• ১১ আষাঢ় ১৪৩২, শনিবার ২৮ জুন ২০২৫ ই-পোর্টাল

Janatar Katha

Banner Add
  • কলকাতা
  • রাজ্য
  • দেশ
  • বিদেশ
  • রাজনীতি
  • খেলার দুনিয়া
  • বিনোদুনিয়া
  • সম্পাদকীয়
  • নিবন্ধ
  • ভ্রমণ
  • রাশিফল
  • টুকিটাকি
  • চিত্রহার
  • বিবিধ
  • ভিডিও
  • এছাড়াও
    • উৎসব
    • ব্যবসা
    • স্বাস্থ্য
    • শিক্ষা
    • প্রযুক্তি
    • হেঁসেল

Third Part

নিবন্ধ

গল্প হলেও সত্যি কি? (তৃতীয় পর্ব )

তন্ময় থানায় ঢুকলো আর সোজাসুজি শ্রেয়ার কেবিনে এসে ঢুকলো, তখনও শ্রেয়া মন দিয়ে ওই কানের দুলটা দেখছিলো, তন্ময় ঢুকতেই সে সেটা টেবিলের উপরেই রেখে দিলো আর উঠে দাঁড়ালো সম্মানের খাতিরে।তন্ময়: আরে বসে পড়ো, এই মুহূর্তে তুমি লিডার।শ্রেয়া: কিন্তু স্যার আপনি তো আমার সিনিয়র।তন্ময়: সেসব পরে হবে, আগে আমার কিছু কথা আছে। বসো বলছি। শ্রেয়া চেয়ারে বসলো আর সামনেরটায় তন্ময়, তুমি হয়তো জানো না আমি তোমার দিদিকে ভালোবাসি। শ্রেয়া: জানি স্যার। ও আমায় সবই বলে।তন্ময়: জানো? তবে বলোনি কেন?শ্রেয়া: কারণ আমি চেয়েছিলাম দিদিই আমার পরিচয় দিক।তন্ময়: সব যখন জানাজানি হয়েই গেছে তখন আমি কি তোমাদের ওই দুজনের পরিবারে তৃতীয় সদস্য হতে পারি?শ্রেয়া: আমি আপনাকে নিজেই দাদার মতোই দেখি। তন্ময়: এদিকে আপনি বলে যাচ্চো। আজ থেকে তুমি বলবে আমায়।শ্রেয়া: আচ্ছা তাই হবে।তন্ময়: আর শ্রেয়া আর একটা ব্যাপার, নাহ থাক কাল বলবো, আগে আমি নিজে শিওর হই। চলো এবার নিজের ঘরে যাও, রাত হয়েছে অনেক।শ্রেয়া: আজ স্যার আবার পাহারায় বসেছে, আমি কি করে বাড়ি যাই। তন্ময়: বিগত দুদিন আমি বিশ্রাম নিয়েছি আজ তুমি নাও, বাড়ি যাও দিদির সাথে সময় কাটাও। কথা দিচ্ছি আমি ওই রাস্কেলকে ধরেই ছাড়বো।তন্ময় রাতের ডিনারটা সেরে নিলো থানার পাশের হোটেলটায়, এবার ওকে বেরোতে হবে রাতের এই শহরে টহল দিতে। ঠান্ডাটাও বেশ বেড়ে গেছে, বাইরে এখন ৬ ডিগ্রী। রাস্তায় বেরিয়ে একবার ভাবলো গার্গীকে ফোন করবে, এমন সময় তন্ময়ের ফোন নিজেই বেজে উঠলো, মৃদুল ফোন করেছে।তন্ময় ফোন ধরতেই শুনতে পেলো, স্যার বাঁচান আমায়! স্যার আমাকে মেরে ফেলবে..... স্যার!একটা প্রবল আর্তনাদে ফোন টা কেটে গেলো। তন্ময়ের বুক কাপছে, তাহলে কি মৃদুল আজকে শিকার হলো। তন্ময়ের আর ভাবার সময় নেই সে নিজের পিস্তল হাতে নিয়ে বাইরে বেরিয়ে পড়লো। রাতের অন্ধকার আর নিঃস্তব্ধ হাড় হিম করা পরিবেশ যে কোনো কারোর বুকে কাঁপুনি ধরিয়ে দিতে বাধ্য। কিন্তু আজকে তন্ময়কে ওই অপরাধীর শেষ দেখতেই হবে ,আর নয়। তন্ময়ের জীপ রাতের অন্ধকার ভেদ করে এগিয়ে চলেছে, কিন্তু কই ? কোথাও কিছু নেই। তন্ময় নিজের জীবনে এত জটিল কেস কোনোদিন দেখেনি। এই কেস টার উপর সে জীবনের সবচেয়ে সময় খরচ করে ফেলেছে। এইসব ভাবতে ভাবতে সে সামনে এগিয়ে যাচ্ছিল হটাৎ তার গাড়ির সামনে এসে পড়ল গার্গী। সে সজোরে ব্রেক কষে গাড়িটা কোনমতে থামলো। গার্গী প্রচণ্ড ভয় পেয়েছে, সে তন্ময়কে দেখতেই তার কাছে এসে তাকে জড়িয়ে ধরলো। তন্ময় জিজ্ঞেস করলো, কি হয়েছে?গার্গী: একটা বিভৎস দেখতে জন্তু আমার সামনে একটা লোককে মেরে খেয়ে ফেললো, এখন এখান থেকে তাড়াতাড়ি চলো নাহলে আমিও মরে যাবো।তন্ময়: আমি আছি তো। চলো আমিও দেখতে চাই পশুটাকে।গার্গী: প্লিজ তন্ময় চলো এখান থেকে।তন্ময়: গার্গী আমি এই কেসটার জন্য নিজের সম্মান হারিয়েছি আমি ওই জন্তুটাকে ছাড়বোনা। কোনো মতেই না।গার্গী: তন্ময় , প্লিজ তুমি পরেও তদন্ত করতে পারবে কিন্তু আজকে না। আমি দেখেছি কিরকম ভয়ানক ছিল ওর চোখ গুলো ।তন্ময়: এই জীপ টা নিয়ে এখান থেকে চলে যাও।আমি ওই পশুটাকে না দেখে যাবো না কোনোভাবেই।গার্গী: আমি তোমাকে একা ফেলে এখন থেকে কোনো ভাবেই যেতে পারিনা।তন্ময়: এটা আমার অর্ডার গার্গী। তুমি এখনই বেরিয়ে যাও এখান থেকে। আজকে আমি কোনোভাবেই যেতে পারবনা এখান থেকে।এই বলে তন্ময় এগিয়ে যেতে থাকলো সামনের দিকে, হাতে স্রেফ একটা পিস্তল। পিছনে না দেখলেও সে বুঝতে পারলো তার পিছনে পিছনে গার্গী আসছে। সে আবার বললো, গার্গী যাও এখান থেকে।কিন্তু কোনো সাড়া পেলনা। সে আবার বললো, গার্গী আমার কথা কি তুমি বুঝতে পারছনা? যাও এখান থেকে। তুমি থাকলে আমার কাজের অসুবিধা হবে। এবারেও কোনো উত্তর এলোনা। তোমার সাথে সাথে আমারও বিপদ বাড়বে, প্লিজ যাও।কিন্তু এবারেও কোনো উত্তর এলোনা।তন্ময় বিরক্ত হয়ে পিছন ফিরে তাকালো, কিন্তু যা দেখলো সেটা সে কখনো কল্পনাও করতে পারেনি। হতবাক হয়ে সে শুধু দাড়িয়ে রইলো, যেনো নিজের সমস্ত শক্তি এক মুহুর্তের মধ্যে সে হারিয়ে ফেলেছে।তন্ময় দেখছে তার সামনে দাড়িয়ে শ্রেয়া, মুখে রক্ত, হাতেও রক্ত লেগে। তন্ময় বুঝতে পারলনা ব্যাপারটা। প্রথমে ভাবলো হয়তো শ্রেয়া কোনোভাবে আহত হয়েছে কিন্তু তারপরেই মনে হলো এই রক্ত শ্রেয়ার শরীরের নয় বরং এই রক্ত অন্যকারোর । তন্ময় বলে উঠলো, শ্রেয়া এটা কি?? তুমি এই অবস্থায়?? কি করেছ তুমি?শ্রেয়া বড়ই অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে তন্ময়ের দিকে,কোনো কথা বলছেনা। শুধু মুখ দিয়ে গোঙানির শব্দ হচ্ছে। হটাৎ শ্রেয়া জাপিয়ে পড়লো তন্ময়ের উপর। বড়ই হিংস্র তার দৃষ্টি, সে তন্ময়ের ঘাড়ে কামড় বসানোর চেষ্টায় রয়েছে সে, শুরু হলো ধস্তাধস্তি। দুজনেই দুজনকে সমানে সমানে পাল্লা দিয়ে চলেছে, সবে আজকের শ্রেয়াকে দেখলে চেনার উপায় নেই এই শ্রেয়াই সেই পুলিশ অফিসার যে দিনেরবেলায় সবার রক্ষাকর্তী আর রাতের অন্ধকারে আজ সে হয়ে উঠেছে এক পিশাচিনী । তন্ময় বহু কষ্টে শ্রেয়া লাথ মেরে দূরে ফেলে দিলো আর হাতড়ে নিজের পিস্তলটা মাটি থেকে হাতে তুলে নিল । আর তারপরেই সোজা উঠে দাঁড়িয়ে পিস্তল তাক করলো শ্রেয়ার দিকে, শ্রেয়া হিংস্র গর্জন করেই চলেছে।