• ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, সোমবার ০২ জুন ২০২৫ ই-পোর্টাল

Janatar Katha

Banner Add
  • কলকাতা
  • রাজ্য
  • দেশ
  • বিদেশ
  • রাজনীতি
  • খেলার দুনিয়া
  • বিনোদুনিয়া
  • সম্পাদকীয়
  • নিবন্ধ
  • ভ্রমণ
  • রাশিফল
  • টুকিটাকি
  • চিত্রহার
  • বিবিধ
  • ভিডিও
  • এছাড়াও
    • উৎসব
    • ব্যবসা
    • স্বাস্থ্য
    • শিক্ষা
    • প্রযুক্তি
    • হেঁসেল

Rituals

রাজ্য

'অভিনব ভাই ফোঁটা' ভাই জ্ঞ্যানে গাছকে ফোঁটা আরভি ও আরশি-র

আয়োজন সবই ছিল। ফোঁটার চন্দন থেকে সব আনুষঙ্গিক আচার শুধু মানুষের বদলে গাছকে ফোঁটা দিলেন দুই বোন। তাদের কোনো ভাই নেই। তাই বৃক্ষপ্রেমী বাবা মায়ের উদ্যোগে এই অভিনব ফোঁটার অনুষ্ঠান হল পূর্ব বর্ধমানের মালিরবাগান এলাকায়। হাজির ছিলেন প্রতিবেশীরা।এই এলাকার আবু আজাদ বৃক্ষপ্রেমী বলে পরিচিত। প্রতিবছর অনেক গাছ বিতরণ করেন বর্ধমানের নানা এলাকায়। নিজেও লাগিয়েছেন অনেক গাছ। তার দুই ছোট মেয়েই গাছকে ফোঁটা দিল আজ। আবু আজাদ জানাচ্ছেন তার দুই মেয়ে আরভি মোল্লা ও আরশি মোল্লা। বড় মেয়ে বর্ধমানের বেসরকারি ইংরাজি মাধ্যম স্কুল বর্ধমান মডেল স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ে। ছোট মেয়ে এখনও স্কুলে ভর্তি হয়নি, সে বাড়িতেই পড়ে মায়ের কাছে। আরভির স্কুলের বন্ধুদের থেকে শুনেছে ভাইকে ফোঁটা দিতে হয়। সে বাড়ি এসে বাবাকে জিজ্ঞেস করে বাবা আমাদের তো ভাই নেই আমরা কাকে ফোঁটা দেব? আজাদ জানান তিনি মেয়ের প্রশ্নের কোন উত্তর খুজে পান নি। সত্যি তো ওদের ভাই নেই, তাহলে কাকে ফোঁটা দেবে!তিনি জানাচ্ছেন, আমার স্ত্রীকে কথাটা বললাম। আমার স্ত্রী বললেন আমাদের তো কোনও ফোঁটা নেই। কিন্তু শিশু মন সেটা কি বোঝে? তাদের সেটা বলা যাবে না। আমি চিন্তায় পরে গেলাম কি করা যায়। শেষে আমার স্ত্রীর মাথা থেকে একটা সুন্দর ভাবনার কথা আমাকে বললেন, গাছের থেকে পরম আপন ভাই আর কে হবে। তাই আমরা স্বামী স্ত্রী মিলে উদ্যোগ নিলাম আমার মেয়েরা তাদের গাছ ভাইকে ফোঁটা দেবে।অন্যদিকে ছোট্ট আরভি জানিয়েছে, এবার থেকে গাছকে ভাই হিসেবেই দেখবে। তার যত্ন করবে। প্রতিবারই ফোঁটা দেবে গাছেদের। তাদের মা রেশমা খাতুনা জানান, তাদের মুসলিম পরিবারে ফোঁটার চলন নেই। কিন্তু মেয়ের আগ্রহের কাছে হার মেনেছেন তারা। গাছের চেয়ে আপন আর দীর্ঘদিনের সাথী আর কে হতে পারে? তাই গাছকেই ফোঁটা দেওয়া হল। তাঁদের এই অভিনব চিন্তা ভাবনে মন ছুঁয়ে গেছে স্থানীয় মানুষজনের।

অক্টোবর ২৭, ২০২২
নিবন্ধ

ঝুলনযাত্রা ও রাখীপূর্ণিমা

বছরের তিনটে বিশেষ পূর্ণিমাতে হয় রাধাকৃষ্ণের তিন লীলা-উৎসব বা যাত্রা । ফাল্গুণী পূর্ণিমায় দোলযাত্রা, শ্রাবণী পূর্ণিমায় ঝুলনযাত্রা আর কার্তিক পূর্ণিমায় রাসযাত্রা। ঝুলন হল বর্ষার লীলা যার অপর নাম হিন্দোলনলীলা। ব্রজবাসীরা কদমগাছে ঝুলা বেঁধে রাধাকৃষ্ণকে দোল খাওয়ায়। কাজরী গান হয়। মেঘমল্লারে বৃন্দাবনের আকাশবাতাস সঙ্গীতমুখর হয়ে ওঠে। একাদশী থেকে শুরু হয় ঝুলন আর শেষ হয় পঞ্চমদিনের পূর্ণিমাতে। রাখী বাঁধা হয় সেদিন।তবে অন্য্যন্য যাত্রাগুলির থেকে ঝুলনযাত্রা একটু ভিন্ন। এটি রূপকধর্মী। দোলা বা হিন্দোলনের অর্থ হল সুখ-দুঃখ, বিরহ-মিলন ময় মানুষের জীবনের প্রকৃত অর্থই হল ঘড়ির পেন্ডুলামের মত চলমানতায় ভরা। একবার আসবে দুঃখ। তারপরেই সুখ। কখনো বিরহ, কখনো মিলন। কখনো আনন্দ, কখনো বিষাদ। স্থির হয়ে থাকাটা জীবন নয়। এই দোলনার আসা ও যাওয়াটি হল রূপকমাত্র। তাই জন্যেই তো বলে চক্রবত পরিবর্ততে সুখানি চ দুখানি চ |উপনিষদে বলে আনন্দ ব্রহ্মেতি ব্যজনাত অর্থাৎ ব্রহ্ম আনন্দস্বরূপ। কিন্তু তিনি একা সেই কাজ করবেন কি করে? তাইতো তিনি সৃষ্টি করেন বন্ধু-বান্ধব, পিতামাতা, দাসদাসী, ভাইবোন, স্বামী-স্ত্রীর মত সম্পর্কের জালে আবদ্ধ মানুষদের। তাই প্রেমের আবাহনে পুরুষ আর প্রকৃতির যৌথ উদ্যোগে গড়ে ওঠে হিন্দোলন বা ঝুলনের মত উৎসব । সম্পর্ক টিঁকিয়ে রাখার জন্য সৃষ্টিকর্তা প্রজাপিতা ব্রহ্মের এরূপ দায়বদ্ধতা। মানুষ যাতে মানুষকে নিয়ে অহোরাত্র বেঁচে থাকেআর সেখানেই ঝুলন নামক মিলনোৎসবের সার্থকতা!শ্রীমদ্ভাগবতে বলে, বর্ষণমুখর বৃন্দাবন তখন বানভাসি। বর্ষণসিক্ত ধরিত্রী সবুজ। নদীনালা বর্ষার আনন্দে থৈ থৈ। প্রাণীকুল খলখল কলধ্বনিতে মুখর। পক্ষীকুল মনের আনন্দে সরব তাদের কূজনে। আসন্ন পূর্ণিমার রূপোলী জ্যোৎস্নায় ব্যাপ্ত আদিগন্ত চরাচর। এমন প্রাকৃতিক আবাহনে মেতে উঠলেন শ্রীরাধিকা তাঁর দয়িতের সাথে। এতো মানুষের জীবনের মতই মিলনের আর্তি। বহুদিনের অদর্শণের অপ্রত্যাশিত প্রাপ্তি। এতো আমাদের জীবনে চেনা ঘটনাতাই নয় কি ?তাই রবিঠাকুর বলে ওঠেন,আজ শ্রাবণের সজল ছায়ায় বিরহ মিলন........সত্যি এ যেন পরাণের সাথে পরাণ বাঁধার উৎসব ! চির বন্ধুতার আবেগের উৎসব ।ঝুলনযাত্রা বহুযুগ আগে থেকে ব্রজভূমি বৃন্দাবনে মহাসমারোহে অনুষ্ঠিত হত। শ্রীকৃষ্ণ এবং শ্রীরাধিকা তাঁদের অষ্টসখী ইন্দুরেখা, চিত্রা, চম্পকলতা, ললিতা, বিশাখা, তুঙ্গবিদ্যা, সুদেবী এবং রঙ্গদেবীর সাথে লীলা করেছিলেন ঐ দিনে।শ্রীচৈতন্যদেবের লীলাক্ষেত্র নবদ্বীপধামেও এখন ঝুলন পালিত হয় মহাসমারোহে। রাধাগোবিন্দের প্রচলিত ঝুলনযাত্রার হাত ধরে এসে পড়ে রাখীবন্ধন যা এখন গ্লোবাল মার্কেটে আরো জনপ্রিয়। পুরাণের কাহিনী অনুযায়ী দেবতারা যখন অসুরদের দৌরাত্ম্যে স্বর্গ থেকে ক্ষমতাচ্যুত তখন দেবরাজ ইন্দ্র দেবগুরু বৃহস্পতির শরণাপন্ন হলেন। ইন্দ্রের স্ত্রী পৌলমী তখন বৃহস্পতির নির্দেশে ইন্দ্রের হাতে বেঁধে দিলেন একগুচ্ছ রাখী। এই রাখী হল রক্ষাকবচ যা দেবরাজকে রক্ষা করবে অসুরদের সকলপ্রকার অত্যাচারের হাত থেকে। শ্রাবণী পূর্ণিমার দিনে রাখী পরার পরেই নাকি দেবরাজ ইন্দ্র সমর্থ হয়েছিলেন অসুরদের পরাস্ত করে স্বর্গরাজ্য উদ্ধার করতে।ইতিহাস অনেক কথাই বলে। তার মধ্যে বাঙালীদের কাছে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল লর্ড কার্জনের বঙ্গভঙ্গ ও রাখীবন্ধনে রবিঠাকুরের অগ্রণী ভূমিকা। ১৯০৫ সালে লর্ড কার্জন বাংলাকে দুভাগ করে বসলেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই বঙ্গভঙ্গের তীব্র বিরোধিতা করে দেশপ্রেমের মন্ত্রে জাতীয়তাবাদকে আরো সোচ্চার করার চেষ্টায় জাতিধর্ম নির্বিশেষে, আপামর জনসাধারণের হাতে রাখী বাঁধলেন। বীজমন্ত্র একটাই। ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে দেশবাসীকে একসূত্রে আবদ্ধ করা। লিখলেন সেই অনবদ্য গান,বাংলার মাটী বাংলার জল, বাংলার বায়ু বাংলার ফল, পুণ্য হোক, পুণ্য হোক হে ভগবান! তাই সেই থেকে রাখীপূর্ণিমার দিনটি বাঙালীর মননে, স্মরণে আরো গুরুত্ব পেয়ে আসছে। রাখী হল সেই রক্ষাবন্ধনের কবচ যা পরিয়ে দিলে কোনো অমঙ্গলের আশঙ্কা থাকেনা। তাই বুঝি মা যশোদা কৃষ্ণের হাতে এই মঙ্গলসূত্র বা ডোর বেঁধে দিতেন। বালগোপাল অরণ্যে, প্রান্তরে গোচারণায় যেতেন সখাসখীদের সাথে, তার যাতে কোনো অনিষ্ট না হয় সেই জন্য । আবার ব্রজবালারা কিশোর কৃষ্ণের হাতে ফুলের রাখী বেঁধে দিতেন প্রেম-প্রীতির বন্ধন হিসেবে। মাতা কুন্তী নাকি অর্জুনপুত্র অভিমন্যুর হাতে যুদ্ধযাত্রার প্রাক্কালে রাখী বেঁধে দিয়েছিলেন। অতএব রাখী হল স্নেহ-ভালবাসার বন্ধন দিয়ে মোড়া এক রক্ষাকবচ যা কেবল মাত্র ভাই-বোনের সম্পর্কের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়।।

