গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সোমবার গভীর রাতে বর্ধমানের গুডশেড এলাকা থেকে অস্ত্রসহ এক দুস্কৃতিকে গ্রেফতার করলো বর্ধমান থানার পুলিশ। ধৃতের নাম আলী হোসেন, সে অসমের বাসিন্দা। ধৃতের কাছ থেকে একটি রিভালবার ও এক রাউণ্ড গুলি উদ্ধার করে পুলিশ।পুলিশ সূত্রে জানা গেছে ধৃত আলী হোসেন অস্ত্র বিক্রির উদ্দেশ্যে বর্ধমানে এসেছিল। মঙ্গলবার ধৃতকে বর্ধমান আদালতে তোলা হয়। সাত দিনের পুলিশি হেফাজত চেয়ে আদালতে আবেদন করেছে বর্ধমান থানার পুলিশ।
শাসকদলের গোষ্ঠী কোন্দলের শিকেয় নাগরিক পরিষেবা। তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলর অথচ তাকেই বাধা। তাকেই দলীয় কার্যালয়ে বসতে না দেওয়ার অভিযোগ পুরমাতার। তিনি যাতে কার্যালয়ের ভিতরে বসতে না পারেন তারজন্য কার্যালয়ের মেন গেটে পড়লো তালা। অগত্যা বাধ্য হয়েই কার্যালয়ের সামনেই রাস্তার আলোতে চেয়ার টেবিল পেতে ওয়ার্ডের নাগরিকদের পরিষেবা দিলেন কাউন্সিলর। রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় বর্ধমান পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কালনাগেট ভদ্রপল্লীর এই ঘটনায় শহরে চাঞ্চল্য ছড়ায়।৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিমরন বাল্মিকীর অভিযোগ,প্রতিদিনই অফিস খোলা থাকে, তাস খেলা হয়। তাদের কে আমি তাস খেলা বন্ধ করতে বলেছিলাম, এসব নিয়ে প্রতিবাদ করেছিলাম, তাই দলীয় কার্যালয় বন্ধ করে রেখেছে। নাম না করে দলীয় কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধেই তিনি ক্ষোভ উগড়ে দেন।এলাকার তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী বাবলু ঘোষ বলেন, প্রতিদিনই সন্ধ্যায় পার্টি অফিস খোলা হয়। শনিবারও খোলা হয়েছিল। আমি সকালে চাবি চাইলে বলা হয় চাবি নেই। বিজেপি বর্ধমান জেলা কমিটির মুখপাত্র সৌম্যরাজ ব্যানার্জী বলেন, পুরোটাই টাকার খেলা। মূলত তোলাবাজি নিয়ে ওয়ার্ডের স্বঘোষিত তৃণমূল নেতা শিবশংকর ঘোষের সঙ্গে কাউন্সিলরের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এসব হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।
তিনি কুখ্যাত দুস্কৃতিকে গ্রেপ্তার করে লক্ষাধিক টাকা মূলের বোমাইল ফোন ও ইলেকট্রনিক্স সরঞ্জাম উদ্ধার করলো পুলিশ। বুধবার বিকাল থেকে বৃহস্পতিবার ভোররাত পর্যন্ত পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার পুলিশ হুগলী জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় টানা অভিযান চালায়। সেই অভিযানেই ধরা পড়ে দুস্কৃতিরা। পুলিশ জানিয়েছে ,ধৃতদের নাম পিযুশ হালদার, মৃত্যুঞ্জয় শা ওরফে মনি ও মানু সাঁতরা ওরফে বিজয়। এদের মধ্যে পিযুশ জামালপুর থানার কলুপুকুর গ্রামের বাসিন্দা।বাকি দুই ধৃতর মধ্যে মত্যুঞ্জয় হুগলী জেলার শ্রীরামপুর এবং মানু হুগলীর গুড়াপ থানা এলাকার বাসিন্দা । বৃহস্পতিবার তিন দুস্কৃতিকে বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়। আরো চোরাই সামগ্রী উদ্ধার ও চক্রের বাকিদের হদিশ পেতে পুলিশ ধৃতদের ১০ দিন নিজেদের হেপাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানায়। বর্ধমান দক্ষিণ মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সুপ্রভাত চক্রবর্তী জানিয়েছেন, গত ২৩ নভেম্বর জৌগ্রামের আমড়ার মোড়ে একটি দোকানের পিছনের দিকে তালা ভেঙে চুরি হয়।তারপরই পুলিশ টেকনোলজি ও সোর্স কাজে লাগিয়ে দুস্কৃতির নাগাল পায়।
কয়েকদিন আগেই মেমারি-২ এলাকায় জনসংযোগ র্যালি থেকে রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী কাটমানি তোলার ভয়ঙ্কর অভিযোগ তুলেছিলেন। তিনি কাউকে কাটমানি তুলতে দেবেন না বলেও জানিয়েছিলেন। তিনি সেদিন বলেছিলেন চাঁদা তুলে খিচুড়ি খাব, তা-ও কাউকে কাটমানি খেতে দেব না। মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর বিরুদ্ধে এবার বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন মেমারি ২ ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি মোহাম্মদ ইসমাইল। তিনি বুধবার বলেন, মন্ত্রী সিপিএম ও বিজেপির লোকদের নিয়ে গ্রাম দখলে রাজনীতি করতে নেমেছেন। যারা দুর্দিনে মার খেয়ে পার্টি করেছিল তাদেরকে তিনি সরিয়ে দিতে চাইছেন। দলকে তিনি চ্যালেঞ্জ ছুড়ছেন। দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্যই তিনি ময়দানে নেমেছেন। প্রসঙ্গত, বুধবার মেমারি-২ ব্লকে রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুলা চৌধুরী রোড শো করেছেন। বক্তব্য রাখতে গিয়ে কাটমানি ইস্যুতে তিনি দলেরই একাংশের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন। দলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি পাল্টা তোপ দেগে বলেন, চোরের মায়ের বড় গলা
নন্দকুমারে সমবায় নির্বাচনে বাম-বিজেপি জোট ধরাশায়ী করেছে তৃণমূল কংগ্রেসকে। তারপরই বিজেপির সাংসদ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বিরোধীদের সার্বিক জোটের কথা বলেছেন। তাঁর বক্তব্য, প্রতিটি জায়গায় জোট হবে। সবাই মিলে একসঙ্গে তৃণমূলকে হারাতে জোট বাধবে। যে জিতবে সেই প্রার্থীকেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোট দেবে মানুষ। তৃণমূলের বিক্ষুব্ধদের এই জোটে আসতে আবেদন জানিয়েছে সৌমিত্র। এদিকে কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক হুঁশিয়ারি করেছেন বাম-বিজেপি জোটকে। তাই নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।একটি ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গিয়েছে মদন মিত্র বলছেন, এখানে বিজেপি-সিপিএম মনে করে এটাকেও নন্দকুমার বানাবো। এখানে সব খবর পাচ্ছি। কারা ভিতরে ঘোঁটবাজি করছে, নজর রাখছি। আস-যাওয়ার পথে সাবধানে থাকবেন। রাস্তায় খানা খন্দ আছে, বাম্পার আছে কখন কোথায় টপকে যাবেন তখন নিজেদের বুঝতে অসুবিধা হবে। মদন বলেছেন, তৃণমূল কংগ্রেসের ভিতরে থেকে বিজেপির দালালি করেন। বাইরে থেকে গায়ে কালি মেখে নোংরামি করে তৃণমূলের বদনাম করার চেষ্টা করেন। তার ডোজ কী করে দিতে হয় তা তৃণমূলের কর্মীরা ভাল করে জানে। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর বক্তব্যে বিতর্ক শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহল। বিজেপি সাংসদ সৌমিত্রর কথায়, কিভাবে তৃণমূল নেতারা রাস্তায় হোচোট খাচ্ছেন তা সবাই দেখতে পাচ্ছেন। রাস্তায় হোচোট খেতে খেতে পার্থ জেলে, অনুব্রত জেলে।
