Illicit Affair: অবৈধ সম্পর্কের তিক্ততায় মহিলাকে নৃশংস ভাবে খুন, গ্রেপ্তার তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য
মহিলার সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তাঁকে নৃশংসভাবে খুনের অভিযোগে গ্রেপ্তার হলেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য। ধৃতের নাম শোভন টুডু। তাঁর বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের মেমারি থানার কুচুট গ্রামের কদমতলা এলাকায়। তিনি তৃণমূলের প্রতীকে নির্বাচিত কুচুট গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য। মুখ থেঁতলে দিয়ে মহিলা সুখী মাণ্ডি(৪৭)কে খুনের অভিযোগে জেলার জামালপুর থানার পুলিশ শুক্রবার রাতে শোভন টুডুকে গ্রেপ্তার করে। শনিবার ধৃতকে পেশ করা হয় বর্ধমান আদালতে। খুনের ঘটনায় ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার ও ঘটনার তদন্তের প্রোয়োজনে তদন্তকারী অফিসার এদিন ধৃতকে ১০ দিন নিজেদের হেপাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানান । বিচারক ধৃতকে ৬ দিন পুলিশি হেপাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।পুলিশ জানিয়েছে ,গত ১৯ সপ্টেম্বর জেলার জামালপুর থানার জৌগ্রামের জলেশ্বরতলা এলাকার একটি বাঁশবাগান থেকে উদ্ধার হয় অজ্ঞাত পরিচয় মহিলার মুখ থেঁতলানো মৃতদেহ।মহিলার মৃতদেহ উদ্ধারের সময় পুলিশ তাঁর কোমরে গোঁজা থাকা একটি পুঁটলি পায়। ওই পুঁটলির মধ্যে থাকা কাগজে লেখা ছিল কিছু ফোন নম্বার। তার সূত্র ধরে তদন্ত চালিয়ে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে পুলিশ মহিলার পরিচয় উদ্ধার করে। পুলিশ জানতে পারে মহিলার নাম সুখী মাণ্ডি। তাঁর স্বামীর নাম সাধন মাণ্ডি। তাঁরা মেমারি থানার নবস্তা ১ পঞ্চায়েতের পলশা গ্রামের বাসিন্দা। গত মঙ্গলবার মৃতার পরিবারের লোকজন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে মৃতদেহ সনাক্ত করেন।মহিলকে খুনের প্রকৃত কারণ জানতে পুলিশ তাঁর পরিবার পরিজনের পাশাপাশি এলাকাবাসীর সঙ্গেও কথা বলে। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পারে সাধন মাণ্ডির দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী সুখী। সাধনের প্রথম পক্ষের স্ত্রীর কোন সন্তান নেই। সুখীর দুটি পুত্র সন্তান রয়েছে। সুখী পলশা গ্রামে না থেকে কিছু দূরে গাঙ্গুয়া গ্রামের সাপার পাড়ায় থাকতেন বলেও পরিবার সদস্যরা পুলিশকে জানায়। এমনকী অন্য এক পুরুষের সঙ্গে সুখীর সম্পর্ক থাকার কথাও পরিবার সদস্যদের কাছ থেকে পুলিশ জানতে পারে।এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ )আমিনুল ইসলাম খাঁন এদিন বলেন, সুখীর অন্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার কথা জানতে পারার পরেই ওই পুরুষ ব্যক্তির খোঁজ চালানো শুরু হয়। খোঁজ চালিয়ে পুলিশ জানতে পারে মেমারির কুচুট পঞ্চায়েতের সদস্য শোভন টুডুর সঙ্গে দীর্ঘদিন যাবৎ সুখীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে।পঞ্চায়েত সদস্যের ফোন কলের ডিটেইলস খতিয়ে দেখেও পুলিশ নিশ্চিৎ হয় সুখীর সঙ্গে শোভন টুডুর নিয়মিত কথা হত। শুক্রবার শোভন টুডুকে থানায় টানা জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সুখী মান্ডিকে খুনের কথা স্বীকার করে শোভন টুডু। তার পরেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের দাবি খুনের কারণ হিসাবে শোভন জানিয়েছে, মহিলা তাঁর কাছে প্রায়শই প্রচুর টাকার দাবি করতো। মহিলাকে অত অর্থ যোগান দেওয়ার চাপ তিনি আর নিতে পারছিলন না। সেই কারণে তিনি সুখীকে খুনের পরিকল্পনা কষেন। পরিকল্পনা মাফিক পরিচিতর বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে তিনি সুখীকে সঙ্গে নিয়ে জৌগ্রাম জলেশ্বরতলা এলাকায় আসেন।আগে থেকেই একটি মোটা পাইপ কিনে তিনি তাঁর বাইকের টুল বক্সে ভরে রেখেছিলেন। জলেশ্বরতলা এলাকার বাঁশ বাগানে সুখী বসতেই তিনি সেই পাইপ দিয়ে তার মুখ ও মাথার অংশে একাধিকবার আঘাত করেন। সুখীর মৃত্যু নিশ্চিৎ হবার পর শোভন বাইকে চেপে ঘটনাস্থল ছেড়ে পালায়। ওই পাইপ উদ্ধারের জন্য পুলিশ শোভন টুডুকে হেপাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে।