Facial Paralysis: পৌষের শীতের আমেজের-র আড়ালে ফেসিয়াল প্যারালাইসিস-র সর্বনাশ
শীতকালের আগমন বার্তা বয়ে আনে দুর্গাপুজো আর কালী পুজো। এই উৎসব উৎসব মেজাজে বাঙালির ঘরে প্রবেশ করে উত্তরে হাওয়া। কবুগুরু রবীন্দ্রনাথ এর ভাষায়ঃশীতের হওয়ার লাগলো নাচন আমলকির এই ডালে ডালে।পাতাগুলি শিরশিরিয়ে ঝরিয়ে দিলো তালে তালে।।বাঙালি আবার শীত সহ্য করতে পারে না। কিন্তু সারা বছর শীতের অপেক্ষা করতে থাকে। আমার তো মনে হয় এই অপেক্ষা যত না শীতের জন্য তার থেকে বেশি নলেন গুড় আর মটরশুঁটির কচুরি খাবার জন্য। খাদ্যরসিক বাঙ্গালি বসে থাকে কবে শীতের দিনে ভালো করে চড়ুইভাতি করবে আর জমিয়ে আড্ডা দেবে।এই শীতেই আবার প্রকোপ দেখা যায় ফেসিয়াল প্যারালাইসিস এর। যদিও ফেসিয়াল প্যারালাইসিস এর সাথে শীতের কোনো সরাসরি সম্মন্ধ নেই কিন্তু এর একটি রিস্ক ফ্যাক্টর হলো শ্বাসনালীর ইনফেকশন এবং ঠান্ডা লেগে কানের ইনফেকশন যা এই শীতের সময় বাঙালিদের সঙ্গী। শীতকাতুরে বাঙালির আবার ফেসিয়াল প্যারালাইসিস কিংবা বেলস পালসি হলে আর রক্ষা নেই। ৭ নম্বর ক্রেনিয়াল নার্ভ এর ডিসফানশন হলে এই উপসর্গ দেখা যায়। এটি স্যার চার্লস বেলস (সার্জন,অনাটোমিস্ট) [১৭৭৪ থেকে ১৮৪২] প্রথম উল্লেখ করেন।কি হয় এতে?চোখ বন্ধ না করতে পারা।ঠোঁট ঠিকমতো নাড়তে না পারা, এর ফলে খেতে ও কথা বলতে অসুবিধা হয়।কিছু মানুষের খেতে অসুবিধা না হলেও শুধু কথা বলতে অসুবিধা হয়।চোখ খোলা থাকার জন্য শুকিয়ে যায় এবং এতে চোখের ইনফেকশন হয়।খাবার-এর স্বাদ চলে যায়। তাই যে বাঙালি সারাবছর এই সময়ের জন্য অপেক্ষা করেন, সাবধান। তবে সবার ক্ষেত্রে এই উপসর্গ দেখা যায় না।হাসি, ভুরু কোচকানো ও অন্য আরো ফেসিয়াল এক্সপ্রেশন নষ্ট হয়ে যায়।কিছু পেশেন্টের এর সাথে মাথা ব্যথাও থাকতে পারে।অনেকের আবার শব্দ-তে কষ্ট হয়।এর কারণ কি?ফেসিয়াল প্যারালাইসিস ও বেলস পালসির সঠিক কারণ বলা মুশকিল তবে কিছু রোগের উপসর্গ হিসেবে এটি দেখা দিতে পারে। যেমনঃ ডায়াবেটিস।হাইপারটেনশন।যে কোনও ধরণের ফেসিয়াল ইনজুরি।জিবি সিনড্রোম।মায়াস্থেনিয়া গ্রাভিস (Myasthenia Graves)।ইনফেকশন।টিউমার (Tumour)।শ্বাসনালীর ইনফেকশন।আক্রান্ত হলে কি করণীয়?যখনি এই উপসর্গ গুলো দেখতে পাবেন অবহেলা করলে চলবে না। কারণ আপনি যত ডাক্তার দেখাতে দেরি করবেন তত নার্ভ ড্যামেজ হতে থাকবে। ডাক্তার আপনাকে Steroids ও এন্টি ভাইরাল ওষুধ দেবে। তার সাথে, পারলে প্রথম দিন থেকে ফিজিওথেরাপি করাতে শুরু করুন। ফিজিওথেরাপিস্ট আপনাকে এক্সারসাইজ করাবেন এবং ফেসিয়াল মাসল এর স্টিমুলেশন দেবেন যা প্রচন্ড উপকারী।শীতের আমেজ উপভোগ করুন দারুন ভাবে আর তার সাথে সাথে সতর্ক থাকুন যেন এই রোগে আক্রন্ত না হয়ে পড়েন। যদি উল্লেখিত উপসর্গের কোনো একটি দেখতে পান তাহলে দেরি না করে চলে যান ডাক্তার আর ফিজিওথেরাপিস্ট এর কাছে। যত দেরি করবেন তত সারতেও দেরি হবে।ডঃ সত্যেন ভট্টাচার্যDr. Satyen Bhattacharyya) (PT)MPT, COMT, CMT, CDNP, DOMTP (Pursuing), PhD Scholar.Associate Professor : Burdwan Institute of Medical and Life SciencesEx-Physiotherapist : Sports Authority of India, Bardhamanআরও পড়ুনঃ মোবাইলের অতিরিক্ত ব্যবহার এক নতুন রোগের বার্তা নিয়ে হাজির টেক্সট নেক সিনড্রোমআরও পড়ুনঃ বসার ভুলে কত বড় সর্বনাশ হতে পারে, বিস্তারিত জানুনআরও পড়ুনঃ নিঃস্বাস এ নেই বিশ্বাস