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে শুক্রবার ভোরে লক্ষ্মীপুর মাঠ এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে সুনীতা সাউ ওরফে লেংড়ি নামে এক মহিলাকে গ্রেফতার করে। ধৃতের কাছ থেকে বেশ কিছু মাদক দ্রব্য বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সুনীতা সাউয়ের ছেলেকে বছর খানেক আগে মাদক দ্রব্য রাখা ও বিক্রির অপরাধে গ্রেফতার করেছিল বর্ধমান থানার পুলিশ।ছেলে গ্রেফতার হওয়ার পর মা সুনীতা সাউ আবার ঐ অবৈধ ব্যবসা চালাচ্ছিল বলে পুলিশের কাছে খবর ছিল। আজ ভোরে এ এস আই বন্দনা মোদকের নেতৃত্বে তল্লাশি চালায় পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় সুনীতাকে। আজ তাকে জেলা আদালতে পেশ করা হয়।
বিদ্যুৎ দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ার সহ সমস্ত চাকরিতে ভিন রাজ্যের কর্মীতে ভরে যাচ্ছিল, বঞ্চিত হচ্ছিল বাঙালি ছেলেমেয়েরা। বাংলা পক্ষের দাবী, এমনও দেখা যাচ্ছিলো চাকরি পাওয়া ৪১ জন ইঞ্জিনিয়ারের ৩৪ জন ছিল বাইরের রাজ্যের। কিন্তু অন্য রাজ্যে বিদ্যুৎ দপ্তরে বাঙালি চাকরি পায় না, কারণ সেই রাজ্যের স্থানীয় ভাষার পেপার বাধ্যতামূলক ও ডোমিসাইল আছে। ২০১৯ থেকে বাংলা পক্ষ লাগাতার আন্দোলন শুরু করে বিদ্যুৎ দপ্তরের হেডকোয়ার্টার বিদ্যুৎ ভবনে। বারবার ডেপুটেশন, বিক্ষোভ চলতে থাকে। তাঁরা বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সাথে বারংবার সাক্ষাৎ করে আসল চিত্রটা বোঝানোর চেষ্টা করেন৷ বাকি রাজ্য কি ভাবে নিয়োগ করে তাঁর বিস্তারিত নিয়ম ডকুমেন্ট আকারে জমা করা হয় বিদ্যুৎ মন্ত্রীর কাছে। সেই আন্দোলনের ফলে এর আগেই বিদ্যুৎ বিভাগের চাকরিতে বাংলা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক হয়েছিল। সেখানেই বাংলা পক্ষ থেমে থাকেনি। তাঁরা বাঙালি ইঞ্জিনিয়ারদের কথা দিয়েছিল, এর থেকেও বড় সুখবর তাঁরা দেবে বলে। বৃহস্পতিবার এলো সেই সুখবর। বিদ্যুৎ দপ্তরের কোম্পানী WBSETCL এর চাকরিতে ডোমিসাইল চালু করার নোটিফিকেশন জারী করা হয়। বাঙালি ছেলেমেয়েদের চাকরি ও কাজের স্বার্থে বাংলা পক্ষ নিরলস পরিশ্রম করে চলেছে। বাংলার মাটিতে যাতে কোনো বাঙালি ছেলেমেয়ে বঞ্চিত না হয়, সেজন্যই এই সংগঠন তৈরি বলে তাঁরা মনে করেন। শুধু বাঙালি না, প্রতিটা ভূমিসন্তানের চাকরি ও কাজে অধিকারের জন্য তাঁরা লড়াই করছে বলে বাংলা পক্ষের দাবী।বাংলা পক্ষের শীর্ষ পারিষদ কৌশিক মাইতি জনতার কথা কে জানান, বাংলার ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে এই সিদ্ধান্তের জন্য তাঁরা বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে ধন্যবাদ জ্ঞপন করেন। তাঁরা ধন্যবাদ জানান বাংলার সরকারকে। আগামীতে বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থা WBSEDCL এও চাকরিতে ডোমিসাইল চালু হবে, সেই দাবিতেই লড়াই করছে বাংলা পক্ষ। আশা করি আগামীতে WBSEDCL সহ সব রাজ্য সরকারি দপ্তরে চাকরির পরীক্ষা বাংলা ভাষার পেপার বাধ্যতামূলক হবে এবং ডোমিসাইল চালু হবে বল তাঁদের আশা।
মালদহের গাজলের মৃতের বাড়িতে এসে রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। এসসি কমিশনের চেয়ারম্যানের হুসিয়ারী ডিএম এম এসপিকে তলব করা হবে ব্যবস্তা নেওয়া হবে।গাজোলে মৃত বিজেপি কর্মীর বাড়িতে এলেন জাতীয় এসসি কমিশনের ভাইস চেয়ারপারসন অরুন হালদার। বুধবার রহস্য মৃত্যু হয় গাজরের বহিরগাছি এলাকার বাসিন্দা ধনঞ্জয় সরকারের। এই ঘটনায় বহিরগাছি দুই নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয় বিজেপি কর্মীর পরিবারের তরফে। আজ সকালে ওই বিজেপি কর্মীর বাড়িতে আসেন জাতীয় এসসি কমিশনের ভাইস চেয়ারপারসন অরুণ হালদার। কথা বলেন পরিবারের সাথে। এরপর গাজল বিডিও অফিসে বিডিও এবং পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তাদের সাথে বৈঠক করেন তিনি। যদিও পরিবারের দাবি প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আমরা সিবিআই তদন্তের দাবি করছি।ধনঞ্জয় সরকারের বাড়িতে গিয়ে অরুন হালদার তাদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষন কথা বলেন। তাদের অভিযোগের পর কেন এখনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এরপর তিনি সেখান থেকে গাজলের বিডিও অফিসে আসেন। সেখানে ডিএম, এসপি-কে তলব করলেও তাঁরা আসেন নি। তিনি বলেন, তাঁরা না আসায় চরম অপমানিত হয়েছি। আমাকে বিডিও সঙ্গে কথা বলতে বলা হয়। তাঁরা কেন পরিবারের সাথে কথা বলেনি সোজন্য সাক্ষাৎ করেছি।এসসি কমিশনের ভাইস ভাইস চেয়ারপারসন অরুণ হালদার সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, ওই পরিবার বিচার পাবে। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি। কিন্তু মালদায় এসে চূড়ান্ত অসৌজন্যমূলক ব্যবহার পেলাম। ডিএম এসপি দেখা পর্যন্ত করতে আসলেন না। ডিএম এসপিকে তলব করব। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে তিনি সেদিন পরিষ্কার ভাষায় বলেন, রাজনীতি করতে আমি এখানে আসিনি।