আগস্ট ১২, ২০২২
রাজ্য

রাত পোহালেই রক্ষা বন্ধন, রংবেররংয়ের রাখির পসরা সাজিয়ে হাজির রাখির ব্যাপারীরা

দিদি নাকি মোদি কে এগিয়ে তা বোঝা যাবে ১২ ই আগস্ট রাখি বন্ধন উৎসবের দিনে। তবে আপাতত দুজনেরই চাহিদা রয়েছে বলে জানালেন বালুরঘাটের রাখি বিক্রেতারা। যদিও অনান্য বছরের তুলনায় এবছর বিক্রি কিছুটা কম। রাখি বন্ধন উপলক্ষে দক্ষিণ দিনাজপুরের সদর শহর বালুরঘাটের নিউমার্কেট, ডানলপ মোড়, বাসস্ট্যান্ড সহ বিভিন্ন এলাকায় রাখির পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। বিভিন্ন অলংকারিক রাখির পাশাপাশি রয়েছে বিভিন্ন রং এর রাখি। বিশেষ বিশেষ রংয়ের রাখি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সাধারণত এই উৎসবকে কাজে লাগিয়ে ব্যবহার করে থাকে। এছাড়াও রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছবি সংবলিত এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি র ছবি সংবলিত রাখি। তবে কে এগিয়ে তা কিন্তু খোলসা করে বলতে চাননি বিক্রেতারা। বিক্রেতারা জানান দুজনেরই চাহিদা রয়েছে, তবে এখনো সেভাবে বিক্রি শুরু হয়নি তাই বলা সম্ভব নয় বিক্রিতে কে এগিয়ে থাকবে। তবে রাজনৈতিক দল ছাড়া অন্যান্যরা কিন্তু সাধারণ বা আলংকারিক রাখি বেশি কিনতে আগ্রহী।

আগস্ট ১০, ২০২২
দেশ

করোনা ভ্রুকুটি এড়িয়ে দেশ জুড়ে মহাসমারোহে পালিত রথযাত্রা, পুরী'র জগন্নাথ দেবের রথযাত্রার কিছু না জানা কথা