এখন শ্রেয়া তন্ময়ের গান পয়েন্টে। তন্ময় গুলি চালাতে যাবে এমন সময় কেও একজন সজোরে তন্ময়ের মাথায় পিছন থেকে মারলো কোনো রড জাতীয় পদার্থ দিয়ে। তন্ময় জ্ঞান হারিয়ে লুটিয়ে পড়লো মাটিতে ।যখন তন্ময়ের জ্ঞান ফিরলো তখন সে একটা ঘরে আধ শোয়া অবস্থায় পড়ে আছে। সে বুঝল তার হাত পা বাঁধা। সে চিৎকার করে উঠলো, শ্রেয়া এইগুলো কি ধরনের অসভ্যতা। তুমি জানো না আমি কে! আমি কি করতে পারি তোমার সাথেএমন সময় তন্ময়কে অবাক করে দিয়ে দরজা দিয়ে ঢুকলো গার্গী।তন্ময়: গার্গী তুমি?? শ্রেয়া কি তোমার সাথেও কিছু করেছে?? উত্তর দাও গার্গী। কোথায় সেই বিশ্বাসঘাতক? আমার হাত পা টা খুলে দাও একবার তারপর ওকে দেখছি আমি।গার্গী: তন্ময় ক্ষমা করো কিন্তু শ্রেয়া বিশ্বাসঘাতক নয়।তন্ময়: মানে? কি বলছো কি তুমি ?গার্গী: তোমার সাথে বিশ্বাসঘাকতায় আমি জড়িত।তন্ময় হতবাক হয়ে গেলো, তার মুখ দিয়ে কথা বেরোচ্ছে না। এদিকে গার্গী বলে চললো, শ্রেয়া মানসিক ভারসম্যহীন। ওর মধ্যে একধরণের অদ্ভুত অসুখ আছে যেটা দেখা দেয় কয়েক বছর আগে একটা কেস সল্ভ করতে গিয়ে।তন্ময়: তুমি কি বলতে চাইছো ? কোন কেস?গার্গী: দাড়াও আমাকে শেষ করতে দাও। আমার কথা শেষ হলেই তুমি সব বুঝে যাবে। ওটা ছিল দুর্গাপুরের কেস। ওটা সল্ভ করার পর থেকেই ওর মধ্যে একটা পরিবর্তন আমি লক্ষ্য করেছিলাম। ধীরে ধীরে পরিস্থতি এমন হয় যে ওর মধ্যে দুটো সত্তা জেগে ওঠে, ১. সারাদিন সবার চোখের সামনে একজন কর্তব্যরতা পুলিশ কর্মী যে মানুষের সেবা করে, মানুষকে সুরক্ষা প্রদান করে আর ২. রাত বাড়লেই সেই পুলিশ কর্মী হয়ে যায় একজন নরখাদক। হ্যাঁ তন্ময় তুমি ঠিকই শুনছো ওই সেই নরখাদক, সেই জন্তু। আমি জানতাম না গোটা ঘটনাটা , এই মাত্র কয়েকদিন আগেই সমস্ত জানতে পারি আর ভাবতে থাকি কিভাবে শ্রেয়া কে না জানিয়ে শ্রেয়ার মধ্যে থেকে সেই নরখাদক কে শেষ করবো। শ্রেয়া যে আমার নিজের বোন, ওকে আমি মরতে দিতে পারিনা।তন্ময়: কিন্তু এটা কিভাবে সম্ভব?গার্গী: সেটা আমিও বুঝিনি তন্ময়। কয়েকমাস আগে আমাদের গুদাম ঘরে যখন একটা লোকের আধ খাওয়া দেহ পেলাম তখন বুঝলাম আমার বোন রাতে পাহাড়া নয় বরং শিকারের খোঁজে বেরিয়ে যায়। আমি খোঁজ নিলাম, ডক্টর মাথুরের সাথে কনসাল্ট করলাম আর উনিই শ্রেয়ার অজান্তেই ওর অবচেতন মনের সব কথা বের করে এনে। শ্রেয়া একজন সৎ পুলিশ অফিসার কিন্তু ওর মনের কোনো এক গভীরে লুকিয়ে আছে ওই নরখাদক সত্ত্বা। ও এখনো ট্রিটমেন্টে রয়েছে। আর অবাক বিষয় গার্গী নিজেই জানেনা ও রাতের অন্ধকারে এইসব করে বেড়ায়। ও আমার কানের দুল পর্যন্ত খুঁজে পেয়েছে খুনের জায়গায় আর ভাবছে আমি নাকি খুন গুলো করছি।তন্ময়: কিছুই মাথায় ঢুকছেনা আমার ঠিক। এসব কি হচ্ছে কেন হচ্ছে? এসব সত্যিই হচ্ছে?গার্গী: হচ্ছে তন্ময়, হচ্ছে। ডক্টর মাথুর বলেছেন ওই দুর্গাপুরের কেস সলভ করতে গিয়ে যখন প্রায় ১৫ দিন শ্রেয়া ওদের হাতে বন্দি হয়েছিল তখন ওকে প্রতিরাতে এই মানুষের মাংস খেতে দেওয়া হতো। পেটের খিদে মেটাতে ওকে খেতেও হয়েছে সেসব আর অবশেষে যখন ওকে খুঁজতে খুঁজতে পুলিশ মূল অপরাধী পর্যন্ত পৌছালো ততদিনে বোন আমার মানুষের মাংসের স্বাদ পেয়ে গেছে।তন্ময়: গার্গী আমকে খুলে দাও। আমি কথা দিচ্ছি আমি তোমায় সাহায্য করবো। আর এই কথা তুমি আর আমি ছাড়া কেও জানবে না। ট্রাস্ট মি!গার্গী: আমি তোমায় বিশ্বাস করি তন্ময়, ভালোবাসি, প্লিজ আমার আর আমার বোনের পাশে থেকো। গার্গী তন্ময়ের সমস্ত বাঁধন খুলে দেয়, কিন্তু তন্ময় নিজেই ছিল বিশ্বাসঘাতক, সে নিজের সাফল্যের জন্য সব করতে পারে, নিজে বাঁধন মুক্ত হতেই সে পাশে পরে থাকা লাঠি দিয়ে গার্গীর মাথায় সজোরে আঘাত করে। গার্গী লুটিয়ে পড়ে মাটিতে।তন্ময় বলে, সরি গার্গী, আমি তোমায় ভালোবাসি ঠিকই কিন্তু এই কেসটায় আমায় জিততেই হবে।তন্ময় ঘর থেকে ছুটে বেরিয়ে আসে আর মূল বাড়ি থেকে বেরিয়ে ওই গুদাম ঘরটায় যায়, ঘরে ঢুকে দেখে সামনে দাড়িয়ে শ্রেয়া। তন্ময় বলে ওঠে, শ্রেয়া সারেন্ডার করো, নাহলে এখনই আমি কিন্তু.... এক্ষুনি ফায়ার করবো।শ্রেয়া অতি ক্রুর দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে তন্ময়ের দিকে আর ক্রমাগত গর্জন করতেই থাকে। এরপরের শ্রেয়া ছুটে আসে তন্ময়ের দিকে, তন্ময় একটা গুলি চালায় শ্রেয়ার হাতকে লক্ষ্য করে, কিন্তু সেটা লক্ষ্য ভ্রষ্ট হয়। শ্রেয়া দৌড়ে এসে তন্ময়ের উপর ঝাপিয়ে পড়ে। শুরু হয় আবার লড়াই, তন্ময় আপ্রাণ চেষ্টা করে শ্রেয়াকে বাগে আনার কিন্তু শ্রেয়া যেন আরো বেশি শক্তিশালী এবারে। তাও তন্ময় কোনোভাবে শ্রেয়াকে দূরে ছুড়ে ফেলে আর পিস্তল তুলে নিয়ে গুলি চালাতে যায়, কিন্তু একি গুলি কোই?শ্রেয়া আবারো উঠে ওর দিকে দৌড়ে আসে, বিপদ বুঝে তন্ময় পালাতে যায় কিন্তু পা পিছলে মাটিতে পরে যায়, সাথে সাথেই শ্রেয়া ওর উপর ঝাঁপিয়ে পরে, তবে এবার আর তন্ময় কোনো প্রতিরোধের সুযোগটুকু পায়না, শ্রেয়া তন্ময়ের নুলি ছিঁড়ে ফেলে।২ মাস পর: তন্ময়ের মৃত্যুর পর গোটা ডিপার্টমেন্ট হাল ছেড়ে দেয়, শ্রেয়া নিজের ব্যার্থতার বোঝা মাথায় নিয়ে চাকরি ছেড়ে দেয় আর চলে যায় মুম্বাই, সেখানে তার কোনো এক কাকা আছেন। অবশ্য তাকে জোর করেই মুম্বাই পাঠায় গার্গী, সেখানে শ্রেয়ার ট্রিটমেন্ট করায় তার কাকা। গার্গী চাইলে নিজের বোনের ট্রিটমেন্ট করতেই পারতো কিন্তু সে চায়নি পুলিশ কোনোভাবে তার বোনকে সন্দেহ করুক। প্রায় ৬ মাসের ট্রিটমেন্টের পর শ্রেয়ার ভিতরের নরখাদক সত্তা সম্পূর্ণরূপে লোপ পায় শ্রেয়ার অজান্তেই আর এইভাবেই শেষ হয় জলপাইগুঁড়ির আতঙ্ক।ক্রমশ...... (পরের পর্বে)লেখকঃ সায়ন্তন গোস্বামী। (Sayantan Goswami)

