নাসরীন সুলতানা
মারা গেলেন ভারতীয় হকির কিংবদন্তী কেশব দত্ত। বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। মঙ্গলবার মাঝরাতে সন্তোষপুরের নিজের বাসভবনে মারা যান ১৯৪৮ সালে অলিম্পিকে সোনাজয়ী ভারতীয় দলের এই শেষ জীবিত সদস্য। কেশব দত্তর মৃত্যুতে ভারতীয় ক্রীড়ামহলে শোকের ছায়া।
১৯২৫ সালে অবিভক্ত ভারতের লাহোরে জন্মগ্রহন করেন কেশব দত্ত। সেখানেই বেড়ে ওঠা। পরে লাহোর থেকে মু্ম্বইয়ে চলে আসেন। ১৯৫২ সাল নাগাদ থেকে পাকাপাকিভাবে কলকাতায় বসবাস শুরু করেন। ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলার প্রতি দারুণ ঝোঁক ছিল। হকির পাশাপাশি ব্যাডমিন্টন ও অ্যাথলেটিক্সেও আগ্রহ ছিল। টেনিসও খেলতেন। পরে অবশ্য হকিকেই বেছে নেন। ১৯৪৭ সাল কেশব দত্তর হকিজীবনে অন্যতম সেরা মুহূর্ত। হকির জাদুকর ধ্যানচাঁদের নেতৃত্বে ভারতীয় দলের হয়ে পূর্ব আফ্রিকা সফরে গিয়েছিলেন। ১৯৪৮ অলিম্পিকে সোনাজয়ী ভারতীয় দলের সদস্য ছিলেন। ১৯৫২ হেলসিঙ্কি অলিম্পিকেও সোনাজয়ী ভারতীয় দলের সদস্য ছিলেন। এই অলিম্পিকে তিনি সহ অধিনায়কের দায়িত্বও সামলান। ১৯৫৬ মেলবোর্ন অলিম্পিকে দলে ডাক পেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর অফিস ছুটি না দেওয়ায় তৃতীয়বার অলিম্পিকে যেতে পারেননি।
১৯৫১ সালে মোহনবাগানে যোগ দেন কেশব দত্ত। টানা ১০ বছর মোহনবাগানের হয়ে খেলেছিলেন এই কিংবদন্তী হকি তারকা। ১৯৫১ থেকে ১৯৫৩ এবং ১৯৫৭–৫৮ মরশুমে মোহনবাগন হকি দলকে নেতৃত্বও দিয়েছিলেন কেশব দত্ত। সবুজমেরুণ জার্সি গায়ে ৬ বার লিগ এবং ৩ বার বেটন কাপ জিতেছিলেন। ২০১৯ সালে মোহনবাগান রত্নে ভূষিত হন কেশব দত্ত।
কেশব দত্তর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ ক্রীড়ামহল। ভারতীয় হকির প্রধান কর্তা জ্ঞানেন্দ্র নিঙ্গমবাম বলেন, ‘কেশব দত্তর মৃত্যুতে হকি ইন্ডিয়া শোকস্তব্ধ। ভারতীয় হকির একটা অধ্যায় শেষ হল। উনিই ছিলেন ১৯৪৮ অলিম্পিকে সোনাজয়ী দলের শেষ জীবিত সদস্য।’ সাইয়ের পক্ষ থেকেও শোক জনিয়ে টুইট করা হয়েছে। হকি অলিম্পিয়ান গুরবক্স সিং শোক জানিয়ে বলেন, ‘৬ মাস আগে কেশব দত্তর সঙ্গে শেষবার দেখা হয়েছিল। ভারতীয় হকির এক নক্ষত্রকে হারালাম। উনি আমার কাছে আইকন ছিলেন।’ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি টুইটারে শোকজ্ঞাপন করে লিখেছেন, ‘হকি বিশ্ব একজন কিংবদন্তীকে হারাল। ১৯৪৮ ও ১৯৫২ অলিম্পিকে সোনাজয়ী ভারতীয় দলের সদস্য ছিলেন। কেশব দত্তর মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। ওনার পরিবারকে সমবেদনা জানাই।’
- More Stories On :
- Hockey...India