জাতীয় সড়কের সম্প্রসারণ কাজের জন্য নয়ানজুলি বুজে থাকায় ভিভিসি (Damodar Valley Corporation) জল ছাড়তেই জলে ডুবলো আলু চাষের জমি। এরই প্রতিবাদে মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ে ২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে রেখে বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন ক্ষুব্ধ চাষীরা। ঘন্টা খানেকের অবরোধ বিক্ষোভের জেরে এদিন সকালের দিকে জাতীয় সড়কে যানবাহন চলাচল একপ্রকার স্তব্ধ হয়ে যায়। দূর পাল্লার বাস সহ বিভিন্ন যানবাহন জাতীয় সড়কে যানজটে আটকে পড়ে। খবর পেয়ে শক্তিগড় থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া চাষিদের সঙ্গে কথা বলে । পরে প্রশাসন ও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন চাষিরা।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে শক্তিগড় এলাকায় জোরকদমে চলছে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের সম্প্রসারণের কাজ। সেই কাজ করতে গিয়ে চাষের জমিতে সেচের জল যাবার জন্য জাতীয় সড়কের ধারে থাকা নয়ানজুলি বুজিয়ে দেওয়া হয়। এরই মধ্যে বোরোধান চাষের জন্য ডিভিসির সেচ খালে জল ছাড়া হয়। নয়ানজুলি বুজে থাকার জন্য সেই জল প্রবাহিত হতে না পেরে বদ্ধ নয়ানজুলি থেকে উপচে গিয়ে সোমবার রাতে অসপাশের ফলন্ত আলু জমিতে ঢুকে পড়ে। তার কারণে শক্তিগড়, আমড়া ও বড়শুল এলাকার বিঘের পর বিঘে আলুর জমি জলে ডুবে যায়। মঙ্গলবার সকালে ফলন্ত আলু জমি জলে ঢুবে থাকতে দেখে কার্যত মাথায় হাত পড়ে যায় আলুচাষীদের। ফসলের এই ক্ষতি মেনে নিতে না পেরে ক্ষিপ্ত চাষিরা এর পরেই ২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করে দেন।
ক্ষতিগ্রস্ত আলুচাষী সেখ নজরুল ইসলাম
আমড়া এলাকার বাসিন্দা আলুচাষী সেখ নজরুল ইসলাম বলেন, প্রথমে জমিতে আলুচাষ করার পর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে চাষীরা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রবল বর্ষণে আলুর জমি ডুবে যায়। পচে যায় আলুগাছ। তারপর ফের তারা জমি তৈরি করে আলু চাষ করেন। আর এখন নয়ানজুলি বুজে থাকার জন্য ডিভিসির সেচখালে ছাড়া জল আলুর জমিতে ঢুকে গিয়ে পাকা আলু জমির অপূরণীর ক্ষতির করে দিল। তিনি দাবী করেন আমড়া, শক্তিগড় ও বড়শুল নিয়ে কম করে একশো বিঘে আলু জমিতে জল ঢুকেছে। সমস্ত আলু জমি এরজন্য ক্ষতিগ্রস্ত হল।
এলাকার অপর আলুচাষী বাবুল মণ্ডল বলেন, এখন সবেমাত্র জমি থেকে আলু তোলার মরশুম শুরু হয়েছে। আলু জমি জলে ঢুবে যাওয়ায় এখন চাষীরা চরম সংকটে পড়লেন। এবছর আলুর দামও এমনিতে উর্দ্ধমুখী। বর্তমানে একবস্তা (৫০ কেজি) আলুর দাম ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা। এই অবস্থায় জমিতে জল দাঁড়িয়ে গেলে পাকা আলু পচে যাবে। চাষীরা এবছর এমনিতেই সমস্যায় জেরবার। শীতে বারে বারে অকাল বর্ষণে দু'বার করে আলু চাষ করতে হয়েছে। তাতে বাজারে ও মহাজনী ধারদেনা হয়েছে। প্রশাসন ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা না করলে চাষীরা মহা সংকটে পড়বে।
জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া বলেন, “চাষীদের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে ভাবতে হবে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে। আমরা এই বিষয়ে ওদের সঙ্গে আলোচনা করছি। চাষীদের ক্ষতি মেনে নেওয়া যাবে না“।
আরও পড়ুনঃ সকালে রাশিয়ার ট্যাঙ্কবাহিনীর গোলাবর্ষণে মৃত্যু কমপক্ষে ৭০ ইউক্রেনীয় সেনার, মৃত্যু ১১ সাধারণ নাগরিকের
আরও পড়ুনঃ মহাশিবরাত্রিতে দেশবাসীর জন্য মঙ্গলকামনা প্রধানমন্ত্রীর
আরও পড়ুনঃ এক লাফে ১০৮ টাকা বেড়ে বাণিজ্যিক রান্নার গ্যাস ২০৯৫ টাকা!