নীল আকাশের বুকে পেঁজা তুলোর মত
ভেসে যাওয়া মেঘের পিছু-পিছু,
ছুটে চলে অভিমানী মন, দূরে, বহু দূরে;
যেথা শিশিরে ভেজা জোনাকির আলো
আর কদমের ঘ্রাণে মেশা মিষ্টি বাতাস
গড়েছে শান্তির উপনিবেশ।
মধ্যাহ্নের প্রচন্ড দাবদাহে, ঝলসে যাওয়া
মৃতপ্রায় মন খুঁজে পায় শিউলির শীতল পরশ।
ক্ষয়িষ্ণু আয়ুর প্রহর গুনতে গুনতে
আসে বসন্তের শিহরণ।
তৃষ্ণার্ত হৃদয়ে কামনার হাতছানি –
আততায়ীর মতো।
আকণ্ঠ নীলিমা পান করে, জ্যোৎস্না প্লাবিত
ছায়াপথ ধরে এগিয়ে যাই,
কোন অনামি নক্ষত্রের কক্ষপথের দিকে।
অস্তিত্ব রক্ষার প্রবল সংগ্রামের মাঝে
ক্ষণিকের অজ্ঞাতবাস। ক্ষীণ হয়ে আসে
ধমনীতে প্রবাহিত রক্তের দাপাদাপি।
প্রাণভরে নিই গভীর প্রশ্বাস।
তবু অবচেতন মনের কোণে
উঁকি মারে ভয়।
এই বুঝি ভোর হয়।
পূবের আকাশে রক্তের ছিটে।
অচিরেই সরে যাবে কুয়াশার চাদর।
অন্ধকারের অজ্ঞাত আশ্রয় থেকে বেরিয়ে
আমাকে সম্মুখীন হতে হবে জ্বলন্ত সুর্যের।
দারিদ্র্যের লেলিহান শিখায় দগ্ধ হবে
বিবেক, মনুষত্ব আর বিশ্বাসের।
প্রবঞ্চকের শানিত তরবারি নির্মম
আঘাত হানবে আমার বুকে।
অনৈতিকতার নির্লজ্জ চাবুক নেমে আসবে
শরীরে, মনে, প্রতি রোমকূপে-রোমকূপে।
প্রত্যেকদিনের যুদ্ধে জয়ী তুমিই হবে,
হে দারিদ্র্য, তুমিই জয়ী নিয়তির অমোঘ বিধানে।
আমি নিরস্ত্র অসহায়।
অপুষ্টিতে ভোগা, ঘামে ভেজা আমার ক্লান্ত শরীর
হয়ে আসবে অবসন্ন।
রুধিরস্নাত শরীরের রঙ মিশে যাবে
সূর্যাস্তের বর্ণচ্ছটায়।
তবু আমি হাঁটব।
প্রেমহীন, স্থবির সমাজের চোখে চোখ রেখে,
জীবনপথের অতিভূজ ধরে,
এক বুক স্বপ্ন নিয়ে হেঁটে যাব
মরীচিকার পানে –
নবজীবনের সন্ধানে।
কবিঃ দীপক কুমার মণ্ডল
আরও পড়ুনঃ মধ্যবিত্ত (কবিতা)
আরও পড়ুনঃ রোমন্থন (কবিতা)
- More Stories On :
- Feature
- Poem
- The Mirage
- Bengali Poem