয়ে ধরে বলেন ওরে কোরোনা অনেকের অনেক ক্ষতি করেছে আর আমাকে নতুন জীবন দিয়েছে।শ্রীমতি রাখি রায়বর্ধমান

নভেম্বর ২৭, ২০২২
নিবন্ধ

স্বপ্ন পূরণ (ছোট গল্প)

এখনও পাঁচালির আওয়াজ কানে বাজছে দীপ্তর। সেই ছোটো থেকে দেখে আসা স্বপ্নটা আজ সত্যি হলো।কোজাগরী পূজো রাত; রূপোর থালার মত চাঁদের আলোয় ভেসে যাচ্ছে জগত সংসার। এই রাতে নিজেকে সব থেকে সুখী মানুষ মনে হচ্ছে ওর। অথচ কিছু মাস আগেও উল্টো ছিল। আজ দশ বছর পর গ্রামের বাড়িতে এসেছে লক্ষ্মী পূজো উপলক্ষে। এতদিন কলকাতায় আসলেও গ্রামের বাড়িতে আসে নি। এতদিন পরে মনের গোপন কুঠুরিতে লুকিয়ে রাখা স্বপ্ন গুলো প্রকাশ করার সাহস পেয়েছে।গ্রামের ছেলে দীপ্ত, মা বাবাকে হঠাৎ এক দুর্ঘটনায় হারিয়ে শহরে মামার বাড়িতে যখন আসে তখন ও ক্লাস এইট। একে তো এই বয়স তারপর মা বাবাকে হারানো;সব মিলিয়ে দীপ্ত যেন একদম চুপচাপ হয়ে গেছিলো। ওর মামাতো দিদি দীয়া ওকে আগলে রাখতো সবসময়। দীপ্ত দীয়ার থেকে বছর পাঁচের ছোটো কিন্তু মনে হত অনেক ছোটো। দীয়ার সাহচর্যে ও আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। দিদিভাইকে দীপ্ত সহজেই সব কথা বলতে পারত অকপটে। এই বয়সের যেসব পরিবর্তন সেসব কথাও দিদিকেই বলত। কারণ দিদি ছাড়া ওরকম করে ওকে কেউই বুঝত না। যদিও মামীমা খুবই স্নেহ করতেন। গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার ইচ্ছা হলেও দিদিকেই বলত। এইভাবে ও বড়ো হতে থাকলো।দীপ্ত যেবার উচ্চ মাধ্যমিক দেবে ওর দিদির বিয়ে হয়ে গেল। আবার দীপ্ত একা হয়ে গেল। এইসময় ওদের পাশের বাড়িতে একটি পরিবার ভাড়া এল। যতীন কাকু ও স্বপ্না কাকী মা আর ওনাদের মেয়ে রিমা। কাকীমাকে প্রথম থেকেই দীপ্তর মনে হয়েছিল ওর মায়ের মত দেখতে অনেকটা। ওর খালি ইচ্ছা করত ওনার কাছে যেতে। মামীমার সাথে খুব অল্প দিনের মধ্যেই ওনার বেশ ভাব হয়ে গেল। মাঝে মাঝেই এটা ওটা দিয়ে দীপ্ত ওদের বাড়িতে যেত আবার রিমাও আসত ওদের বাড়িতে। ওরা আসাতে দীপ্তর একাকীত্ব যেন একটু লাঘব হলো। যদিও ও রিমা কে একটু এড়িয়ে চলত কারণ ওর মনে হত মেয়েটা বয়সের তুলনায় অনেক বেশি পাকা। রিমা তখন ক্লাস এইট। কাকী মা বলাতে মাঝে মাঝে রিমা কে পড়া দেখিয়ে দিতে হত। যদিও রিমার ভাব কায়দা ভালো লাগতো না। এইভাবেই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করেই পাশ করে কলেজে ভর্তি হলো।সেবার দূর্গা পূজোর অষ্টমীর দিন পাড়ার পূজোতে অঞ্জলি দেবার সময় শাড়ি পড়ে ওর পাশে এসে দাঁড়িয়ে রিমা এমনভাবে তাকালো যে দীপ্ত একটু অবাক হলো, কিন্তু বয়সের তুলনায় বাড়ন্ত রিমা কে সেদিন এত সুন্দর লাগছিল যে দীপ্তও ঘায়েল হয়েই গেল। আড়ালে বসে মদনদেব হাসলেন। তার শরে বিদ্ধ হলো দুটি হৃদয়। যদিও এর প্রকাশ ঘটেনি পরস্পরের কাছে। কিন্তু কতদিন আর ওইভাবে চলে। এসে গেল বাঙালীর ভ্যালেন্টাইন ডে সরস্বতী পূজা। দীপ্ত কলেজ যাবে বলে তৈরি হচ্ছে এমন সময় রিমা এসে ওর মামীমার কাছে বায়না ধরে দীপ্তর সাথে কলেজে যাবে। মামীমা রিমা কে খুব ভালোবাসেন তাই দীপ্তকে বলেন রিমা কে নিয়ে যেতে। তখনও কি ঘটতে চলেছে দীপ্তর আন্দাজ ছিল না। রিমা বাড়ি থেকে বেড়িয়ে বলে কলেজ না ও যেখানে বলবে সেখানে যেতে হবে। এই বলে দীপ্তকে অন্য জায়গায় নিয়ে যায়। যেখানে দুজনে মদন শরে বিদ্ধ হয়, দুটি মনের মিলন ঘটে, অধরে অধরে মিলনের সাথে সাথে। সবার সামনে কিন্তু সবার অজ্ঞাতেই চলল দুজনের প্রেম।রিমা মাধ্যমিক পাশ করল মোটামুটি রেজাল্ট করে। দীপ্ত গ্রাজুয়েশন করে গ্রামের বাড়িতে ফিরে গেল; সেখানে যা জমি জমা আছে চাষ করবে বলে। আর সাথে চলল চাকরির জন্য পরীক্ষা দেওয়া। মামা মামীমা খুব আপত্তি জানিয়ে ছিলেন, কিন্তু দীপ্তর গ্রামের প্রতি টানটা যায়নি। মাঝে মাঝে মামার কাছে আসে। এর একবছর পর হঠাৎ দিদিভাইয়ের এক দূরসম্পর্কের আত্মীয়ের সূত্রে একটা মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানিতে একটা চাকরি পেল। মামার চাপে পরে বাধ্য হলো চাকরিটা করতে। চলে গেল আমেদাবাদ।এবার সবার চোখে রিমার পরিবর্তন ধরা পড়তে লাগল। সেই প্রাণোচ্ছল মেয়েটা যেন কেমন চুপচাপ হয়ে গেল। আসতে আসতে দীপ্তদের বাড়িতে যাওয়া কমতে লাগলো। হঠাৎ দীপ্তর মামীমা খেয়াল করলেন যে রিমার মা আগের মত মেলামেশা করছে না। দীপ্ত ওর দিদিকেই সবটা জানাল। সব জেনে দীয়া গেল রিমার মায়ের সাথে কথা বলতে ওদের ব্যাপারে। রিমার মা দীয়াকে অনেক কথা শুনিয়ে দিলেন। এরপর ওর মামা মামীমা ও দীপ্তর কথা ভেবে কথা বলতে গেলে ওনাদের খুব অপমান করেন রিমার মা বাবা। এটা দীপ্ত মেনে নিতে পারে না। রিমা কে প্রস্তাব দেয় বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে বিয়ে করতে হবে। কিন্তু রিমা রাজী হয় না। দুজনের মধ্যে চলতে লাগল টানাপোড়েন। এইভাবে চলতে চলতে হঠাৎ রিমারা চলে গেল। দীপ্তর সাথে কোনো রকম যোগাযোগ করল না। পরে বন্ধু মারফত শুনে ছিল রিমার বিয়ে হয়ে গেছে।এরপর দীপ্ত শুধু নিজের কেরিয়ার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। চাকরিতে যাতে আরও উন্নতি হয় সেদিকে মনপ্রাণ লাগিয়ে দিল। ওর সততা আর সরলতা সবার মন জয় করে নিল। তরতর করে উন্নতি হতে লাগল। দীপ্ত যখন যার অধীনে কাজ করে সেই ওকে খুব ভালোবেসে ফেলে। কাজের উন্নতির সাথে সাথে বাড়ি আসা কমতে থাকে। এদিকে মামা মামীমা বিয়ের জন্য ক্রমশ জোর দিতে থাকে। বারবার এড়িয়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত দিদিভাইয়ের কাছে হার মেনে বিয়ে করতে রাজি হয়। দীপ্তর গ্রামের বাড়ির পাশের গ্রামের এক নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে মধুমিতার সাথে বিয়ে হয় দীপ্তর। মধুমিতা গ্রামের মেয়ে ও গরিবের মেয়ে হলেও খুব উচ্চাকাঙ্ক্ষী ছিল। তবুও বিয়ের পর দুটো বছর বেশ ভালো কাটল। তারপর ওদের মাঝে এল ওদের ছেলে অন্বয়, যাকে ওরা কুট্টুস বলে। কুট্টুস তখন দুবছরের হঠাৎই মধুমিতার ব্যবহারে যেন অনেক পরিবর্তন আসতে থাকে। সারাক্ষণ ফোন নিয়ে বসে থাকে, ছেলেকেও সেভাবে যত্ন করে না। কথায় কথায় দীপ্তর বয়স নিয়ে, যোগ্যতা নিয়ে অপমানজনক কথা বলে। দীপ্তর সাথে ওর বয়সের ফারাক অনেক বেশি বলে হঠাৎ করে ওর দীপ্ত কে নিয়ে ওর মধ্যে সমস্যা দেখা যায়। দীপ্ত প্রথম প্রথম খুব একটা পাত্তা না দিলেও শেষ পর্যন্ত পারে না।শেষ পর্যন্ত ব্যাপারটা প্রায় ডিভোর্সের পর্যায়ে চলে যায়; কিন্তু দীপ্ত ছেলে ছেড়ে থাকতে পারবে না এটা বুঝতে পারে। তাই দীর্ঘ সময় বাপের বাড়িতে রেখে দিলেও শেষ পর্যন্ত ওদের আবার ফিরিয়ে নিয়ে যায় কাজের জায়গায়। সেখানে আরেক অশান্তি শুরু হয়। সমস্যা যখন বেশ সমাধান হতে শুরু করে ঠিক সেই সময় দীপ্তর এক পিসতুতো ভাই মানস কাজের সূত্রে ওদের ওখানে গিয়ে ওঠে। সে প্রায় মধুমিতার কাছাকাছি বয়সের। তার নজর পরে মধুমিতার ওপর। তাই দীপ্ত আর মধুমিতার মধ্যে আবার বিবাদ লাগানোর জন্য রিমার কথা অনেক বেশি বেশি করে বাড়িয়ে বলে মধুমিতার কাছে। মধুমিতার মনে আবার ঝড় ওঠে। এই সময় মানস সুযোগ নিতে চায়। কিন্তু মধুমিতার মনে মানসের জন্য তো কোনো জায়গা ছিল না তাই ও মানসের এই ব্যাপারটা মেনে নিতে পারে না। ও দীপ্তর কাছে সব বলে। এবং মানস যাতে আর না আসে সে ব্যবস্থা করতে বলে দীপ্ত কে।দীপ্ত বোঝে এই মেয়ের সাথে ঝগড়া করে হবে না আস্তে আস্তে বুঝিয়ে ঠিক করতে হবে। ও এই ব্যাপারে দিদিভাইয়ের সাহায্য নেয়। আস্তে আস্তে মধুমিতার মধ্যে পরিবর্তন আসতে শুরু করে। ওর শুধু একটাই রাগ রিমার কথা দীপ্ত কেন ওকে বলেনি। দীপ্ত ওকে বোঝায় রিমার কথা ও মনে করতে চায়না; ওটা ওর একটা বেদনাময় অংশ ছিল। যেদিন থেকে মধুমিতার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় সেদিন থেকে ও শুধু মধুমিতার। দীপ্ত শেষ পর্যন্ত বোঝাতে সক্ষম হয়। আস্তে আস্তে মধুমিতা নিজের ভুল বুঝতে পারে। তারপর থেকে মন দিয়ে সংসার করতে চেষ্টা করে। দীপ্ত আর মধুমিতার মধ্যে সব ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়। ওদের মধ্যে আরেক অতিথি আসে মাস তিনেক আগে। ওদের মেয়ে অন্বেষা।এই আনন্দের সময় দীপ্তর মনে পড়ে ওর মায়ের কথা। একদিন কথাপ্রসঙ্গে মধুমিতার কাছে ও বলে আমার স্বপ্ন ছিল আমার স্ত্রী আমার মায়ের মত করে বাড়িতে লক্ষ্মী পূজো করবে। মধুমিতা সেকথা শুনে রাজী হয়ে যায়। আনন্দের সাথে এবার গ্রামের বাড়িতে এসে এবার দীপ্তর কথা মতো একদম লাল পাড়ে শাড়ি, পায়ে আলতা পড়ে লক্ষ্মী পূজো করে আর শেষে পাঁচালি পড়ে একদম মায়ের মতো করে।দীপ্তর মনে পড়ে যায় হারিয়ে যাওয়া মায়ের সাথে বসে লক্ষ্মী পূজো দেখার কথা। আজ আনন্দে দীপ্তর চোখে ঘুম নেই। ঘরের মধ্যে ছেলে মেয়ে নিয়ে মধুমিতা ঘুমিয়ে পড়েছে, সারাদিন খাটাখাটনি করে ক্লান্ত হয়ে। দীপ্ত ব্যালকনিতে আনন্দের জ্যোৎস্নায় স্নান করছে। আজ যে ওর মনে বাসা বেঁধে ছিল যে স্বপ্ন তা পূরন হয়েছে।শ্রীমতি রাখি রায়বর্ধমান