এপ্রিল ২৭, ২০২৫
নিবন্ধ

ফারাও এর দেশ ঘুরে... (ভ্রমণ কাহিনী) তৃতীয় পর্ব

পরের দিনের প্রথম গন্ত্যব্য হল Cairo Museum। সত্যি কথা বলতে এত বড় মিউসিয়াম আমি আগে দেখিনি। শুনলাম এই মিউসিয়াম ভাল ভাবে পুরোটা দেখতে হলে প্রায় এক সপ্তাহ লাগবে। অত সময় আমাদের নেই, বোধকরি আমাদের মত যারা এখানে বেড়াতে আসেন তাদের সবার ক্ষেত্রেই এক সমস্যা ঘটে। তাই আমাদেরও ইচ্ছে যে অল্প সময় যতটা বেশি দেখে নেওয়া যায়। এই মিউসিয়াম ১৫০ থেকে ২০০ বছরের পুরনো। এটি দুটি তলায় ভাগ করা। নীচের তলায় সময়কাল ধরে (period wise) ঘর সাজানো রয়েছে, যেমন Old Kingdom, Middle Kingdom, New Kingdom ইত্যাদি। আর দ্বিতীয় তলায় ঘর সাজান হয়েছে বিভিন্ন বিষয় অনুযায়ী, যেমন sarcophagus room, animal mummy room ইত্যাদি। তার মধ্যে দুটি ঘর হল বিশেষ আকর্ষণীয়, - Pharao Tut-Ankh-Amun এর ঘর, আর Royal Mummy room।কায়রো মিউজিয়ামমমি রুম ভাবতেই মনে পড়ে গেল, একটি বই এ পড়া সেই বিচিত্র অংশটির কথা। তখন ১৯ শতকের সময়। মিশর ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অংশ।সেই সময় থেকেই মমির খোঁজ চলছে। রাজা বা ফারও দের মমি না হলেও যে রকমই মমি হোক না কেন তাকে সমাধি থেকে বের করে আনা হচ্ছে, পরীক্ষা করা হবে এই অজুহাতে। জাহাজ ভর্তি মমি ও অন্যান্য সামগ্রী চলে যাচ্ছে ইউরোপ। প্যারিসেও যেত মমি সেই সময়। প্যারিসের বিভিন্ন বাড়িতে সেই মমিকে দেখার জন্য টিকিট কাটা হত। যেন সার্কাস হচ্ছে। ভাবলেই কেমন মনে রাগ জন্মে যে, অসহায় একটি মমি, সে যে মানুষেরই হোক না কেন, শেষ ঘুমে ঘুমিয়ে আছে, তাকে সবার সামনে দেখানটাই যেন ছিল গর্বের। আবার ইংল্যান্ডে যৌবন ধরে রাখার জন্য কোন মানুষ নাকি বিচার দিয়েছিলেন মমি গুঁড় করে ট্যাবলেট বানিয়ে খাবার। তাই হাজার হাজার মমি ইংল্যান্ড নিয়ে আসতো, তাদের গুঁড়ো করা হত আর বিভিন্ন লতাপাতা মিশিয়ে বড়ি বানিয়ে খেত। এর থেকে আমরা বুঝতে পারি যে কি পরিমানে ইতিহাসের অবলুপ্তি ঘটেছে সেই সময়, আর কি পরিমান কুসংস্কারে ভরা ছিল তখনকার ইউরপীয়দের মন। কি ভাবে সমস্ত সুত্র কে নষ্ট করা হয়েছে শুধুমাত্র মজার খাতিরে। যেমন নষ্ট হয়েছে আমাদের সাঁচি স্তুপ বা অমরাবতি স্তুপ। তাতেও শিক্ষিত ইউরোপিয়ানরা যা সংগ্রহ করেছেন, তা এই মিউসিয়ামে আছে। মমি রুম এ যাবার আগে তাই বার বার এই কথা গুলোই মনে পড়ছিল।মিউসিয়ামে ঢুকতেই প্রথমেই চোখে পড়ে রসেত্তা পাথরটি। এই পাথরটি খুব সাধরন দেখতে কিন্তু এর ক্ষমতা সত্যি ই অসাধারন। তবে কায়রো মিউজিয়ামে যেটি আছে,সেটি একটি replica, আসল পাথরের অংশটি লন্ডনে আছে। এর গল্প হয়ত অনেকেই জানে। আর যারা জানেনা তাদের জন্য বলি, এই পাথরটি প্রথম আবিষ্কার হয় ১৭৯৯ সালে। সেই সময়ে ফ্রান্সের সম্রাট নেপলিয়ান মিশরে যুদ্ধ করছিলেন। তাঁরই এক সৈন্য এটি খুঁজে পায়। এটি হয়ত তখন রাশিদ বা রসেত্তা নামের একটা শহরের কোন মন্দিরের দেওয়ালে পিলার হিসেবে ছিল। খেয়াল করে দেখা যায় সেখানে কোন একটি বিশেষ বার্তা তিনটি ভাষায় লেখা আছে। প্রথমটি মিশরীয় হিয়েরগ্লিফ, তারপরে দেমতিক (Demotic) আর শেষে গ্রীক। এই পাথরটি আবিষ্কার হবার পরই মিশরের ভাষা কে পাঠ করার চেষ্টা শুরু হল। ফ্রান্সের পর এই অঞ্চল যখন ব্রিটিশদের দখলে আসে তখন তারা এই পাথর নিয়ে লন্ডন চলে যান। আর সেখানেই পাঠোদ্ধার পর্ব শুরু। আর সেই দিন থেকে মানে ১৮০২ সাল থেকে ওই পাথর লন্ডনে আর ১৮২২ নাগাদ একজন ফ্রেঞ্চ লিপি বিশারদ পাঠোদ্ধার সম্পূর্ণ করেন। এই মিউসিয়ামে তার একটা replicaআছে, আরও একটা replica, আলেক্সান্দ্রিয়া তে রাখা আছে, যে অঞ্চল থেকে আসলে এই পাথরটিকে খুঁজে পাওয়া যায়।রসেত্তা পাথরে তিন ভাষার লিপিফারাও Tut-Ankh-Amun এর জন্য একটি বিশেষ ঘর আছে, সেই ঘরটিতে ছবি তোলা নিষেধ। সেই ঘরটিতে Howard Carter এর খুঁজে পাওয়া প্রায় সব জিনিসই আছে। শুধুমাত্র ফারাও এর মমি করা দেহ আর তার একটি কফিন বা সারকাফাগাস রয়ে গেছে আসল সৌধ তে, যা আছে Valley of Kings এ। এই বিশেষ ঘরটি ফারাও এর সৌধ থেকে পাওয়া ৪০৩০ টি জিনিস দিয়ে সুন্দর করে সাজানো। ফারাও এর মমি করা দেহ থেকে ২০০ রকমের গয়না পাওয়া গেছে। সেগুলির বেশীরভাগই সোনা দিয়ে তৈরি। সোনার সাথে কিছু আধা-মুল্যবান (Semi-Precious) পাথর দিয়ে তৈরি। তার মধ্যে Carnelian বা Lapis Lazuli র ব্যবহার চোখে পড়ার মত। আমাদের হরপ্পা সভ্যতাতেও এই দুই পাথরের ব্যবহার বিশেষ ভাবে চোখে পরে, তার থেকে আবার আমরা এই সত্যে উপনীত হই, যে এই সমকালীন সভ্যতাগুলির মধ্যে যোগাযোগ ভাল ভাবেই রক্ষা করা হত। আজকের দিনে দাঁড়িয়েও অবাক হয়ে যেতে হয় সেই সব গয়নার নকসা ও রঙ সমন্বয় দেখে। এই ঘরেই রয়েছে ফারাও তুত-আঙ্খ-আমন এর সেই বিখ্যাত সোনার মুখোস, যা ১১ কেজি সোনা দিয়ে তৈরি । এই মুখোস দেখলে সত্যিই মনে হয় যে রাজা তুত খুব অল্প বয়সে মৃত্যু বরণ করেন। এ ছাড়াও আছে রাজার শেষ কফিনটি বা সারকাফাগাস। এটিও নিরেট ৩ টন সোনা দিয়ে বানান হয়েছিল। রাজার ব্যবহৃত দুটি ছুরি আছে, একটি সোনার আর একটি লোহার ।এই ছুরি দুটি নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে, কারণ লোহা দিয়ে তৈরি ছুরি কি ভাবে লৌহ যুগের আগে পাওয়া যেতে পারে? এর কোন উত্তর সঠিক ভাবে জানা যায়না। কেউ বলে তখন লোহা ছিল, তখন প্রশ্ন জাগে তাহলে বাকি কোথাও তার ব্যবহার নেই কেন বা উল্লেখ ও নেই কেন? আবার কেউ বলেন পরে লৌহ যুগে কেউ আবার করে সমাধি খুলে সেই ছুরি রেখে আসেন। এও এক প্রকারে অসম্ভব, কারন মিশরীয়দের বিশ্বাস অনুযায়ী সমাধিস্ত হয়ে গেলে সেই সমাধি আর খোলা হবেনা কারণ তাতে আভিশাপ লাগবে। আর যদি কেউ খোলে সে হবে সমাধি চোর। সে সব জিনিস রেখে আবার একটা নতুন অপূর্ব ছুরি রেখে সমাধি বন্ধ করে বেরিয়ে আসবেনা। কারণ কার্টার যখন সমাধি আবিষ্কার করেন তখন তার মধ্যে প্রায় সবই সাজানো ছিল আর এও বিশ্বাস করা হয় যে তা আগে কখনই বের করা হয়নি।