এবারে সাংসদ নিখোঁজের পোস্টার পড়ল বর্ধমানে। বিজেপি সাংসদ এস এস আহলুয়ালিয়া নিখোঁজ এই শিরোনাম দিয়ে পোস্টার পড়েছে অনাময় হাসপাতালের এলাকার আশেপাশে।এলাকার মানুষ জানিয়েছেন ; আজ সকালে তারা দেখেন কে বা কারা ওই পোস্টার লাগিয়ে গেছে।এ নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বর্ধমানে।এমনিতেই সাংসদ নির্বাচিত হবার পর থেকেই তাকে এলাকায় পাওয়া যায় না এই অভিযোগ রয়েছে।কোনো কর্মসূচিতেও তাকে তেমন দেখা যায়নি এই আড়াই বছরের বেশি সময়কালে। এমনকি দীর্ঘ কোভিড সংক্রমণের সময়ে বা কোনো বিপর্যয়ের পরে তাকে দেখা যায়নি বলেও অভিযোগ। বিধানসভার ভোটে বিজেপি হারার পরে বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষ চলাকালীন কর্মীরা তাকে পাননি বলেও দলের অভ্যন্তরে ক্ষোভ রয়েছে।যদিও বিজেপি যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক সুধীরঞ্জন কুমার সাউ জানাচ্ছেন ; এটা নির্ঘাত তৃণমূল কংগ্রেসের কাজ। এটা মিথ্যা প্রচার।উনি এলাকায় নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন। নানা সমস্যায় পাশে দাঁড়ান। এমনকি তৃণমূল কংগ্রেসের বহু কর্মী ওনার দ্বারা উপকৃত। আর সাংসদ হিসেবে নানা কাজের জন্য ওনাকে দিল্লি থাকতেই হবে। এর সঙ্গে তিনি একথাও বলেন; এটা সিপিএমের কাজও হতে পারে।এদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস জানান ; এটা নতুন কিছু নয়। যেখানেই উনি জেতেন ; মানুষ তাকে পায়না। এটা মানুষের ক্ষোভ। সাধারণ মানুষ হয়তো ক্ষোভপ্রকাশ করে এই পোস্টার দিয়েছেন। ওদের কর্মীরাই ওকে নানা সময়ে পাননি। তা নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে ওদের দলেই। তারাও পোস্টার দিয়ে থাকতে পারেন। এসব কাজে তৃণমূল কংগ্রেসের কেউ যুক্ত থাকেন না।
আসানসোলের পর এবার বর্ধমানে পোস্টার। তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলরের সন্ধান চেয়ে পোষ্টার পড়লো বর্ধমান শহরে। শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর চায়না কুমারীর নামে পোষ্টার ঘিরে চাঞ্চল ছড়ালো লক্ষ্মীপুর মাঠ এলাকায়।বর্ধমান পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর চায়না কুমারী। রবিবার এই ওয়ার্ডের বিভিন্ন জায়গায় চায়না কুমারীর সন্ধান চাই বলে একাধিক পোষ্টার দেখতে পাওয়া যায়। এই পোষ্টার ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। তৃণমূলের অভিযোগ বিরোধীরা তৃণমূল কংগ্রেসকে বদনাম করার জন্য এই ধরনের পোষ্টার লাগিয়েছে। জেলা তৃণমুল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস জানান, ওই ওয়ার্ডে প্রতিনিয়ত উন্নয়নের কাজ হচ্ছে। ওয়ার্ডে কাউন্সিলর থাকলেও সামগ্রিক উন্নয়নের দ্বায়িত্ব পৌরসভা নেয়। কাউন্সিলর কোথাও বেরাতে গিয়ে থাকতে পারে। তার জন্য তার নামে নিখোঁজ পোষ্টার এটা বিরোধীদের কাজ। সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন তাই তৃণমূলকে বদনাম করার জন্য এটা বিরোধীরা করছে বলে দাবী করেন প্রসেনজিৎ বাবু। অপরদিকে বিজেপির দাবী এটা তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। বিজেপি নেতা সুধীর রঞ্জন সাউ জানান, গত কয়েকদিন ধরে তৃণমূলে পিসি ভাইপোর গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্ব সারা রাজ্য দেখছে। এই লড়াইটা এখন ওয়ার্ড স্তরে চলে এসেছে। বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা বিজেপির কালচার নয়। কিছু তৃণমূল নেতা করেকম্মে খেতে না পারার জন্যই তাদের মধ্যে এই কাদা ছোড়াছুড়ি। এটা তারই ফল। এবিষয়ে কাউন্সিলর চায়না কুমারী টেলিফোনে জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে কে বা কারা এটা করেছে জানিনা।বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। খোঁজ না নিয়ে কোন মন্তব্য করবো না।
সাংসদ সৌমিত্র খাঁকে নিয়ে সরব হলেন তার প্রাক্তন স্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী সুজাতা মণ্ডল। রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় বর্ধমানের মেহেদী বাগানে একটি কালী পুজোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল নেত্রী সুজাতা মণ্ডল। তিনি বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ তথা তথা তার প্রাক্তন স্বামীকে মস্তিষ্ক বিকৃত হয়েছে বলে কটাক্ষ করেন।তিনি বলেন, উনি তো কোথাও গুরুত্ব পান না। উনি যখন যে দলে থাকেন সেই দলকেই পাগল করে মারেন। তিনি যখন তৃণমূল কংগ্রেসে ছিলেন তখন তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে উল্টো পাল্টা কথা বলেছেন। এখন তিনি যে দলে আছেন সেই দলের বিরুদ্ধে বলছেন। নিশ্চয় গুরুত্ব না পাবার মত কিছু করেছেন। তবে ওই দলে কদিন থাকবে তা নিয়েও তিনি সন্দিহান প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, রাজনীতি করতে আসা মানে পাবার জায়গা নয়। পদ চাই তা নয়।মানুষের জন্য কাজ করা।
বুধবার বর্ধমান সাংগঠনিক জেলার বিজয়া সন্মিলনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি রাজ্য সম্পাদক সুকান্ত মজুমদার। কয়েকদিন আগে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র ও পূর্ব-বর্ধমান জেলা পরিষদের সহ সভাপতি দেবু টুডু বিজেপি নেতাদের ল্যাম্পপোস্টে বেঁধে রাখার নিদান দিয়েছিলেন। সুকান্ত মজুমদার তাঁর বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন যে সমস্ত নেতাদের স্নায়ুতন্ত্র এত দুর্বল যে কে দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন তা বুঝতে পারছেন না, সে দলের না থাকাই ভাল। তিনি তৃণমূলের সাংসদ সৌগত রায়কে কটাক্ষ করে বলেন, আগেকার দিনে যাত্রাপালায় একজন বিবেক থাকত। নীতিকথা শুনিয়ে যেত এটাও সে রকম। তোয়ালে মুড়ে টাকা না নিলেই হল।তিনি সৌমিত্র খানের প্রসঙ্গে বলেন,পঞ্চায়েতে তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। আমাদের দলে যাকে দায়িত্ব দেওয়া হয় তার সাথে আলোচনা হয় না। আমাকে সভাপতি করার আগেও হয়নি। তিনি আরও বলেন,অনন্ত মহারাজ রাজনৈতিক নেতা নন। তার কাছে কেউ যেতে পারেনমমিনপুরের প্রস্নগ টেনে বলেন, রাজ্যের আদালত নির্দেশ দিয়েছে। এন আই এ তদন্ত করছে। যারা অ্যারেস্ট হবার যোগ্য অ্যারেস্ট হবে। তিনি মল্লিকার্জুনকে কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান। সেই প্রসঙ্গে বলেন, মল্লিকার্জুন কংগ্রেস সভাপতি হলেন। এমন একটা জাহাজে উনি ক্যাপ্টেন হলেন যেটা থেকে সবাই পালাচ্ছে। তবে মোদীজি আবার প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন, সেই শপথ গ্রহণ সভায় বিরধী নেতা হিসাবে তাঁকে স্বাগত।সুকান্ত মাজ্যমদার আজ বলেন, পুলিশ ছাড়া তৃণমূল কংগ্রেসের কোনো অস্তিত্ব নেই। পুলিশ না থাকলে উবে যাবে। আজ শিলিগুড়ির কাওয়াখালী গ্রাউন্ডে উত্তরের বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন সিঙ্গুর থেকে টাটাকে সিপিএম তাড়িয়েছে, সেই প্রসঙ্গে সুকান্ত বলেন, উনি তো মাঝে মাঝেই মিথ্যে কথা বলেন। এটা নতুন কিছু নয়।