দুবছর করোনা বিধিনিষেধ থাকায় জগ্ননাথ দেবের রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হলেও ভক্তশূন্য ছিল পুরী। ২০২০-তে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সমুদ্র শহর পুরীতে কার্ফু জারি করে হয়েছিল। রথযাত্রায় জনসমাগম আটকাতে ওই নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। পুরীর মানুষও সেই দিন রাস্তায় বের হতে পারেননি। যাঁরা বেড়াতে গিয়েছিলেন তাঁদের হোটেল ছেড়ে বেরোতে পারেননি। শুধুমাত্র সেবায়িতরা রথ নিয়ে প্রভু জগন্নাথদেব, বলরাম ও সুভদ্রাকে পৌঁছে দিয়েছেন গুন্ডিচা মন্দিরে। ভক্ত সমাগম যাতে না হতে পারে সেজন্যই এই কার্ফু জারি করা হয়েছিলো প্রশাসনের পক্ষ থেকে। এবারে সেইরকম কোনও নিধিনিষেধ নেই। সেই কারনেই বাঁধভাঙ্গা ভক্তসমাগম দেবশহর পুরীতে।পুরাণ-এ কথিত আছে একদা সুভদ্রা তাঁর ভাই কৃষ্ণ ও বলরামের কাছে নগর ঘুরিয়া দেখার জন্য জোড়াজুড়ি করেন। বোনের অনুরোধে সুভদ্রার দুই ভাই ও বোনকে সাথে নিয়ে রথে করে নগর পরিভ্রমণের জন্য বের হন। তাঁদের ভ্রমণকালে রথ থেকে নেমে গুন্ডিচায় মাসির বাড়ি যান। সেখানে সাত দিন থাকেন তাঁরা। সাত দিনের নগর যাত্রা পূর্ণ করে বোন সুভদ্রাকে নিয়ে পুরী ফিরে আসেন জগন্নাথ ও বলরাম। বিভিন্ন মতবাদের সাথেসাথে জনশ্রুতি অনুযায়ী এই ঘটনার পর থেকেই পুরী তে রথযাত্রার আয়োজন করা হয়ে আসছে। জাতি ধর্মের উর্ধে উঠে পুরীর রথযাত্রা বিশ্ববন্দিত। পুরীর সাথেসাথে দেশের বিভিন্ন জায়গায় রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। কলকাতায় ইস্কন মন্দির, মাহেশ, মহিষাদল, হুগলির গুপ্তিপাড়া ছাড়াও বহু জায়গায় সাড়ম্বরে রথযাত্রার আয়োজন করা হয়।জগন্নাথ দেবের রথ এই জায়গায় এসে স্বাভাবিক ভাবে থমকে যায়জগন্নাথদেবের নগর যাত্রার সময় মন্দির থেকে কয়েক কিলোমিটার যাওয়ার পর এক জায়গায় দাঁড়িয়ে যায়। শত চেষ্টাতেও সেখান থেকে নাড়ানো যায়না তাঁর রথকে। কথিত আছে ইসলাম ধর্মবলম্বী এক জগন্নাথ ভক্তের সমাধির সামনে এসে দেবতার কিছুক্ষণের জন্য স্তব্দ হয়ে যায়। প্রচলিত লোককথা অনুযায়ী দেবতার সেই ভক্তের নাম সালবেগ। কোনও এক সময় তিনি জগন্নাথ দেবতার দর্শনের জন্য মন্দির পৌঁছতে পারেননি তিনি। সালবেগ মৃত্যুর পর ধার্মিক প্রথা অনুযায়ী তাঁকে সমাধিস্ত করা হয়। তাঁর এই সমাধির সামনে এসে জগন্নাথের রথ কোনও এক অদৃশ্য বলে নিজে থেকেই দাঁড়িয়ে পড়ে। প্রবল বলপ্রয়োগ করেও কিছুক্ষণের জন্য রথের চাকা এক ইঞ্চি ঘোরানো যায় না। রথে উপস্থিত সকলে মিলে সালবেগের আত্মার উদ্দেশে শান্তি কামনা করলে রথ আসতে আসতে আবার এগোতে শুরু করে। সেই ঘটনা পরম্পরায়, তার পর থেকেই প্রত্যেক বছর সালবেগের সমাধিতে রথ থামানো শুরু হয়।প্রত্যেক দেবতার রথের নাম ও বৈশিষ্ঠমন্দিরে তিন দেবতা একসাথে বিরাজমান হলেও, জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা তিনটি পৃথক রথে করে নগর পরিভ্রমণে বের হন। তাঁদের প্রত্যকের রথের নাম ও আকৃতি ভিন্ন। জগন্নাথের রথের নাম নন্দীঘোষ, এটি বাকি দুটি রথের থেকে উঁচু হয়। এর উচ্চতা প্রায় ৪৫.৬ ফুট। পূর্বে অষ্টাদশ সিদ্ধির পরিচয়জ্ঞাপক ১৮টি চাকা থাকলেও এখন এই রথে ১৬টি চাকা থাকে। নন্দীঘোষ রথের মাথায় যে কাপড়ের ধ্বজা থাকে তার নাম ত্রৈলোক্যমোহিনী ও তার রশির নাম শঙ্খচূড় নাগিনী। রথের দ্বারপাল হলেন ব্রহ্মা ও ইন্দ্র। নন্দীঘোষ রথে উপস্থিত নয়জন পার্শ্ব দেব উপস্থিত থাকেন তাঁরা হলেন, নারায়ণ, বরাহ, গোবর্ধন, নৃসিংহ, কৃষ্ণ/গোপীকৃষ্ণ, রাম, ত্রিবিক্রম, হনুমান ও রুদ্র। এবং এই দেবতাদের সাথে থাকেন ধ্যানমগ্ন ঋষিবণ ব্যাসদেব, নারদ, দেবল, পরাশর, শূক, বশিষ্ঠ, বিশ্বামিত্র ও মরীচি। রথের উপরিভাগ লাল ও হলুদ কাপড়ে মোড়া থাকে। এই রথের কালো রঙের চারটি ঘোড়ার নাম যথাক্রমে শঙ্খ, বলহাকা, শ্বেতা, হরিদশ্ব। রথের সারথি হলেন মাতলি ও রক্ষক গরুড়। তাঁর রথের কলসের নাম হিরন্ময়। নন্দীঘোষ নির্মাণে ছোট বড় মিলিয়ে সর্বমোট ৮৩২টি কাঠের টুকরো লাগে।ভাই বলরামের রথের নাম তালধ্বজ। যার উচ্চতা প্রায় ৪৫ ফুট। এই রথে জগ্ননাথ দেবের রথের থেকে ২টি চাকা কম থাকে, তালধ্বজ রথে চাকার সংখ্যা ১৪টি। রথের ধ্বজার নাম উন্মনী এবং রশির নাম বাসুকী নাগ। তালধ্বজ রথে নয় জন পার্শ্বদেবতা থাকেন, তাঁরা হলেন গণেশ, কার্তিক, সর্বমঙ্গলা, প্রলম্ব, হলায়ুধ, মৃত্যুঞ্জয়, নাটেশ্বর, মহেশ্বর ও শেষদেব। রথের দ্বারপাল হলেন রুদ্র ও সাত্যকি। রথের সারথি মাতলি এবং রক্ষক বাসুদেব। এই রথের শ্বেতবর্ণের চারটি ঘোড়ার নাম তীব্র, ঘোড়া, দীর্ঘশর্মা, ও স্বর্নাভ। সুদর্শন চক্রের পাশে দুটি পাখির (কাকাতুয়া) নাম যথা স্বধা এবং বিশ্বাস। রথটি সবুজ ও লাল কাপড়ে মোড়া থাকে। ৭৬৩টি ছোট বড় কাঠের টুকরো দিয়ে নির্মিত এই তালধ্বজ। বোন সুভদ্রার রথের নাম দর্পদলন, প্রায় ৪৪.৬ ফুটের উচ্চতা এই রথটির। মোট চাকার সংখ্যা ১২, যা বলরামের রথের থেকে ২টি কম। রথের ধ্বজার নাম নাদম্বিক এবং রশির নাম স্বর্ণচূড় নাগ। ধ্বজার পাশে যে দুটি পাখি থাকে তাঁদের নাম শ্রুতি ও স্মৃতি। রথটি কালো ও লাল কাপড়ে মোড়া থাকে। দেবী সুভদ্রার রথযাত্রায় নজন পার্শ্বদেবী হলেন যথাক্রমে চন্ডী, চামুণ্ডা, মঙ্গলা, উগ্রতারা, বনদুর্গা, শূলিদুর্গা, শ্যামাকালী, বিমলা ও বরাহি। দ্বারপালিকা ভূদেবী ও শ্রীদেবী। সারথি অর্জুন এবং রক্ষক জয়দুর্গা। লাল রঙের চারটি ঘোড়ার নাম রচিকা, মোচিকা জিতা ও অপরাজিত। রথটি তৈরিতে মোট ৫৯৩টি টুকরো কাঠ লাগে।রথ নির্মান পক্রিয়া রথ নির্মাণের প্রতিটা ধাপের জন্য দিন নির্দিষ্ট করা থাকে।সেই নিয়মনীতির অন্যথায় করা যাবে না কোনও ভাবেই। ঠিক করা আছে নির্দিষ্ট সূত্রধর, চিত্রকর, শিল্পী ও কারিগর। অজ্ঞাত কোনও এক কালে মহারাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন প্রত্যেক বছর তিনটি রথকে নতুন ভাবে নিয়ম রীতি মেনে নির্মাণ ও সমস্ত প্রথা এবং উৎসবের যে প্রবর্তন করেছিলেন, আজও পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে সেই ভাবেই সমস্ত বিষয়গুলি অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।প্রত্যেক বছর রথ নির্মাণের জন্য কাঠ সংগ্রহ শুরু হয় মাঘমাসের বসন্ত পঞ্চমী থেকে তিথি থেকে। সেই কাঠ আনা হয় দশপল্লা জেলার রণপুর জঙ্গল থেকে। প্রথমে রথের জন্য কাঠ দিতেন রণপুরের মহারাজা। পরবর্তীকালে তাঁর আত্মীয় সুত্রে সেই কাঠের স্বত্ব নিয়ে কাঠের জোগান দিতেন দশপল্লার রাজা। এখন গড়জাত-রাজ্য ওড়িশার অন্তর্গত হওয়ায় রথের কাঠ সরবরাহ করে থাকে ওড়িশা সরকার। তিনটি রথেরই নির্মানকার্য শুরু হয় প্রতিবছর বৈশাখমাসের শুক্লা তৃতীয়া অর্থাৎ অক্ষয়তৃতীয়ার পুণ্য তিথিতে এবং শেষ হয় নেত্রোৎসব তথা জগন্নাথ বিগ্রহের চক্ষুদান বা চক্ষু অঙ্কনের দিন।#BadaDanda is filled with sea of devotees for the spiritual journey of the Holy Trinity. #ଜୟଜଗନ୍ନାଥ#JaiJagannatha 🙏🏻 #ରଥଯାତ୍ରା୨୦୨୨ #RathaJatra2022 pic.twitter.com/gGDw2c7tJ9 Naveen Patnaik (@Naveen_Odisha) July 1, 2022জগন্নাথ মন্দিরের সামনে পূর্বদিকে আছে অরুণ স্তম্ভ। এখান থেকে গুণ্ডিচা মন্দির পর্যন্ত বিস্তৃত রাজপথের নাম বড়দাণ্ড। এই রাস্তার পাশেই নির্মাণ করা হয় তিনটি রথ তিনটি। প্রত্যেক রথে নির্মান করার জন্য নির্দিষ্ট করা আছে সূত্রধর, চিত্রকর অন্যান্য আরও শিল্পী ও কারিগর। যেহেতু এই কাজ ছাড়া অন্য কোনও কাজ করতে পারেন না সেই কারনে এদের প্রত্যেকের আয়ের জন্য জন্য দেয়া আছে যথেষ্ট পরিমাণে দেবত্ত্ব সম্পত্তি। তারা তাঁদের নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিক সময়ে পালন করে থাকেন যথা সময়ে।