ফারাও, তুত-আঙ্খ-আমন এর দুটি ছুরিএছাড়াও আছে রাজার রাজমুকুট, যেখানে উচ্চ মিশর ও নিম্ন মিশরের দুই রক্ষাকর্তা দেবতার মুখ বসানো। এরা হলেন একজন কোবরা সাপ ও অন্যজন শকুনি পাখি । এদের চোখ গুলি স্ফটিক দিয়ে বানানো, আজও এতটাই উজ্জ্বল যে মনে হয় আমার দিকেই তাকিয়ে আছে যেন। আর সেই দৃষ্টি যেন অত্যন্ত রোষ পূর্ণ। তীব্র রাগ জমা করা আছে সেই চোখ গুলির মধ্যে।রাজা তুত এর প্রতিটি আঙ্গুল সোনার পাত দিয়ে মুড়ে দেওয়া হয়েছিলো, এই ঘরে সেগুলিও শোভা পাচ্ছে। এর সাথে আছে রাজার বুকের উপর বসানো ছিল একটি সৌভাগ্যের প্রতীক, যা একটি গুবরে পোকার আদলে তৈরি । যাকে স্কারাব (Scarab) বা খেপ্রিও (Khepri) বলা হয়ে থাকে।Scarab বা Khepri, মিশরীয়দের সৌভাগ্যের প্রতীকএই ঘরের ঠিক বাইরে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে রাজার সব কটি সারকাফাগাস। সব কটি সারকাফাগাস ই সোনার পাত দিয়ে মোড়া, ভিতরে হয় পাথর বা কাঠ দিয়ে তৈরি। আর একটি আছে নিরেট সোনার। যার ওজন ৩ টন। অসম্ভব সুন্দর দেখতে সেটি আর আজও সমান উজ্জ্বল।ফারাও, তুত-আঙ্খ-আমনের গয়না ও রাজমুকুটএ সবের সাথে আছে রাজার ব্যবহার করা একটি সোনার চেয়ার। চেয়ারটিতে সোনা ও আধা-মুল্যবান পাথর আর ফিয়ান্স (Fience an art material made from burnt silica and natural colours, specially used in ancient Egypt, Mesopotamia and Harappa) দিয়ে খোদাই করা এক অপূর্ব চিত্র। সেই চিত্রতে দেখা যাচ্ছে, রাজা তুত বসে আছেন আর তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে তাঁর রানী আঙ্খ-সনামন। রানীর হাতে সুগন্ধীর পাত্র। হয়ত সেই সুগন্ধী রানী লাগিয়ে দিচ্ছেন রাজার গায়ে, পরম যত্নে ও ভালবাসায়। কি সুন্দর একটি ভালবাসার ছবি ধরা রয়েছে সেই চেয়ারটিতে। আজ সেই ছবির মানুষ দুজন কেউ ই নেই, একদিন ছিলেন, তবু তাদের ভালবাসার ছবি রয়ে গেছে, যুগ যুগান্তর ধরে।সোনার সারকফাগাসএর সাথেও আছে আলাবাস্টর পাথরের তৈরি ৪ টি ক্যানোপিক জার, যার মধ্যে রাজার দেহের কিছু অঙ্গ ভরে রাখা আছে, আর সেই জার গুলিকে পাহারা দিচ্ছেন স্বয়ং দেবী ইসিস।ফারাও তুত-আঙ্খ-আমনের সোনার চেয়াররাজার সব কটি সারকাফাগাস ভাল ভাবে বন্ধ করার পর সৌধ তে বসানো ছিল, একটি কালো পাথরের বেদীর উপর, কালো পাথর ও সোনা দিয়ে তৈরি আনুবিস বা শেয়াল দেবতা। এই দেবতা হলেন পরবর্তী জীবনে যাবার দেবতা। এই হল সত্যজিতের সেই শেয়াল দেবতা।ফারাও এর সোনার সারকফাগাসের মুখHoward Carter বলেছেন যে, রাজা তুত এর সৌধতে প্রথম বার প্রবেশের সময় হঠাৎ করে আনুবিসের এই মূর্তি দেখে তিনি এক রকম ভাবে ভয়ই পেয়ে গিয়েছিলেন। আনুবিস, রাজার পরবর্তী জীবনে প্রবেশের পথ কে সুগম ও সুনিশ্চিত করতে পাহারায় বসেছেন। সেখানে তাঁর নির্দেশ অমান্য করে, কার সাধ্যি। তবে সেই সাহস যখন কার্টার দেখিয়েছেন, সেটি যেন মোটেই আনুবিস পছন্দ করছেন না।আলাবাস্টার পাথরের ক্যানপিক জারএরপর আমরা Royal Mummy Room গেলাম। এই ঘরে ঢোকার জন্য আলাদা টিকিট লাগে। এখানে বর্তমানে ১২ টি রাজবংশীয় মমি রাখা আছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ফারাও রামাসেস দ্বিতীয়, রানী হাতসেপ্সুট, বা ফারাও আমনহটেপ এর। প্রতিটি মমিই খুব সুন্দর করে সংরক্ষণ করা। কাঁচের লম্বা বাক্সের মধ্যে রাখা। বুক থেকে পা অবধি পাতলা সাদা কাপড় দিয়ে ঢাকা। কাপড়টি দিয়েই কোন কালে সেই মমি কে বেঁধে রাখা হয়েছিল, তার ফলে কাপড়টি বেশ মলিন হয়ে উঠেছে। এই ঘরে কথা বলা নিষেধ , ছবি তোলা ত বটেই। ঘুমন্ত রাজাদের সম্মান প্রদর্শনের জন্য। এখানে ঢুকে একটা অন্য রকম অনুভূতি হয়। হাজার হাজার বছর আগেকার রাজা, সম্রাটরা আমার সামনে পরম শান্তিতে, পরম বিশ্বাসের সাথে ঘুমিয়ে আছেন। একদিন যারা সমগ্র মিশর রাজত্ব করেছেন, আজ আমার সামনে শুয়ে। ইতিহাসকে এভাবে কোনদিন চোখে দেখা সম্ভব, ভাবতে পারিনি। বিজ্ঞান ও ইতিহাস এর এত সুন্দর মেল বন্ধন দেখলে অবাক হয়ে যেতে হয়। অবাক হবার ঘোর কাটতে একটু সময় লাগল। তারপর ঘর টি ঘুরে দেখতে লাগলাম।দেবতা আনুবিস, যিনি ফারাও তুতকে পাহারা দিচ্ছিলেনসব থেকে সুন্দর ভাবে আছে ফারাও রামাসেস দ্বিতীয়ের মমি। তাঁর সাদা চেহারা, সাদা চুল তাঁকে সত্যিই গ্রীক দেবতার সাথে তুলনা করাতে বাধ্য করে। সত্যি মনে হয় যে এমন একজন মানুষ সামনে দাঁড়িয়ে রাজত্ব করলে কি অসাধারণ হবে ব্যাপারখানা। চোখের উজ্জ্বলতাতেই ভক্তি এসে যেতে বাধ্য। এখানে একটা মজার ব্যাপার জানলাম। ফারাও রামেসেস এর হাত দুটি যেন একটু খোলা অবস্থায় রয়েছে, বুকের উপর লাগানো নেই। শোনা গেল যে, ফরাসী প্রত্নত্বত্তবিদের দল যখন এই মমি আবিষ্কার করেন ও সংরক্ষণের কাজ করছিলেন, তখন হঠাৎ রাজার হাত দুটি খুলে গিয়ে সোজা হয়ে যাবার চেষ্টা করে। প্রথমে সবাই খুব পেয়ে যান, তবে পরে বোঝা যায় যে, হয়ত রাজার দেহকে মমি প্রক্রিয়া শুরু হতে দেরী হয়, তাতে মৃত শরীর শক্ত (Rigor Mortis) হয়ে যেতে থাকে।প্রত্যেকটি মমি অত্যন্ত সুন্দর ভাবে সংরক্ষিত। প্রায় প্রত্যেকটি মমির চুল, দাঁত, হাত-পা, নখ এতটাই স্পষ্ট আর পরিষ্কার যে মনেই হয়না তারা হাজার হাজার বছর আগে মৃত। এই রাজা, রানীদের দেখে বার বার একটা কথা খুব মনে হচ্ছিল যে, আমাদের দেশের ইতিহাসেও তো কত রাজা রানীর কথা পড়েছি শুনেছি। কিন্তু নিজের চোখে তাদের দেখার সুযোগ তো হয়নি বা ঘটার ও কথা নয়। তবে এই ঘরে শুয়ে থাকা রাজারা প্রত্যেকে ৪০০০ হাজার বছর আগে দাপটের সাথে রাজত্ব করেছেন, অথচ নিজের চোখের সামনে তাদের দেখতে পাচ্ছি। এই অনুভূতিটা খুব অন্য ধরনের। এই ঘরে এসে আবার যেন সময়ের হিসেব টা গুলিয়ে গেল। বার বার মনে হতে লাগল যে আমি বোধহয় টাইম মেসিনে চেপে ঘুড়ে বেড়াচ্ছি।এছাড়াও সারা মিউসিয়াম জুড়ে অসংখ্য সারকফাগাস, অসংখ্য মূর্তি দেখতে পেলাম। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য রানী হাতসেপ্সুতের স্ফিংক্স মূর্তি। রাজা খুফুর একমাত্র ছোট্ট একটি মূর্তি। আর সেই রাজার মূর্তি যিনি পুরনো সাম্রাজ্যের পর উত্তর ও দক্ষিণ মিশর কে আবার এক সাথে যুক্ত করেছেন।আর আছে অসংখ্য আঁকা ছবি। তার মধ্যে সব চেয়ে উল্লেখযোগ্য ও আমার প্রিয় একটি আপনাদের দেখার জন্য দিচ্ছি।এত সুন্দর রঙ এর ব্যবহার এত বছর আগে হতে পারে, এ যেন ধারনার বাইরেএই ঘর থেকে বেরিয়ে আমরা আরও অনেক ঘরে গেলাম। সেখানে কোথাও পশু পাখির মমি করে রাখা আছে, কোথাও আছে হরেক রকম গয়না। আর অনেক মমির মুখোস দেখলাম। সেগুলি অনেক গুলি ই সোনার তৈরি। গয়নার নকসা দেখলে সত্যি ভাবতে ইচ্ছে করে যে মিশরীয়রা অপূর্ব গুণের অধিকারী ছিলেন।কায়রো মিউসিয়াম থেকে বেরিয়ে আমরা চললাম ঝুলন্ত চার্চ দেখতে। মিশরীয়দের পর খ্রিষ্টানরা মিশরের দখল নেয়, আর তারও পরে মুসলিম রা। বাইবেলের গল্প অনুযায়ী, ছোট্ট যীশুকে বাঁচানোর জন্য মা মেরী পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। সেই সময় কায়রোতে একটি ছোট্ট গুহাতে বেশ কিছু দিন ছিলেন। সেই জায়গাতেই তৈরি হয়েছে এই চার্চ। মিশরে, এই খ্রিষ্টানদের বলে কপটিক খ্রিষ্টান। চার্চটি অপূর্ব ।দেখে বোঝা যায় যে অনেক দিনের পুরনো চার্চ। ভিতরের সমস্ত আসবাব পত্র কাঠ ও হাতির দাঁতের। রঙিন কাঁচের কাজও খুব সুন্দর।ঝুলন্ত চার্চচার্চ থেকে বেরিয়ে আমরা গেলাম Citadel of Salah-i-Din দেখতে। ইসলামিক শাসনে আসার পর মিশরকে রক্ষা করার দায়িত্ব আসে মুসলিম সুলতানদের হাতে। তারা সব সময় ধর্ম যুদ্ধ (crusade) বা খ্রিষ্টান দের হাত থেকে মিশর কে বাঁচাতে চেয়েছে। এর জন্যই সুলতান সালাহ দিন পাঁচিল দিয়ে পুর শহরকে ঘিরে ফেলতে চান। আর তার ফলেই তৈরি হয় নতুন শহর বা সিটাডেল। বর্তমানে এই অঞ্চলটি মিশরের সামরিক বাহিনীর হাতে তবে এই সিটাডেলের মধ্যে থাকা দুটি মসজিদ, মহম্মদ আলি মসজিদ ও আলাবাস্টার মসজিদ পর্যটকদের জন্য খুলে রাখা হয়েছে। অপূর্ব সুন্দর মসজিদ দুটি। রঙ্গিন কাঁচের কাজ, পাথরের কাজ সব মিলিয়ে অনবদ্য। Alabaster মসজিদ এর আকৃতি ঠিক যেন ইস্তাম্বুলের blue mosque এর মত।আলাবাস্টার মসজিদএই মসজিদ দুটিই পুরনো কায়রো শহর থেকে বেশ খানিকটা দূরে। আর অনেকটা উঁচুতে। লোক মুখে শোনা যায় যে গিজার পিরামিডের গা থেকে পাথর খুলে নিয়ে এই মসজিদ তৈরি হয়েছে। তবে সত্যি টা কি সেটা বোধহয় কেউ ই জানেনা। তবে এ কথা ঠিক যে পিরামিড ও এই মসজিদ সবই এক ধরনের পাথর দিয়ে তৈরি।এই মসজিদের উপর থেকে গোটা শহরটাকে দেখা যায় আর সেটা খুব সুন্দর দেখতে লাগে। ধূসর রঙের বাড়ির সারি, দূরে কালো রঙের নীল নদ, ও আর দূরে আকাশ ভেদ করে পরপর উচ্চতা অনুযায়ী দাঁড়িয়ে আছে পৃথিবীর এক আশ্চর্য। ভাষায় সে দৃশ্য বর্ণনা করা হয়ত আমার পক্ষে সম্ভব নয়। যেন চোখের সামনে স্বপ্ন নগরী ভেসে উঠছে।এখান থেকে আমরা গেলাম khan-e-Khalil বাজারে। এই বাজারটিও প্রায় ২০০ বছরের পুরনো। এই বাজারে এলেই মনে হবে কলকাতার ধর্মতলায় এসে গেছি। জিনিসপত্রের দোকান ছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন খাবারের দোকান। এখানে বেশ গড়গড়া টানার প্রচলন দেখতে পাওয়া গেল। মহিলা পুরুষ নির্বিশেষে দোকানে বসে গড়গড়া টানা এখানকার রীতি। সন্ধ্যে হতেই ঝলমলিয়ে উঠল বাজার। কেউ গান গাইছে, কেউ ফেরী করছে জিনিস, কেউ মেহেন্দি পরাচ্ছে। সব মিলিয়ে বেশ জমজমাট। নির্ভেজাল মিশরীয় স্বাদ পেতে অবশ্যই এই বাজারে আসতে হবে। চারিদিকে মিশরীয় খাবারের গন্ধ ছড়াচ্ছে। ভোজন রসিকরা এখানে এসে বেশ তৃপ্ত হবেন।খান-এ-খালিল বাজারআমরা প্রথমেই বসে গেলাম turkish coffee নিয়ে। সেটা কিছুটা হলেও আমাদের filter coffee-র মতই খেতে। কি সুন্দর ছোট ছোট স্টিলের কফি পটের মধ্যে করে দিয়ে গেল। সাথে কাপ। ঢালো আর খাও। এরপর খানিক বাজার করতে যাওয়া হল। এখানে সব রকম জিনিস পাওয়া যায়। দরদাম করতে পারলে কেল্লা ফতেহ। আর এসে দেখালাম মিশরীয়রা খুব বলিউডের ভক্ত। ফলে শাহ্রুখ খান বা আমিতাভ বচ্চন বলে আপনাকে সাদর আমন্ত্রন জানাবে। দেশে ফিরে বন্ধুদের উপহার দেবার জন্য কিছু কেনার হলে এইখানেই কেনা ভাল কারণ গিজা চত্ত্বরে বা অন্য কোথাও দাম বেশি হবার সম্ভাবনা।খান-এ-খালিল বাজারে পসরাএরপর আমরা আবার রাতের জন্য মিশরীয় খাবার-ই পছন্দ করলাম। ফালাফেল বা কোশারি ওখানকার খুব নাম করা পদ। খানিক টা আমাদের বিরিয়ানির মত, তাতে এত কিছু থাকে যে আমাদের একজনের পক্ষে তা একটু বেশীই হয়ে গেছিল। আর ফালাফেল আমাদের ডালের বড়ার মত খেতে। এরসাথে না না রকম চাটনি ইত্যাদি ও ছিল। ওখানে বসে খলা আকাশের নীচে মিশরীয় গান শুনতে শুনতে আমেজ টা ভালই আসছিল। তবে কায়রোর ট্রাফিক এর কথা মনে পড়াতে বাড়ি ফেরার রাস্তা ধরলাম........শ্রেয়া ঘোষ (বর্ধমান)ক্রমশ...

