ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জীবন নানান কাহিনী আর কীর্তিতে ভরপুর। কথিত আছে, মাত্র ১৯ বছর বয়সে তাঁর অগাধ পাণ্ডিত্যকে সম্মান জানাতে তাঁকে 'বিদ্যাসাগর' উপাধি দেওয়া হয়। এও জানা যায় বিদ্যাসাগর তাঁর অসুস্থ মাকে দেখতে যাওয়ার জন্য ছুটি চেয়ে না পাওয়ায় সটান চাকরি ছেড়ে দেন, এবং ভরা বর্ষার রাতে প্রবল উত্তাল দামোদর নদী সাঁতরে মাকে দেখতে যাওয়ার কাহিনী লোকগাথা হয়ে গেছে।
বাংলা ও বাঙ্গালির সংগঠন 'বাংলা পক্ষ' আজ বৃহস্পতিবার ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ২০৪ তম জন্মদিনে সমগ্র পশ্চিম বাংলার ২৩ টি জেলা থেকে ২৩ জন শিক্ষাবিদকে 'বিদ্যাসাগর জাতীয় শিক্ষক সম্মান' প্রদান করেন। পূর্ব বর্ধমান জেলায় 'দামোদর' নদের মাত্র কয়েক কিমি দূরে বর্ধমান শহরের 'কাঞ্চননগর দীননাথ দাস উচ্চ বিদ্যালয়ের' রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক ড. সুভাষচন্দ্র দত্তকে ১৪৩১ সনের বিদ্যাসাগর জাতীয় শিক্ষক সম্মানে ভূষিত করা হয়।
বাংলা পক্ষের পূর্ব বর্ধমান জেলার সম্পাদক অসিত সাহা 'জনতার কথাকে' জানান, এই পুরস্কার তুলে দিতে পেরে তাঁরা গর্বিত। তিনি প্রসঙ্গক্রমে জানান যে, বর্ধমানের প্যারিচাঁদ মিত্র লেন এলাকার একটি বাড়িতে বসে ঈশ্বরচন্দ্র বর্ণপরিচয় লেখেন। শুধু তাই না, এই বই যাতে প্রকাশকরা বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারে তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেন। ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে এই ঘটনা উল্লেখ করে বলেন যে, বড় হয়ে চাকরির জন্য অনর্থক সময় নষ্ট না করে তোমরা ব্যবসার কথা ভাবতে পার, এই পথ বিদ্যাসাগরই দেখিয়ে গেছেন।
'বিদ্যাসাগর জাতীয় শিক্ষক সম্মান' পুরস্কারে ভূষিত প্রধানশিক্ষক ড. সুভাষচন্দ্র দত্ত তাঁর ভাষণে বাংলা পক্ষকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। বিদ্যাসাগরের পূর্বপুরুষদের চরিত্র উল্লেখ করে বলেন যে, ঠাকুরদাদা ঠাকুমা বাবা মা এঁদের দৃঢ় মনোভাবসম্পন্ন গুণাবলী বিদ্যাসাগরকে বিদ্যাসাগর হতে সাহায্য করেছে।
আজ বাংলা পক্ষ তরফ থেকে এই ওই বিদ্যালয়ের সমস্ত শিক্ষকশিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীকেও সংবর্ধিত করে। কাঞ্চননগর দীননাথ দাস উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা স্বাগতা আঢ্য জানান, এই সম্মান আমাদের সকলের খুব ভাল লেগেছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষক বাসুদেব মণ্ডল বিদ্যাসাগরের সঙ্গে রামকৃষ্ণের সাক্ষাতের ঘটনাটি স্মরণ করেন। বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী যথা, মধুমিতা অরিজিৎ ইন্দু পূর্বারা নাচ আবৃত্তি গানে বিদ্যাসাগরকে শ্রদ্ধা জানায়।
এবছর যে শিক্ষাব্রতীদের সম্মানিত করতে পেরে আমরা গর্বিত,তাঁরা হলেনঃ
১) আলিপুরদুয়ার- অজিত কুমার দে
২)কোচবিহার- নারায়ণ চন্দ্র সাহা
৩) জলপাইগুড়ি- জুয়েল দত্ত
৪) শিলিগুড়ি- কাকলী মজুমদার চাকী
৫) উত্তর দিনাজপুর- কিংশুক মাইতি
৬) দক্ষিণ দিনাজপুর- তপন অধিকারী
৭) মালদা- মহ: সাকিলুর রহমান
৮) মুর্শিদাবাদ- খাজিম আহমেদ
৯) নদীয়া- সুবীর কুমার পাল
১০) বীরভূম- জয়ন্ত মুখার্জী
১১) পশ্চিম বর্ধমান- জইনুল হক
১২) পূর্ব বর্ধমান- ড: সুভাষ চন্দ্র দত্ত
১৩) হুগলী- শুভময় সরকার
১৪) হাওড়া- বিশ্বনাথ বসু
১৫) উত্তর ২৪ পরগণা (শিল্পাঞ্চল)- অশোক কুমার ভৌমিক
১৬) উত্তর ২৪ পরগণা (শহরাঞ্চল)- শুভদীপ চৌধুরী
১৭) উত্তর ২৪ পরগণা (গ্রামীণ)- মিজানুর রহমান
১৮) দক্ষিণ ২৪ পরগণা- অমিত ভট্টাচার্য
১৯) কলকাতা- তৃপ্তিশ্রী ধর
২০) পূর্ব মেদিনীপুর- মৃণালসুন্দর পাত্র
২১) পশ্চিম মেদিনীপুর- শক্তিপদ বেরা
২২) বাঁকুড়া- ঈশ্বর পান
২৩) পুরুলিয়া- ড: জয়ন্ত হাজরা
আরও পড়ুনঃ ধর্মতলা চত্বরে মিছিল, মিটিং, জমায়েতে পুলিশের নিষেধাজ্ঞায় বিতর্ক, কাল শুনানি হাইকোর্টে
- More Stories On :
- Bangla Pokkho
- 26th Sept National Teachers Day
- Teachers Day
- Vidyasagar