শহর তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে বিজয়া সম্মেলনে গড় হাজির পূর্ব বর্ধমানের মেমারী শহরের একাধিক নেতৃত্ব। শহর তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতির ইঙ্গিত পূর্ণ তির্যক মন্তব্যে প্রকাশ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠী কোন্দল।মেমারী শহর তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠান হলেও মেমারি পৌরসভার একাধিক নেতৃত্বর অনুপস্থিতি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক জল্পনা। এমন কি অনুপস্থিত ছিলেন মেমারী পৌরসভার পৌর প্রধান স্বপন বিষয়ী ও উপ পৌরপ্রাধান সুপ্রীয় সামন্ত।এ বিষয়ে মেমারি শহর তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি স্বপন ঘোষালের অভিযোগ, ২০২১ সালে যারা বিজেপি জিতবে বলে উল্লাস করেছিল, তারা আজকে অনুপস্থিত আছে। ২১ সালে যারা সিপিএম এবং বিজেপির সাথে টক্কর লাগিয়ে লড়াই করেছিল তারা সবাই আছে।কার্ডে চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যান এর নাম নেই। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন এটা সাংগঠনিক ব্যাপার, এখানে চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যান নাম থাকার কোনো ব্যাপার নেই। পুরসভার কোন অনুষ্ঠান হলে অবশ্যই চেয়ারম্যান-ভাইস-চেয়ারম্যানের নাম থাকত। তিনি আরো বলেন, তৃণমূলের এই সম্মেলনকে আটকাবার জন্য আজকে যারা আসেনি তারা রাস্তায় রাস্তায় ব্যারিকেড করেছে। সিপিএমের আমলে যেমন তৃণমূল কংগ্রেস এবং কংগ্রেস কে ভোট দিতে যেমন বাধা দেওয়া হতো, আটকে দেওয়া হতো, ঠিক তেমনি ভাবে একটি সম্মেলনে না আসার জন্য আমাদের কর্মীদেরকে ভয় দেখানো হয়েছে। যারা অনুপস্থিত তারাই ভয় দেখিয়েছে। তবে যারা আটকাচ্ছে তারা তৃণমূল কিনা জানি না। যারা বিজেপির সাথে আঁতাত করে ২১ সালে বিধায়ককে হারানোর চেষ্টা করেছিলেন তারাই আজকে ব্যারিকেড করেছে।যদিও এই বিষয়ে মেমরি পৌরসভার পৌর প্রধান ও উপ-পৌরপ্রধান কোন কোন প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। তবে জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, আমি একটু দেরিতে পৌঁছেছি এখানে, অনুপস্থিতির বিষয়টি দেখতে পাচ্ছি তবে কারণ কি এখনও জানি না, বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ খবর নেওয়া হবে।গোটা বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস তোলাবাজদের দল। কোন নেতার সাথে থাকলে বেশি ভাগবাটোয়ারা পাওয়া যাবে সেই নিয়ে তৃণমূলের মধ্যে কোন্দল আছে। সেকারণে সব নেতারা একসাথে থাকতে পারে না।শহর তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে মেমারীর কৃষ্টি প্রেক্ষা গৃহে মঙ্গলবার বিকেলে বিজয়া সম্মেলন ও দলীয় প্রবীণ নেতৃত্বদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা তথা বিধায়ক সোহম চক্রবর্তী, মেমারীর বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য, জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। তবে মেমারী পৌরসভার ১৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২জন কাউন্সিলর থাকলে ও গড়হাজির ছিলেন বাকি ১৪ জন কাউন্সিলর।
কুড়মি সম্প্রদায়কে এসটি করার চেষ্টার প্রতিবাদর জানিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে বর্ধমান শহরের কার্জনগেট চত্ত্বরে বিক্ষোভ দেখাল আদিবাসী কল্যাণ সমিতি । সমিতির অভিযোগ, এসটি হওয়ার নির্ধারিত বৈশিষ্ট্য না থাকা সত্ত্বেও অবৈধভাবে, অনৈতিকভাবে কুড়মী সম্প্রদায়কে এসটি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়াস চালানো হচ্ছে। তার বিরুদ্ধেই এই প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ। কুড়মি সম্প্রদায়কে এসটি করা হলে রাজ্যে আগুন জ্বলবে বলে হুঁশিয়ারি দেন আন্দোলনকারীরা। প্রয়োজনে রেল রোখা থেকে শুরু করে বৃহত্তর আন্দোলন করা হবে বলে জানালেন তারা, এবং আগামী লোকসভা ভোটে ভোটবাক্সের মধ্যে দিয়েও এর প্রতিবাদ হবে বলে জানান তারা। এদিন বিক্ষোভ শেষে জেলাশাসকের কাছে ডেপুটেশন দেয় আন্দোলনকারীরা।
ইডি, সিবিআইয়ের তদন্ত থেকে বাঁচতে অভিষেক বন্দোপাধ্যায় ইউএসএ পালিয়ে গেছেন বলে মন্তব্য করলেন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ।রবিবার দুপুরে বাঁকুড়া থেকে কলকাতা যাবার পথে ক্ষনিকের জন্য বর্ধমান সদর বিজেপি কার্যালয়ে আসেন সৌমিত্র খাঁ। এখানে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানান, সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি এক চোখের ছবি ঘুরে বেরাচ্ছে। উনি যে হাসপাতালে ভর্তি আছেন বলে কুনাল ঘোষ জানিয়েছেন, সেই হাসপাতালে আমার এক বন্ধুকে দিয়ে খোঁজ নিয়েছি। তিনি শুধুমাত্র চোখ দেখিয়েছেন বলে জানতে পারছি। তিনি বলেন, ইডি,সিবিআই এর ইনট্রোগেশন থেকে বাঁচতে তিনি ইউএসএ পালিয়ে গেছেন। ২০২৪ সাল পর্যন্ত অভিষেক বাইরেই থাকবেন বলে মন্তব্য করেন সৌমিত্র খাঁ। অভিষেকের স্ত্রী ও শালিকার ডাক পরেছে, এর পর অভিষেকের ডাক হতো। পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে মানিক ভট্টাচার্যের যে চাকরি প্রার্থীদের লিস্ট পাওয়া যাচ্ছে তাতে বেশিরভাগ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের নির্দেশেই কাজ হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন তিনি।শিবপুরে টাকা উদ্ধার প্রসঙ্গে সৌমিত্র খাঁ বলেন, পশ্চিমবঙ্গে কয়লা ও বালি পাচার নগদ লেনদেনের মাধ্যমে হয়। তাই এখানে টাকা উদ্ধার হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। মেট্রো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পুরোনো শহরে এই ধরনের প্রজেক্ট করতে গেলে কিছু ক্ষতি হয়। তবে মেট্রোর নকশা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা মত পরিবর্তন করা হয়েছে বলে জানান তিনি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,এর আগেও বড় বাজারে ওভারব্রিজ ভেঙে কত মানুষের প্রান গেছে। একশো দিনের কাজ ও আবাস যোজনার টাকা আটকে যাওয়া প্রসঙ্গে সৌমিত্র খাঁ জানান, মুখ্যমন্ত্রী নিজেই বলেছিলেন একশো দিন ও আবাস যোজনার টাকা আমাদের দরকার নেই। গতকাল তৃণমূল কংগ্রেসের একটি বিজয় সম্মিলনী অনুষ্ঠানে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি বিজেপি নেতাদের গাছে বেঁধে রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেই প্রসঙ্গে সৌমিত্র বলেন, আমরা এই পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভাল ফল করবো। জেলা পরিষদে দেবু টুডু যে দূর্নীতি করেছেন তার তদন্ত হবে।
প্রসঙ্গ দক্ষিণ বাঁকুড়ার খাতড়া ব্লকের গোড়াবাড়ি পঞ্চায়েতের অধীন ভাইরাল হওয়া আমডিহা ও দামোদরপুর মৌজায় অবস্থিত পোড়া পাহাড়ের গুহা। কেউ বলেন কড়া পাহাড়। তবে কেউ বা কড়ো পাহাড়। তবে পোড়া পাহাড়া এই নামটা বেশি শোনা যায় এলাকাবাসীর কাছ থেকে। নাম করণের ইতিহাস অবশ্য জানা নেই কারও কাছে। তবে বাসিন্দাদের একাংশের অভিমত, বর্ষা বা নিম্নচাপের সময় পাহাড়ের চূড়ার দিকে তাকালে কিছু পুড়লে যেমন ধোঁয়া হয় সেই রূপ ধোঁয়া দেখা যায় পাহাড়ের চূড়ায় । এই কারণে হয়তো পাহাড়ের নাম হয়েছে পোড়া পাহাড়। আমার বাড়ি থেকে পাহাড়ের দূরত্ব প্রায় এক কিলোমিটার। ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়াশোনা করার সময় গ্রামের এই পাহাড়ের নাম ভূগোল এ যেদিন প্রথমবার পড়লাম সেদিন যে কি আনন্দ হয়েছিল তা বলে বোঝানো যাবেনা। এই পাহাড় কোন আদি অনন্তকালে গড়ে উঠেছে তার সঠিক তথ্য পরিসংখ্যান কেউই দিতে পারবেনা। তবে আমার গ্রাম সংলগ্ন পাহাড়ের উত্তর দিকে যে গুহা রয়েছে সেটি তৈরির সঠিক গল্প এলাকার অনেকেই আপনাকে বলে দেবে। গুহা নিয়ে ইতিমধ্যে কয়েকটি টিভি চ্যানেল ও সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ভুল তথ্য পরিবেশন করা নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। এই ঝড় আছড়ে পড়েছে জেলা ছাড়িয়ে সারা রাজ্য জুড়ে । কেউ আবার ১৯৬২ সালের আর্কিওলজিক্যাল সার্ভের তথ্য তুল ধরে আদিম যুগের সত্যতা প্রমাণ করতে চাইছেন। কোনও অধ্যাপক গবেষক বলছেন গুহাটি বহু প্রাচীন। কেউ আবার আর্কিওলজিক্যাল সার্ভের তথ্য উল্লেখ করে বলেছেন এলাকায় আদিম মানুষের বসবাস ছিল। তাঁরা গুহাটি তৈরি করে ছিলেন বসবাসের জন্য। কেউ বলছেন এখানে নাকি বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসু আসতেন। ওই গুহায় বসে বোমা বাঁধতেন। তাঁদের তথ্য অনুযায়ী কংসাবতী নদীর তীরবর্তী এলাকায় আদিম যুগের কোনও নিদর্শন থাকলেও পোড়া পাহাড়ের গুহার সঙ্গে আদিম যুগের কোনও যোগ নেই। কারণ, গুহাটি যাঁরা নিজের হাতে ড্রিল করে পাথর কেটে তৈরি করেছেন তাঁরা সবাই এখনও মরে যায়নি। আর যাঁরা সেখানে ঠিকা শ্রমিক হিসাবে কাজ করতেন তাঁদের অনেকে এখনো জীবিত সুস্থ সবল আছেন। গুহায় কাজ করা সেইসব শ্রমিকদের অভিজ্ঞতার বিবরণ তুলে ধরছি আপনাদের কাছে ।ছোট বেলায় বাবার (ঁশঙ্কর চন্দ্র মাহালী) কাছে শুনেছিলাম পাহাড়ে পাথর কেটে গুহা তৈরি হয়েছে। আমার বৃদ্ধা মা বিশাখা মাহালীর (৭৭) কাছে পাহাড়ে গুহা তৈরির বিষয়ে একদিন জানতে চেয়ে ছিলাম। মা বলেছিলেন বিয়ের বেশ কিছুদিন পর পাহাড়ে কোনও ধাতু উত্তোলনের কাজ শুরু হয়েছিল। সেই সময়ই গুহাটি তৈরি হয়। আগে কোনও গুহা ছিলোনা বলে শুনেছি। আমার গ্রাম কুঁড়েবাকড়া (আমডিহা) ও পাশাপাশি গ্রামে খোঁজখবর নিতে শুরু করলে অনেকেই জানিয়েছেন এই তো সেদিন গুহাটি তৈরি হয়েছে।কুঁড়েবাকড়া গ্রামের বাসিন্দা আসরফ আলি (৬৫), বড়মেট্যালা গ্রামের আলোক কুমার মাহাতো (৬২), বিশ্বনাথ রজক, মাইলিহীড় গ্রামের কৃষ্ণপদ বাস্কে সহ অনেকেই জানালেন পোড়া পাহাড়ে কোনও গুহা ছিলোনা। এই তো সেদিন গুহাটি তৈরি হল। কিশোর বয়েসে নিজেরা গুহা তৈরির কাজ দেখেছি । ২০২২ সালে দাঁড়িয়ে যে গুহার বয়স এখন পঞ্চাশ -পঞ্চান্ন বছরের বেশি কিছুতেই নয়। আমরা দাঁড়িয়ে থেকে গুহা তৈরির কাজ দেখলাম। আর কোথা থেকে কে একদিন বেড়াতে এস দাবি করছেন তিনিই নাকি গুহার আবিষ্কারক। তাঁরা জানান জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া এই পাহাড় থেকে উলফার্ম নামে এক প্রকার ধাতু সংগ্রহের কাজ শুরু করেছিল । সেই সময় স্থানীয় বেশকিছু যুবককে এই কাজে ঠিকা শ্রমিক হিসাবে নিয়োগ করেছিল । যাঁরা প্রথম দিন থেকে কাজ করেছেন এবং এখনো সুস্থ স্বাভাবিক জীবিত আছেন তাঁরা হলেন খাতড়া ব্লকের খাতড়া ২ পঞ্চায়েতের বড়মেট্যালা গ্রামের বাসিন্দা দশরথ মাহাতো (৭০)। মাইলিহীড় গ্রামের বাসিন্দা নগেন্দ্রনাথ ভুঁইয়া (৭০)। বড়মেট্যালা গ্রামের অনিল মাহাতো, তিলাবনী গ্রামের কৃষ্ট মাঝি, দাঁড়শোল গ্রামের শিবু মাহাতো, জ্ঞানেন্দ্রনাথ মাহাতো।পাহাড়ে গুহা খননের দিন থেকে কাজ করে পরে ভারত সরকারের জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া এর মাইনিং বিভাগে যিনি চাকরি করেছেন তিনি দাঁড়শোল গ্রামের বাসিন্দা নিমাই বাউরি। তিনি জানান, ১৯৬৮ সালের এপ্রিল মাসে জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া এর মাইনিং ডিভিশন গুহা খননের কাজ শুরু করেছিল। প্রায় দুই তিন বছর কাজ হয়েছে। খননের আগে পাহাড়ে কোনও গুহা ছিলোনা। জি গোরাচারি নামে একজন মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারের আন্ডারে কাজ হয়। আমি টেকনিক্যাল লাইনে কাজ করতাম। দু বছর কাজ হওয়ার পরও বাণিজ্যিকভাবে কোনও সফলতা না পাওয়ায় কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এখান থেকে যন্ত্রপাতি নিয়ে তারা চলে যায় রাখামাইনসে। গত প্রায় ১০ - ১২ বছর আগে নিমাইবাবু অবসর গ্রহণ করে এখন বাড়িতে আছেন।এঁদের মধ্য থেকে উলফার্ম উত্তোমনের কাজে ড্রিল হেল্পার হিসাবে যিনি কাজ করেছেন সেই দশরথ মাহাতো জানিয়েছেন। তাঁর বয়স যখন ১৬ - ১৭ বছর সেই সময় জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার কর্মীরা তাঁদের বাড়ি থেকে প্রায় হাফ (আধ) কিলোমিটার দূর দাঁড়শোল গ্রাম সংলগ্ন তিলাবনী মৌজায় ক্যাম্প করে থাকতেন। যে দিন তাঁরা প্রথম সেখানে এলেন সেই দিন গ্রামের অনেকের সাথে কৌতুহল নিয়ে হাজির হয়ে ছিলাম। বিকাল নাগাদ তাঁরা যখন সেখানে তাঁবু খাটানোর কাজ করছিলেন সেই সময় ধরাধরি করে দিতে বলেছিলেন কোনও একজন অফিসার। আমরা কয়েকজন তাঁবু খাটানোর কাজে সাহায্য করে ছিলাম তাঁদের। তাঁবু খাটানোর কাজ শেষে পরের দিনও যেতে বলে ছিলেন। ক্যাম্পে ২২ টি তাঁবু খাটানো হয়েছিল। সেখান থেকেই পাহাড়ে কাজ করার জন্য যেতে বলে ছিলেন তাঁরা। এলাকার ৩০ জন যুবককে পাহাড়ে কাজ করার জন্য নেওয়া হয়েছিল । ক্যাম্প থেকে প্রায় দুই কিলোমটার পোড়া পাহাড়ে গাড়িতে চাপিয়ে নিয়ে যেত। পাশাপাশি গ্রামের যাঁরা ছিলেন হেঁটে যেত। ওই ক্যাম্পে সরকারি কর্মচারী ছিলেন ২২ জন।আলোককুমার মাহাতো নামে এক ব্যক্তি জানান, বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে যখন ক্যাম্প হয়েছিল সেই সময় আমরা সেখানে যেতাম। ওই সময় ১০-১১ বছর বয়স ছিল। ক্যাম্পে সিংবাবু নামে এক ড্রাইভার ছিলেন। গাড়িতে করে তিনি কংসাবতী নদীর কেচন্দা ঘাট থেকে ক্যাম্প ও পাহাড়ে ব্যবহারের জন্য জল আনতেন। কারণ, ক্যাম্পে কোনও জলের ব্যবস্থা ছিলোনা। নদীতে জল আনতে যাবার সময় গাড়িতে চাপতে চাইলে নিয়ে যেতেন। আবার পাহাড়ে কাজের জায়গায় যেতে চাইলে সেখানেও নিয়ে যেতেন। তাই শুরু থেকেই গুহা খননের কাজ দেখেছি।দশরথ মাহাতো জানান, মাইনিং ইঞ্জিনিয়ার দাসগুপ্তবাবুর অধীনে ড্রিল হেল্পার হিসাবে কাজ করতাম। মাসে ৩০০ টাকা মজুরি ছিল। তিনি জানান পাহাড়ের উত্তর পশ্চিম কোনায় পূর্ব-পশ্চিমে লম্বা কালো রং এর একটি বড় প্রাচীরপাথর আছে। ওই পাথরের উত্তর দিক থেকে ড্রিল করে প্রথম উলফার্ম সংগ্রহের কাজ শুরু হয়। কাজ শুরু করার সময় প্রত্যেককে মাথায় টুপি (হেলমেট), পায়ে ফুল সু (জুতো) পরে নিতে হতো। পাথরে এক সঙ্গে ১৮ টি ড্রিল করে তাতে ডিনামাইট দিয়ে পাথর বার্স্ট করা হতো। এই কাজ করতেন অফিসারদের মধ্যে শিবশঙ্কর দাস নামে এক ব্যক্তি। কালো প্রাচীরপাথরের স্তরটি যে দিকে গিয়েছে সেই দিকেই পাথরটি ড্রিল করে ডিনামাইট দিয়ে বার্স্ট করে একটু একটু করে কেটে গুহাটি ভিতরের দিকে ঢুকেছে। প্রায় সাড়ে পাঁচ ছয় ফুট উচ্চতা এবং সাড়ে পাঁচ ছয় ফুট চওড়া গুহার ভিতরে কাজ করতে হতো। ভিতরে সম্পূর্ণ দাঁড়িয়ে কাজ করা যেত না কিছুটা ঝুঁকে কাজ করতে হতো। পাথরের আয়তন অনুযায়ী সব জায়গায় সমান ভাবে পাথর কাটা যায়নি। কোথাও বেশি আছে তো কোথাও একটু কম আছে। গুহার ভিতর অন্ধকার থাকায় কার্বাইট ল্যাম্প দেওয়া হতো। সেই আলোতে কাজ করতে হতো। উলফার্ম টুকরো (কালো পাথর) সংগ্রহ করে কাপড়ে মুড়ে সেগুলিকে তাঁরা বাইরে পাঠাতেন। কেটে কেটে ভিতরে ঢোকার সময় কালো পাথর ছাড়া ভিতরে যে মাটি ও পাথর বালি জমা হতো ট্রলিতে করে সেগুলিকে ভিতর থেকে বের করে ফেলা হতো। মূল গুহা ছাড়াও প্রাচীরপাথর যে দিকে যতটুকু গিয়েছে সেই দিকে ততটুকু পাথর কেটে শাখা গুহা তৈরি হয়েছে। ভিতের এই রকম আট-দশটি শাখা গুহা আছে। প্রাচীরপাথরটি প্রায় আড়াই থেকে তিন চেন অর্থাৎ আড়াই থেকে তিনশো ফুট গুহাটি কাটা হয়েছে। ড্রিল করে পাথর কাটার আগে ড্রিল মেশিন দিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য বাইরে পাঠানো হতো। সেখান থেকে নির্দেশ এলে তবেই পাথর কাটা হতো। প্রায় দুই-তিন বছর কাজ করার পর দেখা গেল যে পরিমাণ খরচ হচ্ছিল সেই খরচটুকুও সেখান থেকে উঠছিলো না। ফলে পোড়া পাহাড় থেকে উলফর্ম সংগ্রহের কাজ বন্ধ করে তাঁরা অন্য জায়গা চলে যায়।খাতড়া ২ পঞ্চায়েতের মাইলিহীড় গ্রামের বাসিন্দা নগেন্দ্রনাথ ভুঁইয়া (৭০) জানান ২০-২২ বছর বয়সে কাজে যোগ দিয়ে ছিলেন তিনি। ভিতরে ডিনামাইট বার্স্ট করার পর ভিতরে ঢুকে পাথর মাটি ট্রলিতে করে বাইরে আনা হতো। ট্রলি যাতায়াতের জন্য ট্রেন লাইনের মতো লাইন ছিল। লাইনের সঙ্গে সংযুক্ত ট্রলি ছিল রিভলভিং। যে দিকে ইচ্ছা ঘোরানো যেত। পাহাড়ে যেখানে উলফার্ম তোলার কাজ চলছিল সেখানে জলের কোন ব্যবস্থা না থাকায় পাহাড়ের ঢালে সিমেন্টের বাঁধ দিয়ে জল ধরে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কংসাবতী নদী থেকে গাড়িতে (ট্যাঙ্ক) জল এনে সেখানে চৌবাচ্চায় ঢেলে রাখা হত। সেই জল দিনভর বিভিন্ন কাজে এবং পাথরে ড্রিল করার কাজে ব্যবহার হতো। পাহাড়ে গুহার অদূরে জল ধরে রাখার জায়গাটি আজও সম্পূর্ন অক্ষত আছে।