নভেম্বর ১৯, ২০২২

ট্রেন্ডিং

রাজ্য

লালগোলা রাজবাড়ির ঐতিহাসিক রথযাত্রা, রাস্তায় মানুষের ঢল

সীমন্তের গঞ্জ শহর লালগোলা রাজবাড়ির রথযাত্রা উৎসবকে কেন্দ্র করে জেলার মানুষের বড় উন্মাদনা। ফলে রাজবাড়ির রথের রশি টানতে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজির হন সাধারন মানুষ থেকে ভক্তগন। নিয়ম মেনে রাজবাড়ির জগন্নাথ মন্দিরে পুজাপাঠের মধ্য দিয়ে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে রথ বাজারে মাসির বাড়ি পৌঁছয় জগন্নাথ দেব। সেই সঙ্গে রাজ বাড়ির রথকে ঘিরে বাসিন্দাদের উচ্ছ্বাস পরিনত হল সম্প্রীতির মহোৎসবে। রাজপরিবার সুত্রে জানা যায়, পুরীর আদলে পেতলের পাত দিয়ে মোড়া প্রায় ৪০ ফিট উচ্চতার ৬ চাকার এই রথটি ১৮৪০ সালে তৈরি করান লালগোলার মহারাজা মহেশ নারায়ণ রায়। অবশ্য এর আগে ১৮২৩ সালেও লালগোলায় একটি কাঠের রথ প্রতিষ্ঠা হয়েছিল বলে জানা যায়। লালগোলা রাজ পরিবারের কূল দেবতা দধিমানব দেব। এই দেবতাকেই রথের দিন জগন্নাথ দেব হিসেবে পুজা করা হয়। রথের দিন তাঁকে রথ বাজারে মাসির বাড়ি নিয়ে আসা হয়, সেখানে বিধি মেনে সাত দিন পুজা করার পর উল্টো রথের দিন ফের রাজ বাড়ির জগন্নাথ মন্দিরে নিয়ে যাওয়ায় রীতি। রথ উপলক্ষ্যে বেশ কয়েক দিন মেলা বসে রাজ বাড়ি প্রাঙ্গনে। সাকার্স রথমেলার অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। শিশু কিশোরদের জন্য বসে হরেক কিসিমের নাগরদোলা। মহিলাদর জন্য সংসারের টুকিটাকি থেকে আধুনিক রেস্তোরাঁ। যেখানে পাওয়া যায় ভিন রাজ্যের খাবারের হরেক পদ। লালগোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য অজয় ঘোষ বলেন , লালগোলার রথের ঐতিহ্য বাংলা জুড়ে। ফলে মানুষ এই দিনের অপেক্ষায় থাকেন।রথের কদিন শ্বশুর বাড়ি থেকে ছেলে মেয়েদের নিয়ে বাপের বাড়ি লালগোলাতে ফেরেন বিবাহিত মহিলারা। এখানেই লালগোলার রথের বিশেষ মাহাত্ম্য। এদিকে রথের দঁড়িতে টান দিতে অন্যান্যদের সঙ্গে সমবেত হন সারজামান শেখ, সাহিল শেখ, ফিরোজ হোসেনদের মতো অনেকেই। তাদের দাবি, রাজ বাড়ির রথের সঙ্গে এলাকার মানুষের শেকড়ের সম্পর্ক। এখানে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে থেকেও বড় হয়ে ওঠে ভাবের আদান প্রদান,সম্প্রদায়ের মেল বন্ধন। তাছাড়া রথের মেলা কে ঘিরে এলাকার ছোট বড় সব মানুষ মেতে ওঠেন সমান ভাবে। লালগোলা রাজবাড়ির রথের পাশাপাশি জিয়াগঞ্জের সাদক বাগ আঁকড়ার বৈষ্ণবীয় রথ কে ঘিরে জেলার মানুষের সমাগম লক্ষ্য করা যায়। নশিপুর রাজবাড়ির রথের ঐতিহ্য বেশ প্রাচীন। রথের মেলায় রকমারি ফুল ও ফলের গাছ পাওয়া যায়। ফলে গাছ প্রেমী মানুষের আকর্ষণ রয়েছে নশিপুর রাজবাড়ি মেলার প্রতি।

জুন ২৭, ২০২৫
কলকাতা

কলকাতার 'ল কলেজে ধর্ষণের গুরুতর অভিযোগ, গ্রেফতার ৩, তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি

কসবা ল কলেজের ক্যাম্পাসের ভিতরে এক আইনের ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের ছাত্র নেতা মনজিৎ মিশ্র সহ অন্যান্য দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। অন্য অভিযুক্ত জাইব আহমেদ ও প্রমিত মুখার্জি। মনজিৎ মিশ্র ওই ল কলেজের প্রাক্তনী এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা ছিল এবং বাকি দুজন সেখানকার পড়ুয়া। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনাটি ঘটানো হয় ২৫ জুন, বুধবার রাতে কলেজ ক্যাম্পাসের মধ্যেই। শুধু ধর্ষণই নয়, ধর্ষিতার মুখ বন্ধ রাখতে ভিডিও রেকর্ডিং করে ভয় দেখায় অভিযোগকারীরা। পরবর্তীতে ধর্ষিতা যাতে অভিযোগ না জানান, তার জন্যও নানাভাবে চাপ দেওয়া হয় এবং অভিযোগের এফআইআর কপিতে অভিযুক্তদের নাম দেওয়ার বদলে তাদের নামের আদ্যক্ষর দিয়ে অভিযোগ লেখা হয়। এমন ঘটনা বোধহয় কেবলমাত্র পশ্চিমবঙ্গেই ঘটা সম্ভব। ভারতীয় জনতা পার্টি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানায় এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করে। বিজেপির দাবি, কসবার গণধর্ষণের ঘটনা কোনও বিচ্ছিন্ন অপরাধের ঘটনা নয়, এটি অভয়া ধর্ষণ কান্ডের পর এই রাজ্যের নারী নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলার ব্যর্থতার আবারও এক জলজ্যান্ত উদাহরণ।এই বিষয়ে রাজ্য সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ড. সুকান্ত মজুমদার জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী ধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধকে ছোটখাটো বলে উপেক্ষা করেন, যা রাজ্যে এই ধরনের অপরাধ বৃদ্ধির জন্য দায়ী। তাঁর এই মনোভাব পুলিশ প্রশাসনকেও প্রভাবিত করে, যার ফলে অপরাধীরা নির্ভয়ে এই ধরনের কাজ করে। রাজ্যে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, কলকাতার মতো শহরে, যেখানে মুখ্যমন্ত্রীর নিজের কার্যালয় রয়েছে, সেখানে এই ধরনের ঘটনা ঘটলে সাধারণ মানুষ কীভাবে নিরাপদ বোধ করবে?২০২৪ সালে আরজি কর মেডিকেল কলেজের এক নারী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার পর থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবি উঠেছিল। রাজ্য সভাপতি সেই ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, আরজি করের ঘটনায়ও মুখ্যমন্ত্রী পুলিশকে নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন। এখনও তিনি একই ভুল করছেন।পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ প্রশাসন মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি অতিরিক্ত আনুগত্য দেখায়, যার ফলে অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। তিনি বলেন, পুলিশের কাজ অপরাধীদের ধরা, কিন্তু তারা শাসক দলের নেতাদের সুরক্ষা দিতে ব্যস্ত।এই বিষয়ে বিরোধী দলনেতা শ্রী শুভেন্দু অধিকারী বলেন, এই ঘটনা শুধুমাত্র একটি অপরাধ নয়, এটি তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠনের নেতাদের দ্বারা শিক্ষাঙ্গনকে কলুষিত করার একটি জ্বলন্ত প্রমাণ। তৃণমূলের ছাত্র নেতারা বারবার তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভয় ও অরাজকতার পরিবেশ তৈরি করছে। তিনি আরও বলেন, ঘটনার জন্য পুলিশ দায়ী । মনোজ ভার্মা থেকে শুরু করে বিনীত গোয়েল এবং বাকি সব পুলিশ দিঘায় রয়েছে । পুরো কলকাতা পুলিশকে নিয়ে চলে গিয়েছে ওখানে। দিঘায় তো লোকই হয়নি৷ তাই জামা খুলিয়ে পুলিশকে দিয়ে হাঁটাবে। এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে থাকার যোগ্যতা নেই। বিজেপি এই বিষয়টা নিয়ে লড়বে। খুব বড় পদক্ষেপ করা হবে। সুপ্রিম কোর্টের এই সরকারকে উচিত শাস্তি দেওয়া উচিত।এদিনের ঘটনার প্রতিবাদে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন বিজেপির বিধায়ক এবং সাধারণ সম্পাদিকা শ্রীমতী অগ্নিমিত্রা পা ৷ তিনি বলেন, শিউরে ওঠার মতো ঘটনা। অভয়ার ঘটনার পরে দশ মাসও কাটেনি আজকে আরেক অভয়া বোনের গণধর্ষণ হয়ে গেল। এই ঘটনা ঘটেছে বুধবার।এদিকে তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে দলীয় নেতৃত্ব ল কলেজের ঘটনাকে ঘৃণ্য ঘটনা বলে উল্লেখ করেছে। অপরাধীদের কড়া শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, অভিযুক্তরা কেউ তৃণমূল কংগ্রেস বা টিএমসিপির নেতৃত্বে নেই। দলের সঙ্গে এখন তাদের কোন সম্পর্ক নেই। আর অভিযুক্তদের সঙ্গে নেতাদের ছবি প্রসঙ্গে তৃমূলের দাবি, বিজেপি নেতাদের সঙ্গে বহু অপরাধীদের ছবি দেখা গিয়েছে।

