"মেয়ে কি লতা মঙ্গেশকর হবে নাকি", এই কটাক্ষ জেদ বাড়িয়েছে সৌমিতা সাহার
দেবী সরস্বতীর মূর্তি পূজার প্রচলন বাংলা তথা সমগ্র ভারতে আর সকল বাড়ির মতো আমার বাড়িতেও রয়েছে। চতুর্থীর সকাল থেকেই ঘোর অন্ধকার করে বজ্রপাত সহ যে ভীষণ বৃষ্টিপাত হয় তাঁর অর্থ আজ ষষ্টির সকালে বোঝা গেল। মনে হয় দেবীর উদ্দেশ্য বুঝতে পেরেই মর্ত্যলোক ডুকরে ডুকরে কেঁদে উঠছিল। কালের অমোঘ নিয়মকে উপেক্ষা করার ক্ষমতা কারও নেই, তাই ষষ্টি-র প্রভাতে দেবী সরস্বতীর ঘট বিসর্জনের সাথে সাথে তাঁর মানস কন্যা লতা কে নিয়ে দেবী পাড়ি দিলেন সুরোলোকে। যেন দেবী এইবারে ধরাধামে এসেছিলেনই তার মানসকন্যা কে নিয়ে যেতে। দীর্ঘ দিনের অসুস্থতা ভোগ করে ইহলোকের মায়া কাটিয়ে, সকলকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন আবাল-বৃদ্ধ-বনিতার পরম প্রিয় লতাজি। আজ যেন দেশের প্রতিটি সঙ্গীত প্রেমীর ঘরে নেমে এসেছে প্রিয়জন বিয়োগের শোক। সেই ছেলে বেলা থেকেই আর পাঁচটা মেয়ের মত লতাজির গান শুনে বড় হয়েছি। তিনি যেন আমাদের সকল অভিব্যাক্তিতে রয়েছেন। কখনও বা আছেন আমাদের অহেতুক আক্রমণের ভাষায়। রাত বিরেতে রেওয়াজ করায় পাড়া প্রতিবেশী আড়ালে আবডালে প্রায়ই আমার অভিভাবকদের ঠেস দিয়ে শুনিয়েছেন মেয়ে কি লতা মঙ্গেশকর হবে নাকি! প্রথম সেই পেটে প্রজাপতি সুরসুরি দেওয়া প্রেমের জিন্দেগী অউর কুছ ভি নেহি, তেরি মেরি কাহানি হ্যায় অনুভুতিতে যেমন ছিলেন তিনি। তেমনিই ছিলেন আষাঢ় শ্রাবণ মানে না এমন এর স্মৃতি চারণে। লতাজির মতো মানুষের মৃত্যু হয় না। গীতায় আছে, न जायते म्रियते वा कदाचि- न्नायं भूत्वा भविता वा न भूयः | अजो नित्यः शाश्र्वतोSयं पुराणो न हन्यते हन्यमाने शरीरे অর্থাৎ আত্মা অবিনশ্বর, তাঁর মৃত্যু হয় না। শিল্পীর মৃত্যু হয়, শিল্পের নয়। আমার মতো যে মানুষগুলো যাঁদের এতো বোঝার মতো জ্ঞান নেই তাঁদের জন্য লতাজি ছিলেন, আছেন, থাকবেন। কবেই সহজ ভাবে গেয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন নাম গুম জায়েগা, চেহেরা ইয়ে বদল জায়েগা, মেরি আওয়াজ হি পেহচান হ্যাই...গর ইয়াদ রহে