গত বছর টি২০ বিশ্বকাপে এই দুবাইয়ে পাকিস্তানের কাছে বিধ্বস্ত হয়েছিল ভারত। এশিয়া কাপে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে বিশ্বকাপের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিল ভারত। দলকে দুরন্ত জয় এনে দিলেন হার্দিক পান্ডিয়া।
টস জিতে এদিন পাকিস্তানকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠান রোহিত শর্মা। ভুবনেশ্বর কুমার, হার্দিক পান্ডিয়াদের দাপটে বড় ইনিংস গড়তে পারেনি পাকিস্তান। ১৯.৫ ওভারে তোলে ১৪৭। দুরন্ত বোলিং করেন ভুবনেশ্বর কুমার ও হার্দিক পান্ডিয়া। ব্যাট করতে নেমে তৃতীয় ওভারেই ধাক্কা খেয়েছিল পাকিস্তান। ভুবনেশ্বর কুমারের বলে অর্শদীপের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন পাক অধিনায়ক বাবর আজম। ৯ বলে তিনি মাত্র ১০ রান করেন।
বাবর আজম ফিরে যাওয়ার পর দলকে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন রিজওয়ান ও ফখর জামান। ষষ্ঠ ওভারে আবেশ খানের বল ব্যাটের কানায় লাগিয়ে উইকেটের পেছনে দীনেশ কার্তিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন ফখর জামান। ৬ বলে তিনি করেন ১০ রান। এরপর রিজওয়ান ও ইফতিখার আমেদের জুটিতে ওঠে ৪৫। ২২ বলে ২৮ রান করে হার্দিকের বলে আউট হন ইফতিখার। মহম্মদ রিজওয়ানকেও তুলে নেন হার্দিক। ৪২ বলে ৪৩ রান করেন রিজওয়ান। খুশদিল শাহ (২), আসিফ আলিরা (৯) সুবিধা করতে পারেননি। ২৬ রানে ৪ উইকেট নেন ভুবনেশ্বর কুমার। ২৫ রানে ৩ উইকেট নেন হার্দিক পান্ডিয়ার। অর্শদীপ সিং নেন ২ উইকেট। আবেশ খান ১টি উইকেট পান।
জয়ের জন্য ১৪৮ রানের লক্ষ্য নিয়ে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই ধাক্কা খায় ভারত। দেশের হয়ে টি২০ অভিষেক ম্যাচের দ্বিতীয় বলেই নাসিম শাহ তুলে নেন লোকেশ রাহুলকে (০)। বল ব্যাটের কানায় লাগিয়ে বোল্ড হন ভারতীয় দলের সহ–অধিনায়ক। অভিষেকলগ্ন আরও স্মরণীয় করে রাখতে পারতেন পাকিস্তানের এই জোরে বোলার। ওভারের চতুর্থ বলে স্লিপে বিরাট কোহলির ক্যাচ ফেলে দেন ফখর জামান। যদি তালুবন্দী করতে পারতেন, আবার নামের পাশে আর একটা শূন্য বসে যেত কোহলির।
প্রাথমিক ধাক্কা সামলে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করছিলেন কোহলি ও রোহিত শর্মা। যদিও পাকিস্তানের জোরে বোলারদের সামনে ততটা স্বপ্রতিভ ছিলেন না। বিশ্রাম কাটিয়ে দীর্ঘদিন বাইশ গজে ফেরা কোহলিকে বেশ নার্ভাস লাগছিল। তার মধ্যেই দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। অষ্টম ওভারের শেষ বলে আবার ধাক্কা ভারতীয় শিবিরে। মহম্মদ নওয়াজকে গ্যালারিতে পাঠাতে গিয়ে লং অফে ইফতিখার আমেদের হাতে ধরা পড়েন রোহিত। ১৮ বলে তিনি করেন ১২।
প্রাথমিক চাপ কাটিয়ে কোহলি বেশ ভালোই ব্যাটিং করছিলেন। উইকেটে জমে গিয়েছিলেন। কিন্তু মহম্মদ নওয়াজ বড় শট খেলার প্রলোভন দেখিয়ে তুলে নেন কোহলিকে। ৩৪ বলে ৩৫ রান করে লং অফে ধরা পড়েন কোহলি। জীবনের শততম টি২০ ম্যাচে বড় রান পেলেন না।
রোহিত আউট হওয়ার সময় পাকিস্তানের আক্রমণে শানানোর দায়িত্বে ছিলেন বাঁহাতি স্পিনার মহম্মদ নওয়াজ ও লেগস্পিনার সাদাব খান। এই দুই স্পিনারের ছন্দ নষ্ট করার জন্য রবীন্দ্র জাদেজাকে ব্যাটিং অর্ডারে চার নম্বরে তুলে নিয়ে আসা হয়েছিল। পাঁচ নম্বরে নামা সূর্যকুমার যাদবকে সঙ্গী করে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন জাদেজা। দ্বিতীয় স্পেলে বল করতে এসে জুটি ভাঙেন নাসিম শাহ। তুলে নেন সূর্যকুমারকে। ১৮ বলে ১৮ রান করে আউট হন তিনি।
এরপর দলকে টেনে নিয়ে যান জাদেজা ও হার্দিক। শেষদিকে নাটক জমে ওঠে। ১৭তম ওভারে নাসিমের চতুর্থ বলে আম্পায়ার এলবিডব্লু আউট দেন জাদেজাকে। রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান জাদেজা। পরের বলেই ছক্কা হাঁকান। ১৯ তম ওভারে হ্যারিস রউয়ের বলে তিনটি বাউন্ডারি মেরে দলকে জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে দেন হার্দিক। পরের ওভারের প্রথম বলে জাদেজাকে (২৯ বলে ৩৫) তুলে নেন মহম্মদ নওয়াজ। ৬ মেরে দলকে জয় এনে দেন হার্দিক। ২ বল বাকি থাকতে ১৪৮/৫ তুলে ম্যাচ জিতে নেয় ভারত। ১৭ বলে ৩৩ রান করে অপরাজিত থাকেন হার্দিক। ৩৩ রানে ৩ উইকেট নেন নওয়াজ। অভিষেক ম্যাচে ২৭ রানে ২ উইকেট নাসিং শাহর।
আরও পড়ুনঃ সুমিতের ‘উপহার’ আত্মঘাতী গোলে ডার্বি জয় এটিকে মোহনবাগানের
আরও পড়ুনঃ চোখের পলকে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল টুইন টাওয়ার অবশেষে শেষ রক্ষা হল না
- More Stories On :
- India
- Pakistan
- Cricket
- Asia Cup
- Hardik Pandya
- Ravindra Jadeja
- Virat Kohli