রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস শনিবার মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জ থানার জাফরাবাদে মৃত বাবা-ছেলে হরগোবিন্দ দাস ও চন্দন দাসের বাড়িতে যান। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। ওইদিন ঠিক কি হয়েছিল সেই বিষয়ে জানতে চান। এদিকে রাজ্যপালকে সামনে পেয়ে দাস পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি তাদের কথা মন দিয়ে শোনেন এবং বোঝার চেষ্টা করেন। রাজ্যপাল তাদের সান্ত্বনা দেন এবং পাশে থাকার আশ্বাস দেন। দাস বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাজ্যপাল জাফরাবাদের আরও ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর ঘুরে দেখেন। গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করবেন বলে আশ্বাস দেন। প্রায় ৪০ মিনিট তিনি জাফরাবাদ গ্রামে ছিলেন। এরপরেই তিনি জাফরাবাদ থেকে বেরিয়ে যান। এদিকে শনিবার রাজ্যপাল সামসেরগঞ্জের জাফরাবাদ আসছেন এই খবর পেতেই সকাল থেকে বেতবোনা গ্রামের বাসিন্দারা রাস্তায় জমায়েত হয়ে অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু রাজ্যপাল জাফরাবাদ থেকে বেরিয়ে বেতবোনায় না দাঁড়িয়ে বহরমপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
এই ঘটনায় বেতবোনার বাসিন্দারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। রাজ্যপালের কনভয়ের নিরাপত্তা রক্ষীদের গাড়ি আটকে তারা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। খবর পেয়ে রাজ্যপাল বেতবোনায় ফিরে আসেন এবং গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের অভিযোগের কথা শোনেন। তারপর বহরমপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। রাজ্যপাল বলেন, সামসেরগঞ্জে যা ঘটে গেছে সেটা যেকোন সভ্য সমাজের পক্ষে অত্যন্ত লজ্জাজনক। কিছু দুর্বৃত্ত এটা ঘটিয়েছে। বহু পরিবার ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তারা আতঙ্কের মধ্যে ছিল। তবে রাজ্য পুলিস ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর যৌথ প্রচেষ্টায় এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তাদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি এই মুহুর্তে তাদের প্রধান তিনটি দাবি হল- ন্যায়বিচার, শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং বিএসএফ ক্যাম্প। একজন রাজ্যপাল হিসেবে রাজ্য ও কেন্দ্রের সমন্বয় করে ওখানে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও শান্তি ফিরিয়ে আনা আমার দায়িত্ব।
বিকেলে বহরমপুর কোর্ট স্টেশন থেকে ট্রেনে চেপে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেন রাজ্যপাল।এদিকে এদিন সকালে জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারম্যান সহ ছয় সদস্যের দল বেতবোনা, জাফরাবাদে যায়। মহিলাদের সঙ্গে কথা বলেন। জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারম্যান বিজয়া কিশোর রোহতকার বলেন, ওই এলাকার পীড়িতদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা সমস্ত ঘটনা তুলে ধরেছেন। সত্যি কয়েকদিন তাদের ভয়ঙ্কর ও বিভীষিকাময় অবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে।
এদিন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর রায় এবং মালদার কংগ্রেস সাংসদ ইশা খান সামসেরগঞ্জে দাস পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। প্রথমে দাস পরিবারের সদস্যরা কংগ্রেস নেতাদের বাড়িতে ঢুকতে না দিলেও পরে তারা বাড়িতে ঢোকেন। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সামসেরগঞ্জ ও সূতির ঘটনার পিছনে তৃণমূল ও বিজেপির হাত রয়েছে বলে দাবি করেন। মৃত হরগোবিন্দ দাসের জামাই বিশ্বজিৎ দাস হিংসার ঘটনায় সিবিআই তদন্তের পাশাপাশি গ্রামে বিএসএফ ক্যাম্পের দাবি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ মুর্শিদাবাদে বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর রুটমার্চ
- More Stories On :
- Governor
- West Bengal
- CV Anand Bose
- Murshidabad
- WAQF Amendment Ac