হ্যালো, আঙ্কেল আমি মেহুল বলছি।
......
হ্যাঁ, ঠিক চিনেছেন।
........
হ্যাঁ আমি যাই তো। আপনার সঙ্গে দেখা হয়নি। আমি তো কলেজ থেকে যাই।
.........
বলছিলাম আপনার সাথে খুব জরুরি একটা দরকার আছে। একদিন দেখা করতে চাই।
.........
আপনার সুবিধা মত বলুন আমি ঠিক হাজির হয়ে যাব।
.........
ঠিক আছে আঙ্কেল তাহলে কাল দেখা হচ্ছে। এখন রাখি। এই বলে মেহুল ফোন রেখে দিলে।
পরের দিন ঠিক সময়ে অনিমেষ বাবু আর মেহুল হাজির নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট জায়গায়।
বসো, কি খাবে বলো?
কিছু না। একটু কফি।
আচ্ছা তাহলে কোল্ড কফি হয়ে যাক। বললেন অনিমেষ বাবু
তাই হোক।
দুটো কোল্ড কফি অর্ডার দিয়ে জমিয়ে বসলেন। বলো তো মা কি দরকার এই বুড়োটাকে?
ঠিক বুঝতে পারছি না কিভাবে কথাটা বলবো?
কোনো দ্বিধা না করে বলো। আমার মনেও একটা কৌতূহল জেগেছে তোমার কৌতূহলের সাথে মিলে যেতেও পারে। তাই বলছি বলে ফেলো, কোনও সংকোচ করো না।
স্যারের বাড়িতে যাওয়ার পর থেকেই এই প্রশ্নগুলো জেগেছে। কিন্তু স্যারকে জিজ্ঞাসা করতে পারছি না। আর যাকে জিজ্ঞাসা করতে পারি সে তো কাছে থাকে না, তাই ভাবলাম আপনি তো স্যারের খুব কাছের বন্ধু তাই ভাবলাম আপনার কাছেই জানতে পারব।
বেশ বেশ বলো না কি জানতে চাও।
বলছি স্যারের তো নিজের বলতে কেউ নেই শুনছি, তবে ওনার ঘরে ওই ছবিটি কার? আপনি কি চেনেন ছবির ওই ভদ্র মহিলা কে?
অনিমেষ বাবু মেহুলের প্রশ্নে একটু যেন চমকে গেলেন; সাথে সাথে নিজেকে ঠিক করে নিয়ে বলেন আমার মনে যে কথাটি এসেছে তার সাথে তোমার প্রশ্ন রিলেটেড।
মেহুল এবার চমকে যায়, মানে?
আমার প্রশ্ন হলো তুমি কে? কি তোমার পরিচয়? আর তোমার এই কৌতূহল কেন? তুমি কি চেন?
কাকে চেনার কথা বলছেন?
ছবির সঙ্গে তোমার মিল আমি সেদিনই খেয়াল করেছি যেদিন হাসপাতালে তোমাকে দেখি। বলতে পারো চমকে গেছিলাম তোমাকে দেখে। তারপর ভাবলাম মানুষে মানুষে তো মিল হয়। তাই চুপ করে ছিলাম। আজ তোমার কথায় আবার সেটা ফিরে এল।
বলো চেনো ছবির ওই ভদ্রমহিলাকে?
চুপ করে থেকো না বলো!!
মেহুল বলে----- হ্যাঁ চিনি।
কে হন উনি?
আ আ-- মার মা----
ঠিক আন্দাজ করেছিলাম আমি। বলেন অনিমেষ বাবু।
আপনি আমার মাকে চেনেন?
হ্যাঁ খুব চিনি। তা তিনি এখন কোথায়? শিলিগুড়িতে? নাকি অন্য কোথাও?
মা সাউথের একটা স্কুলে পড়ায়। আমি দাদু দিদার কাছে বড়ো হয়েছি। মা ছুটিতে আমাদের কাছে আসে।
অনিমেষ বাবু এবার জিজ্ঞাসা করেন তোমার বাবা?
মেহুলের মুখটা কালো হয়ে যায়।
বলতে থাকে, আমি জানি না কে আমার বাবা। কারণ সব জায়গায় মায়ের নাম দেওয়া আছে। যেখানে বাবার নাম দরকার হয়েছে শুধু লেখা আছে ডি. সেন। এর বেশি আমি কিছু জানি না। খুব ছোট বেলায় একবার মাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম বাবার কথা। মা খুব কেঁদে ছিল আর বলেছিলেন বাবা হারিয়ে গেছে। তারপর থেকে কোনও দিন কাউকে আর জিজ্ঞাসা করতে পারিনি। স্যারের ঘরে মায়ের ছবি দেখে মনের কোণে তাই এত প্রশ্ন।
এখানে কোথায় থাক? কার কাছে?
আমি আর আমার দিদা ইউনিভার্সিটির কাছে একটা ভাড়া বাড়িতে থাকি।
এবার আঙ্কেল আপনি বলুন আমার মায়ের ছবি স্যারের ঘরে কেন?
সেটা জানতে গেলে তোমাকে একটা গল্প শুনতে হবে। অত সময় আছে তো তোমার কাছে?
হ্যাঁ আমার কাছে সময় আছে। শুধু একবার বলে দিই দেরি হবে ফিরতে।
বলে মেহুল ওর দিকে ফোন করে বলে দেয়। এবার আপনার গল্প শুরু করে দিন।
অনিমেষ বাবু বলেন এবার কিছু অর্ডার না করলে এরা তুলে দেবে। তাছাড়া খিদেও পেয়েছে কি বলো?
মেহুল ওনার কথা শুনে হেসে ফেলে। বলে তাহলে এদের চিকেন কাটলেটটা খুব ভালো। বলে ও ওয়েটারকে ডেকে দুটি কাটলেট অর্ডার দেয়।
এবার আপনার গল্প শুরু করুন আঙ্কেল।
গল্প শুরু করেন অনিমেষ বাবু ...............
ক্রমশঃ
লেখিকাঃ রাখি রায়
আরও পড়ুনঃ রক্তের টান - প্রথম পর্ব
আরও পড়ুনঃ রক্তের টান - দ্বিতীয় পর্ব
- More Stories On :
- Rakter Taan
- Blood Relation
- Teacher
- Student
- Story
- Father
- Daughter