নভেম্বর ০৬, ২০২২
নিবন্ধ

শহরের কোলাহলের বাইরে এ যেন মনে গাঁথা ভিন্ন পৃথিবী

মোড়াটা বসতে দে। চেয়ার তো নেই। বিনয়ের সঙ্গে পরিতোষ বললেন, ওটাতেই বসতে হবে। মোড়াটা এগিয়ে দিল বিনু। ছিন্নভিন্ন খড়ের চাল যেন মাটি ছুঁয়ে ফেলেছে। মাটির দাওয়া। ঘরে-বাইরে চারিদিক অগোছাল। এদিক-ওদিক ঝুলছে কাপড়-জামা। প্রতি পদে দারিদ্রতার স্পষ্ট ছাপ। তবু আথিতেয়তায় যেন কোনও খামতি নেই পরিতোষ হেমব্রমের। নুন আনতে পান্তা ফুরানোর আবস্থা। দিনমজুরি করেই সংসার টেনে চলেছেন বছর পঞ্চাশের পরিতোষ। কলকাতা থেকে বাঁকুড়ার রাণীবাঁধে গ্রাম দেখতে গিয়েছে রকিরা। আসলে তাঁদের গন্তব্য ছিল মুকুটমনিপুর। বর্ষায় প্রকৃতির অসাধারণ শোভা দেখতে সেখানে যাওয়া। এরই ফাঁকে আদিবাসীদের গ্রাম দেখতে ইচ্ছে হয় উৎকল ও রেশমির। শহরের দূষণে জীবন জেরবার। তাই নির্মল গ্রামের সন্ধানে জঙ্গলমহল। সেই উদ্দেশ্যে ৫ বছরের ছেলে রাহুলকে নিয়ে পরিতোষদের বাড়িতে তিনজনেই হাজির। রাহুলের ডাক নাম রকি। আগে থেকেই কিছুটা পরিচয় ছিল পরিতোষের সঙ্গে। প্রথমবারের সাক্ষাতে আথিতেয়তায় মুগ্ধ উৎকল-রেশমিরা। পায়ের সামনে ঘটিতে জল রেখে প্রণাম করে পরিতোষের স্ত্রী। পাল্টা নমস্কার করে উৎকল-রেশিমি। অতিথিদের চা-বিস্কুট খেতে দিল রানি, পরিতোষের স্ত্রী। রানি তাঁদের দুপুরের আহারের করার জন্যও আবদার করতে থাকে। না খেয়ে এখান থেকে যাওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই, বলে রানি। প্রত্যন্ত গ্রামে আদিবাসীদের ব্যবহারে মুগ্ধতার কথা বলেই ফেলল রেশমি। সে বলে ওঠে, আমরা এসেছি গ্রাম দেখতে। জঙ্গলমহলের আদিবাসী মানুষজনের জীবন-জীবীকা, জীবনবোধ, পরিবেশ দেখার অসীম আগ্রহ নিয়েই এসেছি এখানে। কিন্তু ব্যবহারে এমন আন্তরিকতা পেতে পারি তা আশাই করতে পারিনি। এঁদের সঙ্গে না রক্তের সম্পর্ক না আগে কোনও দিন দেখা হয়েছে। একথা ভেবে মনের মধ্যে বির বির করতে থাকে রেশমি। অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন ওই পরিবারের সদস্যদের দিকে। পরিতোষের মেয়ে ঝুমুরও জোরাজুরি করছে। অথচ এঁরা কেউ কাউকে দেখা তো দূরের কথা তাঁদের সম্পর্কে কোনও কথাই শোনেনি। অযাচিত অতিথিকে আদিবাসীরা এতটা আপন করে নেয়, ভাবতে থাকে উৎকল। যেটুকু পরিচয় ওই পরিতোষের সঙ্গে উৎকলের। তাও এক বন্ধুর মারফৎ। সেই সূত্রে পরিতোষদের বাড়িতে চলে আসা।কনভেন্টে পড়াশুনা করে রাহুল। এবার রেশমিদের মনে উদ্রেক হয় পরিতোষের মেয়ে কী আদৌ পড়াশুনা করে? এমন প্রত্যন্ত গ্রাম, তারওপর সংসারের বেহাল দশা। নুন আনতে সত্যি সত্যি পান্তা ফুরানোর অবস্থা। পোষাক-পরিচ্ছদেও তার স্পষ্ট ছাপ। জিজ্ঞাসা করা ঠিক হবে কীনা ভাবতে থাকে রেশমি। কিন্তু কৌতুহল বেশিক্ষণ চাপা থাকেনি। শেষমেষ রানিকে জিজ্ঞেস করে রেশমি। মেয়ে কোন ক্লাসে পড়ছে? রানি বলে, সংস্কৃতিতে অনার্স গ্রাজুয়েট হল এবছরই। জানি না চাকরি-বাকরি পাবে কিনা। সরকারি চাকরি পাওয়ার আশা তো না করাই ভাল। তাছাড়া আমাদের টাকা-পয়সাও নেই। যাক ওই পড়াশুনাটা তো হয়েছে। এই আর কি। আসলে মেয়ের চেহারা স্লিম ঠিক নয়, একেবারেই রুগ্ন। দেখলে মনে হবে ক্লাস এইট-নাইনের ছাত্রী। দরিদ্র আদিবাসী পরিবারে যাঁদের অন্নের সংস্থান করতেই ঘাম ছুটছে, সেই বাড়ির মেয়ে অনার্স গ্রাজুয়েট। পড়াশুনা করতে যেতে হত ৪০ কিলোমিটার দূরের বাঁকুড়া শহরে। শিক্ষকও নেই গ্রামে। এসব শুনে মনপ্রাণ জুড়ে যায় রেশমির। শহরের মানুষের অহঙ্কারের কথা ভেবে নিজেকেই ছোট ভাবতে থাকে রেশমি। এমন প্রত্যন্ত গ্রাম, বাড়িতে অর্থের সংস্থান নেই, পরিবারের কেউ কলেজ কেন স্কুলের গন্ডিও পার করেনি। অথচ সেই বাড়িতে অনার্স গ্রাজুয়েট। পড়াশুনার জন্য কত লড়াই! কথা-বার্তায় সেটুকুও বোঝার উপায় নেই। রেশমি ভাবতে থাকে, অথচ এদের কোনও চাকরিও জুটবে না। এসটি কোটা থাকলেও কী যায় আসে।চা বিস্কুট খেয়ে, ভাল-মন্দ গল্পগুজবকে সঙ্গী করে পরিতোষদের বাড়ি ছাড়ে উৎকল-রেশমিরা। তার মধ্যে ছোট্ট রাহুল বায়না ধরে লালঝুটি মোরগ নেবে বলে। রেশমিরা যখন গল্পে মত্ত তখন রাহুল ছুটে বেরিয়েছে ছাগল, মোরগদের পিছনে। এই অনাবিল আনন্দ তো আর শহরে পাবে না। সেখানে তো কৃত্তিমতায় ভরা। চরম আত্মকেন্দ্রীক সমাজ। দুই পরিবেশে বিস্তর তারতম্য উপলব্ধি করতে থাকে উৎকলরা। পরিতোষদের বাড়িতে দুটো গরু, গোটা চরেক ছাগল, ১৯-২০টা মোরগ-মুরগি আছে। এসব দিয়ে কিছু অর্থের সংস্থান হয় আর কী। রানি বলে, মোরগ নিয়ে গেলে নিয়ে যান। কিন্তু তা-তো আর সম্ভব নয়। ঘন্টাখানেক পরিতোষদের বাড়িতে ছিল ওরা। কিন্তু যেন তারই মধ্যে এমন টান জন্মে গিয়েছে পরিবারটির প্রতি উঠতেও যেন তাঁদের মন করছে না। মানুষ তাহলে এখনও আছে। শিক্ষার জন্য গরীব মানুষের লড়াই আছে। আর্থিক দৈন্যতা সত্বেও আন্তরিকতা আছে পূর্ণমাত্রায়। অজানা পরিবারেও আত্মার টানের উপলব্ধি আছে। এসব ভেবেই বিহ্বল হয়ে উঠল রেশমি। যদিও কলকাতায় পাশের ফ্ল্য়াটের লোকজন কেউ কারও খবর রাখে না। দেনা-পাওনার হিসেবেই সবাই ব্যস্ত। তাঁর কাছে এ যেন শহরের বাইরে এক নতুন পৃথিবী। নয়া জগত।আদিবাসী গ্রাম থেকে ফের মুকুটমনিপুরের অতিথিশালায় গিয়ে ওঠে উৎকলরা। পড়ন্ত বিকেলে কংসাবতীর ড্যাম দেখতে অতিসুন্দর। তারওপর বর্ষাকালে টইটুম্বুর জলে আকর্ষণ বেড় গিয়েছে আরও বেশ কয়েকগুন। লকগেট থেকে মাঝে-মধ্যে জলও ছাড়া হচ্ছে। মহানগরের কোলাহল থেকে মাথার চাপ হালকা করতে এভাবে হঠাৎ হঠাৎ অনেকেই ছুটে যান পাহাড়, জঙ্গল, সমুদ্রে। স্বল্প সময়ে অল্প পরিচিত পরিতোষ হেমব্রমের পরিবারের আদর-আপ্যায়ন, মেয়ের পড়াশুনার খবরে উৎকল-রেশমির মন যেন অজানা আনন্দে ভরে গিয়েছে। কংসাবতীর ড্যামের সৌন্দর্যও যেন তার থেকে ম্লান। ফুরফুরে বাতাসে শ্বাস আর বাড়তি কনফিডেন্স নিয়ে কলকাতায় ফিরে ফের কাজে মন দিল উৎকলরা। কিন্তু ভোলেনি বাঁকুড়ার রানিবাঁধে হেমব্রমদের। তা যে মনে গেঁথে আছে।

অক্টোবর ৩০, ২০২২
নিবন্ধ

অদৃশ্য সাহায্য (ছোট গল্প)

ট্রেনটা স্টেশনে থামল রাত তখন প্রায় সাড়ে দশটা। স্টেশন প্রায় ফাঁকা, দুচার জন এদিক ওদিক শুয়ে আছে।এতো রাতে ট্রেন থেকে খুব একটা বেশি লোক নামে না। আজ আগের ট্রেনটা মিস হয়ে যাওয়ার পর অর্ণা যখন বলল ওর সঙ্গে যেতে তখন ঋতু গেলোনা; মায়ের ওষুধ ফুরিয়ে গেছে যে। সেগুলো কিনতে গিয়েই আজ ট্রেনটা মিস হয়ে গেলো।স্টেশন থেকে বাইরে বেরিয়ে দেখল চারিদিক সুনসান। ফোনটাও অফ হয়ে গেছে চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ায়।বাড়িতে ফোন করার ও উপায় নেই। দেখে মনে হচ্ছে লোড শেডিং।ভাগ্য ভালো ছোট টর্চ টা সাথে ছিলো। ঋতু হাঁটতে লাগল।একটু যেতেই মনে হলো পিছনে কেউ আসছে। দেখল একটা ফাঁকা রিক্সা।ঋতু অবাক হলো কই দেখতে পায়নি তো স্টেশন এ। ভাবল অন্ধকারে দেখতে পায়নি।রিক্সাচালক একটি অল্পবয়সি ছেলে। ঋতুকে বললো দিদি আমার রিক্সায় ওঠো আমি ওদিকেই যাবো, তোমাকে বাড়ি পৌঁছে দেবো। ঋতুকে ইতস্তত করতে দেখে ছেলেটি বলল দিদি আমি তোমার ছোটোভাইয়ের মতো। এতো রাতে একা যেও না রাস্তা ভালো না। ঋতু আর দ্বিধা না করে উঠে পরলো রিক্সায়।ছেলেটি বেশ ভালো, গল্প করতে করতে এগিয়ে চলল। পথে একটা পুরনো বাড়ি পরে, ওখান টা বেশ গা ছম ছম করতে লাগল। ছেলেটা তখন বলল ভয় কি দিদি আমি আছি। তখন সমীর মানে রিক্সাচালক ছেলেটি বলতে লাগল---- পাঁচ বছর আগে এরকম এক অন্ধকার রাতে তোমার মতো একজন মেয়ে হেঁটে ফিরছিল। তখন ঐ বাড়িটার দাওয়ায় একদল ছেলে আড্ডা দিত মানে মদের আসর বসত। এই পথ দিয়ে মানুষের যাওয়ার উপায় ছিলোনা। মেয়েটি তোমার মতই নিরুপায় হয়ে এই পথ দিয়ে যাচ্ছিল। যেই না ওদের সামনে এসেছে ওর শুরু করলো বদমাইশি। আমি তখন একজনকে নামিয়ে বাড়ি ফিরছি। চিৎকার শুনে তাড়াতাড়ি এগিয়ে গিয়ে ওদের বাধা দিলাম। কিন্তু ওরা ছিলো চার পাঁচ জন। আমি তাও ওদের আটকাতে চেষ্টা করলাম। মেয়েটিকে বললাম তুমি পালাও। মেয়েটি আমার কথা শুনে ছুট লাগালো। ওর পিছনে একজন ছুটল। বাকিরা আমাকে মারতে লাগল। শেষে একজন ওদের ফেলে দেওয়া বোতল ভাঙা আমার পেটে ঢুকিয়ে দিল। আমি আর পারলাম না। পরে গেলাম মাটিতে, রক্তে ভেসে গেলো আমার দেহ। ছেলে গুলো আমাকে মরে যেতে দেখে পালিয়ে গেলো।এই দিদি তুই এখানে কি করে এলি? আমি তো তোকে আনতে স্টেশন গেছিলাম, কিন্তু দেখতে পেলাম না।ঋতু ভাই কে কিছুই বলতে পারলো না। শুধু বলল পরে বলবো। এখন ঘরে চল। ওর ভাই অবাক চোখে তাকিয়ে রইল। কিছুই বুঝল না।সমীররা এইভাবেই সাহায্য করে যায় মানুষ কে......।।