দশরথবাবু জানান, এই পোড়া পাহাড়ে যাঁরা কাজ করেছিলেন তাঁদের মধ্যে আমডিহা গ্রামের ঁবলাই মাহাতো, চিত্তরঞ্জন মাহাতো, কুঁড়েবাকড়া গ্রামের প্রয়াত হাবু শেখ, বড়মেট্যালা গ্রামের দশরথ মাহাতো, রবি রজক, গৌর সর্দার, জগত সর্দার, গৌর সর্দার (দ্বিতীয়), গতি মাহাতো, ছোটমেট্যালা গ্রামের ঁরতন মাহাতো, অনিল মাহাতো, দাঁড়শোল গ্রামের গুহিরাম মাহাতো, রঞ্জিত মল্লিক (কাঁদরু), ঁননিগোপাল সর্দার, নিমাই বাউরি, গাঁঠিরাম মাহাতো , শিবু মাহাতো, জ্ঞানেন্দ্রনাথ মাহাতো, রানিবাঁধ থানার ধাদকিডিহি গ্রামের সুধীর মাহাতো, ভেলাইগোড়া গ্রামের ঁধরম মান্ডি, মাইলিহীড়, নগেন ভুইয়া, ঁপবিত্র ভুঁইয়া, তিলাবনী গ্রামের, ঁলস্কর বাস্কে, কৃষ্ণ মাঝি সহ ৩০ জন যুবক কাজ করতেন। কাজ বন্ধ করে সরকারি কর্মীর এখান থেকে চলে যাবার সময় তাঁদের নিয়ে যেতে চেয়ে ছিলেন। কিন্তু এখান থেকে কেউ যেতে রাজি হয়নি। দাঁড়শোল গ্রাম থেকে নিমাই বাউরি ও ননিগোপাল সর্দার নামে দুজন ব্যক্তি গিয়েছিলেন। পরবর্তী ক্ষেত্রে তাঁদের স্থায়ী চাকরি হয়ে যায়। এদের মধ্যে কয়েক বছর আগে ননিগোপাল সর্দার মারা যান। নিমাই বাউরি এখনো সুস্থ স্বাভাবিক আছেন।পরিশেষে বলি গুহা নিয়ে মানুষের কাছে মিথ্যা ভূল তথ্য পরিবেশন না করে আসুন সঠিক তথ্য তুলেধরে বাঁকুড়ার পর্যটন মানচিত্রে আরও একটি নতুন পালকের সংযোজন করতে উদ্যোগী হই আমরা সকলে। মুকুটমণিপুর পর্যটন কেন্দ্র থেকে মাত্র চার সাড়ে চার কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে পোড়া পাহাড়। অপরদিকে পাহাড় সংলগ্ন কুরকুটিয়া ডুংরি (টিলা)। তার মধ্যখানে সুন্দর ঝিল, অদূরেই পাহাড় সংলগ্ন কৃপাসিন্ধু আশ্রম এবং মন্দির। এখানকার সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশ পর্যটকদের যে মনকাড়বে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। মুকুটমণিপুরে বেড়াতে আসা পর্যটকরা সেখানে ঢোকার আগে বা পরে পাহাড়, গুহা, ঝিল, মন্দির দর্শন করে যেতে পারেন । ইচ্ছা করলে ঝিল সংলগ্ন প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশে পিকনিক করতে পারবেন অনায়াসে। তাহলে আর দেরি কেন, এই মরসুমে যাঁরা মুকুটণিপুরে বেড়াতে আসার মনস্থির করছেন তাঁরা পোড়া পাহাড়ের গুহা দেখে যাবার কথা অবশ্যই ভেবে রাখুন।(সুশীল মাহালীর ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া)
জেলা সভাপতি হওয়ার পর এই প্রথম পূর্ব বর্ধমানের কোন দলীয় সভায় হাজির হলেন রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। অনুব্রত মণ্ডল জেলে যাওয়ার পর আউশগ্রাম বিধানসভা এলাকায় তৃণমূলের দলীয় সংগঠন সামলানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল নেতৃত্বকে। আর দায়িত্ব পাওয়ার পর শুক্রবার প্রথম আউশগ্রামে দলীয় কোনও কর্মসূচিতে অংশ নিলেন রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। এবং তাৎপর্যপূর্ন ভাবে সেই যাত্রা শুরু অনুব্রত গড় বলে ক্ষ্যাত আউশগ্রাম।শুক্রবার আউশগ্রাম ২ নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের বিজয়া সম্মিলনী ছিল গেরাই উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে। এই সম্মেলনে যোগ দিয়ে রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বুথস্তরের কর্মীদের মধ্যে সমন্বয় রেখে চলার বার্তা দিলেন। পাশাপাশি আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের জন্য প্রস্তুতির পাশাপাশি গুরুদায়িত্ব হিসাবে আগামী ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের কথা স্মরণ করিয়ে দেন তিনি।আউশগ্রাম বিধানসভা এলাকা প্রশাসনিকভাবে পূর্ব বর্ধমানের মধ্যে পড়লেও বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্ভুক্ত আউশগ্রাম। এই বিধানসভা এলাকায় দলীয় সংগঠন এতদিন ধরে সামলাছিলেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। কিন্তু তিনি গরুপাচার মামলায় জেলে যাওয়ার পর পূর্ব বর্ধমান জেলা নেতৃত্বকে আউশগ্রাম এলাকায় সংগঠন দেখার দায়িত্ব দিয়েছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব।বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানে ছিলেন বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ অসিত মাল, জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, পূর্ব বর্ধমান জেলাপরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্যনেত্রী জয়া দত্ত, আউশগ্রামের বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দার, বর্ধমান উত্তরের বিধায়ক নিশীথ কুমার মালিক ও যুব নেতা তথা জেলা-যুব সম্পাদক বর্ধমানের রাসবিহারী হালদার।
শিবলিঙ্গ চুরি হওয়াকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ালো পূর্ব বর্ধমানের মাধবডিহিতে। শুক্রবার সকালে মাধবডিহির নরত্তমবাটি গ্রামের বাসিন্দারা দেখেন শিবলিঙ্গ নেই। কিভাবে শিবলিঙ্গটি উধাও হল তা ভেবেই কূলকিনারা পাচ্ছেন না গ্রামের বাসিন্দারা। ধর্মীয় স্থান হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে একটি শিব ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত ছিল। কথিত আছে এখানকার দেবাদিদেব মহাদেব নাকি কোন মন্দিরে নয় বরং খোলা জায়গাতেই থাকতে পছন্দ করেন। রাতের অন্ধকারে কোন ভাবে সেই শিবলিঙ্গের অর্ধেক অংশ উধাও হয়ে গিয়েছে বলে জানাচ্ছেন গ্রামবাসীরা। কিভাবে সেই শিবলিঙ্গটি উধাও হয়ে গেল সেই নিয়ে দ্বন্দ্বে পড়ে গিয়েছেন তারা। এই ঘটনায় গ্রামের মানুষরা খুবই দুঃখিত। যেহেতু এই শিব ঠাকুরকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন কাল্প কাহিনী রয়েছে তাই এই ঘটনা মেনে নিতে পারছেন না তারা। শিবলিঙ্গটিকে খুঁজে বের করতে তদন্ত শুরু করেছে মাধবডিহি থানার পুলিশ।সেবাইত শান্তিনাথ ব্যানার্জী বলেন, উপরের অংশ নিয়ে গেছে দুস্কৃতিরা।কিন্তু বাবাকে অর্থাৎ শান্তিনাথকে নিয়ে যেতে পারে নি।কারণ বাবা মহাদেব এখানে স্বপ্নাদেশ দিয়ে প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। সুতরাং বানার আসল রূপ এখানে আছে।গ্রামের বাসিন্দা সুশান্ত ঘোষ বলেন, শিবলিঙ্গটি কেউ চুরি করে নিয়ে গেছে।স্থানীয় বাসিন্দা জয়রাম চক্রবর্তী বলেন, এটি কষ্টিক পাথরের শিবলিঙ্গ। হাজার বছরের পুরনো, বহু মূল্য। তার ধারণা কোন তান্ত্রিকের কাজ হতে পারে।
