ডুরান্ড কাপ শুরুর আগে মহমেডান কোচ আন্দ্রে চেরনিশভ বলেছিলেন, কলকাতা প্রিমিয়ার লিগের থেকেও বেশি গুরুত্ব দিতে চান ডুরান্ড কাপকে। কারণ এটি সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতা। শক্তিশালী দলগুলির বিরুদ্ধে খেলে নিজেদের শক্তি যাচাই করে নিতে পারবেন। তঁার লক্ষ্য যে ডুরান্ড কাপ জয়, সেকথাও খোলসা করে দিয়েছিলেন। লক্ষ্যে পৌঁছতে আর মাত্র একধাপ বাকি। এফসি বেঙ্গালুরু ইউনাইটেডকে ৪–২ ব্যবধানে হারিয়ে ডুরান্ড কাপের ফাইনালে পৌঁছে গেল সাদাকালো ব্রিগেড। শুরুতে পিছিয়ে পড়েও দুরন্ত জয় তুলে নিল মহমেডান স্পোর্টিং। ৮ বছর পর আবার ডুরান্ড কাপের ফাইনালে।
মহমেডান সমর্থকদের দৌলতে দীর্ঘদিন পর আবার যুবভারতীতে প্রাণ ফিরে এল। এদিন যুবভারতীতে মহমেডান ও এফসি বেঙ্গালুরু ইউনাইটেডের ম্যাচ দেখতে প্রায় হাজার পঁচিশেক দর্শক মাঠে হাজির ছিলেন। অন্যরকম পরিবেশে ম্যাচ শুরু হওয়ার অপেক্ষা ছিল। আর তার আগেই ঘটল বিপত্তি। সেই পুরনো রোগ। হঠাৎ করে একটি বাতিস্তম্ভের আলো নিভে যায়। ফলে নির্দিষ্ট সময়ের ১০ মিনিট পর খেলা শুরু হয়।
আলো আসার পর তখনও দর্শকরা মাঠে ঠিকভাবে আসনে বসেননি। তার মধ্যেই ধাক্কা মহমেডান শিবিরে। ১৯ সেকেন্ডের মধ্যেই গোল। এগিয়ে যায় এফসি বেঙ্গালুরু ইউনাইটেড। লুকা মাসেনের পাস থেকে দুরন্ত শটে দলকে এগিয়ে দেন পেড্রো মানজি। ডুরান্ড কাপে দ্রুততম গোলের নজির হয়ে গেল এদিন যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে। তবে এই অগ্রগমন বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি এফসি বেঙ্গালুরু ইউনাইটেড। ৮ মিনিটের মধ্যে সমতা ফেরায় মহমেডান। পরিত্রাতা সেই মার্কাস জোসেফ। আগের ম্যাচে গোল করে দলকে সেমিফাইনালে তুলেছিলেন। এদিন দলকে সমতায় ফেরালেন। হেডে ফৈয়াজের নামিয়ে দেওয়া বল ধরে মার্কাস ৩ জন ফুটবলারকে ড্রিবল করে জোরালো কোনাকুনি শটে গোল করে মার্কাস। ৩৮ মিনিটে মহমেডানকে এগিয়ে দেন ফয়জল আলি। এই গোলের পেছনেও মার্কাসের অবদান। তাঁর সাজিয়ে দেওয়া বল থেকে মাটি ঘেঁসা শটে গোল করেন ফয়জল।
সমতা ফেরানোর জন্য দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই মরিয়া হয়ে ওঠে এফসি বেঙ্গালুরু ইউনাইটেড। একাধিক গোলের সুযোগও তৈরি হয়। শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয়ার্ধের ৭৮ মিনিটে সমতা ফেরায় বেঙ্গালুরু। সঞ্জু প্রধানের কর্ণার থেকে দুরন্ত সাইড ভলিতে গোল করেন কিংশুক দেবনাথ। দ্বিতীয়ার্ধের সংযুক্তি সময়ে হাত দিয়ে গোল করতে গিয়ে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন বেঙ্গালুরুর পেড্রো মানজি। নির্ধারিত সময়ে ম্যাচ ২–২ থাকে। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। অতিরিক্ত সময়ে দুটি অর্ধে দুটি গোল করে ডুরান্ড ফাইনাল নিশ্চিত করে মহমেডান। অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের ১২ মিনিটে ছোটখাটো চেহারার ব্রেন্ডন ভানলালরেমডিকার গোল করে স্বস্তি দেন সাদাকালো সমর্থদের। অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই নিকোলার পেনাল্টি থেকে করা গোল ডুরান্ড কাপ নিশ্চিত করে মহমেডানের। ২০১৩ সালের পর আবার ডুরান্ড জয়ের হাতছানি মহমেডানের সামনে।
- More Stories On :
- Football
- Durand Cup
- Mohammedan Sporting