জুলাই ১০, ২০২২
নিবন্ধ

ফিরে পেলাম (ছোট গল্প)

অনেক দিন পরে আবার যেন নিজেকে ফিরে পেলাম। আমার স্বপ্ন, ইচ্ছা যা প্রায় হারিয়ে ফেলেছিলাম আবার যেন ফিরে পাব এই আশা মনে জাগছে।ভাবছেন তো কে আমি! কি বলছি, কেনই বা বলছি? আজ আমার কথা বলব বলেই আমার প্রিয় জায়গায় এসে বসেছি।আমি অনামিকা দত্তগুপ্ত। আমার বাবা অতুল দত্তগুপ্ত পেশায় শিক্ষক, মা তমালী দত্তগুপ্ত গৃহবধূ, কিন্তু গান ওনার প্রথম ভালোবাসা। আমার ঠাম শকুন্তলা দেবী খুব ভালো আবৃত্তি করতে পারেন। আর আমার ছোটো ভাই রূপ দারুণ তবলা আর মাউথ অর্গান বাজায়। বুঝতেই পারছেন কিরকম আবহাওয়ার মধ্যে বড়ো হয়েছি। সবাই বলত আমার গলায় নাকি মা সরস্বতী বাস করেন। গান ছিল আমার প্রাণের চেয়ে ও প্রিয়। আর ছোটো থেকে আমি কবিতা লেখা, গল্প লেখা এসব একটু আধটু করতাম। আমাদের বাড়িতে সকাল সন্ধ্যে গান বাজনা, আবৃত্তি চলত। এইভাবেই বড়ো হতে থাকি। চোখে স্বপ্ন ছিল বড়ো হয়ে হয় সাহিত্যিক হবো নয়তো গানকে নিয়েই এগিয়ে যাবো। আমার লেখা বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হতো। আমার বাবার একজন বন্ধু এতে অনেক সাহায্য করতেন। আমাকে খুব স্নেহ করতেন। একটা পারিবারিক সম্পর্ক ছিল আমাদের। রফিকুল ইসলাম তার নাম। তার ছেলে আতিফ আমার ছোটো বেলার বন্ধু। আমরা একসাথে বড়ো হয়েছি। আমি উচ্চ মাধ্যমিকের পর সাহিত্য নিয়ে পড়তে কলকাতার একটি কলেজে ভর্তি হলাম। সাথে গানের জন্য পন্ডিত ইরশাদ খান সাহেবের কাছে ভর্তি হলাম।এই গানের স্কুল আর কলেজ এই ছিল আমার জগত। আতিফ ও একই কলেজে ভর্তি হওয়ায় মা বাবা একটু নিশ্চিন্তে ছিলেন। আমরা কলেজের কাছে মেসে থাকতাম। পাশাপাশি ছিল মেস দুটো। আমাদের মধ্যে এমন সম্পর্ক ছিল সবাই ভাবত আমরা আপন ভাই বোন। বেশ চলছিল কলেজ আর গান নিয়ে আমার জীবন। হঠাৎ করে সেখানে ঝড়ের মতো এসে সব উলোট পালোট করে দিল অন্বয় সাহা। গানের স্কুলে পরিচয়। গুরুজির সবচেয়ে প্রিয় ছাত্র। একটা অনুষ্ঠানে গুরুজি আমাদের দুজনকেই নিয়ে যান। সেখান থেকেই শুরু। সেই পরিচয় আস্তে আস্তে গভীর হয়। আমাদের কলেজেরই সিনিয়র ছাত্র ছিল। কলেজের অনুষ্ঠান গুলোতেও আমরা একই সঙ্গে গান করতাম। অনি সবসময় বলতো ভালোই হবে আমরা একসাথে সব জায়গায় গান করতে যেতে পারবো। আমার তখন মনে হতো আমি খুব ভাগ্যবতী যে ওর মতো একজনকে পেয়েছি। কলেজের শেষে ও পুরো সময় গানের জন্য দিয়ে দেয়। সেই সময় একটা প্রতিযোগিতায় আমরা দুজনেই অংশগ্রহণ করি। আমি প্রথম আর ও দ্বিতীয় হয়। সেদিন ওর মুখে যেন অন্ধকার নেমে এসেছিল। আমার খুব খারাপ লাগে। এরপর আবার একজায়গায় ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। আমার মনে হয় এবার হয়তো আমাদের সম্পর্কে এর আঁচ লাগবে; কিন্তু অদ্ভুত ভাবে ও চুপ করে যায়। না এবার যেন আমাকে বেশি উৎসাহ দিতে থাকে। আমি খুব খুশি হই ওর কাছে এরকম ব্যবহার পেয়ে।একদিন আমার তখন ফাইনাল পরীক্ষা হয়ে গেছে আমাকে বলে ওর মাকে সব বলেছে আমার কথা। উনি আমাকে দেখতে চেয়েছেন। আমাকে ওদের বাড়িতে নিয়ে গেল। মা, বাবা আর ছেলে এই ওদের ছোটো পরিবার। আমাকে তো এমন ভাবে আপ্যায়ন করলেন ওর মা যেন আমাকে কতদিন চেনেন। আমি ওনার ব্যবহার দেখে আপ্লুত হয়ে গেলাম। বর্ং বাবা মানুষটিকে কেমন যেন লাগলো। এরপর ওর মায়ের জোরাজুরিতে আর আমার ইচ্ছার কাছে মা, বাবা, ঠাকুমা অনিচ্ছা সত্ত্বেও আমার বিয়ে দেন। এর মধ্যে আমার আর একজনের সাথে সবসম্পর্ক নষ্ট হয় সে হলো আতিফ। বাড়ির লোকের পর আমার সবচেয়ে বেশি হিতাকাঙ্ক্ষী। কিন্তু আমি সেটা তখন বুঝতে পারিনি। ও আমাকে বারবার বলেছিল রুম (আমার ডাক নাম) একটু ভাব ; এত তাড়াহুড়ো করিসনা। আমার তখন মনে হয়েছিল ও যেন চায় না আমার বিয়েটা হোক। মনে অন্যরকম চিন্তা আসছিল। ওকে একদিন খুব অপমান করলাম। ও মুখ নিচু করে সেই যে গেল আর আমার সামনে বিয়ের আগে আসেনি। আমিও যাইনি ওর কাছে। অথচ বোনের বিয়েতে ভাইয়ের যে ভূমিকা থাকে সব আমার বাবার সাথে থেকে পালন করেছে।যাইহোক বিয়েটা হয়ে গেল। বিয়ের পর মাস ছয়েক এখানে ওখানে ঘুরে কাটিয়ে দিলাম। এরমধ্যে আমার রেজাল্ট বেরিয়ে গেছে, আমি মাস্টার্স করার জন্য যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি।এবার আমাদের দুজনের আবার গানের জগতে ফেরার পালা। কিন্তু অদ্ভুতভাবে আমার রেওয়াজ করার সময় ওর মায়ের কোনো না কোনো দরকার পরে যেত যেখানে আমার যেতেই হতো। এইভাবে বেশ কিছু দিন চলার পর একদিন ধৈর্য হারিয়ে বলেই ফেললাম আপনার সমস্যা টা কি বলুন তো? যখনই আমি রেওয়াজ করতে বসি তখনই আপনি কোনো না কোনো কারণে আমাকে ডাকেন কেন? আমার শাশুড়ির উত্তরে আমি হতবাক হয়ে যাই। কি হবে সকাল সন্ধ্যা এত চেঁচিয়ে? বিয়ে হয়ে গেছে এবার সংসারে মন দাও।আমি স্তম্ভিত হয়ে যাই। কোনো কথা যোগায় না আমার। ভাবি যে মানুষটা এত প্রশংসা করতো আমার গানের তার কাছে সেটা এখন চেঁচানো!অন্বয় বাড়ি ফিরলে ওকে একথা গুলো বলি। ওর জবাব আমাকে আরও অবাক করে। মা তো খারাপ কিছু বলেননি। উনি চেয়েছেন তুমি ওনাকে একটু সাহায্য করো। গান তো আছেই।মানে! আমি রেওয়াজ করা ছেড়ে তোমার মায়ের সঙ্গে শুধু সংসারের কাজ করবো! এমন কথা তো ছিল না। আমরা একসাথে গান করব এটাই তো বলেছিলে। আমি অন্বয় কে বলি।হ্যাঁ তখন সেটাই মনে হয়েছিল, তাই বলেছিলাম। আজ মনে হচ্ছে মায়ের ও কিছু চাওয়ার থাকতে পারে।আমি যতই দেখছি আর শুনছি অবাক হয়ে যাচ্ছি। আমি কোনো কথা বললাম না এটুকু বুঝতে পারলাম কোথাও একটা ভুল আমি করে ফেলেছি। কিন্তু কাউকে কিছু বলতে পারলাম না।একটা ব্যাপার খেয়াল করলাম আমাকে পড়তে কিন্তু বাধা দেয় না। আমি ইউনিভার্সিটি যাই তাতে ওদের কোনো সমস্যা নেই। যত সমস্যা গান নিয়ে।আমি মায়ের কাছে গেলাম পরীক্ষা দেব ওখান থেকে এই বলে। কিন্তু মন আমার খুব অস্থির হয়ে রয়েছে কী ঘটছে, আর কেন? এই ভেবে। আতিফের সাথে প্রায় এক বছর যোগাযোগ করিনি। আমি বারণ করেছিলাম বলে ও আমার সাথে যোগাযোগ রাখেনি। কিন্তু আমার মনে হলো ওর সাথে কথা বলা খুব দরকার। মা, বাবা কে বলতে পারবো না আমার সমস্যার কথা। একমাত্র ওকেই বলা যাবে। একদিন ওদের বাড়িতে চলে গেলাম। গিয়ে জানতে পারলাম ও মাস্টার্স করতে নর্থ বেঙ্গল গেছে। আমার সব যেন কেমন লাগতে লাগল, বুঝতে পারলাম না কি করব। ফিরে এলাম বাড়িতে। ঠাম কিছু হয়তো আন্দাজ করতে পেরেছিলেন। আমার ঘরে এসে একদিন বললেন দিদি ভাই কিছু যদি বলার থাকে আমাকে বল, মনের মধ্যে রাখলে শরীর, মন দুইয়ের ক্ষতি হবে। আম শুধু কেঁদে ছিলাম কিছু বলতে পারিনি।পরীক্ষা হয়ে যেতেই অন্বয় আমাকে নিয়ে যেতে এল। আমি কি করব ভেবে পাচ্ছিলাম না। তাই বললাম মায়ের কাছে আর কটা দিন থেকে তারপর যাব।অন্বয় ফিরে গেল। আমি আরিফকে ফোন করলাম, কিন্তু ও ধরলো না। পাঁচ বারের বার ধরল। বল, কি বলবি। আমি কিছু বলতে পারলাম না শুধুই কেঁদে গেলাম।আরে কাঁদতে কাঁদতেই বল কি হয়েছে।তুই একবার আসবি? তোকে আমার খুব প্রয়োজন।কি হয়েছে আগে বল।আমি বললাম আমার যা মনে হচ্ছে, আর যা ঘটছে।চুপচাপ সব শুনল, তারপর বললো ঠিক আছে দেখছি আমি কবে যেতে পারি। তুই সাবধানে থাকিস। এই বলে সেদিন রেখে দিলাম।মনটা একটু হালকা লাগলো। পরদিন শ্বশুর বাড়ি ফিরে গেলাম। এবার ঠিক করলাম আমি আমার মতো গান করে যাব। সেই মতোই করতে লাগলাম। আর আমার শাশুড়ি মা প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যেতে লাগলেন আমার গান যাতে না হয়। অন্বয় ও মায়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে লাগলো। ও যেন চায়না আমি গান টা করি।কিন্তু আমি কারনটা বুঝতে পারছিলাম না। অথচ গুরুজির কাছে যখন যেতাম তখন একদম অন্য মানুষ। আমার খুব অবাক লাগতো।একদিন গুরুজির কাছে গান শিখতে গেছি,; উনি বললেন দিল্লিতে একটা মিউজিক সম্মেলন আছে সেখানে আমাদের কয়েকজনকে যেতে হবে।অন্বয় হঠাৎ বলে ওঠে যে অনামিকা যেতে পারবে না। আমি অবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে থাকি। আমার সাথে কি হচ্ছে বুঝতে পারিনা।গুরুজি আমাকে জিজ্ঞাসা করেন কি অসুবিধা আছে? আমার কিছু বলার আগেই অন্বয় বলে ওঠে আমার মা অসুস্থ, এতদিন ওর পরীক্ষা ছিল তাই মা কিছু বলেন নি ; কিন্তু এখন যদি ও আবার গান করতে দিল্লি চলে যায় মা খুব মুশকিলে পড়বেন। আমার অবাক হওয়ার আরও বাকি ছিল। ওখানে কিছু বলতে পারলাম না। বাড়িতে ফিরে যখন জিজ্ঞাসা করলাম যে কেন এরকম বললো, মা তো ভালোই আছেন। তখন মা আর ছেলে মিলে অকথ্য ভাষা ব্যবহার করলো। যা শুনে আমি নির্বাক হয়ে গেলাম।সেবার আমার যাওয়া হলো না। অন্বয় গেল একাই। আতিফ এইসময় এসে ফোন করে বললো ও এসেছে। আমি শাশুড়িকে বললাম যে বাবার বাড়ি যাব, খুব একটা খুশি না হলেও রাজী হয়ে গেল।এই সুযোগে আমি বাড়িতে যেতে পারলাম শুধু নয় আতিফের সাথে এতদিন পরে দেখা হওয়ায় অনেক কথা হলো। এত কথা যে জমে ছিল আমি নিজেও বুঝতে পারিনি।আতিফের ও অনেক কথা জমা হয়ে ছিল। ওর নতুন প্রেম ও তার কথা সব বললো। বেশ সময় কাটলো অনেক দিন পরে।এভাবেই দিন কাটতে লাগল। কিন্তু মনের মধ্যে একটা প্রশ্ন থেকেই গেল যে কেন এমন হলো। বিয়ের তৃতীয় বছর, একটা অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা বললেন গুরুজি। আবার অন্বয় বললো আমি যেতে পারবো না। কিন্তু এবার আমি জোর করে বললাম যে যাব। অন্বয় একটু অপ্রস্তুত হলেও কিছু বললো না।বাড়িতে ফিরে শুরু হলো অশান্তি। আবার যা মুখে এল তাই বললো। কিছুতেই আমাকে গানের জগতে যে থাকতে দেবে না এটা বুঝতে পারলাম। একটা কথা আমার মনকে খণ্ডবিখণ্ড করে দিল যখন অন্বয় বললো তোকে আমি ভালোবাসি নি কোনোদিন ; তুই আমার পথের কাঁটা তাই তোকে আমার পথ থেকে সরাতে ভালোবাসার নাটক করে বিয়ে করেছি।আমার পায়ের তলায় আর কিছু রইলো না। আমি ঘরে চলে গেলাম চোখে জল শুকিয়ে গেছে, শুধু ভাবছি কি করব! এমনসময় আমার মাথায় কারো স্পর্শ অনুভব করলাম , তাকিয়ে দেখি আমার শ্বশুর মশায়।আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন এখন কাঁদবার সময় নয়, ভালো করে ভাব মা তুই কি চাস। এভাবে নিজেকে মেরে থাকতে পারবি? ওরা তোর বড়ো ক্ষতি করে দেবে। তুই চলে যা এখান থেকে। কথাটা কোনো রকমে বলে চলে গেলেন।আমার কি করা উচিত ভাবতে লাগলাম। এমন সময় আমার শাশুড়ি মা এসে বললেন, রাগারাগি স্বামী স্ত্রীর মধ্যে হয়ে থাকে ওটা ধরে বসে থাকতে নেই। তোমার চা এনেছি খেয়ে নাও। শাশুড়ির এই মিষ্টি ব্যবহার আমাকে অবাক করলো আর শ্বশুর মশায়ের বলা কথাটা মনে পড়লো। তাই তখন মা কে বললাম, আমি এখন চা খাব না, আমার ভালো লাগছে না। উনি বললেন ,আমার উপর কেন রাগ করছো মা? আমি তো ভালো ভেবেই চা টা আনলাম। তোমার মন ভালো নেই, চা খেয়ে একটু বিশ্রাম নাও সব ঠিক হয়ে যাবে । আমার মনে সন্দেহ দানা বেঁধেছে, এত করে চা খেতে কেন বলছেন! আমি তখন বললাম ঠিক আছে আমি মুখে চোখে জল দিয়ে খাচ্ছি। আপনি গিয়ে চা খান।উনি বললেন না এখনি আমার সামনে খাও।আমার মনে সন্দেহ দৃঢ় হলো। আমি বললাম আমি কথা দিচ্ছি খাব।আমার কাছে একথা শোনার পর উনি যেন নিশ্চিন্তে চলে গেলেন।আমি চা টা না খেয়ে ফেলে দিলাম। এবার ঠিক করলাম আমি একটু নাটক করবো। আতিফের সাথে কথা বলে সব ঠিক করলাম।রাতে শুয়ে রইলাম গলায় ব্যথা বলে। খেয়াল করলাম আমি যখন গলায় ব্যথা বললাম মা, ছেলের মুখে কেমন আনন্দ খেলে গেল।মুখে ভাব করলো যেন খুব চিন্তায় পড়ে গেল।আমি ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম, ঘুম ভেঙে দেখলাম পাশে অন্বয় নেই। ভাবলাম রাগ হয়েছে তাই ঘরে আসেনি। গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। জল নেই দেখে জগ নিয়ে জল আনতে রান্না ঘরে যাচ্ছি কথার আওয়াজ এলো। একটু এগিয়ে গিয়ে শুনতে গেলাম কে এত রাতে কার সাথে কথা বলছে। দেখি মা আর ছেলে, মা বলছে তোকে বলেছিলাম না মাথা গরম না করে কাজ করতে। ভালো মুখে কাজ হাসিল করতে হয়। কালকেই তো তোকে বললাম ওর গলায় যদি আওয়াজ না থাকে গাইবে কি করে। তুই সব গন্ডগোল করে দিচ্ছিলি। আমি দেখ কোনো রকমে সামলে নিলাম। চা তো খেল আর বলছে গলায় ব্যথা।আমি নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছি না। এ কি শুনছি আমি মানুষ এরকম ও হয়! আমি জল নিয়ে ঘরে এলাম। ভাবতে লাগলাম কি করা উচিত আমার। ঠিক করলাম আর নয় আমাকে এখান থেকে পালিয়ে যেতেই হবে। আমি চুপ করে শুয়ে রইলাম। অনেক রাতে অন্বয় এসে পাশে শুলো, আমার গা টা ঘিনঘিন করে উঠলো। ভাবলাম আমি একৈই ভালোবেসে ছিলাম! সারারাত চোখের জলে বালিশ ভেজালাম। সকালেও শুয়ে রইলাম। একটু বেলা হতেই আমার কথা মত ঠাম ফোন করল, বাবার শরীর খারাপ আমাকে যেতে হবে। অন্বয় যেতে পারবে না বলে দিল। আমি একাই বেরিয়ে পড়লাম। ব্যাগে নিজের সমস্ত দরকারী কাগজ পত্র, গয়না, যা যা নেওয়া সম্ভব সব নিয়ে। ওদের বুঝতে দিলাম না, যে আমি চিরস্থায়ী ভাবেই চলে যাচ্ছি। শুধু শ্বশুর মশায় কে প্রনাম করার সময় বললাম, আসছি বাবা, আশীর্বাদ করুন যেন সফল হই। উনি হাসলেন আমার দিকে তাকিয়ে।সেই বেরিয়ে এলাম। এরপর আতিফের সাথে বাড়ি ফিরলাম। ওকে আমার সাথে দেখে সবাই অবাক হলেও ঠাম সব জানত। আতিফ আর ঠাম বাবা, মাকে সব বললো। সবাই অবাক হয়ে গেলো শুনে। কিন্তু পাশে সবাই। তারপর ডিভোর্সের জন্য আমি আবেদন করলাম। সবাই আমাকে ভীষণ ভাবে আগলে আগলে রাখতো। আতিফের গার্ল ফ্রেন্ড অনীশাও আসত আমার কাছে। আমি ভীষণ ভাবে ভেঙে পড়েছিলাম। অনীশা আর আতিফ যথাসাধ্য চেষ্টা করতো আমাকে ভালো রাখার। এক সপ্তাহ হলো দীর্ঘ দুবছর লড়াইয়ের পর অবশেষে ডিভোর্স হয়েছে। আজ আমি মুক্ত, জীবন আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে। আমি শুধু নিজের স্বপ্ন গুলো কে নিয়ে বাঁচবো। আবার তুলে নিয়ছি তানপুরা, আমার লেখার খাতা। যা আমার বেঁচে থাকার রসদ। আমার পুরোনো লেখার খাতাটা অনীশা নিয়ে গেছে একজন প্রকাশকের কাছে, বলেছেন ছাপা হবে। আমার পরিবারের আর বন্ধুর সাহায্যে আজ আমার আমি কে ফিরে পেলাম।শ্রীমতী রাখি রায়

