আজ নন্দীগ্রামে হাইভোল্টেজ ভোট। ভোটগ্রহণের অনেক আগে থেকেই নন্দীগ্রাম জুড়ে টহল দিচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। রয়েছে মহিলা সিআরপিএফ-এর দল। বুধবারই নন্দীগ্রামে জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। বিকেল থেকেই মাইকে ঘোষণা শুরু করে দেয় পুলিশ। নন্দীগ্রামে ঢোকা ও বেরনোর প্রতিটি সীমানায় শুরু হয়েছে নাকা চেকিং। চলছে হেলিকপ্টারে নজরদারি। সব মিলিয়ে নন্দীগ্রাম কার্যত দুর্গের চেহারা নিয়েছে।এদিকে ভোটগ্রহণের কয়েক ঘণ্টা আগেই সিল করে দেওয়া হয় নন্দীগ্রাম। জলে এবং স্থলে কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং রাজ্য পুলিশ দিয়ে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে নির্বাচন কমিশন। দ্বিতীয় দফার নির্বাচনের আগে বেশ কিছু দিন ধরেই নন্দীগ্রাম এলাকায় বহিরাগত প্রবেশের অভিযোগ তুলে আসছিল তৃণমূল। বুধবার সন্ধ্যায় কার্যত সেই অভিযোগকে কার্যত মান্যতা দিয়েই বাড়তি নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়। যে ভাবে শুভেন্দু অধিকারীর নিরাপত্তায় মহিলা সিআরপিএফ নিয়োগ করা হয়েছে, একই ভাবে সংযুক্ত মোর্চা প্রার্থী মীনাক্ষীর নিরাপত্তাতেও জোর দেওয়া হয়েছে। বুধবার থেকেই তাঁর জন্য ৪ জন সশস্ত্র নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে।
বুধবার পুর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক সুমিতা পাণ্ডে জানিয়েছেন, কোনও রকম ঝামেলা বরদাস্ত নয়। প্রতিটি ক্ষেত্রে সুরক্ষায় কোনও খামতি থাকছে না বলে তিনি জানান। সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী যে কোনও বুথ এলাকাতেই ১৪৪ ধারা জারি থাকে। কিন্তু নন্দীগ্রামের ক্ষেত্রে শুধু এটুকুই নয়, গোটা বিধানসভা এলাকাতেই ১৪৪ ধারা বজায় থাকবে। জেলাশাসক বলেন, 'এ বার নন্দীগ্রামে ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে, যা বুধ ও বৃহস্পতিবার বলবৎ থাকবে। পাশাপাশি অতি সংবেদনশীল বুথগুলিতে ৪ ধরনের নজরদারির ব্যবস্থা থাকবে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাশাপাশি বুথে থাকবে লাইভ ওয়েবকাস্টিং, সিসিটিভি, ভিডিওগ্রাফি এবং অবজার্ভার। এ ছাড়াও নন্দীগ্রামের ৫০ শতাংশ বুথে লাইভ ক্যামেরায় নজরদারি চলবে, যা তদারক করা হবে তমলুকের নিমতৌড়িতে জেলাশাসকের কার্যালয় থেকে।'
নন্দীগ্রামের মোট ভোটার সংখ্যা ২ লক্ষ ৫৭ হাজার ৯৯৯। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লক্ষ ৩৩ হাজার ২৫৭। মহিলা ভোটারের সংখ্যা ১ লক্ষ ২৩ হাজার ৮৯৮। পূর্ব মেদিনীপুরের নিরাপত্তা আরও আটোসাঁটো করতে হলদিয়ায় পাঠানো হয়েছে আইপিএস অফিসার প্রবীণ ত্রিপাঠীকে। নন্দীগ্রামে থাকবেন গেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী। এ ছাড়াও নজিরবিহীন ভাবে সুন্দরবন অঞ্চলে ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।
বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফায় যে ৩০ কেন্দ্রে ভোট হবে, সেখানে ৫ হাজার ৫৩৫ বুথে ওয়েবকাস্টিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে, যাতে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ায় অনলাইন নজরদারি চালানো যায়। এ মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৭৩২, পূর্ব মেদিনীপুরে ১ হাজার ৬১১, পশ্চিম মেদিনীপুরে ১ হাজার ৮০২ আর বাঁকুড়াতে ১ হাজার ৩৯০টি বুথে ওয়েবকাস্টিংয়ের ব্যস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়াও ৩ হাজার ৪৯টি বুথে থাকছে সিসিটিভি ক্যামেরা। মাইক্রো অবজার্ভার থাকবে ১ হাজার ৯১৫টি বুথে। ২৮৬টি বুথে ভিডিয়ো ক্যামেরায় নজরবন্দি করা হবে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া। ইতিমধ্যেই ৬৩২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকছে ৩০ কেন্দ্রে। রাজ্যে এই মুহূর্তে ৮০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী রয়েছে। আরও ২০০ কোম্পানি আসছে ৮ এপ্রিলের মধ্যে।
শেষবার এমন নিরাপত্তার মধ্যে কবে ভোট দেখেছে নন্দীগ্রাম তা স্থানীয়রা বলতে পারছেন না। তাই এবার ভালোয় ভালোয় ভোট মিটলেই তারা খুশি।
- More Stories On :
- High voltage
- 2nd phase election
- Nandigram
- Tight security
- Central force
- Border seal