সরকারি সম্পত্তির অপব্যবহার এবং প্রতারণা মামলায় দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হাওড়ার জগদীশপুরের প্রাক্তন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান তথা বিজেপি নেতা গোবিন্দ হাজরা। রবিবার রাতে তাঁকে বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গোবিন্দবাবু আবার রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।
আরও পড়ুনঃ বেশি করে সবজি খান, শরীর থাকবে সুস্থ, বাড়বে ইমিউনিটি পাওয়ার
কিছুদিন আগেই ডুমুরজলায় বিজেপির সভামঞ্চে এসে তিনি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। গোবিন্দ হাজরা তৎকালীন জগদীশপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান হিসেবে দায়িত্বে থাকাকালীন সরকারি সম্পত্তির অপব্যবহার করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই নিয়ে পঞ্চায়েতের তরফ থেকে অভিযোগ দায়ের হয়। সেই মামলায় রবিবার লিলুয়া থানার পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। সোমবার দুপুরে তাঁকে হাওড়া আদালতে তোলা হয়। গোবিন্দবাবু দাবি করেন, তাঁর যা বলার তিনি আদালতে জানাবেন। আদালতের প্রতি তাঁর বিশ্বাস রয়েছে। এদিকে, গোবিন্দ হাজরার গ্রেপ্তারি প্রসঙ্গে জগদীশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বর্তমান প্রধান যমুনা কয়াল জানান,অনেক দুর্নীতি করেছেন গোবিন্দ হাজরা। পঞ্চায়েতের সিসি ক্যামেরা ল্যাপটপ-সহ একাধিক জিনিস চুরি করেছেন। উপপ্রধান সোনামণি কর্মকার তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। গোবিন্দ হাজরা চরম অন্যায় করেছেন। শাস্তি থেকে অতি চরম শাস্তির প্রয়োজন। আগে গোবিন্দ হাজরা সামনে দাঁড়িয়ে কিছু বলার সাহস কারও ছিলনা। সেইজন্যে ভয় মানুষ চুপ করে থাকতো।
বালি জগাছা পঞ্চায়েত সমিতির কর্মধ্যক্ষ সুভাষ রায় জানান, 'সবকিছু গ্রাস করে রেখেছিলেন উনি। ত্রাস এবং বিভীষিকার পরিবেশ সৃষ্টি করেছিলেন পঞ্চায়েত ব্যবস্থার মধ্যে। দলকে সামনে রেখে একজন দুধ বিক্রেতা ৫০০ কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। ওঁর বিরুদ্ধে সঠিক পদক্ষেপই করেছে প্রশাসন। উনি বিজেপিতে চলে যাওয়ায় দলে গণতন্ত্র ফিরে এসেছে। স্বাভাবিকভাবে ওনার বিচার চেয়েছেন মানুষ। পরের জমি জবরদখল করা, প্রশাসনে থেকে প্রশাসনকে ভুলভাবে ব্যবহার করা, সরকারি সম্পত্তি নয়ছয় করা-সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।'
গোবিন্দ হাজরার গ্রেফতার নিয়ে মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, 'দলের সঙ্গে দুর্নীতির কোনও জায়গা নেই। গোবিন্দ হাজরার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে। তাই পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ অভিযোগ তদন্ত করে দেখবে। তৃণমূলে থাকলেই যে সে অন্যায় করেনি বা করবে না তা নয়। যদি কেউ অন্যায় করে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রশাসনের কর্তব্য। কারও বিরুদ্ধে যদি কোনও অভিযোগ থাকে তাহলে তিনি কোন দল করতেন, কি পদে ছিলেন তা বড় কথা নয়, তাঁর দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াই প্রশাসনের কর্তব্য'। এই প্রসঙ্গে বিজেপির হাওড়া জেলা সদর সভাপতি সুরজিৎ সাহা বলেন, 'তৃণমূল ছেড়ে কেউ বিজেপিতে এলেই তাঁকে চোর বানিয়ে দুর্নীতির দায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়। এক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
ধৃতের বিরুদ্ধে ৪০৯ ধারায় সরকারি সম্পত্তি আত্মসাৎ ও ৪২০ ধারায় প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়েছে। সোমবার হাওড়া আদালতে তোলা হলে বিচারক অভিযুক্তকে তিন দিন পুলিশি হেপাজতে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
- More Stories On :
- Rajiv Bannerjee
- Aid arrested
- Government property destroy case