এবার রাজ্যে দুর্গাপুজোয় ৫০ হাজার কোটি টাকা আয় হয়েছে। পুজোয় কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয় সব থেকে বেশি। বৃহস্পতিবার উত্তীর্ণ সভাঘরে দলের বিজয়া সম্মেলনীতে একথা বলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, মায়ের আরাধনা শেষ করে লড়াই শুরু করছি। চারটে ডান্ডা নিয়ে গেলেন মনে করলেন তৃণমূল উঠে গিয়েছে, এত সোজা নয়। উতৎসব মরসুমে এসব করি না।কলকাতায় অসুরকে গান্ধির রূপ দিয়েছিল একটি পুজো কমিটি। তা নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল। থানায় অভিযোগও হয়েছিল। শেষমেশ সেই রূপের পরিবর্তন করা হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, কথায় কথায় বলেন বাংলায় দুর্গাপুজো হয়না, সরস্বতী পুজো হয় না। এদিকে গান্ধিজিকে অসুর বানিয়ে দিলেন। এটা লজ্জার বিষয়। আমরা জানতে পারিনি। গোপনে করে দিয়েছে। মা দুর্গা গান্ধিজিকে মারছে। পরে তা সরানো হয়েছে। পুজোর সময় আমি কাউকে কিছু বলিনি। শুনলে সবার দুঃখ হবে। প্রতিবাদ করতে শুরু করবে। জনগণই এর জবাব দেব।এদিন ফের কেন্দ্রীয় এজেন্সি নিয়ে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ইডি, সিবিআইযের হাতে নানা সময়ে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা গ্রেফতার হয়েছেন। এখনও জেলবন্দি হয়ে আছেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মন্ডল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আজ ক্ষমতায় আছ। এজেন্সি দেখাচ্ছ। কাল যখন ক্ষমতায় থাকবে না তখন এজেন্সি তোমার ঘরে ঢুকে দুকান মূলে দেবে।
তৃণমূল কংগ্রেসের জোড়া তাপসের জোড়া মন্তব্যে চরম অস্বস্তিতে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। দুই তাপসই উত্তর ২৪পরগনার বিধায়ক। একজন আদি কংগ্রেসের অন্যজন সিপিএম থেকে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। বরানগরের বিধায়ক তাপস রায়ের বিস্ফোরক মন্তব্যের পর বোমা ফাটালেন নিউটাউন-রাজারহাটের তৃণমূল বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়। বুধবার নিউটাউনে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে আয়োজিত বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ না পাওয়ায় নিজেকে অপমানিত বোধ করছেন স্থানীয় এই বিধায়ক। তিনি মর্মাহত। তাপসের কটাক্ষ, দলে দুটি শ্রেণি, বাবু ও চাকর। চাকরেরা ডাক পান না। আমি বোধ হয় দ্বিতীয় শ্রেণিতেই পড়ি। তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে তৃণমূল ও বিরোধীদের প্রতিক্রিয়ায় তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি।দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কটাক্ষ করে আগুনে ঘি ঢেলেছেন নিউটাউন-রাজারহাটের বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়। এর আগে উত্তর কলকাতার তৃণমূল সভাপতির বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন বরানগরের বিধায়ক তাপস রায়। বুধবার সন্ধেয় ইকো পার্কে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে বিজয়া সম্মিলনীতে একাধিক মন্ত্রী, বিধায়ক সেই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত থাকলেও ব্রাত্য ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়। তাঁরই বিধানসভা কেন্দ্র এলাকায় বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন হলেও তাঁকেই সেখানে ডাকেননি উদ্যোক্তারা। তাতেই গোসাঁ হয়েছেন তাপস চট্টোপাধ্যায়।স্বভাবতই এই ঘটনায় হতাশ তৃণমূল বিধায়ক। দলের প্রতি একরাশ অভিমান পড়েছে তাঁর গলায়। তাপস চট্টোপাধ্যায় বলেন,দলে দুটি শ্রেণি, বাবু ও চাকর। চাকরেরা ডাক পান না। আমি বোধ হয় দ্বিতীয় শ্রেণিতেই পড়ি। আমার বিধানসভা কেন্দ্র এলাকায় এই অনুষ্ঠান হয়েছে। তবে আমি এই অনুষ্ঠান সম্পর্কে কিছু জানি না। আগেও ডাক পাইনি। সেবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জানিয়েও সদুত্তর পাইনি। ওখানে যাঁরা উপস্থিত ছিলেন আমি কি তাঁদের মধ্যেও পড়ি না? দলে বাবু ও চাকরদের শ্রেণির মধ্যে আমি বোধ হয় দ্বিতীয় শ্রেণিভুক্ত। তৃণমূল বিধায়কের এই মন্তব্যে তোলপাড় রাজনৈতিক মহল।এই বিজয়া সম্মিলনীতে ডাক না পাওয়ায় তৃণমূল বিধায়ক সব্যসাচী দত্তকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন তাপস চট্টোপাধ্যায়। সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন তাঁর বক্তব্যে। সব্যসাচী দত্তের সঙ্গে তাপস চট্টোপাধ্যায়ের সম্পর্ক বরাবরই অম্লমধুর। একাধিকবার পরষ্পরকে পরষ্পরের বিরুদ্ধে মুখ খুলতেও দেখা গিয়েছে। যদিও দলের শীর্ষ নেতাদের হস্তক্ষেপে বিতর্ক বাড়েনি। তাঁকে বারবার বিজয়া সম্মিলনীতে ব্রাত্য রাখায় পরোক্ষে সব্যসাচীরই হাত দেখছেন তাপস, অন্তত তাঁর কথাবার্তায় সেই ইঙ্গিতই স্পষ্ট হয়েছে।তাপসের মন্তব্য, যাঁরা বলেছিলেন আর কটা দিন, যাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বেগম বলেছিলেন তাঁরা ডাক পান। আমি ডাক পাই না। দিনরাত পরিশ্রম করা অপরাধ কিনা জানি না। বিষয়টা খুব অপমানের। স্থানীয় বিধায়ককে বাদ দেওয়া হল। আমি সিপিএম থেকে এসেছি বলে হয়তো এখনও আমার বিশ্বাসযোগত্যতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব তড়িঘড়ি বিষয়টি নিয়ে ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমে পড়েছে।এদিকে তাপসের ওই অনুষ্ঠানে ডাক না পাওয়াকে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়, বিধায়ক মদন মিত্র গুরুত্ব দিতে নারাজ। এমন ঘটনা ঘটতেই পারে বলে প্রবীণ দুই নেতা প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। তবে, মদন মিত্র বলেন, তবে নিজেকে গালমন্দ করেছে তাপস, তবে আমি বলবো যেন আত্মহত্যা না করে। খেলা অনেক বাকি। বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ওই দলে তো সবাই কর্মচারী। সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, বেশি তেলা আদায় করতে পারছে না বলে রেগে গিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আরও আশীর্বাদ চাইছে।