জুলাই ০১, ২০২২
নিবন্ধ

Daughter: কন্যা রুপেন সংস্থিতা

নীল আকাশের মহাসাগরে যখন সাদা মেঘের ভেলা ভাসিয়ে দিত কেউ, শরৎ তার অরুণ আলোর অঞ্জলি দিয়ে ধানের খেতে রৌদ্রছায়ায় খেলতো লুকোচুরির খেলা, শিউলিবনের বুক উঠতো চঞ্চল হয়ে--- তখনই একদিন খবরকাগজে পাতাজোড়া পুজোয় চাই নতুন জুতো, আর শারদীয়া আনন্দমেলার আনকোরা নতুন বিজ্ঞাপনে প্রফেসর শঙ্কু বয়ে আনতেন দেবীপক্ষের প্রথম আলোর চরণধ্বনি।সেই মোলায়েম পূজো পূজো গন্ধ বাড়তে বাড়তে একসময় ম ম করতো চরাচর। স্কুল ঝাঁপ ফেললেই জলপাইগুড়ির বন্ধুমহল, সেজে ওঠা পাড়ার মন্ডপ, নিতাই পালের আস্তানায় অপরূপা মৃণ্ময়ী মাতৃপ্রতিমাদের ফেলে রেখে-- পর্যায়ক্রমে ট্রেন-বাস-গোযান বাহিত হয়ে, পঞ্চমী কি ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় পৌঁছে যেতাম বর্ধমান থেকে গোটা তিরিশ কি.মি. দূরে নারায়ণপুর গ্রামে।আরও পড়ুনঃ শারদঅর্ঘ্যপরের চারদিন কোথা দিয়ে যে কেটে যেত আরতি-অঞ্জলি-পূজো-প্রসাদের পৌনঃপুনিকতায়! গ্রামের গুটিকয় বন্ধুর সাথে সেরে ফেলতাম ফেলে আসা বারো মাসের সালতামামি; আর এই সব করতে করতেই কোথা দিয়ে পূজো শেষ। ঢাকিরা বোল তুলত -- ঠাকুর থাকবি কতক্ষণ ঠাকুর যাবি বিসর্জন! দশমীর নিশুতি রাতে বিসর্জনের পর বুকটা সত্যি খাঁ খাঁ করতো অজয় নদের শূণ্য চরের মতো, খেতে বসে বার বার ঢোঁক গিলে সামলে নিতাম উপচে আসা চোখের জল।বড় হয়ে পূজো শেষের এই মনখারাপটা কেটে গেল। মনকে সহজেই বোঝাতে পারতাম-- মা তো যাননি কোথাও; আছেন তো সারাক্ষণ আমার পাশেই!তুমি যে চেয়ে আছো আকাশ ভরে,নিশিদিন অনিমেষে দেখছো মোরে...চলমান জীবনের প্রতি পলে আজ অনুভব করি তাঁর কল্যাণময়ী স্পর্শ। মণ্ডপের মৃণ্ময়ী মাতৃমূর্তি চিন্ময়ীরূপে অনুক্ষণ আচ্ছন্ন করে রাখেন চেতন ও মনন।আরও পড়ুনঃ বাজলো তোমার আলোর বেণুপূজো আসে, পূজো যায়..... ২০০২ -এ তিস্তা এলো আমাদের ঘরে। তার পৃথিবীর আলো দেখার আগে নানা জটিলতার জন্য চারবার আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে হয়েছিল রূপার; কিন্তু আগেভাগে অনাগত সন্তানের লিঙ্গ জেনে ফেলতে ব্যাকুল হইনি আমরা কেউই। মেয়ের মুখ প্রথম দেখার শুভক্ষণটি মনে হয়েছিল জীবনের সেরা মুহূর্ত, যে স্বাদের ভাগ হবে না কোন দিনও!পূজোমন্ডপ হরগৌরীতলায় হামাগুড়ি দিয়ে... হোমের কৃষ্ণতিলক হাতের তেলো দিয়ে কপালময় লেপে নিয়ে... বাবার কাঁধে চড়ে বিসর্জনের শোভাযাত্রায় সামিল হয়ে... ঢাকের গায়ে ছোট্ট হাতের এলোমেলো চাঁটি মেরে... নবমীর দুপুরে হোমাগ্নির ধোঁয়ায় চোখ কচলে লাল করে... ভোরের শিউলি বিছানো গাছতলায় ফুল কুড়িয়ে মালা গেঁথে, একটু একটু করে পাপড়ি মেললো আমার ছোট্ট তিস্তা।আরও পড়ুনঃ তোমাদের মনের মতো রঙীন পূজাবার্ষিকী-- আনন্দমেলাসন্ধ্যারতির সময়, ঢাক-কাঁসর-ঘণ্টা-সানাই-র ঐকতানে, ফুলের মালা-দীপের আলো-ধুপের ধোঁয়ার প্রেক্ষাপটে, আত্মজার মধ্যে যেন আজ ফুটে উঠতে দেখি জগন্মাতার অগ্নিময়ী রূপকল্পেরই এক প্রোজ্জ্বল খন্ডাংশ। মনে হয় মা উমা যেন ঘরের মেয়েটি হয়ে খেলে বেড়াচ্ছেন আমাদের ছোট্ট ঘরে। শরনাগতদীনার্তপরিত্রাণপরায়ণা সর্বস্যার্তিহরা দেবী নারায়ণী যেন ভালবাসার টানে আলো করছেন আমাদের আতুর আঙিনা.... তাই তোমার আনন্দ আমারপর, তুমি তাই এসেছ নীচে....আরও পড়ুনঃ পুজো শুরু হয়ে গেলঅবাক হয়ে দেখি, কাকতালীয়ই হবে নিশ্চয়, আমার স্কুল-কলেজ-কর্মস্থলের বেশীর ভাগ সমবয়সী বন্ধুরই ঘর আলো করছে এক একটি কন্যাসন্তান। তাদের মেয়েবেলার উজ্জ্বল সংকেত ভেসে আসে আন্তর্জালে। এদের সব্বার মধ্যে জ্যোতির্ময়ী মহামায়ার পরমা শক্তির উদ্বোধন হোক, মেধা-প্রতিভা-সাফল্যের পবিত্র হুতাশনে পূব আকাশ উঠুক রাঙা হয়ে!লেখকঃ ডঃ সুজন সরকারবর্ধমান।

অক্টোবর ১৬, ২০২১
নিবন্ধ

Durga Puja: পুজো শুরু হয়ে গেল

আধো ঘুমের মধ্যে ঢ্যাম কুড়কুড় ঢাকের আওয়াজ কানে আসছিল অনেকক্ষণ ধরেই, শেষ পর্যন্ত চোখ খুলতেই হোলো। আধখোলা জানালার ওপারে ফর্সা আকাশ... সামান্য ফুরফুরে হাওয়া... মনে পড়ে গেল আজ সপ্তমী --- সাড়ে ছটার মধ্যে স্নান সেরে তৈরী হয়ে নেওয়া চাই, সোয়া সাতটায় কলাবউ স্নান করিয়ে ঘট আনতে যেতে হবে।দাঁত মাজা ... মুখ ধোওয়া... বাথরুমে চার পাঁচ মগ জল ঢেলে কাকস্নান ... তারপর নতুন কাপড় পড়ে নিয়ে সোজা চাতোর-এ। চাতোর হোলো চত্বর-এর অপভ্রংশ, আমাদের পারিবারিক পুজোর ঠাকুরতলা ও সংলগ্ন খোলা জায়গাটুকু। শতাব্দীপ্রাচীণ এক বিরাট অশ্বথ্থ গাছের ছায়ায় (আমার নব্বই-ছুঁইছুঁই বাবাও শৈশবে একে এই চেহারাতেই দেখেছেন) এই দেবীমন্ডপে মা হরগৌরী পূজিত হয়ে চলেছেন --- ঠিক কত বছর কেউ জানে না, শদুয়েক বছর আগে পর্যন্ত পাওয়া গেছে লিখিত প্রমাণ।আরও পড়ুনঃ শারদঅর্ঘ্যসবুজ-গোলাপী কাঠের পালকি ( এরও বয়সের গাছপাথর নেই , কারণ আমি জ্ঞান হওয়া ইস্তক ঠিক এমনটিই দেখছি একে) পুকুরে চুবিয়ে এনে নামানো হয়েছে মন্ডপের সামনে। পাড়ার দুই কিশোর স্নান সেরে ফর্সা কাপড়ে গামছা-সহ তৈরী তাকে কাঁধে নিতে। আমার কৈশোরে বছর ছয়েক আমিও বাহক হয়েছি এই চতুর্দোলার। এক প্রজন্ম থেকে দোলা বওয়ার দায়িত্ব বর্তাচ্ছে পরের প্রজন্মে, যুগ যুগ ধরে।নানা বয়সী কাকীমা-মাসিমা-বৌ-ঝি-কাচ্চাবাচ্চায় জমে উঠেছে চাতোর। পুরোহিত বুড়োদা ও তন্ত্রীধারক নুপুরদা ধরাধরি করে কলাবউকে শুইয়ে দিল দোলায়। তারপর ঢাকের বাদ্যি আর কাঁসরঘন্টার ঝনঝনাৎকারের মধ্যে রওনা হলাম সবাই --- শুরুতেই ধুনুচি হাতে এক দাদা, তার পর পালকিতে কলাবউ, তার পিছে আম্রপল্লবসহ শূণ্য পিতলের কলসী কাঁখে আমরা তিনজন, পিছু পিছু বাজনদার-পুরোহিত-ছেলেমেয়ে-এঁড়িগেঁড়ির দল।আরও পড়ুনঃ বাজলো তোমার আলোর বেণুগ্রামের পথে সাতসকালের এই শোভাযাত্রা এঁকেবেঁকে এগিয়ে চললো কারো সাষ্টাঙ্গ প্রণাম, কারো জোড়হাতের নমস্কার নিতে নিতে। মাঝপথে সিংহবাড়ির মন্ডপের সামনে থেমে গিয়ে পালকিতে তুলে নেওয়া হোলো তাঁদের কলাবউকেও। পদযাত্রা শেষ হোলো গ্রামের মাধ্যমিক স্কুলের পাশে বাঁধাপুকুরে গিয়ে।পুরোনো দিনে গ্রামের পানীয়জল ও পুজোর ক্রিয়াকর্মের জন্য ব্যবহৃত হতো এই চতুষ্কোণ পুকুরটি; একমাত্র এটিতেই ছিল শাণবাঁধানো ঘাট --- তাই এর নাম বাঁধাপুকুর। ঘাটের শানে পালকি ও ঘট নামানো হোলো; কলাবউ ও পুজোর সামগ্রী নিয়ে চার পুরোহিত নেমে গেলেন হাঁটুজলে; চলতে লাগলো মন্ত্রোচ্চারণ; ধুনুচির ধোঁয়া পাক খেতে খেতে উঠতে লাগলো উপরপানে।বাজিয়ে-রা ঢাক মাটিতে নামিয়ে হাঁফ ছাড়ছে, ঘাম শুকোচ্ছে গামছা নেড়ে নেড়ে। মাঝবয়সী পুরুষেরা চেয়ে আছে পুজোপাঠের দিকে, কেউ কেউ ধোঁয়া ওড়াতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। কুচোকাঁচাগুলো বেশীরভাগই বেঢপ মাপের রঙবেরঙের পোশাকে ছুটোছুটিতে মত্ত ... খেলনাপিস্তলে ক্যাপ ফাটছে চটরপটর... একটু বড় মেয়েরা চুড়িদার-স্কার্ট-ঘাগরা সামলাতে ব্যস্ত... চড়া লিপস্টিক-ঝুটো গয়না-শিরোভূষণে গরবিনী... কারো কারো চোখে রহস্যময়ী হাসির ঝিলিক.... নবীন কিশোরের দল জটলা করে আছে একটু দূরে, তাদের মনোযোগ মূলতঃ এদিকপানেই...আরও পড়ুনঃ তোমাদের মনের মতো রঙীন পূজাবার্ষিকী-- আনন্দমেলাবাঁধাপুকুর থইথই করছে; সেই আটাত্তরের বন্যার পর এতো জল দেখি নি আর কখনো। দফায় দফায় প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে এবার, ঘাটের প্রথম পৈঠে অবধি ডুবে আছে তাই। চারদিক সবুজে সবুজ; কচুরিপানা-পাতাঝাঁঝি-শাপলা-ঢোলকলমীরা দখল নিয়ে নিয়েছে অনেকখানি জলের। দুটো শালুক ফুটে রয়েছে খুব কাছেই। আর পাতাঝাঁঝির ছোটো ছোটো সাদা ফুলে সমাচ্ছন্ন ঘাটের সামনেটা। ভীমরুল-মৌমাছি-প্রজাপতি ঘুরছে ফুলে ফুলে; জল ছুঁয়ে ছুঁয়ে উড়ছে লাল-হলুদ-নীল জলফড়িং। পুকুরের ওপাশে ভেসে আছে জলচর পাখি অনেকগুলো। কটা ফিঙে আর বাঁশপাতি উড়ছে ফরফরিয়ে। জলের ওপর জেগে থাকা শুকনো ডালে এত কলরবের মধ্যেও অটল স্থৈর্যে বসে আছে উজ্জ্বল নীল একটা মাছরাঙা।এইসব দেখছি, আর চোখ চলে যাচ্ছে পুকুরের পাশে একটা পাকুড়গাছের দিকে। একসময় ঐ গাছটি নাকি এ গ্রামের প্রিয় আত্মাহুতিস্থল ছিল--- অনেক মানুষ (তার মধ্যে ছোটোবেলায় দেখা আমাদের এক পুরোহিতঠাকুরও ছিলেন) ঐ গাছের ডাল থেকে ঝুলে পড়ে ভবসংসারের মায়া কাটিয়েছেন। ওঁরা কি দেখছেন, অদৃশ্য থেকে, আজকের এই প্রাণের মেলা?এসবের মধ্যেই পুজোপাঠ শেষ। কলাবউরা উঠে এলেন পালকিতে; পেতলের কলসিতে জল ভরে নিয়ে আম্রপল্লব স্থাপন করে মাথায় তুলে নেওয়া হোলো। গামছার ওপর ভারী কলসি সামলাতে সামলাতে পা মেলালাম পদযাত্রায়। ঠাকুরপুকুরের পাশ দিয়ে, পথের পাশে ঘাস চিবোতে থাকা গরু-ভেড়া-ছাগলদের কৌতুহল উদ্রেক করে, নবপত্রিকা চললেন মন্ডপের দিকে। পথের ওপর ভীষণ মন খারাপ করে শুয়ে বসে থাকা নেড়িগুলো সচকিত হয়ে ছুটলো সামনে সামনে। বাগ্দীপাড়ার মুখে দুটি বৌ পথে জলের ঘটি রেখে উপুর হয়ে প্রণাম করলো কলাবউদের--- এই ক্ষণিকের বিরতিটুকু ছাড়া চতুর্দোলা ফিরে এলো তরতরিয়ে।পুজো শুরু হয়ে গেল।লেখকঃ ডঃ সুজন সরকারবর্ধমান।