জুলাই ০৩, ২০২২
বিনোদুনিয়া

সুজিত গুহ ও প্রিয়াঙ্কা ঘোষের ছবিতে পরীর চরিত্রে ঋতুপর্ণা

সুজিত গুহ ও প্রিয়াঙ্কা ঘোষের নতুন ছবি পরী এলো পৃথিবীতে। কলকাতার একটি হোটেলে প্রিয়াঙ্কা ঘোষ এন্টারটেইনমেন্ট এর প্রযোজনায় এই ছবির অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের নিয়ে একটি সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।এই ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করছেন টলি কুইন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।এছাড়াও অন্যান্য অভিনেতাদের মধ্যে রয়েছেন খরাজ মুখোপাধ্যায়,লিলি চক্রবর্তী,রাজেশ শর্মা,সুমন মুখোপাধ্যায়,লাবনী সরকার,সুমিত গঙ্গোপাধ্যায় প্রমুখ। এই ছবিতেই নবাগত প্রতীক এর অভিষেক হচ্ছে।এই ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন সমিধ ও উরভি মুখোপাধ্যায়। ছবিতে চারটে গান থাকার কথা রয়েছে। ছবিটির শুটিং শুরু হওয়ার কথা রয়েছে আগস্ট থেকে।ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত জানালেন,আমি মনে করি পরীরা আছেন। কে না চায় পরীর চরিত্রে অভিনয় করতে! আমি পরীর চরিত্রে অফার পেয়ে দারুন আনন্দিত।

জুন ৩০, ২০২২
বিনোদুনিয়া

মুক্তি পেল ‘রিষ’, বাবার চরিত্রে সৌরভ দাস

প্রীতম মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় নতুন বাংলা ছবি রিষ। এই ছবির গল্প আবর্তিত হয়েছে ছোট একটি মেয়েকে ঘিরে। আবির ও মন্দিরার কন্যা সন্তান ফিওনার গল্পকেই ছবিতে তুলে ধরেছেন পরিচালক। মেয়েটির বাবার চরিত্রে অভিনয় করেছেন সৌরভ দাস। মায়ের চরিত্রে দেখা যাবে দর্শনা বণিক কে। রূপক চট্টোপাধ্যায়ের প্রযোজনায়, থিঙ্কট্যাঙ্ক এন্টারটেইনমেন্টের ব্যানারে এই ছবিটি।গত ১৩ জুন এই ছবি মুক্তি পাওয়ার কথা থাকলেও বিভিন্ন কারণে মুক্তি পায়নি। অবশেষে ছবিটি আজ মুক্তি পেল। টলিউডে সেভাবে ভুতের ছবি দেখতে পাননা দর্শকরা। রিষ এ অন্যরকম ভূতের ছবি দেখতে পাবেন দর্শকরা। এই ছবিতে সিধু, পটার গান ছবিটিতে আলাদা মাত্রা এনে দিয়েছে।সৌরভ দাস ও দর্শনা বণিক ছাড়াও এই ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে দেখা যাবে চান্দ্রেয়ী ঘোষ, রুমকি চট্টোপাধ্যায়, কিয়ানা মুখোপাধ্যায়, পিয়ালি মুখোপাধ্যায়, অমিতাভ চট্টোপাধ্যায়, স্বাতী মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। ছবির গল্প ও চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন দেবারতি ভৌমিক। চিত্রগ্রাহকের দায়িত্ব সামলেছেন আবির দত্ত।

জুন ২৪, ২০২২
বিনোদুনিয়া

আকাশ মালাকারের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্যের ছবি প্রথম বারের প্রথম দেখা

আকাশ মালাকার তার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্যের ছবি প্রথম বারের প্রথম দেখা-র নির্দেশনা করছেন। এই ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন আর্য দাশগুপ্ত ও ঋত্বিকা সেন। এই ছবিরই ট্রেলার ও গান মুক্তি পেল। উপস্থিত ছিলেন ছবির কলাকুশলীরা। ছবির পোস্টার অনুযায়ী আরও একবার মৃত্যু হার মানবে ভালবাসার কাছে। দুই স্কুল পড়ুয়ার ভালোবাসার গল্প খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন পরিচালক।এই ছবিতে আর্যর চরিত্রের নাম বান্টি ঋত্বিকার নাম কুহু। টলিউড এই ছবির মাধ্যমে নতুন জুটি খুঁজে পেয়েছে। গল্প অনুযায়ী বান্টি আর কুহু পড়শি। দুজনের স্কুলও আলাদা। আর্থিক সচ্ছলতাও সমান নয়। এত পার্থক্যের মধ্যেও প্রেমে পড়ে তারা। যদিও এই প্রেম শুরুতে একতরফা। বান্টি প্রথম দেখাতেই ভালবেসে ফেলে কুহুকে। বেশ কিছু দিন কাটার পর কুহুকে সে জানায় সবটা। অবাক কুহু এক কথায় নাকচ করে দেয় বান্টিকে। কিন্তু আস্তে আস্তে ভাল লেগে যায় তারও। প্রেমের রঙিন দিনগুলো যখন চোখের পলকে উড়ে যাচ্ছে তখনই বজ্রপাত। কুহুর ধনী বাবা সব জেনে ঢাল হয়ে দাঁড়ান। বান্টি-কুহু কি এক হতে পারবে? এটার উত্তর পেতে প্রথম বারের প্রথম দেখা তে চোখ রাখতে হবে। পরিচালক তার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্যর ছবি নিয়ে অনেকটাই আশাবাদী যে ছবিটি দর্শকদের মন ছুঁয়ে যাবে।