জুন ২৭, ২০২৫
রাজ্য

রথযাত্রা ও জিলিপি বাংলার সংস্কৃতির একটি মিষ্টি সংযোগ

রথ দেখতে গিয়ে কলা না বেচলেও জিলিপি খাননা এরকম মানুষ মেলা ভার। রথযাত্রা ও জিলিপির সম্পর্কটি বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির একটি মিষ্টি সংযোগ। বিশেষত পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশায়, রথযাত্রা মানেই একটি উৎসব, আর এই উৎসবের অনিবার্য অংশ হচ্ছে জিলিপি।কেন রথযাত্রায় জিলিপি খাওয়ার রেওয়াজ?ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি: জিলিপি একটি বহু পুরনো ও জনপ্রিয় ভারতীয় মিষ্টান্ন। রথযাত্রা উপলক্ষে ভোগ ও প্রসাদে মিষ্টির ব্যবহার প্রচলিত, এবং জিলিপি তার মধ্যে একটি প্রধান আইটেম।উৎসবের আনন্দে শামিল হওয়া: রথযাত্রার দিন সকালে বা রথ টানার পর জিলিপি খাওয়ার প্রথা বহু জায়গায় প্রচলিত। এটি যেন রথের আনন্দকে আরও বাড়িয়ে তোলে।জাগন্নাথদেবের ভোগ: ওড়িশার পুরীতে রথযাত্রার সময় জগন্নাথদেবের জন্য যে ৫৬ ভোগ দেওয়া হয়, তাতে নানা রকমের মিষ্টির মধ্যে জিলিপির মতো মিষ্টিও থাকে (যদিও সেখানে জিলিপিকে স্থানীয়ভাবে অন্য নামে ডাকা হতে পারে)।লোকাচার ও বাজার সংস্কৃতি: বাংলার বিভিন্ন মেলাতে যেমন রথের মেলা হয়, সেখানে জিলিপি ও অন্যান্য মিষ্টি খাবার বিক্রি হয় ব্যাপকভাবে। এটি এক ধরনের লোকাচার হয়ে দাঁড়িয়েছে রথ মানেই জিলিপি!রথ ও জিলিপির সম্পর্ক হলো উৎসব, ভক্তি ও ঐতিহ্যের এক অপূর্ব মেলবন্ধন। রথ টানার পর একগাদা গরম জিলিপি খাওয়ার আনন্দ বাঙালির হৃদয়ে বিশেষভাবে গেঁথে আছে।

জুন ২৭, ২০২৫
রাজ্য

শিশুর মাদকাশক্তি! উদ্ধারের উপায়? আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবসে আলোচনা সভা বর্ধমানের স্কুলের

প্রতি বছর ২৬ জুন আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী ও অবৈধ পাচার প্রতিরোধ দিবস পালিত হয়। এই বিশেষ দিনটি আমাদের স্মরণ করায় মাদক ব্যবহারের ফলে কি ক্ষতি হতে পারে এবং এবং অবৈধ মাদক পাচারের জন্য স্মাজের কি সমস্যা হয়। মাদক শরীর, মন এবং ভবিষ্যতকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। মাদক সেবনের ফলে যেরকম শরীরের ক্ষতি হয় ঠিক সেইভাবে মাদক সেবন একটি মানুষকে সমাজের মুল স্রোত থেকে দুরে ঠেলে সরিয়ে দিয়ে একাকী করে তুলতে পারে। মাদক সেবন মানুষকে অসুস্থ করে তোলে এবং সুখী জীবন যাপন করতে বাধা দেয়।একজন শিক্ষার্থী হিসেবে মাদক থেকে দূরে থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্যই মাদকের বিরুদ্ধে না বলতে হবে এবং বন্ধুদেরও মাদক থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করতে হবে। আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী উপলক্ষে আজ সিএসআর বক্স থেকে কাঞ্চননগর দীননাথ দাস উচ্চ বিদ্যালয়ে এসেছিলেন শ্রেয়া বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বয়ঃসন্ধির সময় ছাত্রছাত্রীরা প্রধানত বিদ্যালয়ে কিরকম সমস্যার মধ্যে পড়ে এবং কিভাবে তার সমাধান করা উচিত সে বিষয়ে বিসদে আলোচনা করলেন। শ্রেণিকক্ষে তথা বন্ধুবৃত্তে নানা মানসিকতার পড়ুয়া থাকে, কেউ কেউ বেশি বয়সেরও হয়। তারা নেশার মতো নানারকম ক্ষতিকর অভ্যাসের দিকে অন্যদের আকর্ষণ করে। সহপাঠীর কাছ থেকে খারাপ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাহলে উপায়?বক্তা মদ খাওয়ার বিভিন্ন ক্ষতি ব্যাখ্যা করেন - শারীরিক আর মানসিক স্তরে। এইরকম খারাপ বন্ধু যেন সীমা লঙ্ঘন না করে এটা আগে থেকে দেখা উচিত। তিনি বলেন, কেউ প্রতিরোধ না করতে পারলে তৎক্ষণাৎ তোমদের শিক্ষকদের এবিষয়ে জানানো উচিত। যদি কোনও শিশু জোরপূর্বক মাদকাসক্তির শিকার হন, তাহলে ১০৯৮ নম্বরে ফোন করে প্রথমে শিশু সুরক্ষার জন্য সহায়তা চাইতে পারে, এবং তারা তোমাদের সঠিক পথে পরিচালিত করবে। ১০৯৮ নম্বরে নেশা নিয়ে সমস্যার বিষয়ে জানানো যায়। বা গুরুজনদের কাউকে অবশ্যই বলা উচিত।বর্ধমান শহরের কাঞ্চননগর দীননাথ দাস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক ড.সুভাষচন্দ্র দত্ত জনতার কথাকে জানান, এই জাতীয় প্রোগ্রাম আমরা সবসময়েই স্বাগত জানাই। সমাজে নেশার ক্রমবর্ধমান প্রকোপের দিকে তাকিয়ে তাদের রক্ষা করা আমাদের সবার কর্তব্য।

জুন ২৬, ২০২৫
রাজ্য

অরিজিৎ সিং বর্ধমানে? শুটিংয়ের জায়গা খুঁজতে গেলেন বাংলা সিনেমার গ্রামে

মঙ্গলবার ঠিক সন্ধ্যা ৬ টা নাগাদ অরিজিৎ সিং এলেন পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের মৌখিড়া জমিদার বাড়ির কাছে। ঘুরে দেখলেন জেলার একমাত্র জঙ্গল মহলের কালিকাপুর রাজবাড়িও। ছবি তুললেন রাজবাড়ির পুরোহিত পিগলু ওরফে গোপাল চক্রবর্তীর সঙ্গে। তাকে নিরাপত্তাহীন জঙ্গলের বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরতে দেখে অবাক হন অনেকে। শোনা যায় সম্প্রতি অরিজিৎ সিং বোলপুরে এসেছেন এবার এলেন আউশগ্রামে হঠাৎই। জনপ্রিয় গায়ক অরিজিৎ সিং একটি নতুন ছবির শুটিংয়ের জন্য রেকি করতে এসেছেন বলে জানান চিত্রনাট্যকার, লেখক, আউশগ্রামের ভূমিপুত্র রাধামাধব মণ্ডল। তিনি আরও জানান, যে তিনি ইলামবাজার সংলগ্ন অঞ্চলে শুটিংয়ের জন্য বিভিন্ন জায়গা খুঁজছেন বেশ কয়েক দিন ধরেই। তাঁকে এদিন হঠাৎ করে আউশগ্রামের রাস্তায় দেখেই চমকে ওঠেন সকলে। যদিও তাঁর আশার বিষয়টি ছিল সম্পূর্ণ গোপনীয়।

জুন ২৬, ২০২৫
রাজ্য

মুর্শিদাবাদের সীমান্ত এলাকা থেকে দুই বাংলাদেশি গ্রেফতার

সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে দুই বাংলাদেশী যুবককে গ্রেপ্তার করলো রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে রঘুনাথগঞ্জের তেঘরি এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম কাইয়ুম রেজা (২৪)এবং জাহির রহমান(৩৫)। উভয়ের বাড়ি বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ। বুধবার ধৃতদের জঙ্গিপুর আদালতে পাঠায় পুলিশ। যদিও কি উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ থেকে ভারতে অবৈধভাবে প্রবেশ করেছিল ধৃতরা কিংবা কিভাবেই বা পার হয়ে এসেছে তারা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশের পক্ষ থেকে। ধৃতদের পাঁচদিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন জানিয়েছে পুলিশ।