অক্টোবর ১৪, ২০২১
নিবন্ধ

Durga Puja: বাজলো তোমার আলোর বেণু

বেলা এগারোটা। চেম্বার থেকে বেরিয়ে একটু হেঁটে যাচ্ছিলাম কাছেই। পথে রিক্সা -টোটো-গাড়ি -স্কুটার -বাইক মিলে সে এক হৈ হৈ কান্ড। কান ফাটানো হর্ন ..পথচারীর ক্যাঁচর ম্যাচর ..অ্যাম্বুলেন্সের ঢেউখেলানো আর্তনাদ ..হ্যান্ডমাইকে ইঁদুরমারা বিষ-বটতলার বই -দাদের মলম ....পথের সব গ্যাঞ্জাম সরীসৃপের মতো এপাশ ওপাশ কাটিয়ে এগোচ্ছি। পিঠে মাখামাখি হয়ে আছে মোলায়েম রোদ। ভারী মিঠে তার ছোঁয়া সারা গায়ে এক সুখানুভূতি ছড়িয়ে দিচ্ছে , ছোটবেলার মায়ের আদরের মতো। লহমায় মিলিয়ে যাচ্ছে চারপাশের সব কোলাহল। সকাল থেকে আজ নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা ... বাতাসে কেমন একটা পুজো পুজো গন্ধ, ভাদ্রের শুরু থেকেই যে গন্ধে মন উড়ু উড়ু বাঙালীর, শিলচর থেকে শিকাগো.. এডিলেড থেকে এডিনবরা....বাঙালী এক বিদঘুটে জাত, বছরের শুরুতে ক্যালেন্ডার পেয়েই সবার আগে যারা দেখে নেয় এবার পুজো কবে... যাদের অর্থনীতি জাগে বছরে একবারই, এই পুজোকে ঘিরে ... যাদের বার্ষিক দিনপঞ্জী দুভাগে ছড়ানো, পুজোর আগে আর পরে... যাদের মন উসখুস করতে শুরু করে যখনি শ্রাবনের ভরা নদীর কোলে হাসতে শুরু করে শুভ্র কাশের গুচ্ছ! ক্ষান্তবর্ষণ ভোরে পুজোর গন্ধ ভাসতে থাকে মৃদুমন্দ... সে সুবাস দিগদিগন্ত ছেয়ে ফেলে দেখতে দেখতে... যে দিকে চাই পুজো পুজো গন্ধে আকুল করে... চোখের সামনে যেন বদলে যায় মাঠ -ঘাট -ঘরগেরস্তালী... প্রেমেন মিত্তিরের ভাষায়--সব কিছু তার অন্যরকমমানুষ-মাটি-জল,চোখ দিয়ে যে দেখতে জানেতার কাছে কেবল!বছর তিরিশ আগে যখন আমাদের বাস শুরু হয়েছিল বর্ধমানের এই পাড়ায়, কাকডাকা ভোরে রোজ ঘুম ভাঙিয়ে যেত পথের এক গাইয়ে-- জাগো নগরবাসীমুখ করো হাসি হাসিজাগিয়া লও কৃষ্ণনাম রে..।কোনো দিন মুখ দেখি নি তার। আশ্বিনের গোড়ায় সে গান বদলে যেত আগমনীতে--- এবার আমার উমা এলে আর ঘর পাঠাব না বলে বলুক লোকে মন্দ...। আধো ঘুমে সে গান শুনে গলার কাছে কী একটা যেন আটকে যেত... মা আসছেন..পুজো আসছে!মা দুর্গা তো বাঙালীর ঘরের মেয়ে-- সারা বছর উড়নচন্ডী ভুলো স্বামীর ছন্নছাড়া সংসার দশ হাতে সামলে রাখা অসামান্যা, ছেলেপিলে বগলে নিয়ে কটা দিনের জন্য বাপের বাড়িতে হাঁফ ছাড়তে আসা ছাপোষা বউটি! সিংহবাহিনী দশপ্রহরণধারিনী তো নামেই, বাঙালীর কল্পনায় তো আজন্মকাল-- উমারে রাখিয়া বুকেচুমা দিয়া চাঁদমুখেগিরিরানী কেঁদে কেঁদে কয়মা তোরে বিদায় দিতেকাতর আতুর চিতেসদা ভয় কি জানি কী হয়!ভোরের হাওয়ায় আগমনীর সুরে যখন ভেসে আসে-- যাও যাও গিরি আনিতে গৌরী, উমা নাকি বড় কেঁদেছে / দেখেছি স্বপন নারদবচন মা মা বলে কেঁদেছে-- বাঙালীর ঘরে ঘরে মাঝবয়সিনী মায়েদের চোখের পাতা বুঝি আজো ভিজে আসে, পাশে শুয়ে ঘুমে কাদা আত্মজার অনাগত দিনের কথা ভেবে!বাঙালী হরপার্বতী পরিবারকে কোনদিনই সোনার সিংহাসনে হীরের গয়না পরিয়ে সাজিয়ে রাখে নিI আশুতোষ মহেশ্বরকে ভিখারী শিব বলে অনুযোগ করতে, বা সিদ্ধিদাতা বিনায়ককে নাদাপেটা গনশা বলে মস্করা করতে বাঙালীর বাধে নি কোনো দিনI আটপৌরে মলিন বাঙালী মা নির্দ্বিধায় উচ্চারণ করতে পারে-- যদি আসে মৃত্যুঞ্জয় / উমা নেবার কথা কয় / মায়ে ঝিয়ে করব ঝগড়া...মা দুর্গা তাই আমাদের এ খেলাঘরে ছড়িয়ে থাকেন অনুক্ষণ! তিনি আমাদের প্রানের দেবতা। মহালয়ার ভোরের আলোকধারায় যখন মেতে ওঠে ভুবন, বেজে ওঠে তাঁর আলোর বেণু.. অরুণবীনায় সে সুর বাজে.. অন্তরে সে সুর ছেয়ে যায়...বিশ্বকর্মাপুজোয় বিসর্জনের বাজনা মিলিয়ে যেতে না যেতেই বাঙালী শুনতে পায় ঢাকের বোল, আমাদের সবার ছোটবেলা মাখামাখি হয়ে আছে যে ঢ্যাম কুড় কুড় বাদ্যিতে। ভোরবেলা হাঁটতে বেরিয়ে দেখি উঠতি বয়সের গাছ পথের ধারে ছড়িয়ে রেখেছে একরাশ কমলাহৃদয় শুভ্র শেফালী। সে শিউলিগাছ আরেকটু লায়েক হলে তার গুঁড়ি নিঃশেষে ঢেকে যায় সাদা রোমের হাজারো শুঁয়োপোকায়। শহর ছাড়ালেই ক্ষেতের আলে - নদীর কোলে - পথের কার্নিশে ঢেউখেলানো কাশের সমুদ্র... ধানের ক্ষেতে রৌদ্রছায়ায় লুকোচুরির খেলা... ভ্রমর মধু ফেলে উড়ে বেড়ায় সেই আলোয় মেতে... শেষবর্ষার ভরন্ত মেঠো নদীর বুকে চখাচখির মেলা! বুকের মাঝে ছুটির পাখিটা ছটফট করে রোজ। খাঁচায় বন্দী, পালাতে পারে না তাই। পেশাগত জীবন যতই দানাপানি দিক না তাকে, এ পাখির তবু ছুটির আকাশ চাইই চাই! ছেলেবেলা ফিরে আসে যেন-- ওরে যাব না আজ ঘরে রে ভাই যাব না আজ ঘরে... আজ বিনা কাজে বাজিয়ে বাঁশি কাটবে সকল বেলা...! আর এই মায়াবী মন হারানো খেয়ালী হাওয়ার ভোরেই চিন্ময়ীকে মৃন্ময়ীরূপে আবাহন!যতই তিনি সৃষ্টিস্থিতিবিনাশানাং শক্তিরূপে সনাতনী হোন, আসলে বাঙালীর চোখে তিনি শুধুই গুনাশ্রয়ে গুনময়ী নারায়ণী মা-টি আমাদের-- আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে যাঁর মহিমা থাকে উদ্ভাসিত হয়ে, বিশ্বজগৎ মণিভূষণ হয়ে ঘিরে রাখে যাঁর চরণ! পরীক্ষার ফলপ্রকাশের দিন ... বিদেশমুখী বিমান মাটির মায়া কাটানোর মুহুর্তে... মধ্যরাতে শত্রুমনোভাবাপন্ন নেড়ি-সংকুল আঁধার পথ পাড়ি দেওয়ার সময়... এমনকি ভিড়বাসে ভয়ানক প্রকৃতির ডাকের সাথে লড়াই -এর মতো প্রাকৃত পটভূমিকায়ও আকুলভাবে যাঁকে ডাকা চলে!!জগজ্জননী মহামায়ার সাথে বাঙালীর সম্পর্ক কী বুঝবে তারা, যারা বানিজ্যিক বিজ্ঞাপনে মাল্টি-টাস্কিং আধুনিকা-র রূপকল্পে মা দুর্গার ছবি দেখে হুলুস্থুল বাধায়... যারা পুজোয় বাঙালীর আমিষভোজন দেখে নাক সিঁটকোয় আর ম্লেচ্ছ বর্বর ভাবে... যারা বিকাশ ভট্টাচার্যের দুর্গা সিরিজ দেখে নি... যাদের কোনদিন এইচ.এম.ভি. শারদঅর্ঘ্য ছিল না... ছিল না পুজোয় চাই নতুন জুতো... অনিঃশেষ শারদীয়া সাহিত্য... অতুলনীয় মন্ডপ-সৌকর্য... ডাকের সাজে ঝলমলে সাবেকী প্রতিমা... সাঁঝবাতির আলোয় সিঁদুরখেলা....মহালয়ার রাত পেরোলেই অখিল বিমানে তাঁর জয়গান... নিশার শেষে আগমনীর আলোয় শরতের আকাশবীনা গানের মালা বিলাবে চরাচর জুড়ে...আজি শংখে শংখে মঙ্গল গাওজননী এসেছে দ্বারে ... !লেখকঃ ডঃ সুজন সরকারবর্ধমান।