জুন ২৩, ২০২২
বিনোদুনিয়া

কলকাতায় 'যুগ যুগ জিও'-র প্রচারে বরুণ-কিয়ারা, শহরবাসীর মধ্যে উন্মাদনা

সিটি অফ জয়কে আরো আনন্দময় করে তুললেন কিয়ারা আডবাণী ও বরুণ ধাওয়ান। ধর্মা প্রোডাকশনের আসন্ন ছবি যুগ যুগ জিওর প্রচারে এসে সকলের মন জিতে নিলেন দুই বলিউড তারকা। আগামী ২৪ জুন বড়পর্দায় মুক্তি পাচ্ছে রাজ মেহেতা পরিচালিত যুগ যুগ জিও।এই ছবিতে মুখ্য চরিত্রে রয়েছেন বরুণ ধাওয়ান ও কিয়ারা আদবানী। সিনেমায় কিয়ারা-বরুণ ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন অনিল কাপুর, নিতু কাপুর। দুই বর্ষীয়ান অভিনেতা ও অভিনেত্রীকে দেখা যাবে বরুণ ধাওয়ানের বাবা ও মায়ের ভূমিকায়। ছবির প্রচারের জন্য ইতিমধ্যেই দেশের বিভিন্ন শহরেই পৌঁছে গেছেন তাঁরা। এবার পা রাখলেন তিলোত্তমায়। কলকাতায় পা রেখেই জমজমাট প্রচারের মাঝে প্রাণ খুলে মজা করেছেন কিয়ারা-বরুণ। ভিক্টোরিয়ার সামনে হলুদ ট্যাক্সিতে ভ্রমণ থেকে শুরু করে ফ্লুরিসে ঢুঁ মারা, সবকিছুই করলেন তারা। ধর্মা প্রোডাকশনের তরফে আইটিসি রয়্যাল বেঙ্গলে একটি সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই ঘোষণা করা হয়, সিনেমা মুক্তি পাওয়ার তিনদিন আগে থেকেই শুরু হচ্ছে বুকিং। অগ্রিম টিকিট বুকিং করার সুযোগ পাবেন দর্শকরা। এই সিনেমার মূল গল্প সম্পর্কের বোঝাপড়াকে কেন্দ্র করেই। মজার ছলেই জীবনের অনেক জটিল সমস্যা ও তার সমাধানকে তুলে ধরা হয়েছে। সিনেমাটি প্রতিটা মানুষের কাছেই একটা বার্তা পৌঁছে দেবে বলে আশাবাদী নির্মাতারা। এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে বেশ খোশমেজাজেই পাওয়া গেল দুই তারকাকে। বরুণ ধাওয়ানের মুখে শোনা গেল কলকাতার জনপ্রিয় মিষ্টি দই এর কথা। কলকাতা যে তার কাছে খুব স্পেশাল সেটাও জানালেন।

জুন ২২, ২০২২
নিবন্ধ

কাজল কথা (ছোটো গল্প)

শোভন দুরুদুরু বুকে নিজের কার্ডটি বের করে দিল ম্যাডামের ঘরের সামনে বসে থাকা দিবাকর কে। এই অফিসে যাতায়াত করতে করতে অনেকের সঙ্গেই পরিচিত শোভন। এই ঘরে বহুবার ঢুকেছে কিন্তু নতুন এই ম্যাডাম আসার পর এই প্রথম এসেছে পরিচয় করতে এবং কাজের কথা বলতে। দিবাকর বাইরে এসে ওকে যেতে বলায় দরজা ঠেলে আসতে পারি বলে মুখ বাড়ায় শোভন। আসুন, বলে বিশাল ঘরের মাঝে বড় একটি টেবিলের ওপারে দরজার দিকে পিছু ফিরে বসে থাকা ম্যাডাম। শোভন ভিতরে ঢুকে টেবিলের সামনে দাঁড়াতে সামনে ঘুরে বসুন বলতেই শোভন ম্যাডাম কে দেখে থতমত খেয়ে যায়। কি হলো বসুন। না মানে হ্যাঁ বসছি,বলে শোভন কোনোরকমে বসে। মনে মনে ভাবে এ কাকে দেখছে! এ তো ওর কলেজের বন্ধু দেবায়নের বোন কাজল। ও ঠিকই অনুমান করছিল। তবুও মনে একটু হলেও আশা ছিল যে নাও হতে পারে। কিন্তু সে আশা তো একদমই ভুল! ও এতো বড়ো পজিশন অ্যাচিভ করলো কীভাবে? এইসব সাত পাঁচ ভাবছে তখনই ম্যাডাম বলে উঠলেন বলুন আপনার জন্য কি করতে পারি? শোভন ভুলেই গেছিল যে ও একটা ফুলের তোড়া নিয়ে এসেছে। ম্যাডামের কথায় সম্বিত ফিরে পেয়ে আবার উঠে দাঁড়িয়ে ম্যাডামের দিকে তোড়া টা বাড়িয়ে দিয়ে বলল ওয়েলকাম ম্যাডাম। এই শহরে আপনাকে স্বাগত। এরপর নিজের পরিচয় দিল। এই অফিসের সঙ্গে ওর সম্পর্ক কতদিনের, কিভাবে এখানে কাজ করে সব। কাজের বর্তমান পরিস্থিতি ও বলল। শোভন এও বলে ফেলে যে ওর মা খুব অসুস্থ তাই এই মূহুর্তে ওর টাকার খুব দরকার তাই একটা কাজের খবর পেয়ে ও এসেছে। এতক্ষণ ম্যাডাম সব শুনছিলেন চুপচাপ। শোভন যেন প্রয়োজন থেকে বেশিই বলল। তারপর যখন মনে হলো যে একটু বেশি বলে ফেলেছে সরি, বলে চুপ করে গেল। ও চুপ করে যেতেই ম্যাডাম বললেন ঠিক আছে আমার যখন দরকার হবে আপনার সাথে যোগাযোগ করবো। আপনি আপনার প্রেজেন্টেশন জমা দেবেন পছন্দ হলে নিশ্চয়ই আমাদের সাথে কাজ করবেন। বলে উঠে দাঁড়ালেন আমার একটা জরুরি মিটিং আছে।শোভন বুঝলো এবার বেড়িয়ে যেতে হবে। ও উঠে দাঁড়িয়ে নমস্কার জানিয়ে আজ তাহলে আসি ম্যাডাম বলে বেড়িয়ে গেল। মনে একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে কাজল কি চিনতে পারেনি? নাকি চিনতে চায়নি? না চেনা টা যদিও অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবুও মনে একটা আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে। চিনতে পেরে যদি কাজ টা না দেয়। শোভন নিজের মনেই বলে, যাক যা হয় হবে, যখন হবে দেখা যাবে। শোভন বাইক নিয়ে বেড়িয়ে গেল। সারাদিন নানা কাজে ও মিটিং এ ব্যস্ত থাকায় কাজল সকালের কথা ভুলেই গেছিলো। বাড়ি ফিরে ফ্রেশ হয়ে পিসির হাতে বানানো কফির কাপ নিয়ে ব্যালকনিতে বসে যখন ভাবছে সারা দিন কি কি করলো, তখন ওর শোভনের কথা মনে পড়ে।ও চিনতে পেরেছে শোভন কে। যদিও চেনার কথা নয়। কারন প্রায় পনেরো বছর পর দেখলো। চেহারার অনেক পরিবর্তন হয়েছে, তবুও মুখটা সেরকমই আছে। আর এখনতো সোশ্যাল মিডিয়ায় সবাই থাকে। তাই এই চেহারাটা আগেই ওর দাদার ফ্রেন্ড লিস্ট থেকে দেখেছে।কাজল কফি হাতে ছোটোবেলায় ফিরে গেল।লক্ষ্মীকান্ত পুরে ওদের বাড়ি। বাবা ছিলেন জেলা আদালতে উকিল। শুধু বাবা নয় ওনারা তিন পুরুষ এই পেশার সাথে যুক্ত। শুধু ওর ছোটো কাকা অন্য পথে। ওদের বাড়িতে আর একজন থাকতেন শুভা পিসি। বাবার নিজের বোন নয় কিন্তু তাকে সবাই খুব মেনে চলতেন। কাজলরা তিন ভাই বোন, ওর দাদা বড়ো, তারপর দিদি ও সবার ছোটো। ছোটো হয়েও কাজল মায়ের কাছে সেরকম ভাবে স্নেহ পায়নি শুধুমাত্র ওর গায়ের রঙের জন্য। ওর দিদি, দাদা মায়ের মতোই ফর্সা, সুন্দর; কিন্তু কাজলের গাত্রবর্ণ ওর নামের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ওর মা তাই যেন ওকে একটু অবহেলাই করত। শুভা পিসির যত্নে আর বাবা, কাকার আদরে কাজল বড়ো হতে লাগল। ছোটবেলা থেকেই তীক্ষ্ণ বুদ্ধিমত্তা ও খেলাধুলায় অসম্ভব ভালো কাজল। আর তার সাথে পেয়েছিল একটা সুন্দর মন। যার জন্য ওকে কেউ ভালো না বেসে থাকতে পারতো না। অথচ নিজের মায়ের কাছেই সেভাবে আদর পায়নি। কাজল ছোটো বেলায় অনেক সময় ভেবেছে ও বোধহয় ওর মায়ের মেয়ে নয়। এইসব কথা আজও ওকে কষ্ট দেয়। এখন যদিও পুরোনো কথা মনে করার সময় বা ইচ্ছা কোনোটাই ওর নেই। আজ হঠাৎ করে শোভন কে দেখেই মন বারবার অতীতে ফিরে যাচ্ছে।তখন ও ক্লাস নাইন, ও তখন শাড়ি। সেবার পূজোতে ওদের বাড়ির পূজো দেখবে বলে ওর দাদা দেবায়নের সাথে শহরের শোভন আসে ওদের বাড়িতে। না তখন কিন্তু শোভন দাদা-ই ছিল বেণীমাধব হয়নি। দাদা তখন কোলকাতায় আইন নিয়ে পড়াশোনা করছে, যদিও শোভন ওই লাইনের ষ্টুডেন্ট নয়। তবুও দাদার সাথে বন্ধুত্ব হয়েছিল।কাজল ছোটো থেকেই শুভা পিসির সাথে পূজোর কাজে সাহায্য করে। সেবার ও করেছে। ও খুব সুন্দর আলপনা দিত। ওর আলপনা দেখে শোভন খুব অবাক হয়েছিল। বলেছিল, এইটুকু একটা মেয়ে এত সুন্দর আলপনা দিতে পারে দেখে আশ্চর্য হয়ে যাচ্ছি।তখনো ও জানত না যে কাজল ওই বাড়িরই মেয়ে। পরে ওর বাবার কথায় বুঝতে পারে। পূজোতে খুব আনন্দ করেছিল। আবার আসবে এই ইচ্ছা প্রকাশ করে সেবার ফিরে যায়। তারপর বেশ কয়েকবার ওদের বাড়িতে আসে নানা উপলক্ষে। আর যখনই এসেছে কাজলের সাথে গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছে। ওর প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে কাজলকে ডেকেছে। কাজলের ও বেশ লাগতো শোভনের সাথে সময় কাটাতে। কিন্তু সেটা যে অবচেতন মনে কখন অন্যরকম ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে সেটা বুঝতে পারেনি। যখন বুঝলো তখন কাজলের অবোধ মন ভুলটা করেই বসলো।কাজলের মাধ্যমিক পাশ করার পরে। ওর রেজাল্ট খুব ভালো হয়েছিল জেনে ওর জন্য একটা খুব ভালো পেন উপহার হিসেবে নিয়ে এসেছিল শোভন রথের সময়। কাজলের কিশোরী মন তখনই শোভন কে বেণীমাধব ভেবে ফেললো। ব্যাস--------উফ্ফ কত বড় ভুল করেছিলাম, আপন মনেই বলে ওঠে কাজল সে কথা মনে পড়তে।হ্যাঁ কাজল খুব ভুল করেছিল। ও যে শোভনকে পছন্দ করে সেটা কাজলের কিশোরী মন লুকিয়ে রাখতে পারেনি; ওর খাতার পাতায় সেকথা ফুটে ওঠে। আর সেটা কাজলের দিদি দেবদীপা দেখে ফেলে কোনও ভাবে। তারপর সেটা বিকৃত ভাবে শোভন কে জানায়। স্বাভাবিক ভাবেই শোভন রেগে যায় এবং সবার সামনে কাজলকে অপমান করে। যেটা কাজলকে সবথেকে বেশি আঘাত করে শোভনের বলা একটা কথা আয়নায় কখনো দেখেছিস নিজেকে? ওই রূপ নিয়ে চাঁদ ধরার স্বপ্ন দেখছিসকাজল সেদিন বলার সুযোগ পায়নি যে কথা শোভন শুনেছে সেরকম কোনো কথাই কাজল বলেনি। সব ওর দিদির বানানো। কাজলকে ওর দিদি একদমই সহ্য করতে পারতো না। কারন সুন্দরী হলে কি হবে বুদ্ধি একদমই ছিল না। তাই পড়াশোনায় সবসময় পিছিয়ে থাকত। আর সেটা ছিল ওর দিদির রাগের কারণ।আর তাই যখন দেখতো ওদের বাড়িতে গিয়ে শোভন কাজলকেই বেশি গুরুত্ব দিতে সেটা সহ্য করতে পারলো না। তাই শোভনের চোখে কাজলকে ছোটো করতে ওর দিদি শোভন কে উল্টোপাল্টা বলে।শোভন কাজলের দিদির কথাকে বিশ্বাস করে এবং কাজলকে অপমান করে। শুধুমাত্র শুভা পিসি বোঝেন আসলে কি হয়েছিল। তাই তিনি সেসময় কাজলকে আগলে রেখেছিলেন মায়ের মতো। ওর মা তো এমনিতেই ওকে খুব একটা ভালো চোখে দেখতেন না। বাবা ও দিদির কথায় ভুল বুঝে বকাঝকা করেন।কাজলের তখন মনে হয়েছিল এ জীবন রাখবে না। কিন্তু শুভা পিসি ওকে বুকে করে আগলে রেখেছিলেন এবং বুঝিয়ে ছিলেন একমাত্র পথ হচ্ছে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে সবাইকে দেখিয়ে দেওয়া যে রূপটাই সব নয়। তারপর কাজল আর কোনো দিকে তাকায় নি। ওর বাবা অবশ্য পরে বুঝতে পারেন যে উনি মেয়েক ভুল বুঝে ছিলেন। বাবা আর পিসির তত্তাবধানে কাজল এগিয়ে যেতে থাকে।কমার্স নিয়ে মাস্টার্স করার পর এম বি এ করে। তারপর এত বড়ো কোম্পানিতে জয়েন করে। পাঁচ বছরের মধ্যেই কোম্পানির গুরুত্বপূর্ণ পদে উন্নীত হয়। সম্পূর্ণ নিজের যোগ্যতা আর অধ্যবসায়ের ফলে আজ কাজল এখানে পৌঁছায়।কর্মজীবনের পাশাপাশি ব্যক্তি জীবনেও কাজল আজ অনেক কিছু করতে পেরেছে। যে মায়ের অবহেলা ওকে ক্ষতবিক্ষত করেছে একসময় আজ সেই মা-ও ওর কাছেই আছেন। দাদা দিদি কেউই মায়ের দায়িত্ব নেয়নি। ও যে বছর চাকরি পায় সেই বছরই বাবা হঠাৎ বিনা নোটিশে পরলোকে পাড়ি দেন। মায়ের হঠাৎ শরীর অসুস্থ হয়ে পড়ে। কাজল তখন ব্যঙ্গালোরে। ও মাকে নিজের কাছে নিয়ে যায় এবং চিকিৎসা করায়। আজ পাঁচ বছর পর কোলকাতা ফিরে ও মা আর পিসিকে নিজের কাছে নিয়ে আসে।আজ কাজল ভাবে ঈশ্বরের কি খেলা, যারা একদিন আমাকে অবহেলা অপমান করেছে আজ সবাই একে একে তারই কাছে! কাজল ঠিক করে শোভনকে কাজটা দেবে। ওর মনে তো সত্যিই কোনো রাগ কোনও দিন ছিল না। ও মনে করে সেদিন ওই ঘটনার সম্মুখীন না হলে হয়তো বা আজকের কাজল ও হত না। সেদিক থেকে বিচার করলে শোভনের কাছে ও ঋণী। ঋণ শোধ করার এই সুযোগ ও ছাড়তে চায় না; এই ভাবে ভাবতে শিখিয়ে ছিলেন বাবা। আজ তাই আকাশের দিকে তাকিয়ে কাজল বাবার উদ্দেশ্যে বলে আমি তোমার মতো করে ভাবতে শিখেছি বাবা,আজ আমি খুব সুখী।শ্রীমতী রাখি রায়

