দুবাইয়ের এয়ার শো-তে হাজির হয়েছিল ভারতের গর্ব, সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি যুদ্ধবিমান তেজস। কিন্তু সেই প্রদর্শনীই পরিণত হল ভয়াবহ দুর্ঘটনায়। স্থানীয় সময় দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ অবতরণের সময় আচমকা ভেঙে পড়ে তেজস। চোখের সামনে আগুনের ফুলকি আর ধোঁয়ার নিচে মিশে গেল ভারতের তৈরি এই আধুনিক যুদ্ধবিমান। সবচেয়ে মর্মান্তিক বিষয়, পাইলটকে বাইরে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়নি। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে একাধিক সূত্র।
২০১৬ সালে ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে তেজস যোগ দেওয়ার পর থেকেই এই বিমান সুনামের সঙ্গে উড়েছে। এখনও পর্যন্ত মাত্র একবার দুর্ঘটনার মুখোমুখি হয়েছিল তেজস। তার পর এত বছর ধরে বহু মহড়া, বহু মিশন—সব কিছুর মধ্যেই একে ছিল অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য। তাই দুবাই প্রদর্শনীতে এমন বিপর্যয় সামরিক মহলে বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে জোর অনুমান চলছে। অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, মাঝআকাশে বা অবতরণের ঠিক আগে ইঞ্জিন হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেলে এমন ঘটনা ঘটতেই পারে। আবার কেউ কেউ বলছেন, সামনে থাকা ল্যান্ডিং হুইলে কোনও ত্রুটি দেখা দিলে তেজসের এই নীচু উচ্চতের অবতরণ নিয়ন্ত্রণ হারাতে পারে। তবে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কেউই সুনিশ্চিত ব্যাখ্যা দিতে রাজি নন। স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, মহড়া শুরুর আগে বিমানটি আরেকবার আকাশে ভেসে পরীক্ষা দেওয়া হয়েছিল। তখন কোনও ত্রুটি ধরা পড়েনি।
প্রাক্তন বায়ুসেনা কর্তা রঞ্জন মুখোপাধ্যায় বলছেন, “এটা খুব সাধারণ ব্যাপার নয়। এমন দুর্ঘটনা ঘটতে হলে গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশের ত্রুটি থাকার সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশি। তবে তদন্ত না হলে কিছুই নিশ্চিত বলা যায় না।”
তেজস ভেঙে পড়ায় প্রশ্নের মুখে দাঁড়াল ভারতের সামরিক প্রযুক্তিও। কারণ, বহু দেশ ইতিমধ্যেই তেজস কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। দেশীয় প্রযুক্তির শক্তি দেখানোর জন্য এই এয়ার শো ছিল গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ। দুর্ঘটনার পর পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায়, তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন প্রতিরক্ষা বিশারদরা।