অক্টোবর ০৫, ২০২১

ট্রেন্ডিং

রাজ্য

চন্দননগরে একই পরিবারের ৩ সদস্যের রহস্যমৃত্যু, তদন্তে নেমেছে পুলিশ

চন্দননগর, ৩০ মে: হুগলির চন্দননগরে বৃহস্পতিবার সকালে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনার সাক্ষী থাকলো স্থানীয় বাসিন্দারা। একই পরিবারের তিন সদস্যের রহস্যজনক মৃত্যু ঘিরে ছড়িয়েছে ব্যাপক উত্তেজনা। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন পরিবারের কর্তা, তাঁর স্ত্রী এবং তাঁদের কিশোর পুত্র। সূত্রের খবর, এদিন সকালে চন্দননগরের শ্রীপল্লি এলাকার একটি বাড়ি থেকে তিনজনের নিথর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। স্থানীয়রা জানান, সকালবেলা দরজা না খোলায় সন্দেহ জাগে প্রতিবেশীদের। তারা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে তিনটি মৃতদেহ উদ্ধার করে।সূত্রের খবর, বুধবার ভোর ২টার দিকে চন্দননগর থানা কোলুপুকুর গড়েরধর এলাকায় তিন পরিবারের সদস্যের অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তারা প্রতিমা ঘোষ (৪৬) এবং তার মেয়ে পৌষালী ঘোষ (১৩) এর মৃতদেহ মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন, মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রতিমার স্বামী বাবলু ঘোষ (৬২) কে দড়ি দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। তদন্তের সময় পুলিশ জানতে পারে যে বাবলু একটি টিনের বাক্স তৈরির কারখানায় কাজ করত। তবে, কিছু সময়ের জন্য, সে টোটো (তিন চাকার গাড়ি) চালানো শুরু করে এবং অবশেষে তার বাড়িতেই একটি ছোট দোকান শুরু করে।প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, এটি হয় আত্মহত্যা, নয়তো পরিকল্পিত খুন। তবে ঘটনার প্রকৃত কারণ এখনো স্পষ্ট নয়। বাড়ির ভিতরে কোনোরকম লুটপাটের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। প্রতিবেশীদের অনেকেই জানিয়েছেন, পরিবারটি সদ্য আর্থিক সমস্যায় পড়েছিল এবং কিছুদিন ধরে মানসিক চাপের মধ্যে ছিল। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দেহগুলি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে এবং ঘটনার ফরেনসিক তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশ পরিবারের আত্মীয়-পরিজন ও প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে।চন্দননগর কমিশনারেটের এক উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিক জানান, আমরা সমস্ত দিক খতিয়ে দেখছিআত্মহত্যা, পারিবারিক কলহ, অথবা বাইরের কোনো দুষ্কৃতীর হাত। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। এই ঘটনায় গোটা এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

মে ৩০, ২০২৫
রাজ্য

আইসিকে কদর্য ভাষা অনুব্রতর, FIR, শেষমেশ ক্ষমা প্রার্থনা

তৃণমূল নেতা অনুব্রত মন্ডলের একটি অডিও ক্লিপ ভাইরাল হতেই রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় পড়ে যায়। সেই অডিওর শোনা যাচ্ছে, বীরভূম জেলা তৃণমূল কোর কমিটির অন্যতম সদস্য অনুব্রত মণ্ডল বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদারকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছেন। দুদিন আগে এই অডিও ক্লিপটি যে কোনও কারণেই ভাইরাল হয়ে যায়। তারপরেই জেলা পুলিশ সুপার আমনদীপ সিং, অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার বোলপুর রানা মুখোপাধ্যায় বৈঠক ডেকে আইসি লিটন হালদারকেও ডেকে পাঠান। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বোলপুর এসডিপিও রিকি আগরওয়াল সহ চার পুলিশ কর্তা। উল্লেখ্য, গতকালই অর্থাৎ বৃহস্পতিবার নাগরিক কমিটির ডাকে বোলপুর থানায় এক বিক্ষোভ কর্মসূচি নেওয়া হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন অনুব্রত মণ্ডলের অনুগামীরা। অভিযোগ, আইসি লিটন হালদার বিভিন্ন জনের কাছ থেকে তোলাবাজি অর্থ দাবি করেন। অনুব্রত মণ্ডলকেও, এ ব্যাপারে সোচ্চার হতে দেখা যায়। যদিও এ ব্যাপারে পুলিশের তরফে কোন বক্তব্য জনসমক্ষে আসেনি। অনুব্রতর কদর্য বক্তব্য সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পরই তীব্র নিন্দা হয় বিভিন্ন মহল থেকে। এমনকি বিজেপির রাজ্য শীর্ষস্থানীয় নেতৃত্ব শাসকদলকে আক্রমণ করার হাতিয়ার পেয়ে যায়। একইসঙ্গে তৃণমূল দল থেকে নিজস্ব হ্যান্ডেলে অনুব্রত মণ্ডলের ঘটনার নিন্দা করা হয়। বলা হয় যে, অনুব্রত মণ্ডল একজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যে অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন তার সঙ্গে আমাদের দল সম্পূর্ণ দ্বিমত প্রকাশ করছে। এবং এই মন্তব্যকে ও সমর্থন করছে না। পাশাপাশি, দল তাকে নির্দেশ দেয় যে আগামী চার ঘণ্টার মধ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা না চাইলে তার বিরুদ্ধে দল শোকজ নোটিশ জারি করবে। ইতিমধ্যে, পুলিশের তরফে একটি মুখবন্ধ খামে চিঠি এসে পৌঁছায় তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে। অন্যদিকে, বোলপুর থানায় বিএনএস এর ৭৫, ১৩২, ২২৪ ও ৩৫১ ধারায় অনুব্রতর বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়। পাশাপাশি, অডিও ক্লিপটি কিভাবে ভাইরাল হল তা নিয়ে তদন্ত করা হবে বলে জানান, বীরভূমের পুলিশ সুপার আমানদীপ সিং। অবমাননাকর মন্তব্যের তদন্ত শুক্রবার বোলপুর দলীয় কার্যালয়ে অনুব্রত মণ্ডল একটি ভিডিও বার্তায় সকলের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করে বলেন, যে নানুরের শিঙ্গিতে তার এক দলীয় কর্মীর পা ভেঙে গুড়ো করে দেওয়া হয় সে ব্যাপারে তিনি আইসিকে দেখার অনুরোধ করেন। অনুব্রত বলেন, যে নুরুল নামে সেই দলীয় কর্মী গুরুতর অবস্থায় আহত হন। তারপর সেখান থেকে তাকে ফোন করা হয়। রাত্রি দশটায় ঘুমের ওষুধ খেয়ে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। ফোনে ঘুম ভেঙে যাওয়ার পর, তিনি আইসিকে বলেন যে, ওই আহত ব্যক্তিকে বাঁচানোর জন্য আপাতত হাসপাতালে ভর্তি করুন। একইভাবে মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ ও আইসিকে অনুরোধ করেন। কিন্তু আইসি তাকে একটি খারাপ কথা বলেন। যেটা তিনি আর বলতে চাইছেন না। তার পক্ষে (অনুব্রতর) এ ধরনের ভাষা ব্যবহার করা উচিত হয়নি। তিনি ক্ষমা চাইছেন।