জুন ১৯, ২০২২
বিনোদুনিয়া

বাবা-মেয়ের গল্প, মুক্তি পেল প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের 'আয় খুকু আয়'

মুক্তি পেল প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বহু প্রতীক্ষিত ছবি আয় খুকু আয়। পরিচালক সৌভিক কুন্ডু তাঁর ছবি আয় খুকু আয় তে বাবা মেয়ের গল্পকে তুলে ধরেছেন। বাবার চরিত্রে রয়েছেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এবং মেয়ের চরিত্রে রয়েছেন দিতিপ্রিয়া রায়।আয় খুকু আয় সিনেমায় দিতিপ্রিয়ার নাম বুড়ি আর ওর বাবা নির্মল। এই নির্মল আবার প্রসেনজিতের বড় ভক্ত। স্টেজে প্রসেনজিত হয়ে লোকের মনোরঞ্জন করেন। অন্যদিকে একা হাতে মেয়েকে মানুষ করে। তবে মেয়ের সঙ্গে মতের অমিল হয় যখন সে বলে বাবার মতোই স্টেজে উঠে সে পারফর্ম করতে চায়। রাজি হয় না নির্মল। আর এসবের মাঝেই খুকুর সঙ্গে ঘটে যায় দুর্ঘটনা। আর তখনই সাদামাটা নির্মলের খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে আসে প্রতিবাদী বাবা। দোষীদের শাস্তি দেওয়াই যার একমাত্র লক্ষ্য। ছোট থেকে বড় সবাই ছবিটির সঙ্গে নিজেদের রিলেট করতে পারবেন।বাবা ও মেয়ের গল্প।#AayKhukuAay trailer out now: https://t.co/gF9bUtmlLw@jeet30 @roy_ditipriya02 @rafiath_rashid @RahulDevBose @ranajoybh @savvygupta @Sauvik_montage @Jeetzfilmworks @GRASSROOTENT @gopalmadnani @amitjumrani pic.twitter.com/srYdNnBFrL Prosenjit Chatterjee (@prosenjitbumba) May 22, 2022আয় খুকু আয় এর প্রিমিয়ারে উপস্থিত ছিলেন ছবির কলাকুশলীরা। এছাড়া হাজির হন পরিচালক রাজ চক্রবর্তী, অভিনেতা জিৎ সহ অন্যান্য কলাকুশলীরা।প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় প্রিমিয়ারে জানালেন, আমার একটা বড় দর্শক যাদের জন্য দীর্ঘদিন ছবি করিনি তারাও ছবিটার সঙ্গে রিলেট করতে পারছে বলে আমার ধারণা। এই নিয়ে আমি প্রচুর কমেন্ট ও পাচ্ছি।

জুন ১৮, ২০২২
বিনোদুনিয়া

মুক্তি পেল নিধনের ট্রেলার ও পোস্টার

নিধনের ট্রেলার এবং পোস্টার লঞ্চ হয়ে গেল কলকাতার একটি হোটেলে। উপস্থিত ছিলেন ছবির অভিনেতা অভিনেত্রী রুপসা এবং ঋতুপর্ণা।অভিষেক ব্যানার্জি এই সিনেমায় অভিনয় করেছেন। কিন্তু ছবিটি মুক্তির আগেই তিনি মারা যান। তাই তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়ে তার জন্য প্রথমে একটি স্মরণ সভা হয়।প্রোগ্রাম শুরুর প্রথমে পোস্টার লঞ্চ করা হয় এবং পরবর্তীতে ট্রেলার দেখানো হয়। ছবির প্রত্যেকে অভিষেক ব্যানার্জি কে নিয়ে তাদের নিজস্ব মতামত জানান এবং ছবিটি করে তাদের কেমন লেগেছে সেটা জানান।এই ছবিতে এক ভিন্ন চরিত্রে দেখা যাবে অভিনেত্রী রুপসা মুখোপাধ্যায়কে। রুপসার চরিত্রের নাম রাধা। যার একটি পা নেই। দুর্ঘটনায় হারিয়ে ফেলে এক পা। জীবনের এক অন্তদন্দ্ব তুলে ধরেছে এই ছবি। ছবির প্রতিটি ছন্দে রয়েছে সাসপেন্স ও রহস্য।পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন পরিচালক সঞ্জয় দাস। ছবিতে রুপসা মুখোপাধ্যায় এর বিপরীতে অভিনয় করছেন অভিনেতা মিত দাস। এছাড়া ছবিতে অন্যান্য চরিত্রে দেখা যাবে রজতাভ দত্ত, সুপ্রিয় দত্ত, সোমা চক্রবর্তী, ভরত কল প্রমুখ অভিনেতাদের।পরিচালক সঞ্জয় দাস জানিয়েছেন এটি তার দ্বিতীয় ছবি। ছবিটিতে দর্শককে একটি ভিন্ন ঘরানার গল্প উপহার দেওয়া হবে। একটি মার্ডারকে নিয়ে এই গল্প। কিন্ত গল্প যত এগোতে থাকবে তত সাসপেন্স বাড়তে থাকবে। কিন্ত অবশেষে রাধার জীবনের পরিণতি কি হবে? পুরোটাই জানা যাবে নিধন ছবিটি দেখলে।

জুন ০৫, ২০২২
বিনোদুনিয়া

হাস্যরসের ছবি টাকার রং কালো'

মেসার্স প্রশান্ত সাহানা নিবেদিত, বিলাস ফাউন্ডেশন প্রযোজিত, কল্যাণ সরকারের হাস্যকৌতুক ছবি টাকার রং কালো র ট্রেলার ও মিউজিক লঞ্চ হয়ে গেল বেঙ্গল লাউঞ্জে (ভি আই পি রোড)। ট্রেলার ও মিউজিক লঞ্চের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ছবির কলাকুশলীরা। উপস্থিত ছিলেন ছবির সঙ্গীতশিল্পী কুমার শানু, সঙ্গীত পরিচালক অশোক ভদ্র, ছবির অভিনেতা অমিতাভ ভট্টাচার্য, দেবাশিস গাঙ্গুলী, ছবির পরিচালক কল্যাণ সরকার সহ আরো অনেকে। ছবির বিষয়ে পরিচালক জানালেন, আমাদের এই ছবি সাহিত্যিক সুনীল চক্রবর্তীর প্রখ্যাত সমনামী নাটক থেকে নির্মিত। ছবির চিত্রনাট্য লিখেছেন সুনীল চক্রবর্তীর সুযোগ্য পুত্র পার্থ চক্রবর্তী। এক প্রতিপত্তিশালী অসাধু ব্যবসায়ীর টাকার প্রতি প্রবল লোভ, এবং সেই অর্থ চুরি হওয়াতে তার পারিপার্শ্বিক জুড়ে ঘটে যাওয়া ঘটনা আমাদের এই হাস্যরসের ছবির মূল উপজীব্য। সমাজের অনেক গভীর সত্যি এই ছবি তুলে ধরবে অচিরেই। অন্যদিকে ছবির সঙ্গীতশিল্পী এবং গানের জগতে কিংবদন্তী কুমার শানু জানালেন, অনেক দিন পর বাংলা ছবিতে এত মেলোডিয়াস একটা কাজ করলাম। সঙ্গীত পরিচালক অশোক ভদ্র যে সুর এই ছবির গানে ব্যবহার করেছে তা সকলের মন ছুঁয়ে যাবে। গানে সহজ সুরের মায়া আমাকে সবসময় আকর্ষণ করে। আমার সকলের কাছে অনুরোধ আপনারা এই ছবি অবশ্যই দেখুন, কল্যাণ সরকার বর্তমানে বাংলা ছবির সংকটের সময় একটা দুর্দান্ত ছবি তৈরি করেছে।বাংলা ছবির পাশে থাকুন।

মে ২৭, ২০২২
  • ‹
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • ›

ট্রেন্ডিং

খেলার দুনিয়া

মান্ধানার রেকর্ডে কাঁপল বিশ্ব! ফাইনালে কি লেখা হবে নতুন ইতিহাস?