জুন ২৬, ২০২৫
রাজ্য

বাংলাদেশী নাগরিক পরিচয়ে চিকিৎসার জন্য ২১ লক্ষ টাকা প্রতারণা, গ্রেফতার দুই

অভিনব কায়দায় ২১ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগে দুই প্রতারককে গ্রেফতার করলো বনগাঁ সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। বাংলাদেশী নাগরিক পরিচয় দিয়ে কয়েকজন পরিচিতের নাম বলে চিকিৎসার জন্য টাকা ধার নিয়ে প্রতারণা করার অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, গত বছর নভেম্বর মাসের ২ তারিখে পেট্রাপোল থানার পুরাতন বনগাঁ এলাকার বাসিন্দা অমিত হালদার বনগাঁ সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ জানিয়ে বলেন, অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তি বাংলাদেশী নাগরিক পরিচয় দিয়ে তার কয়েকজন পরিচিতের সুপারিশ নিয়ে তাকে চিকিৎসার জন্য টাকা ধার দিতে বলেন। ঐ ব্যক্তি ফোন মারফত বলেন, তিনি ভারতে চিকিৎসা করাতে আসবেন তার জন্য টাকা প্রয়োজন এবং তাকে ধার দিতে অনুরোধ করেন, আশ্বাস দেন টাকা ফেরত দিয়ে দেবেন। অমিত বাবু তার কথায় তাকে ২১ লক্ষ টাকা ধার দেন এবং পরবর্তীতে প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে বনগাঁ সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অমিত বাবুর অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্তে নেমে দুই প্রতারককে গ্রেফতার করে বনগাঁ সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত দুই প্রতারক প্রানতোষ বনিককে শিলিগুড়ি থেকে এবং বিকাশ তামাংকে দার্জিলিং এর মিরিক থেকে গতকাল গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের বুধবার ৬ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে চেয়ে বনগাঁ মহকুমা আদালতে পেশ করেছে বনগাঁ সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে নিয়ে পুলিশ জানতে চায় এই প্রতারনার পিছনে আর কারা কারা জড়িত এবং এই প্রতারনার জাল কতদূর ছড়িয়েছে।

জুন ২৬, ২০২৫
রাজ্য

পর্যটনে জোর, পূর্ব বর্ধমান জেলার পর্যটন কেন্দ্রগুলি তুলে ধরতে শিবির

পর্যটন শিল্পকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে একাধিক উদ্যোগ নিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ করতে আধুনিক পরিকাঠামো, উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং স্থানীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রচারে ঢালাও জোর দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে শুধু রাজস্ব বৃদ্ধিই নয়, বাড়ছে স্থানীয় মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগও। রাজ্য সরকারের সাথে সাথে জেলা প্রশাসন ও নানা উদ্যোগ নিচ্ছে পর্যটন শিল্পে উৎসাহ দিতে।পর্যটন শিল্পে উৎসাহ দিতে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন দুদিনের প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করল। বৃহস্পতি ও শুক্রবার জেলার সদরে নিউ কালেক্টর বিল্ডিংর রাসবিহারী সভাকক্ষে এই শিবিরে যোগ দেন পূর্ব বর্ধমান ও পশ্চিম বর্ধমান পর্যটন আধিকারিক ও পর্যটন ব্যবসায়ীরা। বাংলার পর্যটন মানচিত্রে অবিভক্ত বর্ধমানের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রগুলির প্রচার ও প্রসার করতেই এই আয়োজন বলে জানানো হয়। শিবিরে যোগদান করেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্যটন বিভাগের অধ্যাপক মীর আব্দুল শফিক, দিলীপকুমার দাস, পূর্ব বর্ধমান জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক (শিক্ষা) প্রতীক সিং (আইএএস)।দুদিনের শিবিরে পর্যটন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে জেলার বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র ঘিরে সার্কিট ট্যুরিজমের পরিকল্পনা নিয়ে বিশদে আলোচনা হয়। এছাড়াও বাঁকুড়া, বীরভুম, পশ্চিম বর্ধমান, নদীয়ার মত লাগোয়া জেলাগুলির পর্যটন কেন্দ্রগুলির সঙ্গেও পূর্ব বর্ধমানকে কি ভাবে জোড়া যেতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা হয়। পৌরানিক মত অনুযায়ী সারা দেশের যে সতীর ৫১টি বা ৫২টি মূল শক্তিপীঠের তালিকা পাওয়া যায় তাতে পূর্ব বর্ধমানের একাধিক শক্তিপীঠ আছে। এছাড়াও অম্বিকা কালনা ও বর্ধমান শহরে দুটি ১০৮ শিব মন্দির, বিজয় তোড়ণ (কার্জন গেট), শের আফগান, কুতুবুদ্দিন ও নুরজাহানের সমাধির মতো ঐতিহাসিক স্থানও রয়েছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (শিক্ষা) প্রতীক সিং বলেন, জেলায় এতিহাসিক গুরুত্বের অনেক পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে। সেগুলি সংস্কারে উদ্যোগ করা হয়েছে। ব্যবসায়ীদেরও পর্যটনে শিল্পে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে।পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন শিল্পে নতুন জোয়ার এনেছে রাজ্য সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগ। পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে পাহাড়, সমুদ্র, অরণ্য ও ঐতিহাসিক স্থানের আধুনিকীকরণ থেকে শুরু করে পরিবেশবান্ধব পর্যটনের উপরও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এর পাশাপাশি রাজ্যের সংস্কৃতি, হস্তশিল্প এবং লোকসংগীতকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে নেওয়া হয়েছে একাধিক পদক্ষেপ। পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন জেলার পর্যটন শিল্পকে তুলে ধরতে ইতিমধ্যেই একটি ভিডিও তৈরি করেছে।রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন জানিয়েছেন, পর্যটন শুধু অর্থনীতির চাকা ঘোরায় না, এটি স্থানীয় সংস্কৃতি ও পরিচয়কে তুলে ধরার অন্যতম মাধ্যম। তাই আমরা একাধারে পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের যুক্ত করে পর্যটনের প্রসারে কাজ করছি।বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে গাইড প্রশিক্ষণ, হোমস্টে উন্নয়ন এবং পরিবেশবান্ধব পর্যটনের দিকে মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে। উত্তরবঙ্গ, সুন্দরবন, দার্জিলিং, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, বীরভুম সর্বত্র পর্যটনের নবজাগরণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. শিবকালি গুপ্ত জনতার কথাকে জানান, পর্যটনের বিকাশ সরাসরি হোটেল, রেস্তোরাঁ, পরিবহন, হস্তশিল্প ও সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত বহু মানুষের জীবিকায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে সাহায্য করে। এটা যেমন কিছু মানুষের বিনোদন আবার বহু মানুষের জীবিকাতে বিরাট প্রভাব ফেলে। তিনি আরও জানান, আগে প্রত্যন্ত গ্রামে পর্যটক সেভাবে আসত না, এখন বহু বিদেশি পর্যটকও প্রত্যন্ত গ্রামে ভ্রমন করেন। তাঁরা হস্তশিল্প কিনছেন, খাবার খাচ্ছেন। সাথে গ্রামীন অর্থনীতিতে জোয়াড় আনতে সাহায্য করছেন। তিনি আরও বলেন, আমাদের জেলায় পর্যটন অকর্ষনের অভাব নেই, জেলাকে ঘিরে আছে তিন তিনটে নদী (দামদর, ভাগীরথী, অজয়)। বিস্তীর্ন বনাঞ্চল, ঐতিহাসিক স্থাপত্য, হস্তশিল্প, লোকশিল্প। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের শম্ভুনাথ কলেজের ভুগোলের অধ্যাপক ড. কুনাল চক্রবর্তী বলেন, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার পর্যটন শিল্পে উৎসাহ দিতে নানাবিধ প্রকল্প ঘোষনা করছে। রাজ্য সরকার Experience Bengal ডিজিটাল ক্যাম্পেইন চালাচ্ছে। এতে বিভিন্ন সনামধন্য পর্যটন কেন্দ্রের সাথে সাথে বহু গ্রামীন পর্যটন কেন্দ্রেও মানুষের আনাগোনা বেড়েছে। তাঁর মতে পর্যটনের বিকাশ সরাসরি হোটেল, রেস্তোরাঁ, পরিবহন, হস্তশিল্প ও সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত বহু মানুষের জীবিকায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তিনি বলেন, এই ধারা বজায় থাকলে আগামী পাঁচ বছরে বাংলার পর্যটন শিল্প দেশের অন্যতম বড় আয়ের উৎস হয়ে উঠবে।

জুন ২৫, ২০২৫

Ads

You May Like

Gallery

265-year-old "Mukhopadhyay House" in Bhavanandpur, Kalnar, played vermilion on Dasami during Durga Puja
BJP candidate Locket Chatterjee campaigned on the banks of the Ganges from Chandannagar Ranighat to Triveni Ghat wishing New Year.
A living depiction of history with a touch of color, everyone is enthralled by the initiative of the Eastern Railway
Sucharita Biswas actress and model on Durga Puja
Lord Kalabau came up in palanquin; Navapatrika walked towards the mandap - the puja started
On Sunday, the 'Hilsa festival' is celebrated in the city with great joy.
Check out who has joined Mamata's new cabinet
Take a look at the list of recipients at the Bangabibhushan award ceremony
If you are grassroots, you will get ration for free. Lakshmi Bhandar, Kanyashree, Swastha Sathi, Krishakbandhu, Oikyashree, Sabujsathi — you will get all.

Categories

  • কলকাতা
  • রাজ্য
  • দেশ
  • বিদেশ
  • রাজনীতি
  • খেলার দুনিয়া
  • বিনোদুনিয়া
  • সম্পাদকীয়
  • নিবন্ধ
  • ভ্রমণ
  • রাশিফল
  • টুকিটাকি
  • চিত্রহার
  • বিবিধ
  • ভিডিও

Company

  • About Us
  • Advertise
  • Privacy
  • Terms of Use
  • Contact Us
Copyright © 2025 Janatar Katha News Portal