মে ৩০, ২০২৫
রাজ্য

বিধানসভা ভোটের দামামা বাজিয়ে দিলেন মোদী, শিক্ষা থেকে হিংসা উঠে এল ভাষণে

২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের দামামা বাজিয়ে দিয়ে গেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আলিপুরদুয়ারের জনসভায় কড়া ভাষায় আক্রমণ শানালেন তৃণমূল কংগ্রেসকে। এই সরকারকে উৎখাতের ডাক দিয়েছেন মোদী। পাশাপাশি তাঁর ভাষণে উঠে এসেছে মুর্শিদাবাদ, মালদার হিংসার কথা, রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা বরবাদ বলেও উল্লেখ করেছেন মোদী।বৃহস্পতিবার নরেন্দ্র মোদী বলেন, মুর্শিদাবাদ, মালদায় যা হল তা এখানকার সরকারের নির্মমতা। দাঙ্গায় গরিব মা-বোনেদের জীবনভরের পুঁজি লুঠ হয়ে গেল। তুষ্টিকরণের রাজনীতি চলছে, গুন্ডাদের খোলামেলা ছুট দিয়ে রেখেছে সরকার। সরকারে থাকা লোকজন, পার্টির লোকজন মানুষের ঘর চিহ্নিত করে জ্বালাচ্ছে, পুলিশ দাঁড়িয়ে তামাশা দেখছে। এখানে কী পরিস্থিতি চলছে সেটা কল্পনাও করতে পারছি না। সরকার এভাবে চালাতে হয়? গরিব মানুষের উপর অত্যাচার হলেও সরকারের ভ্রুক্ষেপ নেই। সব কিছুতেই এখানে আদালতকে হস্তক্ষেপ করতে হয়। বাংলার মানুষেরও আর তৃণমূলের সরকারের উপর ভরসা নেই। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ একাধিক সংকটে জেরবার বলেও দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী। একের পর এক ইস্যু তুলে ধরতে থাকেন নরেন্দ্র মোদী। এই ইস্যুতেও তৃণমূল পরিচালিত সরকারকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন মোদী। তাঁর কথায়, সংকটে জেরবার বাংলা। প্রথম সংকট, একদিকে হিংসা-অরাজকতা চলছে। দ্বিতীয়, মা-বোনেদের ওপর অত্যাচার চলছে। তৃতীয়ত, যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে ঘোরতর নিরাশা তৈরি হয়েছে, কর্মহীনতার যন্ত্রণায় ভুগছে যুবরা। চতুর্থত, বেপরোয়া দুর্নীতি চলছে। পঞ্চম সংকট হল, এই রাজ্যের গরিবের অধিকার ছিনিয়ে নিচ্ছে শাসকদলের রাজনীতি।এরই পাশাপাশি অপারেশন সিঁদুর (Operation Sindoor) প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিরা যা করেছে, সারা ভারতের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের লোকেদেরও তুমুল আক্রোশ ছিল। আপনাদের সেই আক্রোশ আমি ভালোই বুঝেছি। জঙ্গিরা আমাদের মা-বোনেদের সিঁদুর মোছানোর দুঃসাহস দেখিয়েছিল। আমাদের বীর সেনারা ওদের সিঁদুরের শক্তি কী সেটা বুঝিয়ে দিয়েছে। আমরা জঙ্গি ঘাটি ধ্বংস করেছি। পাকিস্তান এটা কল্পনাও করতে পারিনি। জঙ্গিদের ঠিকানা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এমন শিক্ষা পাবে পাকিস্তান কল্পনাও করেনি। সন্ত্রাসের লালন পালন করে পাকিস্তান। ১৯৪৭-এর পর থেকেই ভারতে সন্ত্রাস পাকিস্তানের। বাংলাদেশে পাকিস্তানের অত্যাচার ভোলবার নয়। তিনবার পাকিস্তানকে ঘরে ঢুকে মেরেছে ভারত।SSC-এর নিয়োগ দুর্নীতির জেরে এই রাজ্যের প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয়েছে। শাসকদল তৃণমূলের তাবড় নেতা-মন্ত্রী পাহাড়-প্রমাণ এই দুর্নীতিতে আষ্ঠেপৃষ্ঠে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ারের সভামঞ্চ থেকে রাজ্যের এই নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। শিক্ষাক্ষেত্রে এমন দুর্নীতি নিয়ে রাজ্যের শাসকদলকে বেনজির নিশানা করেছেন নমো।প্রধানমন্ত্রী এদিন বলেছেন, তৃণমূলের নেতারা এত বড় পাপ করেও নিজেদের ভুল মানতে নারাজ। হাজার-হাজার পরিবারকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলা হয়েছে। গরিব পরিবারের ছেলে-মেয়েদের অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের পুরো শিক্ষা ব্যবস্থা বরবাদ। শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করেও তৃণমূলের নেতারা মানতে নারাজ। বাংলায় হাজার-হাজার শিক্ষকের কেরিয়ার বরবাদ। এখানকার যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে ঘোরতর নিরাশা তৈরি হয়েছে। কর্মহীনতার যন্ত্রণায় ভুগছে যুবরা। বেপরোয়া দুর্নীতি নিয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে লাগাতার মানুষের বিশ্বাস কমছে।

মে ৩০, ২০২৫
রাজ্য

মেয়ের প্রথম জন্মদিনে রক্তদান শিবির! সাধুবাদ মালদা মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের

মেয়ের প্রথম বছরের জন্মদিনের মাধ্যমে মালদা মেডিকেল কলেজের ব্লাড ব্যাংকের রক্ত সংকট মেটানোর বার্তা নিয়ে এগিয়ে এলেন দাস পরিবার। বুধবার সকাল থেকেই বাড়ির একমাত্র মেয়ের প্রথম বছরের এই জন্মদিনকে ঘিরেই ধুমধাম ভাবে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে ইংরেজবাজার পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের পুরাটুলি এলাকার দাস পরিবার। বাড়ির সামনেই জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের ভ্রাম্যমান রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয় দাস পরিবারের পক্ষ থেকে। আর এই রক্তদান শিবিরের প্রথম রক্তদাতা হিসাবে ছোট্ট এক বছরের আদিক্সা দাসের বাবা দেবাশীষ দাস স্বেচ্ছায় রক্তদান দিয়ে কর্মসূচি সূচনা করেন। এদিন এই জন্মদিন উপলক্ষে বিকেল পর্যন্ত দেবাশীষবাবুর আত্মীয় পরিজন, বন্ধু বান্ধব মিলিয়ে প্রায় ৫০ জন স্বেচ্ছায় রক্তদান করেন। দেবাশীষবাবুর এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে মালদা মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ , স্বাস্থ্য দপ্তর এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।মালদা মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল ডাঃ পার্থপতিম মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এটি খুব ভালো উদ্যোগ। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, বিভিন্ন সরকারি কর্মচারী ফেডারেশন , নানান রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলি মাঝে মধ্যেই স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবিরের আয়োজন করছেন। এদিন ইংরেজবাজার পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের পুরাটুলি এলাকায় এক বছরের ছোট্ট আদিক্সা দাসের জন্মদিন উপলক্ষেই এই রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছিলেন তাঁর বাবা দেবাশীষ দাস। সঙ্গ দিয়েছিলেন দেবাশিষবাবুর স্ত্রী কোয়েল সাহা দাস। এদিন জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর এবং মালদা মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা নিয়ে ভ্রাম্যমান ব্লাড ডোনেশন ক্যাম্পের একটি বড় গাড়ি ছোট্ট মেয়ে আদিক্সা দাসের বাড়ির সামনে গিয়ে হাজির হয়। সেই ভ্রাম্যমান গাড়িতেই স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবিরের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।।স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় ব্যবসায়ী দেবাশিষবাবুর পুরাটুলি এলাকায় নিজস্ব বাড়ি রয়েছে। পরিবারের একমাত্র মেয়ে আদিক্সার জন্মদিনে এমন পরিকল্পনা অনেক আগে থেকে নিয়েছিলেন দেবাশিষবাবু এবং তার স্ত্রী কোয়েল সাহা দাস । আর সেটা কার্যত বাস্তবে করে দেখালেন। ব্যবসায়ী দেবাশিষ দাস বলেন, মেডিকেল কলেজে চিকিৎসারত রোগীর আত্মীয়েরা এক ইউনিট রক্তের জন্য কিভাবে ব্লাড ব্যাংকে ছোটাছুটি করছে। মাঝেমধ্যেই দেখি মেডিকেল কলেজের রক্তের সংকট রোগীদের হয়রানির মুখে পড়তে হচ্ছে। আমিও একসময় হয়রানির শিকার হয়েছিলাম। তাই এদিন মেয়ের জন্মদিনে এমন ভাবেই স্বেচ্ছায় রক্তদানের শিবির করেছি। আমার আত্মীয় পরিজন বন্ধু-বান্ধবরা অনেকেই এগিয়ে এসে স্বেচ্ছায় রক্তদান করেছেন। ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছবি দাস জানিয়েছেন, এটা খুব ভালো উদ্যোগ । আমার এলাকার দাস পরিবার তাদের বাড়ির একমাত্র মেয়ের প্রথম জন্মদিনে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছেন । তাদের এই কর্মসূচিকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। এভাবেই সকলকে এগিয়ে আসা উচিত।

মে ২৯, ২০২৫
খেলার দুনিয়া

বিশ্বের তারকা ফুটবলার ইয়ামালকে মনে আছে? বিশ্বের অন্যতম বড় ক্লাবে ১০ নম্বর জার্সির মালিক ১৭ বছরেই