মুম্বইয়ের ডিওয়াই পাটিল স্টেডিয়াম যেন অপেক্ষা করছে ইতিহাসের জন্মের সাক্ষী হওয়ার। গ্যালারিতে ঢেউ তুলছে নীল সাগর। কোটি ভারতবাসীর নিশ্বাস যেন একসঙ্গে আটকে। কারণ, মহিলা বিশ্বকাপের ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে জয়ের লক্ষ্য ২৯৯ রান ছুঁড়ে দিয়েছে ভারত। ৩০০-এর দোরগোড়াহাতের নাগালেই ছিল। কিন্তু যেই দুই ব্যাটারকে দেখার অপেক্ষায় ছিল সমর্থকেরা, সেই স্মৃতি মান্ধানা আর হরমনপ্রীতের ব্যাট আজ বড় কিছু লিখতে পারল না।সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৮৯ রানের ইনিংসে আগুন ঝরিয়েছিলেন নকআউট কুইন হরমনপ্রীত। আজ ফাইনালে এসে থেমে গেলেন ২০ রানে। দুইটি বাউন্ডারি মারলেও নিজের সেরাটুকু দেখাতে পারলেন না অধিনায়ক। ফ্যানদের আশাহতাশার মিশেল রয়ে গেল মাঠ জুড়ে।তবু ভারতীয় ক্রিকেটের অন্য নক্ষত্র জ্বলল উজ্জ্বল আলোয়। স্মৃতি মান্ধানা ফাইনালে করলেন ৫৮ বলে ৪৫ রানহ্যাঁ, হাফসেঞ্চুরি হাতছাড়া। কিন্তু সেই সঙ্গেই গড়লেন এক বিশাল রেকর্ড। মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ ইতিহাসে এক সংস্করণে সর্বাধিক রান করার নজির ভাঙলেন তিনি। মিতালি রাজের ২০১৭ সালের ৪০৯ রানকে টপকে স্মৃতির সংগ্রহ এখন ৪৩৪।মান্ধানাশেফালি জুটি দারুণ ছন্দে এগোচ্ছিল। ১৭তম ওভারেই এল ভাঙন। ক্লোয়ি ট্রায়নের বল তুলে দিয়ে ক্যাচ ফিরিয়ে দিলেন ভারতীয় ওপেনার। আর ৩৮তম ওভারে ফিরে যান হরমনপ্রীত। দুজনই যদি আর কিছুক্ষণ উইকেটে দাঁড়াতে পারতেনস্টেডিয়ামের স্কোরবোর্ড হয়তো অন্য গল্প বলত।কিন্তু এখনও সব শেষ নয়। ভারতীয় স্পিন, দর্শকদের গর্জন, আর মাঠজুড়ে নীল আকাশএই তিন শক্তি কি এনে দেবে প্রথম নারী বিশ্বকাপ? চোখ রাখল ভারত।আজ রাতেই উত্তর।

নভেম্বর ০২, ২০২৫
খেলার দুনিয়া

নীলে রাঙা দেশ! বিশ্বকাপফাইনালে শেফালি–ঝড়, ২৯৮ রান তুলে ইতিহাসের দোরগোড়ায় ভারত

ভারতের আকাশ আজ নীলের উৎসবে ঢেকে। নবি মুম্বইয়ের ডি ওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামে নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপের মহারণে নামতেই যেন বৃষ্টির ফোঁটা হয়ে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ল আবেগ। সেই বৃষ্টি ধুয়ে দিল শুধু মাটি নয়, যেন দেশের কোটি স্বপ্নকে। কারণ, আজ ইতিহাস লেখা সম্ভব উইমেন ইন ব্লু-র। হরমনপ্রীত কৌরদের কাঁধে ভারতীয় ক্রিকেটের অপূর্ণতা মুছার দায়িত্ব। আর ব্যাট হাতে সেই পথে বড় পদক্ষেপই রাখল ভারত।প্রথমে ব্যাট করে ভারত থামল ২৯৮ রানে। ৭ উইকেট হারিয়ে তোলা এই রানকে কি বিশ্বজয়ের রান বলা যায়? দক্ষিণ আফ্রিকার বোলিংয়ের বিরুদ্ধে ভারতীয় ব্যাটারদের সাহসী ইনিংস, দর্শকদের গর্জন, আর মাঠজুড়ে নীল আবেগসব মিলিয়ে দিনটা ইতিহাসের পাতায় ওঠার অপেক্ষায়।ইনিংসের শুরুতেই স্মৃতি মন্ধানা ও শেফালি বর্মার ব্যাটে নজর কাড়া সূচনা। বৃষ্টিভেজা উইকেটে সতর্ক শুরু হলেও শিগগিরই বদলে গেল রঙ। বড় শট, নির্ভয়ে রান রোটেশনদুটিতেই সামনে শেফালি। এক সময় সেঞ্চুরির দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে পড়লেও শেষে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ৮৭ রানে। কী দারুণ ইনিংস! তিন বছর ধরে ওয়ানডেতে হাফসেঞ্চুরি নেইএ কথা ভুলিয়ে দিলেন বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে। বিশ্বকাপ স্কোয়াডেও প্রথমে জায়গা ছিল নাএকেবারে সিনেমার চিত্রনাট্য।স্মৃতি মন্ধানা ৪৫ রানে আউট হন। জেমাইমা রদ্রিগেসের ২৪ রান, অধিনায়ক হরমনপ্রীত কৌরের ২০যেখানে সবাই শুরু করেও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি, সেখানে দুই ভারতীয় ভরসা দীপ্তি শর্মা ও রিচা ঘোষ সামলালেন ইনিংস। দীপ্তির অর্ধশতরান, আর রিচার দাপুটে ২৪ বলে ৩৪ রানে ভারত ৩০০ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখেছিল। কয়েকটা শট আর সাহসে হয়তো ২৫-৩০ রান আরও বাড়ানো যেতসেটা নিয়েই এখন আলোচনা।এখন প্রশ্ন একটাইএই রান কি যথেষ্ট? স্পিন বোলিং আর দর্শকদের গর্জন কি দেশকে এনে দেবে প্রথম নারী বিশ্বকাপ? দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক বলেই দিয়েছিলেন, এই পিচে রান তাড়া সহজ। তাই ম্যাচ এখন পুরোপুরি বোলারদের হাতে।স্টেডিয়ামের শব্দঅর্কেস্ট্রা, নীল পতাকার ঢেউ এবং লক্ষ মুখে একটাই ডাকচলো মেয়েরা! রোহিতবিরাটদের অসম্পূর্ণ গল্প কি এবার মেয়েরাই পূর্ণ করবেন?

নভেম্বর ০২, ২০২৫
খেলার দুনিয়া

স্বপ্নভঙ্গের দাগ এখনও টাটকা! ফাইনালের আগে হরমনদের পাশে দাঁড়ালেন কোহলি-বুমরাহ-সূর্য

দুই বছর আগে ঠিক এই মঞ্চেই স্বপ্ন ভেঙেছিল ভারতীয় মহিলাদের। বিশ্বকাপ ফাইনালে উঠে ট্রফি ছোঁয়ার এতটা কাছে গিয়েও ফিরে আসতে হয়েছিল খালি হাতে। সেই ব্যথা এখনও জাগ্রত। তাই ২০২৫এর আরেক মহাযুদ্ধের আগে হরমনপ্রীত কৌরদের দিকে তাকিয়ে গোটা দেশ। সেই সঙ্গে পাশে দাঁড়িয়ে গেলেন ভারতীয় পুরুষ দলের তারকারাও। কোহলি, সূর্যকুমার যাদব থেকে শুরু করে জশপ্রীত বুমরাহসবাই একসুরে জানিয়ে দিলেন, ভয় নেই, এগিয়ে যাও।ফাইনাল ম্যাচের আগে BCCIর প্রকাশ করা ভিডিওতে দেখা গেল গৌতম গম্ভীরকে। শান্ত অথচ দৃঢ় কণ্ঠে গম্ভীর বললেন, ভারতীয় ক্রিকেট পরিবার ধন্যবাদ জানাচ্ছে মেয়েদের। তিনি বলেন, ফাইনাল উপভোগ করো, সাহসিকতার সঙ্গে খেলো। ভুল করলেও ভয় পেয়ো না। তোমরা ইতিমধ্যেই দেশকে গর্বিত করেছ। গম্ভীরের বার্তায় স্পষ্টচাপ নয়, আনন্দই দিক নির্দেশ করবে।অন্যদিকে বিরাট কোহলি ও সূর্যকুমার যাদবও বার্তা পাঠিয়েছেন। সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার মতো শক্তিশালী দলকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠার জন্য মহিলা দলের প্রশংসা করেছেন তাঁরা। সূর্য বলেছেন, নিজেদের মত করে খেলে যাও, টুর্নামেন্ট জুড়ে তোমরা অসাধারণ খেলেছ। এমনকি জশপ্রীত বুমরাহর কথায়ও একই সুর। অস্ট্রেলিয়া থেকে বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, জীবনে অনেক ফাইনাল আসে না, তাই বাড়তি চাপ না নিয়ে নিজের সেরাটা দাও। নিজের খেলায় বিশ্বাস রাখো। ফল ঠিকই আসবে।২০১৭তে মিতালি রাজের দল, এরপর ২০২৩এ রোহিত শর্মাদের স্বপ্নভঙ্গভারতীয় পুরুষ ও মহিলা দল দুইই ফাইনালের যন্ত্রণা চেনেন। কিন্তু এবার প্রত্যাশা ভরা চোখে মানুষ অপেক্ষা করছে নতুন ইতিহাসের জন্য। ভারতীয় ক্রিকেটাররাও বিশ্বাস রাখছেন, হরমনপ্রীতস্মৃতিরিচাদের হাতেই এবার বিশ্বজয়ের গল্প লেখা হবে।দেশজুড়ে উত্তেজনা তুঙ্গে। প্রত্যেক ভারতীয়র মনে একই প্রার্থনাএবার ট্রফি ফিরেই আসুক দেশের মাটিতে।

নভেম্বর ০২, ২০২৫
খেলার দুনিয়া

নবি মুম্বইয়ে বৃষ্টি, ফাইনাল কি পিছিয়ে যাবে? দুশ্চিন্তায় ক্রিকেটপ্রেমীরা

ইতিহাসের সামনে দাঁড়িয়ে হরমনপ্রীত কৌরদের ভারত। নবি মুম্বইয়ের মাঠে আজই হওয়ার কথা ছিল বিশ্বজয়ের লড়াই। প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু এমন উত্তেজনার দিনে ভাগ্য যেন একটু খারাপই খেলল টিম ইন্ডিয়ার সঙ্গে। দুপুর গড়াতেই নামল মৌসুমবহির্ভূত বৃষ্টি, আর সেই সঙ্গে থমকাল মহিলা ওয়ানডে বিশ্বকাপের মহারণ।ভারতীয় সময় বিকেল সাড়ে তিনটায় ম্যাচ শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ক্রমাগত বৃষ্টি নামায় টস পর্যন্ত হয়নি। গ্যালারিতে বসা দর্শক থেকে শুরু করে টিভির সামনে বসা ক্রিকেটপ্রেমীরাসবাই এখন শুধু অপেক্ষা করছেন আকাশ পরিষ্কার হওয়ার।এখন প্রশ্ন একটাইযদি বৃষ্টি কমেই না? তবে কি বিশ্বকাপ ফাইনাল মাঠেই নামবে না? ভারতীয় সমর্থকদের মনে তাই উৎকণ্ঠা, আর চোখ ঝুলছে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে। আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, ম্যাচ আজই শেষ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা হবে। প্রয়োজন হলে দুদলের ওভার কমিয়ে দেওয়া হবে। একই দিনে ফলাফল করতে হলে কমপক্ষে ২০ ওভার করে খেলতেই হবে দুদলকে। যদি বৃষ্টি সেই সুযোগও না দেয়, তবে প্রস্তুত আছে রিজার্ভ ডে।আগামীকাল অর্থাৎ সোমবার রাখা হয়েছে চূড়ান্ত দিন। যদি আজ ম্যাচ অসম্পূর্ণ থাকে, সেখান থেকেই কাল আবার খেলা শুরু হবে। তবে যদি এক বলও না গড়ায় আজ, সোমবার পুরো ৫০ ওভারের নতুন ম্যাচ আয়োজনের সম্ভাবনাও রয়েছে। এই মুহূর্তে তাই ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের একটাই আশাআকাশটা একটু পরিষ্কার হোক, আর বিশ্বকাপের মঞ্চে দেখা যাক হরমনপ্রীত কৌরদের দাপট। সেমিতে দুরন্ত ফর্মে থাকা রিচা ঘোষ, স্মৃতি মন্ধানা, শেফালিসবাই প্রস্তুত ইতিহাস লেখার জন্য। বাকি শুধু মাঠে নামা।এদিকে স্টেডিয়ামের ছাদেও ঠাসা উত্তেজনা। কেউ মন্ত্রজপ করছেন, কেউ মোবাইলে আবহাওয়া আপডেট দেখছেন, আবার কেউ পতাকা হাতে বৃষ্টি থামার অপেক্ষায়। বিশ্বকাপের দিনই যদি বৃষ্টি আসে, তা কি মানা যায়? এখন সবই নির্ভর করছে আকাশের দিকে। ভারতীয়দের মনে একটাই স্বপ্নআজ হোক, কাল হোক, কিন্তু হাতে উঠুক সেই সোনার ট্রফি।

