চতুর্থ দফার ভোটপর্ব শুরুর আগেই প্রশান্ত কিশোরের (পিকে) একটি অডিও টেপ সামনে আনলেন বিজেপি নেতা অমিত মালব্য। সেখানে তৃণমূলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ভোট কুশলীকে বলতে শোনা গিয়েছে, রাজ্যের ভোটে নরেন্দ্র মোদি, হিন্দুত্ব, মেরুকরণ, অবাঙালি ভোট বড় ফ্যাক্টর। বলতে শোনা গিয়েছে, মতুয়া ভোটের দুই তৃতীয়াংশ এবং সামগ্রিক হিন্দু ভোটের অর্ধেক বা তার বেশি বিজেপি-র পক্ষে পড়বে। অমিতের দাবি, ওই অডিওটি পিকের ক্লাবহাউস চ্যাটের অংশ। পিকে অবশ্য কার্যত মেনে নিয়েছেন চ্যাটের কণ্ঠস্বরটি তাঁরই।
এ সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে প্রশান্ত শনিবার টুইটারে লিখেছেন, ‘আমি খুশি, বিজেপি তাদের নেতার কথার চেয়ে আমার চ্যাটকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। কথার নির্দিষ্ট কিছু অংশ তুলে ধরে উত্তেজিত না হয়ে তাদের পুরো চ্যাটটি প্রকাশ্যে আনা উচিত। আমি আগেও বলেছি, আবার বলছি, বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে ১০০ পেরোবে না'। তিনি দাবি করেছেন, অডিও ক্লিপটিতে তাঁর ক্লাবহাউস চ্যাটের অংশবিশেষ কেটে নিয়ে প্রকাশ করেছে। পুরো চ্যাটটি প্রকাশ করা হলে পরিষ্কার হবে তিনি ঠিক কী বলতে চেয়েছিলেন।
অডিও ক্লিপে প্রশান্তকে বলতে শোনা গিয়েছে, 'ভোট থাকলে তা মোদির নামে রয়েছে। ভোট থাকলে হিন্দুত্বের নামে রয়েছে। মেরুকরণ, মোদি, হিন্দিভাষী, দলিত এগুলোই ফ্যাক্টর। শুভেন্দু গেল, কী প্রশান্ত কিশোর এল, তা এখানে ধর্ত্যব্যের বিষয়ই নয়। মোদি এখানে জনপ্রিয়।' ১ কোটি হিন্দিভাষী এবং ২৭ শতাংশ দলিত ভোটার পুরোপুরি বিজেপি-র সঙ্গে রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ধর্মীয় মেরুকরণের গুরুত্বের কথাও।
সেই সঙ্গে চ্যাটে একটি প্রশ্নের উত্তরে মতুয়া ভোটের গুরুত্বের কথা জানিয়ে প্রশান্ত বলেছেন, 'আমাদের সমীক্ষার হিসেব বলছে, লোকসভা নির্বাচনের মতো একতরফা না হলেও এখনও মতুয়া ভোটের ৭৫ শতাংশ বিজেপি-র পক্ষে এবং ২৫ শতাংশ তৃণমূলের পক্ষে যাবে।'
তাঁদের সমীক্ষার ফল সম্পর্কে প্রশান্ত বলেন, 'আমরা ভোটারদের কাছে মূলত দু’টি বিষয় জানতে চেয়েছিলাম— প্রথমত, আপনি কাকে ভোট দেবেন। দ্বিতীয়ত, কে সরকার গড়বে। ‘কে সরকার গড়বে’ এই প্রশ্নের ক্ষেত্রে অধিকাংশই উত্তর দিয়েছেন, ‘বিজেপি’।' কেন এমন উত্তর এসেছে তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন প্রশান্ত। তাঁর কথায়, 'যাঁরা বিজেপি-কে ভোট দেবেন, তাঁরা তো বলছেনই, এমনকি বামেদের পক্ষে যে ১০-১৫ শতাংশ ভোটদাতা রয়েছেন তাঁদেরও দুই-তৃতীয়াংশ মনে করেন, বিজেপি সরকার গড়তে চলেছে।' ওই বাম ভোটদাতাদের কাছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারানোর প্রশ্নটাই প্রধান বলে দাবি প্রশান্তের। কারণ, ওই বাম ভোটদাতারা মনে করেন,বিজেপি সরকার গড়লে বামেদের সুদিন ফিরবে।
চ্যাটে তিনি বলেছেন, 'তৃণমূল স্তরে বিজেপি-র প্রচুর নিষ্ঠাবান কর্মী আছেন। হতে পারে তাঁরা বাম থেকে বিজেপি-তে এসেছেন। কিন্তু এখন তাঁরা একনিষ্ঠ ভাবে বিজেপি-র হয়েই কাজ করছেন। একটি-দু’টি জায়গা বাদ দিলে পশ্চিমবঙ্গের এমন কোনও এলাকা নেই, যেখানে বিজেপি-র প্রচুর নিষ্ঠাবান কর্মী নেই।' কিন্তু এমন পরিস্থিতি হলে তৃণমূল কত ভোট পেতে পারে? প্রশান্তের জবাব, 'আমার হিসেবে বিজেপি ৫০ থেকে ৫৫ শতাংশ হিন্দু ভোট পাবে।'
- More Stories On :
- Prashant Kishore
- Amit Malavya
- Audio tape
- Assembly election