মনে আছে লামিল ইয়ামালের কথা? গত বিশ্বকাপ ফুটবলে স্পেনের নাবালক তারকা ফুটবলার। জার্মানীর মাঠ কাঁপিয়ে দিয়েছিল এই ইয়ামাল। আগামী ২০৩১ পর্যন্ত ইয়ামাল লা লিগাতে বার্সেলোনার হয়েই খেলবেন। এই বয়সে মাল্টি মিলিয়নের চুক্তি হয়েছে বার্সেলোনার সঙ্গে ইমামালের। লা লিগাতে এই মরসুমে নিজে শুধু ১৮টি গোল করেননি, গোল করতে সহায়তা করেছেন আরও ১৩টি ক্ষেত্রে। বিপক্ষের ডিফেন্সে রীতিমতো ত্রাস সৃষ্টি করেন এই স্পেনের এই ফুটবলার। খ্যাতি পয়েছেন গত জার্মানী বিশ্বকাপে। স্পেনের দলে প্রয়োজনীয় ফুটবলার ছিলেন তিনি। জার্মানী শ্রম আইন অনুযায়ী ফাইন দিয়েও তাকে দলে রেখেছিল স্পেন। তার ফায়দাও পেয়েছিল তারা। এবার বার্সেলোনার সঙ্গে তার চুক্তি হয়েছে প্রতি মরসুমে তিনি পাবেন বেসিক হিসাবে ১৫ মিলিয়ন ইউরো, যা বোনাস নিয়ে ২০ মিলিয়নে দাঁড়াতে পারে। বার্সেলোনার হয়ে তিনি ইতিমধ্যে মোট ১০৬টি গোল করেছেন। মাত্র ১৭ বছরবয়েস ইয়ামাল যে অর্থ পাচ্ছেন তা যে কারও কাছে বড় স্বপ্ন। তা আগে কেউ পায়নি। তাছাড়া এই মরসুমে ইয়ামাল দলের ১০ নম্বর জার্সি পরবেন।

মে ২৯, ২০২৫
রাজ্য

মেমারিতে বাবা-মাকে খুন করে বনগাঁয় গিয়ে তান্ডব, গ্রেফতার গুণধর ছেলে, ধুন্ধুমার কাণ্ড

শুরু মেমারিতে, যার শেষ হল বনগাঁতে। গুনধর ইঞ্জিনিয়ার ছেলে বাবা-মাকে নৃশংস ভাবে খুন করে পালিয়েছিল বনগাঁয়। সেখানে গিয়ে এলোপাথারি ছুরি চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে জখম করেছে। তাকে জোর করে বের করার জন্য থানা আক্রমণ করেছে স্থানীয় ক্ষুব্ধ জনতা। পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে। ধুন্ধুমার কাণ্ড। বুধবার সকালে গলার নলি কাটা অবস্থায় বাড়ির সামনের রাস্তা থেকে উদ্ধার হয় বৃদ্ধ মা ও বাবার রক্তাত মৃতদেহ। মোস্তাফিজুর রহমান (৬৫) ও মমতাজ পারভীন (৫৫)। ঘটনাটি পূর্ব বর্ধমানের মেমারি পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাশিয়ারা মুক্তারবাগান এলাকায়। জোড়া খুনের খবর পেয়ে জেলার পুলিশ সুপার সায়ক দাস দলবল নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। তবে মৃত দম্পতির ছেলে বাড়িতে না থাকায় পুলিশের সন্দেহ বাড়তে থাকে। তবে এটা যে খুনের ঘটনা তা নিয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত ছিল পুলিশ। খুনের পর বৃদ্ধ দম্পতিকে ঘর থেকে টেনে হিঁচড়ে বাইরে বের করে আনা হয়েছিল। সেই কারণে গোটা নানা জায়গায় রক্তের দাগ দেখা গিয়েছে। রাতে দিকে এই ঘটনার আঁচ গিয়ে পড়ে সীমান্ত এলাকায় উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয়। জানা গিয়েছে, ওই দম্পতির ছেলে হুমায়ূন কবির বাইরে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতো। হুমায়ুনের মানসিক সমস্যা আছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন। তাছাড়া বাড়ির সিসিটিভির হার্ড ডিস্ক উধাও বলে জানা গিয়েছে। বৃদ্ধ দম্পতির দেহ ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা নমুনা সংগ্রহ করেছেন। এদিকে বুধবার সন্ধ্যায় অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তি বনগাঁ খান শরীফে ঢুকে বেশ কয়েকজনের ওপরে ছুরি নিয়ে আক্রমণ করে। এই ঘটনায় কয়েকজন আহত অবস্থায় বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ওই অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। বনগাঁ খান শরীফের সামনে কিছুক্ষণ অবস্থান করে সংখ্যালঘুরা। জানা গিয়েছে, একদল বনগাঁ থানায় এসে আসামিকে ছাড়ানোর জন্য চেষ্টা করে এবং বনগাঁ থানায় ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। পুলিশ লাঠিচার্জ করে এবং কয়েকজনকে আটক করেছে। ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছান বনগাঁর এসপি দীনেশ কুমার। পরে পুলিশ জানতে পারে ওই যুবক মেমারিতে বাবা-মাকে খুন করে বনগাঁয় এসে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে।বনগাঁ পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার সাংবাদিকদের জানান, আক্রমণকারী যুবকের নাম হুমায়ন কবির। বয়স ৩৫ বছর, বাড়ি বর্ধমানের মেমারি। আজ সকালে এই ব্যক্তি তার বাবা-মাকে খুন করে এখানে এসেছে। তারা ছুরির আঘাতে চার জন আহত হয়েছে। এদিকে থানা ভাঙচুরের ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আঘাত পেয়েছেন একজন কনস্টেবল ও একজন এএসআই। এদিকে রাতেই মেমারি থানার পুলিশ পৌঁছে গিয়েছে বনগাঁ থানায়।

মে ২৯, ২০২৫
রাজ্য

বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জের, যুবকের মাথা ফাটিয়ে, হাত কেটে দিল গৃহবধূ

বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চাওয়ায় যুবকের উপরে আক্রমণ ও তার বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ প্রতিবেশী গৃহবধূর বিরুদ্ধে। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বনগাঁয়। প্রতিবেশী গৃহবধূর সঙ্গে যুবকের চার বছরের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক। সেই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চাওয়ায় যুবকের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া, ব্লেড দিয়ে হাত কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক গৃহবধূর বিরুদ্ধে। শুধু যুবকের উপর হামলা করেই থামেনি প্রতিবেশী ওই গৃহবধূ। যুবকের পরিবারের অভিযোগ, ওই গৃহবধূ তাদের বাড়ির খাবারে বিষ মিশিয়ে দিয়েছে এবং বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগণার বনগাঁ থানার সভাইপুর এলাকায়। সোমবার বনগাঁ থানায় অভিযোগ দায়ের করে যুবক। যুবকের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত গৃহবধূকে গ্রেফতার করেছে বনগাঁ থানার পুলিশ। অভিযুক্ত গৃহবধূকে মঙ্গলবার বনগাঁ মহকুমা আদালতে পেশ করে পুলিশ।

মে ২৮, ২০২৫
রাজ্য

গভীর রাতে বোমাবাজি ও গুলি হরিহরপাড়ায়, জখম এক, গ্রেফতার ৪

সোমবার গভীর রাতে মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া থানার অন্তর্গত নাজিরপুর পূর্বপাড়া এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। অভিযোগ, ওই রাতে একদল দুষ্কৃতী এলাকায় বোমাবাজি চালানোর পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দা নাজিমউদ্দিন শেখ ওরফে কালুকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে।গুলিতে তাঁর পায়ে গুরুতর আঘাত লাগে। স্থানীয়রা তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে হরিহরপাড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যায়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ ও পরে কলকাতার একটি হাসপাতালে রেফার করা হয়।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জমি দখলকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে বিবাদ চলছিল। সেই বিবাদের জেরেই এই হামলা বলে প্রাথমিক অনুমান। উল্লেখযোগ্য যে, দুই পক্ষই শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত বলে এলাকাবাসীর দাবি।এই ঘটনায় হরিহরপাড়া থানার পুলিশ ইতিমধ্যেই চারজনকে গ্রেফতার করেছে। এলাকায় উত্তেজনা থাকলেও বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তদন্ত চলছে।হরিহরপাড়া থানার নাজিরপুর পূর্বপাড়া এলাকায় বোমাবাজি ও গুলি চালানোর ঘটনায় আগ্নেয়াস্ত্র গুলি উদ্ধারসহ চার জনকে গ্রেফতার করে বহরমপুর জেলা জজ আদালতে পাঠানো হলো। ধৃতদের তিনজনের বাড়ি নাজিরপুর পূর্বপাড়া এলাকায় একজনের বাড়ি চোয়া এলাকায়

মে ২৮, ২০২৫

Ads

You May Like

Gallery

265-year-old "Mukhopadhyay House" in Bhavanandpur, Kalnar, played vermilion on Dasami during Durga Puja
BJP candidate Locket Chatterjee campaigned on the banks of the Ganges from Chandannagar Ranighat to Triveni Ghat wishing New Year.
A living depiction of history with a touch of color, everyone is enthralled by the initiative of the Eastern Railway
Sucharita Biswas actress and model on Durga Puja
Lord Kalabau came up in palanquin; Navapatrika walked towards the mandap - the puja started
On Sunday, the 'Hilsa festival' is celebrated in the city with great joy.
Check out who has joined Mamata's new cabinet
Take a look at the list of recipients at the Bangabibhushan award ceremony
If you are grassroots, you will get ration for free. Lakshmi Bhandar, Kanyashree, Swastha Sathi, Krishakbandhu, Oikyashree, Sabujsathi — you will get all.

Categories

  • কলকাতা
  • রাজ্য
  • দেশ
  • বিদেশ
  • রাজনীতি
  • খেলার দুনিয়া
  • বিনোদুনিয়া
  • সম্পাদকীয়
  • নিবন্ধ
  • ভ্রমণ
  • রাশিফল
  • টুকিটাকি
  • চিত্রহার
  • বিবিধ
  • ভিডিও

Company

  • About Us
  • Advertise
  • Privacy
  • Terms of Use
  • Contact Us
Copyright © 2025 Janatar Katha News Portal