নভেম্বর ০২, ২০২৫
দেশ

"অপারেশন সিঁদুর ভুলতে পারেনি পাকিস্তান-কংগ্রেস", নতুন করে বিস্ফোরক মন্তব্য মোদির

বিহারের আরায়ায় রবিবার নির্বাচনী প্রচারে এসে কংগ্রেস ও আরজেডিকে একযোগে আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁর বক্তব্যে বারবার উঠে এল জাতীয় নিরাপত্তা, কাশ্মীর, এবং অতীতের রাজনৈতিক সহিংসতার প্রসঙ্গ।মোদি বলেন, অপারেশন সিঁদুরের পর থেকে পাকিস্তান ও কংগ্রেসদুই পক্ষই এখনও ধাক্কা সামলাতে পারেনি। পাকিস্তানে বিস্ফোরণের সময় কংগ্রেসের রাজপরিবারর ঘুম নষ্ট হয়েছিল বলে দাবি করেন তিনি। তাঁর মন্তব্যআমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম সন্ত্রাসীদের ঘরে ঢুকে মারব। অপারেশন সিঁদুর সেই অঙ্গীকার পূরণ করেছে। সঙ্গে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের কথাও স্মরণ করিয়ে দেন মোদি। বলেন, এটি তাঁর গ্যারান্টি ছিল এবং আজ তা বাস্তব।বিহার রাজনীতিতে মহাগঠবন্ধনের দিকে কটাক্ষ ছুঁড়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, কংগ্রেস কখনওই তেজস্বী যাদবকে মুখ্যমন্ত্রী মুখ করতে চাইনি। কিন্তু আরজেডির চাপেই কংগ্রেসকে রাজি হতে হয়েছে। তাঁর ভাষায়আরজেডি বন্দুক ঠেকিয়ে কংগ্রেসকে সিএম প্রার্থী ঘোষণা করাতে বাধ্য করেছে।মোদি দাবি করেন, কংগ্রেস-আরজেডির মধ্যে গভীর বিরোধ আছে, এবং নির্বাচন শেষে তারা পরস্পরকে দোষারোপ করবে। তাই তাঁদের উপর আস্থা রাখা যায় না। মহাগঠবন্ধনের ইস্তেহারকে তিনি মিথ্যার আর প্রতারণার দলিল আখ্যা দেন। এনডিএর ঘোষণাপত্রকে বলেন সত্ ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন, যা বিহারের উন্নয়নের জন্য তৈরি।এদিন ১৯৮৪র শিখবিরোধী দাঙ্গার কথাও টেনে আনেন মোদি। তাঁর অভিযোগ, কংগ্রেস আজও সেই সময়ের দোষীদের সম্মান দিচ্ছে। তিনি বলেনআরজেডির নাম জঙ্গলরাজের সঙ্গে জড়িত, আর কংগ্রেসের পরিচয় শিখ গণহত্যার সঙ্গে। বিহার ভোটমাঠে শেষ দফা প্রচারে তাই তীব্র হচ্ছে ভাষার লড়াই। একদিকে এনডিএর উন্নয়নের দাবি, অন্যদিকে পরিবর্তনের ডাকদুই পক্ষের জোর প্রচারের মধ্যেই প্রস্তুতি নিচ্ছে ভোটযুদ্ধের ময়দান।

নভেম্বর ০২, ২০২৫
খেলার দুনিয়া

ইতিহাস গড়তে নামছে হরমনদের বাহিনী, রিচা ঘোষে বুক বাঁধছে গোটা বাংলা

শুধু পুরুষ ক্রিকেট নয়মেয়েরাও পারে! ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের আত্মবিশ্বাস এখন আকাশছোঁয়া। আর মাত্র এক রাতের অপেক্ষা। রবিবারই ওডিআই বিশ্বকাপের ফাইনালে নামছে হরমনপ্রীত কউররা। শেষ লড়াই দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে। আর গোটা দেশ যেমন উত্তেজনায় ফুটছে, বাংলায় সেই উত্তেজনার কেন্দ্র শিলিগুড়ি। কারণ ফাইনালের মাঠে থাকছেন শহরেরই মেয়ে রিচা ঘোষ।বয়স মাত্র ২২। কিন্তু মন? যেন সহাস্য যোদ্ধা। এই বিশ্বকাপেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে গ্রুপ পর্বে ঝড় তুলেছিলেন রিচামাত্র হাতে গোনা ডেলিভারি পেলে খেলেছিলেন ৯৪ রানের ধ্বংসাত্মক ইনিংস। সেই ম্যাচে ভারত হেরে গেলেও, রিচার ব্যাটে আলোর রেখা দেখেছিল দেশ।সেই তারকার জন্য এখন বুক বেঁধে অপেক্ষা শিলিগুড়ির। শহরের রাস্তায় উত্তেজনা, দেওয়ালে পোস্টার, আর মানুষের মুখে একটাই প্রশ্নরিচা কেমন করবে কাল? শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদ ইতিমধ্যেই বিগ স্ক্রিনে ফাইনাল দেখানোর আয়োজন করে ফেলেছে। শহরের একাধিক জায়গায় লাগানো হচ্ছে ফ্লেক্স, তৈরি হচ্ছে উৎসবের আবহ।রিচার পুরনো দিনেও আলো। ২০১৩১৪ সালে বাঘাযতীন ক্লাবের হয়ে খেলতেন সে সময়কার ছোট্ট মেয়ে রিচা। কোচ বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায় এখন আগের সেই দৃঢ় আত্মবিশ্বাস মনে করছেন। তাঁর মুখে গর্বওকে প্রথম দিন থেকেই আলাদা লাগত। ব্যাট ধরার ভঙ্গি, শরীরী ভাষা, মনোভাবসবেতেই ছিল বড় খেলোয়াড়ের স্পষ্ট আভাস।একই কথা বলছেন রিচার বন্ধু ও প্রাক্তন সতীর্থ অঙ্কিতা মোহন্তও। তিনি স্মিতহাস্যে বলছেন, রিচা সব সিদ্ধান্ত খুব পরিষ্কারভাবে নেয়। আমাদের সময়ও ও পরামর্শ দিত। এখন দেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছে ব্যাটে। আগামিকাল ও দেখাবেমেয়েরাও পারে!মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের ক্রিকেট সচিব ভাস্কর দত্ত মজুমদার আরও খোলামেলাআমাদের শহরের মেয়ে! তাই তো গর্ব। কাল গোটা শহর স্ক্রিনের সামনে এক হবে। রিচার জন্য শুভেচ্ছা।এখন শুধু অপেক্ষা ফাইনালের। শিলিগুড়ি, বাংলা আর ভারতসকলেরই চোখ এক ব্যাটে, এক মেয়ের উপর। ইতিহাস রচনার মুহূর্ত কি তাহলে আর কয়েক ঘণ্টা দূরেই?

নভেম্বর ০২, ২০২৫
বিদেশ

চলন্ত ট্রেনে রক্তঝড়! যাত্রীদের উপর ছুরি হামলা, আতঙ্কে থমকাল ট্রেন

লন্ডনগামী একটি ট্রেনের ভিতর শনিবার রাতে তৈরি হল আতঙ্কের আবহ। হঠাৎই কয়েকজন যাত্রীর উপর ধারালো ছুরি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে দুষ্কৃতীরা। মুহূর্তেই চিৎকার, রক্ত, দৌড়ঝাঁপসব মিলিয়ে ট্রেনের কামরাটি পরিণত হয় বিভীষিকার দৃশ্যে। বাঁচার জন্য যাত্রীরা ছুটতে ছুটতে শৌচাগারে লুকিয়ে পড়েন। কেউ কেউ পা পিছলে পড়ে আহত হন। কামরার মেঝে রক্তে ভরে যায়।ঘটনাটি ঘটেছে কেমব্রিজের কাছে। রাত ৭টা ৩৯ মিনিট নাগাদ পুলিশ ফোন পায় ট্রেনে ছুরি নিয়ে হামলার খবর। খবর পেয়েই সশস্ত্র বাহিনী পৌঁছে যায় নিকটবর্তী স্টেশন হান্টিংডনে। এরপর ট্রেনটিকে মাঝপথেই থামানো হয়। স্টেশনে দাঁড়াতেই দৌড়ে ওঠে বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী। আতঙ্কগ্রস্ত যাত্রীদের নিরাপদে বার করে নিয়ে আসা হয়। অনেকে তখনও লুকিয়ে ছিলেন ট্রেনের বাথরুমে। পুলিশ তাঁদের একে একে উদ্ধার করে।প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, এক নয়, একাধিক ব্যক্তি হাতে লম্বা ছুরি নিয়ে যাত্রীদের উপর হামলা চালায়। তাঁদের কথায়, আক্রমণকারী চলতে চলতে দৌড়ে এগিয়ে আসছিল, আর চারদিকে ছড়িয়ে ছিল রক্ত। আতঙ্কে সবাই পালাতে শুরু করে। ট্রেন থামতেই একজন হামলাকারী বড় ছুরি হাতে নেমে আসার চেষ্টা করে, কিন্তু পুলিশ সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে কাবু করে ফেলে।এ ঘটনায় ইতিমধ্যেই দুই সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আহতদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে নিকটবর্তী হাসপাতালে। যদিও ব্রিটিশ পুলিশ এখনও পর্যন্ত আহতের আনুষ্ঠানিক সংখ্যা জানাতে পারেনি, সূত্রের দাবিকমপক্ষে দশজন ছুরিকাহত।হঠাৎ এই হামলার উদ্দেশ্য এখনও পরিষ্কার নয়। সন্ত্রাস দমন বিভাগও তদন্তে নেমেছে। পুরো দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্ত করা হয়েছে। ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার। তিনি বলেছেন, নিরীহ মানুষকে টার্গেট করে এমন হামলা বরদাস্ত করা হবে না।সাধারণ যাত্রার একটি রাত যে এমন রক্তাক্ত দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে, তা ভাবেননি কেউই। ব্রিটেনে এখন একটাই প্রশ্নট্রেনে এই হামলার পিছনে কারা, এবং কেন?

নভেম্বর ০২, ২০২৫
দেশ

ভোটের উত্তাপে বিস্ফোরণ, গুলির আতঙ্ক! জন সূরজ পার্টির কর্মী খুনে ধরা জেডিইউ নেতা

বিহার বিধানসভা নির্বাচন ২০২৫-এর আগেই উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। রাজনৈতিক আক্রমণপ্রতিআক্রমণের মাঝেই এবার সামনে এল রক্তাক্ত ঘটনা। প্রশান্ত কিশোরের দল জন সূরজ পার্টির কর্মী দুলারচন্দ যাদবের মৃত্যুর মামলায় গ্রেফতার হলেন ক্ষমতাসীন জেডিইউ-র মোকামা কেন্দ্রের প্রার্থী অনন্ত সিং। পটনা পুলিশের হাতে শনিবার, ১ নভেম্বর তাঁকে আটক করা হয়। তাঁর দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগীকেও পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে।ুীদুলারচন্দ যাদব গত বৃহস্পতিবার মোকামায় জন সূরজ পার্টির প্রার্থী পীযূষ প্রিয়দর্শীর সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিতে গিয়েছিলেন। সেই ভরা সভাতেই মৃত্যু হয় তাঁর। প্রথমে গুলিবিদ্ধ হওয়ার কথা শোনা গেলেও ময়নাতদন্তে প্রকাশগুলি নয়, গুরুতর শারীরিক আঘাত, বিশেষত পাঁজরের হাড় ভেঙে যাওয়া ও ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।দুলারচন্দ অনেক দিন আরজেডি-র প্রভাবশালী নেতা ছিলেন। লালু প্রসাদ যাদবের ঘনিষ্ঠ হিসেবেও পরিচিত। পরে PKর জন সূরজ পার্টিতে যোগ দেন।প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, সভার মাঝেই দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধেছিল। সেই বিশৃঙ্খলার মধ্যেই ঘটে এই মৃত্যুর ঘটনা। এবং সে সময় ঘটনাস্থলেই ছিলেন জেডিইউ প্রার্থী অনন্ত সিং।গ্রেফতারের পর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে পীযূষ প্রিয়দর্শী বলেন, পুলিশ ঠিক কাজ করেছে। তবে এই পদক্ষেপ আরও আগে হওয়া দরকার ছিল। এটা কোনো হঠাৎ ঘটনা নয়। এফআইআর হওয়ার পরই গ্রেফতার হওয়া উচিত ছিল। দেরিতে হলেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, এখন দেখার তদন্ত কতদূর এগোয়।অন্য দিকে গ্রেফতারির আগে অনন্ত সিং দাবি করেন, তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে। প্রাক্তন সাংসদ সূরজভান সিংকে দায়ী করেন তিনি। উল্লেখ্য, সূরজভান সিংয়ের স্ত্রী বীণা দেবী এবার আরজেডি-র প্রার্থী।ঘটনার গুরুত্ব দেখে ইতিমধ্যেই নড়েচড়ে বসেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। জেলা নির্বাচন আধিকারিকের কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আদর্শ আচরণবিধি কড়াভাবে বজায় রাখতে হবে এবং রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেন বিন্দুমাত্র নষ্ট না হয়।বিহারের ভোটযুদ্ধ এখনও শুরুই হয়নি, আর তার আগেই রক্তঝরা সংঘর্ষে জর্জরিত রাজনৈতিক ময়দান। আগামীর দিনগুলো যে আরও উত্তপ্ত হতে চলেছে, তা বলাই বাহুল্য।

নভেম্বর ০২, ২০২৫

Ads

You May Like

Gallery

265-year-old "Mukhopadhyay House" in Bhavanandpur, Kalnar, played vermilion on Dasami during Durga Puja
BJP candidate Locket Chatterjee campaigned on the banks of the Ganges from Chandannagar Ranighat to Triveni Ghat wishing New Year.
A living depiction of history with a touch of color, everyone is enthralled by the initiative of the Eastern Railway
Sucharita Biswas actress and model on Durga Puja
Lord Kalabau came up in palanquin; Navapatrika walked towards the mandap - the puja started
On Sunday, the 'Hilsa festival' is celebrated in the city with great joy.
Check out who has joined Mamata's new cabinet
Take a look at the list of recipients at the Bangabibhushan award ceremony
If you are grassroots, you will get ration for free. Lakshmi Bhandar, Kanyashree, Swastha Sathi, Krishakbandhu, Oikyashree, Sabujsathi — you will get all.

Categories

  • কলকাতা
  • রাজ্য
  • দেশ
  • বিদেশ
  • রাজনীতি
  • খেলার দুনিয়া
  • বিনোদুনিয়া
  • সম্পাদকীয়
  • নিবন্ধ
  • ভ্রমণ
  • রাশিফল
  • টুকিটাকি
  • চিত্রহার
  • বিবিধ
  • ভিডিও

Company

  • About Us
  • Advertise
  • Privacy
  • Terms of Use
  • Contact Us
Copyright © 2025 Janatar Katha News Portal